Married To The Dark King- Mafia Boss- Season 3 !! Part- 8
বসে বসে গুন গুন করে গান করছিলো রুহী।স্লিভ লেস হাতার কালো ফ্রক সেই সাথে মিলিয়ে ছোট্ট কানের টপ আর ঠোঁটে হালকা লিপগ্লস সব মিলিয়ে একেবারেই ডার্ক প্রিন্সেস লাগছে রোয়েনের মায়াবতীকে।খোলা ফর্সা হাত জোড়া কে ভাঁজ করা দুই হাঁটুর ওপর রেখে জানালার দিকে ফিরে চোখ বুজে গুনগুন করে গান করছিলো রুহী।দরজা খোলার আওয়াজে গুনগুন বন্ধ হলে ও চোখ খুলল না রুহী।রুমে ঢুকে চারপাশে একবার চোখ ঘুরিয়ে নিলো রোয়েন।রুমটাকে বেশ সাজিয়েছে রুহী।পুরো খাটটায় পুতুল রাখা।সব গুলোই রোয়েনের দেয়া।তাছাড়া ঘরটা ও গোছানো।পুরো রুমটাকে দেখে রুহীর দিকে তাকালো রোয়েন।রুহী!!!ডেকে উঠলো রোয়েন।রুহীর সেদিকে মন নেই।নিজের স্বপ্নিল দুনিয়ায় হারিয়ে গেছে ও।আরো দুতিনবার ডাকলো রোয়েন।কিন্তু রুহী ইচ্ছে করেই কোন কথা কানেই নিচ্ছেনা।রোয়েন এসে ওর গাল টেনে ধরলো।আহহহ!!!!!রোয়েনের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে রুহী।চোখ নিচে!!!! রাগী গলায় বলল রোয়েন।কিন্তু কি মেয়েরে বাবা রোয়েনের চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে আছে আর মনে মনে বদ মাফিয়াটার গুষ্টিউদ্ধার করছে।
বকাবকি না করে নিজের স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে আসলে খুশি হবো।দাঁতে দাঁত চেপে বলল রোয়েন।মেয়েটা যেভাবে হাঁটু ভাজ করে আছে দেখতে একদমই ভালো লাগছেনা।তারওপর একটা লোক সামনে থাকলে সুন্দর ভাবে বসতে হয়।কিন্তু এই মেয়েটা!! আস্তাগফিরুল্লা রোয়েনের সামনে এভাবে বসে আছে যেন রোয়েনের কোন অস্তিত্বই নাই।স্বাভাবিক অবস্থানের কথায় খানিকটা অবাক হলো রুহী।মানে কি বলতে চান?জিজ্ঞেস করে উঠলো রুহী।রোয়েন ভ্রু নাচিয়ে ইশারা করতেই রুহী বুঝে ঠিকমতো বসলো।
লিসেন আমার কাল সকাল কুয়াকাটা যাবো। সো প্যাকিং রেডি চাই।তোমাকে একটা ব্যাগ দিবো।সেখানে নিজের দরকার জামা কাপড় রাখবে গুছিয়ে।রুহী কিছু বলতে গেলে রোয়েন ধমকের সুরে বলে উঠলো i don’t want any arguments. রুহী রাগী চোখে রোয়েনের দিকে তাকিয়ে আছে।সেটার তোয়াক্কা না করে বেরিয়ে গেলো রোয়েন।আজিব!!! আমি কি তার চাকর?যা বলবে তাই শুনতে হবে?যাবো না আমি।যা করার করুক।কিছুক্ষন পর রোয়েন এসে একটা বড় ব্যাগ আর দুতিনটে শপিং ব্যাগ দিয়ে গেলো।এগুলো গুছিয়ে ব্যাগে ঢুকাবে।সন্ধ্যায় এসে চেক করবো আমি।দাঁতে দাঁত চেপে কথা গুলো বলে বেরিয়ে গেলো রোয়েন।
রুহী প্যাকেট গুলোকে সরিয়ে বসে রইলো।সে নিজের সিদ্ধান্তে অটল। যাবেনা ও।
দুপুরে রুহীকে খাইয়ে দিয়ে নিজে খেয়ে নিলো রোয়েন।কাজের মহিলা কে রুহীর কাছে পাঠিয়ে বাহিরে চলে গেলো ও।সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে রুহীর রুমে ঢুকে পড়লো রোয়েন।শপিং ব্যাগ আর বড় ব্যাগটা আগের মতো পড়ে আছে।রুহী কানে হেডফোন গুঁজে দিয়ে শুয়ে চোখ বুজে আছে।ভীষন রাগ হলো রোয়েনের।ওর কথা অমান্য করার সাহস কই পায় মেয়েটা?দ্রুত এগিয়ে এসে রুহীর কান থেকে টান দিয়ে হেডফোনটা খুলে নিলো রোয়েন।সাথে সাথে উঠে বসে পড়লো রুহী।আমার হেড ফোন নিয়েছেন কেন?এক্ষুনি দিন।বলে উঠলো রুহী।কাপড় গুছাওনি কেন?দাঁতে দাঁত চেপে বলল রোয়েন।
