Mafia Boss- Season- 3

Married To The Dark King-  Mafia Boss- Season 3 !! Part- 99

সকাল থেকেই বুকটা কেমন করছে রুহীর।পেটট ভীষন বড় হয়ে গেছে।ভারি ও হয়েছে খুব।খুব বেশি নড়াচড়া করে দুষ্টু গুলো।জানতে পেরেছিলো ওর নাকি দুটো বেবি হবে।তবে জেন্ডার বলেনি ডাক্তার।খাটে আধশোয়া হয়ে আছে রুহী।মন টা মোটেই ভালো নেই ওর।যতো সময় ঘনিয়ে আসছে বুকের দুরুদুরু ভাবটা যেন বেড়েই চলছে।কাল রাতের ঘটনার পর থেকেই মনটা ও কেমন অশান্ত হয়ে আছে।কপালের ওপর হাত রেখে পুরো শুয়ে পড়ে রুহী।
কাল রাতে খাবার খাইয়ে দিয়ে ওকে বুকে নিয়ে শুয়ে পড়ে রোয়েন।
রুহীর হাত রোয়েন নিজের হাতের পাতায় নিয়ে শুয়ে আছে।বাহির থেকে ঠান্ডা বাতাস ওদের শরীর মন ছুঁয়ে দিচ্ছে।শীতের সময়।এসি অফ।তারপর ও শীতে কুঁকড়ে যাচ্ছে রুহী।রোয়েনের বুকের সাথে একদম মিশে গেছে ও।রোয়েন রুহীর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয়।মায়াবতী!!!রুহী চোখ খুলে রোয়েনের ডাকে।তারপর অস্ফুট স্বরে বলে উঠে হুম।শীত করছে? জিজ্ঞেস করে উঠে রোয়েন।
হুম।রোয়েনকে জোরে জড়িয়ে ধরে রুহী।রোয়েন ও রুহীকে জড়িয়ে ধরেছে বুকের মাঝে।যদি শীতটা কাঁটানো যায়।
গভীর রাতে ঘুম ভেঙ্গে যায় রুহীর।রোয়েন ও গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।ওর বুক উঠানামা করছে।
হঠাৎ একটা বাচ্চার খুব জোরে কান্না শুনতে পায় রুহী।কান্নাটা আসছে বাহির থেকে।পাশের রুম থেকে।সে রুমে কি ও যাবে?
কেউ তো ঘরে নেই।রুহীর বাবা আজিজ রায়হান গ্রামের বাড়ি গেছে সাজিদ রায়হান অর্থ্যাৎ রুহীর শ্বশুরের সাথে।দুই ভাইয়ের সাক্ষাৎ করিয়ে দিয়েছিলো রোয়েন।সেদিনের পর দিনই সাজিদ জেঠুকে ঘরে নিয়ে আসে রোয়েন।
আজিজ রায়হান চিনতে পারেননা ভাইকে।অবাক নয়নে তাকিয়ে ছিলো।
রোয়েন পিতাকে চাচার কাছে নিয়ে আসে।তারপর বলে চাচ্চু আমার বাবা আপনার বড় ভাই।আজিজ রায়হানের মুখে সেকি হাসি।বড় ভাইকে পেয়ে গেছেন ওনি।এতো যেন ঈদের চাঁদ হাতে পাওয়ার অানন্দ।
আজিজ ভাইকে ওয়েলকাম করবিনা বাসায়?ভাইয়ের ডাকে ঘোর কাঁটে আজিজ রায়হানের।তারপর অপেক্ষা না করেই দুভাই একে অপরকে আলিঙ্গন করে।সবার মুখে হাসি।
সাজিদ রায়হান ভাই থেকে সরে এসে রোয়েনের দিকে তাকায়।আমার ছোট ছেলে কই রোয়েন?জিজ্ঞেস করেন সাজিদ রায়হান।
রোয়েন রেহানের কাছে যায়।রেহান বারান্দার গ্রিলে দাঁড়িয়ে আছে সোজা হয়ে।আকাশের দিকে চেয়ে আছে।ওনাকে আনলে কেন ভাইয়া?জিজ্ঞেস করে রেহান।রেহান সে বাবা আমাদের।সে আগে যেমনই ছিলো সে পাল্টে গেছে রেহান।মানসিক শান্তি নেই তার।আর ওনি আমাদের ফিরে পেতে চাচ্ছেননা।ওনি শুধু ওনার কনিষ্ঠ পুত্রকে জড়িয়ে ধরতে চান।ভাইয়া ওনাকে আমি বাবা হিসেবে মেনে নিতে পারবোনা।বলে উঠে রেহান।মুখে একছটাক হাসি ফুঁটাতে বাবা ডাকতেই পারিস।রেহান পিছনে ফিরে।তারপর ভাইকে জড়িয়ে ধরে।তুমি যখন বললে তাহলে অবশ্যই পারবো ভাইয়া।ভাইয়ের পিঠে হাত বুলায় রোয়েন।রেহানকে সরায় রোয়েন যাহ ভাই দেখা করে আয়।মাথা ঝাঁকায় রেহান হাসি মুখে তারপর আর অপেক্ষা না করে বেরিয়ে যায় রুম থেকে।
