Mafia Boss- Season- 3

Married To The Dark King-  Mafia Boss- Season 3 !! Part- 93

পরদিন সকালে রোয়েন লাগেজ আর ব্যাগ গুলো নিচে নামিয়ে রুমে আসে।
রুহী ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াচ্ছে।অতিরিক্ত কোঁকড়া হওয়ায় চুল গুলো সামলাতে ভীষন কষ্ট হয় ওর।
যতোই আঁচড়ায় চুল গুলো যেন আরো বেশি জট লাগে ওর।ইচ্ছে হয় কিছুক্ষন বসে চিৎকার করে কাঁদতে।
এসময় কোন কিছুই ভালো লাগেনা।চুল গুলো তো চুলনা যেন বাঁশঝাড় থুক্কু খড়ের স্তুপ,কাকের বাসা সব।
ইচ্ছে মতো চুল টেনে ছিড়ছে রুহী।রোয়েন এসে চুপচাপ চিরুনী টা হাতে নিয়ে রুহীর দিকে তাকায়।
স্বামীর চোখের নিচের কালো দাগ দেখে রুহীর বুক খাঁ খাঁ করে উঠে।কি নিয়ে এতো ভাবছে সে?
তার এতো চিন্তা কিসের?ভাবনার জগতে চলে যায় রুহী।
রোয়েন আলতো হাতে রুহীর চুল গুলোর জট ছাড়িয়ে সেগুলো কে পাঞ্চ ক্লিপে আটকে দিলো।
তারপর রুহীকে কোলে তুলে নিচে নেমে এলো ওরা।
এদিকে আজিজ রায়হান ছোট মেয়ের সাথে কন্টাক্ট করার খুব চেষ্টা কিন্তু পারছেনা।
রুপন্তী বাবার ফোন চেয়ে ও ধরতে পারছেনা।
বাবার কন্ঠ শুনলে নিজেকে যে আর ঠিক রাখতে পারবেনা ও।
রুপন্তীতো প্রতিনিয়তই প্রনয় খান আর আনিলা বেগমের ওপর নজর রাখছেন।
দিনের বেশির ভাগ সময় রুম থেকে তারা বেরই হয়না।
খুব কম বের হন খাওয়া দাওয়া কিংবা ঘুরতে যাওয়ার জন্য।
প্রনয় আর আনিলা বের হলেই রুপন্তী প্রনয় খানের রুম চেক করতো।
এমন কিছুর সন্ধান করতো যেটা প্রনয় খানকে ধ্বংস করতে সাহায্য করবে।যখনই রুমে ঢুকতো রাগে শরীর ফেঁটে যেতে চাইতো রুপন্তীর।
মানুষ এতোটা বেশরম হতে পারে তাও এই বয়সে ভাবতেই লজ্জা হয় ওর।
একেবারে নব বিবাহিত স্বামী স্ত্রীর মতো থাকছেন তারা।
কয়েকদিন থেকে রুপন্তী বেশ বুঝতে পেরেছে প্রনয় খান সহজ লোক নয়।
সে তার জিনিস পত্র খুব গোপনে রাখেন।কিন্তু জানতে হবে ওনার উইক পয়েন্ট।ও খবর ও পেয়েছে রোয়েন আর রুহী ফিরে আসছে।রেহান ও বলেছিলো আসবে।
ওর যে এখানে আর একমুহূর্ত ও ভালো লাগছেনা।
নিয়মিত অফিসে যান আজিজ রায়হান কিন্তু মনটা কোনমতেই কাজে লাগাতে পারছেননা ওনি।
আনিলার কারনে মেয়েটা ওনার থেকে দূরে।কেমন আছে মেয়েটা কি করছে কে জানে।
এদিকে আজিজ রায়হান শুনেছেন রাসেল নাকি জব ছেড়ে দেয়ার জন্য তড়িঘড়ি করছে।