গুছাবোনা। হেডফোন দেন।বলে উঠলো রুহী।আগে আমার কথার জবাব দাও।বলেছিলাম সন্ধ্যায় এসে সব গুছানো দেখতে চাই।গুছাওনি কেন?রাগী গলায় বলে উঠলো রোয়েন।রুহীর সেদিকে মন নেই।হেডফোনটা নেয়ার জন্য উঠে পড়ে লাগলো।রোয়েনের হাত থেকে হেডফোন নেয়ার চেষ্টা করতে থাকলো।এক পর্যায়ে রুহীর কোমড় ধরে নিজের ওপর ফেললো রোয়েন।দুজনে খাটের ওপর।রুহী উঠার চেষ্টা করতেই রোয়েন আরো জোরে জাপটে ধরলো রুহীকে নিজের সাথে।রুহীর খয়েরী চুলের ফাঁকে সাদা কাঁধ গলা রোয়েনকে মাতাল করছে রুহীর নেশায়।রুহীর চুলগুলো হাতের মুঠে নিয়ে ওর গলায় ঠোটছোঁয়ালো রোয়েন।রুহী চোখ বড় করে নিলো।কেন জানি এই ছোঁয়া গুলো ওকে আলাদা প্রশান্তি এনে দেয়।তাও নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করতে করতে একসময় চোখ বুজে রোয়েনের ঠোঁটের স্পর্শগুলো উপভোগ করতে থাকে রুহী।রোয়েনের কালো শার্টের হাতা দুহাতে খামচে ধরলো রুহী।বড় বড় নিশ্বাস নিয়ে আনন্দ গুলো কে জানান দিচ্ছে রুহী।রুহীর নিশ্বাস গুলো রোয়েনকে আরো পাগল করে দিচ্ছে।বেশ কিছুক্ষন পর রুহীকে নামিয়ে ওর ওপর উঠে আবার ওর গলায় মুখ ডুবালো রোয়েন।
হঠাৎ ফোনের শব্দে ঘোর কাঁটলো দুজনের।।মাথা উঠিয়ে ফোন হাতে নিয়ে দেখলো রোয়েন।এতক্ষন সুখের সাগরে ভাসছিলো রুহী।হঠাৎ ছোঁয়া গুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চোখ খুলল রুহী।রোয়েনকে নিজের ওপর দেখে ভীষন রাগ হলো রুহীর। আর নিজের চুল ছিড়তে মন চাইছিলো ওর।কিভাবে পারলো লোকটার এতো কাছে আসতে? ছিঃ!!!নাক মুখ শিটকে রোয়েনকে ধাক্কা দিয়ে সরালো রুহী।ফোন রেখে শপিংব্যাগের জামাগুলো কে বের করলো রোয়েন।কিছু টপস, স্কার্ট,জিন্স প্যান্ট আছে ব্যাগ গুলোয়।
নিজ হাতে রুহীর কাপড় গুলো গুছিয়ে ব্যাগে ভরে নিলো রোয়েন।বাকি কাপড় ঢুকিয়ে নাও।যদি না করেছো তাহলে আমার থেকে ও খারাপ কেঘ হবেনা।দাঁতে দাঁত চেপে বলল রোয়েন।
রুহী কিছু না বলে মাথা নিচু করে আছে।রোয়েন চলে যেতেই অনিচ্ছাবশত কাপড় গুছিয়ে শুয়ে পড়ে রুহী।রাতে খাবার নিয়ে রুহীর রুমে এসে রুহীকে ঘুমন্ত অবস্থায় পেলো রোয়েন।মেয়েটা না খেয়ে কি করে ঘুমোতে পারে?সেদিন রাতে রুহীকে জোর করে ঘুম থেকে উঠিয়ে খাইয়ে দিয়ে আবার ঘুম পাড়িয়ে নিজের রুমে চলে যায় রোয়েন।
পরদিন সকালে রুহীকে নিয়ে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা হয় রোয়েন।আরো বেশ কয়েকজন বডিগার্ড ও রোয়েনের লোকরাও ছিলো ওদের সাথে আলাদা গাড়িতে।রুহী আর রোয়েন এক গাড়িতে বসেছে।অন্যদিকে ফিরে রাগ করে বসে আছে রুহী।
পুরো জার্নিতে রুহী একটা টু শব্দ ও করেনি।রোয়েন ও তেমন কথা বলেনি।