রোয়েন দরজার দিকে পিঠ দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।হঠাৎ কে যেন পিছন থেকে শক্ত করে ওর বুক জড়িয়ে ধরে পিঠে চুমু খাচ্ছে।রোয়েন নিজেড বুকের ওপর থেকে একটি হাত ধরে রুহীকে সামনে আনতে আনতে বলল মায়াবতীটা এখানে এসেছে রোম্যান্সের আশায়?রুহী চুপচাপ রোয়েনের গলা জড়িয়ে ওর বুকে মাথা রেখে চোখ বুজে আছে।রোয়েন রুহীকে নিয়ে বারান্দায় ঢুকে পড়লো।তারপর দেয়ালে রুহীকে জাপটে ধরে ওর ঠোঁট জোড়ায় চুমু দিতে শুরু করে।রুহীর গলায় কাঁধে চুমু দিতে থাকে রোয়েন।অবশেষে একে অপরকে খুব জোরে জড়িয়ে রাখে বুকে।রেহান সাজিদ রায়হানের সামনে আসে।সাজিদ রায়হান ছেলের গালে হাত রাখেন।তুমি!!তোমাকে তো আমি চিনি।বলে উঠেন সাজিদ রায়হান।
রেহান হেসে বলে সেদিন ছিনতাই কারীদের হাত থেকে বাঁচিয়ে ছিলেন।আপনি না থাকলে বাঁচতেই পারতামনা।আকদে আসেননি যে?সাজিদ রায়হান চুপ করে যান।কিছুই বলতে পারেননা।রেহান জড়িয়ে ধরে বাবাকে।আমার বিয়েতে অবশ্যই থাকবে বাবা।বলে উঠে রেহান।থাকবো আমি অবশ্যই থাকবো।ছেলেকে বাহুডোরে জড়িয়ে বলেন সাজিদ রায়হান।
আলিঙ্গন পর্ব শেষে সাজিদ রায়হান বলেন রোয়েন কই?রেহান আশেপাশে তাকায়।ভাইয়া কে তো দেখছিনা।রুপন্তি!!! ডাকে রেহান।
প্রিয়তমার ডাকে সাড়া দেয় রুপু।জি!!বলুন।
ভাইয়া কই দেখো তো।দেখলে বলো বাবা ডাকছে।বলে উঠে রেহান।
ওকে।রুপন্তী রোয়েনের খোঁজে বেরিয়ে পরে।রুহীর রুমে রোয়েনকে না পেয়ে অন্যান্য রুমে খুঁজতে থাকে।হঠাৎ রেহানের রুমে।যেতে নিবে তখনই রোয়েন বেরিয়ে আসে।জিজু আপনি এখানে?জেঠু ডাকছে আপনাকে।বলে উঠে রুপন্তি।রোয়েন চুপচাপ চলে যায় সেদিকে।রুপন্তী রুমে ঢুকে।বারান্দায় রুহীকে দেখতে পায় রুপন্তী।আপি!!!ডেকে উঠে রুপন্তী।বোনের ডাকে পাশ ফিরে রুহী।কিছু বলবি?জিজ্ঞেস করে রুহী।রুপন্তী বোনের পাশে দাঁড়ায়।তারপর বোন কে জড়িয়ে ধরে বলে এরকম বড় বোন যেন সবাই পায়।রুহী ও বলে উঠে তুই ও বেস্ট বোন।সাজিদ রায়হান বেবি কারটা রোয়েনের সামনে আনে।বেশি কিছু দিতে পারিনি।এক্সেপ্ট কর এটা। দাদার উপহার হবু নাতি নাতনীর জন্য।রোয়েনের ঠোঁটে হাসি ফুঁটে উঠলো।থ্যাংকস বাবা হাসি মুখে বলে রোয়েন।