রাসেল হয়ত তার সামনে আসতে চাইছেনা।অফিসে আসে কিন্তু আজিজ রায়হান কে দেখা দেয়না।
রাসেলের কাছে আজিজ রায়হানের অনেক প্রশ্ন।
রাসেল ওনার সাথে আছে ১০ বছর ধরে।
এতোবছরের কর্মজীবনে রাসেল এমন কাজ করবে সেটা উনি ভাবতে পারেননি।
বয়সের পার্থক্য বেশি হলে ও রাসেলের শিখার কৌতুহুল ছিলো অনেক।
নতুন নতুন কিছু শিখার জন্য উৎসুক হয়ে থাকতো ও।
মন টা ভীষন খারাপ হয়ে যায় আজিজ রায়হানের।হঠাৎ রিংটোন বেজে উঠায় ভাবনার জগৎ থেকে ফিরে আসেন আজিজ রায়হান।
ঝটপট ফোনটা নাতে নিয়ে কানে রাখেন ওনি।
বাংলাদেশে পৌছে আজিজ রায়হানের বাসায় পৌছে যায় রুহী আর রোয়েন।
জার্নিতে প্রচুর কষ্ট হয়েছে রুহীর।না পেরেছে ঠিকমতো বসতে না পেরেছে পা রাখতে।কিছুক্ষন হেঁটেছে আবার বসেছে।
এ অবস্থায় কতক্ষন জার্নি সহ্য করা যায়?ভেবে পায়না রুহী।
ঘরে ফিরতে ফিরতেই রোয়েনের কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছিলো রুহী।
রুহীকে ঘরে এনে ওর রুমে শুইয়ে দেয় রোয়েন।
রায়না রাহমান ছেলে আর রুহীর জন্য রান্না বান্না করেছেন।
রোয়েন জানালো আজিজ রায়হান ফিরে এলে আর রুহীর ঘুম ভাঙ্গলে সবাই একসাথে খেয়ে নেবে।
রোয়েন সাইফ রাহমান আর রায়না রাহমানের সাথে হালকা পাতলা কথা বলে ফ্রেশ হতে চলে যায়।
নিজের ও আজ বেশ টায়ার্ড লাগছে আজ।কখনোই এমন টা হয়নি ওর।রেহান জানিয়েছে কাল সকালেই বাংলাদেশে পৌছাবে ও।
রুহীর পাশে গা এলিয়ে কথা গুলো ভাবছিলো রোয়েন।রুহীর শরীর উঠানামা করছে।
বেশ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন রুহী।মাস হিসেবে পেট টা ভালোই বড় দেখাচ্ছে।
গাল জোড়া ও ফোলা ফোলা হয়েছে।খুব আদর করতে মন চায় মায়াবতীকে।
♦♦♦♦
রুহীর গালে হাত রাখে রোয়েন।তারপর ওর কপালে ঠোঁট বুলিয়ে রুহীকে একটু টেনে ওর বুকে শুইয়ে দেয়।
সাইফ রাহমানের কল পাওয়ার পর বের হতে নিবে তখনই আজিজ রায়হানের কল আসে চেয়ারম্যানের সাথে মিটিং এর জন্য।
দ্রুত ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়ে চেয়ারম্যানের কেবিনের উদ্দেশ্যে।
ঘন্টা খানেক পর রোয়েনের ঘুম ভেঙ্গে যায়।
রুহী এখনো বেঘোরে ঘুমুচ্ছে।অনেক্ষন না খেয়ে আছে রুহী।
রুহীর হাত ধরে ডেকে উঠে রোয়েন
-রুহী!!এই রুহী উঠো।
-উমমম!!!!!