কুয়াকাটা পৌছে রোয়েনের নিজের হোটেল রুমে চলে আসে ওরা।রুম একটাই তবে পাশাপাশি দুটো সিঙ্গেল খাট।রুমে ঢুকে পুরো ঘরে চোখ বুলিয়ে নিলো রুহী।বেশ সুন্দর গুছানো রুমটি।রোয়েন রুহীর আর নিজের ব্যাগ এক সাইডে রেখে দিলো।
রুহীর ঘোর কাঁটলো রোয়েনের ডাকে।ফ্রেশ হয়ে নাও। খাবার পাঠাতে বলছি গোসল সেরে নাও।গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলো রোয়েন।কথাটা শেষ করে রুহীর দিকে তাকাতেই বুকখানিতে যেন ঠান্ডা বাতাসের শিহরন বয়ে গেলো।কালো স্যালোয়ার কামিজ তার সাথে ম্যাচিং করে ছোট্ট পাথরের কানের দুল,ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক সব মিলিয়ে মায়াবতী যেন আরো মায়াময় হয়ে উঠেছে।রোয়েন একনজরে তার ডার্ক প্রিন্সেস কে দেখছে আর ওর দিকে এক পা একপা করে এগুচ্ছে।
হোটেল টা সমুদ্রের দিকে ফিরানো।তাই এখানে দাঁড়িয়ে বিশাল সমুদ্রটিকে মন ভরে দেখা যায়।রুহী বারান্দায় দাড়িয়ে সমুদ্রের পাগলকরা ঢেউ গুলো কে দেখে মনে মনে পুলকিত হচ্ছে।
স্বপ্নের মতো লাগছে ওর পুরো ব্যাপারটিকে।হঠাৎ হাত জোড়ায় কারোর হাতের ছোঁয়া পেলো রুহী।হাত দুটি রুহীর হাত বেয়ে বেয়ে উপরে উঠছে।কিছু বুঝে উঠতে পারছেনা রুহী।ওর নিশ্বাস গুলো ঘন থেকে ঘনতর হচ্ছে।কিছুক্ষনের মাঝে হাত গুলো ওর কেট জড়িয়ে ধরলো।রুহীর চুলের মাঝে মুখ ডুবিয়ে নিয়ে রুহীর মাতাল করা ঘ্রান নিচ্ছে রোয়েন।রুহীর কাঁধে আলতো করে ঠোঁট ছুইয়ে দিতেই রোয়েনের মাঝে কেমন ঝড় শুরু হয়ে গেলো কাউকে একান্ত নিজের করে পাবার।কিন্তু এটা সম্ভব না।ও নিজের রুহীকে চায়।যে রোয়েনকে ভালবেসে তার বুকের মাঝে আগলে রাখতে পারবে।
রোয়েন সরে আসতেই রুহী খানিকটা নড়ে উঠলো।কি হচ্ছিলো এতক্ষন?যাই হচ্ছিলো রুহী সুখের সাগরে ভেসে বেড়াচ্ছিলো।আরো কিছুক্ষন বেড়াতে পারলে মন্দ হতো না।রুহী চুপচাপ ফ্রেশ হতে চলে গেলো।।রুহী ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসতেই রোয়েন ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লো।
এভাবে বেশখানিকটা সময় পার হয়ে গেলো।বিকেলে হালকা খেয়ে রুহীকে নিয়ে সি বিচের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লো রোয়েন।রুহী পানিতে পা একটু ভিজিয়ে আবার দৌড়ে পিছে চলে আসে।এটাই ওর একটা খেলার মতো।রোয়েন রুহীর বাচ্চামো গুলো দেখছে।খারাপ লাগছেনা ওর বেশ ভালোই লাগছে।সেই মুহূর্তে রোয়েন রুহীর কিছু কিউট চঞ্চলতায় ভরা ছবি নিজের ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দী করতে থাকে।রুহী নিজের খেলায় মত্ত।ছবি তোলার মাঝেই মাথায় প্রচন্ড জোরে আঘাত পায় রোয়েন।পুরো পৃথিবীটা যেন ঘুরে গেলো ওর।সেভাবেই পিছনে ফিরে রোয়েন।
খেলার মাঝে কিছু শব্দ পেয়ে পিছনে ফিরলো রুহী।কতগুলো লোক রোয়েনকে হকিস্টিক দিয়ে বেধড়ম পেটাচ্ছে।রোয়েন ওদের মারতে যেয়ে ও পারছেনা।ওর পুরো শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে।রুহী সেদিকে দৌড় দিলো।প্লিজ ছাড়ুন ওনাকে।মারবেননা আর।
চলবে