রুহীর ঘোর কাঁটে।বাচ্চাটার কান্না এখনো ভেসে আসছে ওদের রুমে।রুহীর কপাল বেয়ে ঘাম ঝড়ছে।অজানা ভয় ওর হৃদয়ে জেঁকে বসেছে।খুব ধীরে পা জোড়া খাট থেকে নামায় রুহী।তারপর অাস্তে উঠে দাঁড়ায় ও।কোমড়ের পিছে হাত রেখে পা টিপে টিপে রুম থেকে বেরিয়ে যায় রুহী।যতোই এগুচ্ছে কান্নার শব্দ তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।রুমের আলো জ্বালানো।দেখে ভীষন অবাক হয় রুহী।রোয়েন সব রুমের লাইট অফ করে তবেই রুমে আসে।আজ কি ভুলে গেলো ও?রুমে আসতেই রুহী নীল শাড়ী পরা একজন রমনীকে দেখতে পায়।সে একটা বাচ্চাকে কোলে নিয়ে বসে আছে।বাচ্চাটা কাঁদছে।মহিলাটি খুব ফর্সা।খুব সুন্দর মানিয়ে ওনাকে নীল শাড়ীতে।কিন্তু রুহী চিনে না ওনাকে।রুহী দাঁড়িয়ে আছে।কি হচ্ছে ওর সামনে।ঘরে ওরা দুজন ছাড়া কেউ থাকেনা।তাহলেই এই মহিলা।রুহীর মাথায় অনেক চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে।মহিলা টা ফিসফিস করে বলছে ঘুমা মামনি!!রুহী ঘুমিয়ে যা মা।আনমনে রুহী বলে উঠে,মা!!!মহিলা উপরে তাকায়।রুহী খেয়াল করে ভীষন সুন্দরী ওর মা।মার মুখে মিষ্টি হাসি।রুহী এগোতে নিলে মা গায়েব হয়ে যায়।রুহী সামনে যেতে নিলেই রোয়েন পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।
রুহী!!জোরে ডাকে রোয়েন।সিড়ির সামনে কি করছো?একটু হলেই পড়ে যেতে।রুহী নিচে তাকায়।ও খেয়াল করলো ওর পা অর্ধেক সিড়ির বাহিরে।আর একটু এগোলেই,,,,,,রোয়েন!!!মাকে দেখেছি আমি।বলে কাঁদতে থাকে রুহী।রোয়েন কিছু বলেনা চুপচাপ রুহীকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে আসে।অনবরত কাঁদছে রুহী।রোয়েন অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে ঘুমপাড়িয়ে দেয় রুহীকে বুকের মাঝে।
রুহীর চিন্তায় বাঁধা পড়ে রোয়েনের ডাকে।রুহী ভাবছো কি অতো?ভ্রু কুঁচকে রুহীর সামনে বসে রোয়েন।রুহী তাকায় রোয়েনের দিকে।কালকে মাকে দেখলাম।মা কি সত্যি দেখা দিয়েছে আমাকে?জিজ্ঞেস করে রুহী।রুহী দেখো এটা তোমার ভ্রম।একটা মেয়ে নিজের প্রেগন্যান্সিতে মায়ের সাপোর্ট খুব বেশি আশা করে।আর তুমি হয়ত ওনাকে ভাবছিলে।তাই এমন হলো।বলে উঠে রোয়েন।
♦♦♦♦
রুহী ভাবে আসলেই তাই।কাল মাকে ভাবছিলো ও। মা থাকলে ভীষন খুশি হতো।কতো কিছুনা করতো ওর জন্য।কিন্তু মা তো ওকে ছেড়েই ওপারে চলে গেছেন।রোয়েন রুহীর গালে কপালে ঠোঁটে ঠোঁট বুলিয়ে ওর গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়।বিকেলে রুপন্তী এসেছিলো ছোট্ট দুটি কম্বল দুটি বালিশ,বালিশ দুটি মিকি মাউজের মাথার মতো।কোলবালিশে টমের মতো লেজ আছে।দুই বোন সেগুলো নিয়ে হাসাহাসি করে সারা বিকেল।রেহান ও আসে বেবি সোপ, অয়েল,শ্যাম্পু,চার পাঁচটা জামা ন্যাপি নিয়ে।রুপন্তী ওদের ডিনার রান্না করে দেয় জোর করে।রাতে ডিনার সেড়ে নেয় ওরা একসাথ।রেহান রুপন্তী কে নিয়ে বেরিয়ে যায়।