-কিছু খেতে হবে।উঠো আগে পরে ঘুমিও।বলে উঠে রোয়েন।
-উহুম।কিছুটা বিরক্তি ভঙ্গিতে বলে উঠে রুহী।
-রুহী!!!!দেখো না খেলে দূর্বল হয়ে যাবে।বলে উঠে রোয়েন।
-পরে।প্লিজ ডেকোনা। মাথা ব্যাথা করছে প্রচুর।বলেই অপর পাশ ফিরে শোয় রুহী।
রোয়েন এবার রুহীকে উঠিয়ে বসায়।
-অনেক হয়েছে আর না।একটু খেতে হবে।শক্ত গলায় বলে রোয়েন।
তারপর রুহীকে ফ্রেশ করিয়ে রুমে খাবার নিয়ে আসে রোয়েন।
এদিকে ঘুরে এসেছেন আনিলা বেগম আর তার প্রেমিক পুরুষ প্রনয় খান।জম্পেশ খেয়েছেন দুজনে।
মেয়েকে কাছে এনে ও বিন্দু মাত্র ভালোবাসা প্রকাশ করছোননা প্রনয় খান মেয়ের প্রতি।সময় পেলেই আনিলা বেগমের সাথে রোম্যন্স এ ব্যাস্ত হচ্ছেন ওনি।
ঘরে ফিরতেই রোজি নামের একটি মেয়েকে বসে থাকতে দেখেন আনিলা বেগম আর প্রনয় খান।
মেয়েটির থেকে চোখ সরিয়ে আনিলার দিকে তাকিয়ে ঢোক গিলেন প্রনয় খান।পরমুহূর্তেই নিজেকে সামলে নেন ওনি।
-ও কে প্রনয় জিজ্ঞেস করে উঠেন আনিলা বেগম।
-আমার বিজনেস পার্টনার রোজি ব্যানার্জী।বলে উঠেন প্রনয়।
-মেয়েটি হেসে প্রনয় খানের কাছে এসে দাঁড়ায়।তারপর বলে উঠে স্যার একটা মিটিং ছিলো আজ ভুলে গেছেন?
-আরে নাহ রোজি ভুলিনি।রুমে গিয়ে বসো আমি আসছি।
রুমের কথা বলতেই ক্ষেপে যান আনিলা বেগম।
রাগী গলায় বলে উঠেন আনিলা বেগম,
-রুমে কেন?এখানে হতে পারেনা মিটিং?
-আরে রুমে আমার কাগজ পত্র ডকুমেন্টেস।পা ব্যাথা করছে।এতোবার উঠানামা করতে পারছিনা।বিশ্বাস করোনা আমাকে?বলে উঠেন প্রনয় খান।
-ওকে যাও মিটিং করো।বলেই টিভি দেখতে বসে যান আনিলা বেগম।
প্রনয় খান আর রোজি সিড়ি ভেঙ্গে উপরে চলে যায়।রুমের সামনে আসতেই রোজিকে পিছন থেকে জড়িয়ে জোরে বুকে চেঁপে ধরেন প্রনয় খান।তারপর ওর জামার চেইন খুলে নেন।
-ধীরে প্রনয়।কেউ দেখে ফেলবে।নেশা জড়ানো কন্ঠে বলে রোজি।
-ওহ ভুলেই গেছিলাম।ফিসফিসিয়ে বলেন প্রনয় খান।
তারপর তারা রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয়।
আজিজ রায়হান ফিরে এসে সাইফ রাহমান আর রোয়েন কে দেখতে পায়।রুহীকে খাইয়ে শুইয়ে দিয়ে সাইফ রাহমানের সাথে কথা বলছিলো রোয়েন।
আজিজ রায়হান এসে ভাতিজার পাশে বসে।
-ভালো আছো রোয়েন?জিজ্ঞেস করেন আজিজ রায়হান।
-জি চাচ্চু।অফিসের কি খবর?বলে উঠে রোয়েন।
-ভালো চলছে।মলিন কন্ঠে বলেন আজিজ রায়হান।
-আপনি গিয়ে ফ্রেশ হন।খেয়ে কথা বলা যাবে।বলে উঠে রোয়েন।
-আজিজ রায়হান হেসে ফ্রেশ হতে চলে যান।
খাবার শেষে বারান্দায় এসে দাঁড়ায় আজিজ রায়হান আর রোয়েন।
আজিজ রায়হান তার জব চলে যাওয়া থেকে শুরু করে জব আবার ফিরে পাওয়া রুপন্তীর চলে যাওয়া বলতে থাকেন রোয়েনের কাছে।
রোয়েন বড় নিশ্বাস নিয়ে চাচার কাঁধে হাত রেখে কিছু বলতে যাবে তখনই কাঁচ ভাঙ্গার শব্দে দুজনেই পিছনে ফিরে তাকায়।
চলবে