সারারাত গল্প করে রুহীকে বুকে নিয়ে শুয়ে পড়ে রোয়েন।রাতে রুহীর ভীষন খারাপ লাগতে শুরু করে।কাপড় ও কেমন ভিজা।পেট টা ব্যাথা করছে।পেটে হাত রাখে রুহী।দম বন্ধ হয়ে আসছে।রোয়েনের কাছ থেকে সরে আসে রুহী।ভালো লাগছেনা কিছু।এপাশ ওপাশ করতে থাকে রুহী।কিন্তু ব্যাথা কোনভাবেই নিয়ন্ত্রনে আসছেনা।যেন বেড়েই চলছে।চোখের কোনা বেয়ে অশ্রু গড়াতে শুরু করে রুহীর।বিছানা নড়ে উঠায় ঘুম ভাঙ্গে রোয়েনের।ঘুম ঘুম চোখে রুহীর দিকে তাকাতেই রোয়েন খেয়াল করে ওর মায়াবতী বিছানায় শুয়ে ব্যাথায় কুঁকড়ে যাচ্ছে।রোয়েন ভয় পেয়ে উঠে লাইট জ্বলিয়ে রুহীর কাছে এসে বসে।রুহীর কপাল ঘেমে একাকার।গলা বেয়ে পানি পড়ছে।রোয়েন কল দিয়ে এম্বুলেন্স পাঠাতে বলে রুহীকে কোলে করে নিচে চলে আসে।এম্বুলেন্স চলে আসে।এম্বুলেন্সে বসে রুহীর হাত ধরে আছে রোয়েন।ইটস ওকে রুহী!!সব ঠিক হয়ে যাবে।রোয়েনের চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে আছে।রেহানকে কল দিয়ে জানাতে ও জানায় এক্ষুনি বের হচ্ছে ওরা।রুহীকে রুমে ঢুকানো হয়।সাজ্জাদ রোয়েনের কাছে আসে।দোস্ত ইমেডিয়েটলি সিজার করাতে হবে।পানি শুকিয়ে গেছে।একটা বাবুর শরীরে নাড়ি পেঁচিয়ে গেছে।আর দুব্যাগ রক্তের ব্যাবস্থা কর।আমি অপারেশন শুরু করছি।বলে রুমে ঢুকে যায় সাজ্জাদ।রোয়েন একে ওকে কল করছে রক্তের জন্য।রেহান রুপন্তী কিংবা বাসার অন্য কেউ এখনো এসে পৌছায় নি।
কিছুক্ষন পরে রুপন্তীরা চলে আসে।রেহান রোয়েনের কাছে আসে।ভাইয়া অপারেশন শুরু হয়েছে?জিজ্ঞেস করে রেহান।হুম।সাজ্জাদ বলছিলো দুব্যাগ রক্তের কথা।রক্ত জোগাড় হয়নি।হঠাৎ রুপন্তী এসে দাঁড়ায় ওদের সামনে আপির রক্তের গ্রুপের সাথে আমার রক্তের গ্রুপ ম্যাচ করে জিজু।
বুকটা হালকা হয় রোয়েনের।রুপন্তীকে রক্ত ডোনেটের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।রায়না রাহমান ও রক্ত দিবে।
কিছুক্ষন পর বাবুর কান্না শুনতে পায় ওরা।রেহান ভাইকে জড়িয়ে ধরেছে।নার্স খুব ছোট্ট একটা বাবুকে কোলে নিয়ে এলো রোয়েনের সামনে।আপনার একটা ছেলে আরেকটা মেয়ে হয়েছে।ও মেয়ে আপনার।বলে উঠে নার্স।বাবুটা খুব কিউট।ঘুমোচ্ছে ও। রোয়েন মেয়ের হাত ধরে।রুপন্তী রেহান আর সাইফ রাহমান আর রায়না রাহমান মেয়েকে দেখছে।রোয়েন অবাক হয় আমার ছেলে কই?স্যার ওকে এক্সট্রা কেয়ারের জন্য আলাদা রুমে শিফট করা হয়েছে।বলে উঠে নার্স।এক্সট্রা কেয়ার কেন?আর আমার ওয়াইফ কেমন আছে?জিজ্ঞেস করে রোয়েন।স্যার ম্যাম ভালো আছে আর আপনি সাজ্জাদ স্যারের সাথে কথা বলুন।ওনি আপনাকে ডেকে পাঠিয়েছেন।বলে বাবুকে কোলে নিয়ে রুমে চলে যায় নার্স।
রোয়েন সাজ্জাদের কাছে আসে।
দরজা খোলার শব্দে মাথা তুলে তাকায় সাজ্জাদ।রোয়েনকে দেখে বলে আয় ভিতরে দোস্ত।সাজ্জাদের সামনে বসে রোয়েন।নার্স পাঠালো আমাকে।বলে রোয়েন।আমি ডেকে পাঠিয়েছি তোকে।রোয়েন তোর ছেলেটার ব্রেদিং প্রবলেম হচ্ছে অনেক।ও নিশ্বাস ফেলতে পারছেনা।আর ওর বাম পা টা থেকে ডান পা টা একটু ছোট।
রোয়েনের চোখের কোনা বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে।কি কারনে এমন হলো দোস্ত?জিজ্ঞেস করে রোয়েন।দোস্ত ভাবি হয়ত প্রেগন্যান্সিতে খুব দুশ্চিন্তা করেছে,কান্না কাটি করেছে।আর হরমোন প্রবলেম আছে বাবুর।বড় হলে ওর ভিতরে হরমোন টা দেয়া হলে কিছুটা ঠিক হবে পা।রোয়েনের হাতে হাত রাখে সাজ্জাদ।টেনশন করিসনা দোস্ত।ওর অন্য কোন সমস্যা নেই।এটা তো অনেকেরই আছে।এটা ওর অক্ষমতা নয় দোস্ত।বলে উঠে সাজ্জাদ।
রুহীর সাথে কখন দেখা করতে পারবো আমি?জিজ্ঞেস করে রোয়েন।কাল বিকেলে দেখা করিস।এ্যানিস্থেশিয়া পুশ করা হয়েছে।জ্ঞান ফিরতে সময় লাগবে।কাল বিকেলে কেবিনে দিবো ওনাকে।
আমার ছেলে কে দেখতে পারবো?জিজ্ঞেস করে রোয়েন।হুম,চল আমার সাথে।বলে রোয়েনকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে সাজ্জাদ।রোয়েনের মুখে মাস্ক আর একটা পরিষ্কার জামা পরানো হয়।কারন বাবুর নিশ্বাসের সাথে জার্ম না মিলে যায়।রোয়েন দাঁড়িয়ে আছে ছেলের সামনে।অনেক সুন্দর ওর ছেলেটা।বাচ্চাটা চোখ বুজে বড় নিশ্বাস নিচ্ছে।ওর নাকে দুটো পাইপ ঢুকানো।ছোট্ট পায়ে ব্যান্ডেজ করা।কাঁচের ভিতর রাখা ওর বাচ্চাটা।রোয়েন ছলছল চোখে ওর ছেলে কে দেখছে।সাজ্জাদ রোয়েনের কাঁধে হাত রাখে।টেনশন করিস না দোস্ত।সব ঠিক হয়ে যাবে।মাথা ঝাঁকায় রোয়েন।
রুপন্তী আর বাকি সবাইকে পাঠিয়ে দেয় রোয়েন।ওকে ও যেতে বলে সাজ্জাদ কিন্তু রোয়েন যায়নি।সারারাত কাঁটিয়ে দেয় রুহীর ওটির পাশের একটি কেবিনে।কেবিনে বসেনি মুহূর্তের জন্য রোয়েন।ওটির সামনে হাঁটা হাঁটি করেছে রোয়েন।
ছেলের জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে ওর।দুপুরে সাজিদ রায়হান আর আজিজ রায়হান ঢাকায় চলে আসে।তারপর বিকেলে রেহান রুপন্তী সাইফ রাহমান আর রায়না রাহমান কে নিয়ে হাসপাতালে আসে রোয়েনের কল পেয়ে। ওর ছেলে কে কেবিনে মায়ের কাছে দিবে সন্ধ্যায়।অবশ্য পাইপে করে খাওয়ানো হয়েছে আরাভ কে। রুপন্তী ভাগনীকে কোলে নিয়ে আদর করছে।গোলাপি ছোট্ট হাত পা আরাবীর।রুহীকে ভালো দেখাচ্ছেনা।চোখজোড়া একেবারে ফোলা ওর।
বাবুকে নার্স এসে চামচে করে খাইয়ে দিয়ে গেছে।সাজিদ রায়হান রুপন্তীর কাছে এসে দাঁড়ায়।মামনি বাবুকে একটু দে তো আমার কোলে।রুপন্তী বাবুকে সাজিদ রায়হানের কোলে দিলো।সাজিদ রায়হান নাতনির কপালে চুৃমু দিলো।সাইফ রাহমান ও সাজিদ রায়হানের কাছে এসে দাঁড়ায়।দুই দাদা মিলে নাতনিকে আদর করছে।রায়না রাহমান ও নাতনীকে কোলে নিয়েছে।রোয়েন রুহীর পাশে বসে ওর হাত ধরে আছে।রুহীর কোন খবর নাই।রোয়েনকে কাছে ডাকে রুহী।রোয়েন ওর কাছে এগিয়ে আসে।কি বলবে বলো?জিজ্ঞেস করে রোয়েন।
রুহী অসুস্থ গলায় বলে আমার ছেলে কই?
চলবে