Mafia Boss- Season- 3

Married To The Dark King-  Mafia Boss- Season 3 !! Part- 63

সেদিন রুহী মিতালীর নম্বর ব্লক লিস্টে দিয়ে দিলো।মন টা ভীষন খারাপ হয়ে যায় রুহীর।কাকে বিশ্বাস করবে মানুষ?এতো বছরের ফ্রেন্ডশিপে মিতালী কে চিনতে পারেনি রুহী।এতো সুন্দর চেহারটার পিছে এতো বিষাক্ত সাপ লুকিয়ে আছে কে জানতো?সবসময় একসাথে শপিং করা থেকে শুরু করে ঘুরতে যাওয়া পড়াশুনা একসাথেই হতো।মিতালী কখনো রুহীকে ফ্রেন্ড ভাবেইনি।সব ওর নাটক ছিলো।ও তো নিজে ও মেয়ে তাহলে কি করে পারলো আমার সাথে এমনটা করতে?ভাবতেই বুকটা খালি হয়ে যায় রুহীর।
হাত দিয়ে চোখের কোনা বেয়ে গড়িয়ে পড়া অশ্রু মুছে নিলো রুহী।হঠাৎ কাঁধে কারোর নরম ঠোঁটের ছোঁয়া পেতেই কিছুটা কেঁপে উঠে রুহী।দুটো হাত রুহীর কোমড় ছাড়িয়ে পেট জড়িয়ে ধরলো।রুহীর গালে চুমু দিয়ে রুহীকে সামনে ফিরালো রোয়েন।আবারো ওসব নিয়ে বসে পড়লে?রাগী গলায় বলল রোয়েন।
কি করবো বলো?আমার বেস্টফ্রেন্ড ছিলো ও বলেই কাঁদতে লাগলো রুহী।
রুহী এতো নরম হলে চলবে না।মন এতো নরম হলে চলবেনা।মানুষকে বিশ্বাস করবা তবে অন্ধ বিশ্বাস না।মানুষ তোমার দূর্বলতার সুযোগ নিতে এক পাও পিছুবেনা।তোমার ক্ষতি করতে ওরা সর্বদা প্রস্তুত থাকবে।তোমার ঘাড়ে চেপে বসবে। তোমাকে শক্ত হতে হবে।অন্তত নিজের জন্য শক্ত হতে হবে।আমার শত্রুর অভাব নাই।যেকোন সময় কিছু হয়ে যেতেই পারে।রুহী ভয় পেয়ে রোয়েনের ঠোঁট চেঁপে ধরলো।প্লিজ থামো কাঁদতে কাঁদতে বলল রুহী।রোয়েন নিজের ঠোঁট থেকে রুহীর হাত সরালো।দেখো সত্যিটাকে মেনে নিতে শিখো।যদি তুমি এমনই থাকো তাহলে কখনোই আমরা নিশ্চিন্তে বাঁচতে পারবোনা।একে অপরকে হারানোর ভয় লেগেই থাকবে।রোয়েনকে জড়িয়ে ধরলো রুহী তোমাকে হারাতে পারবোনা।কাঁদতে কাঁদতে বলল রুহী।
রুহীকে সামনে আনলো রোয়েন।তোমাকে শক্ত হতে হবে আর একজন থেকে দূরে থাকতে হবে।বলে উঠলো রোয়েন।
,
,
,
,
,
ক ক কে?কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করলো রুহী।দেখো তুমি আমাকে বিশ্বাস করবানা যা বলবো এখন।বাট বিশ্বাস করতে হবে রুহী।বলে উঠলো রোয়েন।তোমাকে কেন বিশ্বাস করবো না বলো?বলো না কে সে?কার থেকে দূরে থাকবো বলো?তুমি বললে তার সাথে আমি জীবন ও কথা বলবো না।তার মুখ ও দেখবোনা আমি।এখন বলো কে সে?জিজ্ঞেস করলো রুহী।রুহীকে খাটে বসালো রোয়েন।রুহীর দুকাঁধে হাত রাখলো রোয়েন।
তোমাকে শান্ত থাকতে হবে রুহী।বলে উঠলো রোয়েন।
রুহী মাথা নাড়লো।সে তোমার মা রুহী।বলে উঠলো রোয়েন।আমার মা মানে?অাঁৎকে উঠলো রুহী।তোমার মা থেকে তোমাকে সরে থাকতে হবে।বলে উঠলো রোয়েন।না কখনো না।কি বলছো এসব?মা কেন এমন করবে?ওনি আমার মা।মায়ের থেকে কেন সরে থাকবো? পাগল তুমি?চিৎকার করতে লাগলো রুহী।রুহী ওনার কাছে এসব করার পিছনে যথেষ্ঠ কারন আছে।ফার্স্ট অফ অল ওনি তোমার নিজের মা না,আর প্রথম থেকে চিন্তা করো রুহী।তোমার প্রথমবার কিডন্যাপ হওয়ার পর থেকে সব মনে করো।সেদিন তোমাকে পালিয়ে যাওয়ার প্ল্যান কে দিয়েছিলো?তোমার মা।মার্কেটের সামনে দাঁড়ানোর কথা কে বলেছিলো? তোমার মা।মার্কেটে তোমার মায়ের বদলে স্করপিয়ন রা এসেছিলো। তোমার মা কই ছিলো তখন?তোমাকে স্করপিয়নদের কবল থেকে আনার পর আমার কাছে রাখার কথা বললে তোমার মা রাজি ছিলো।শুধু রাজি হয়নি তোমার বাবা।কিন্তু পর দিন ঠিকই তোমাকে পালিয়ে যেতে বলল তোমার মা।কেন?চিন্তা করো।কুয়াকাটা যাওয়ার কথা তোমার মাকে বলেছিলা। মনে আছে?সেখানে ও স্করপিয়নরা পৌছে গেলো।এখন তুমি বলো এতো গুলো কাহিনী Coincidence হতে পারে?বলো রুহী।মুখ শক্ত করে একনাগাড়ে কথা গুলো বলে গেলো রোয়েন।
রুহী নিচে বসে পড়লো।কাঁদছে রুহী।না মা এমন করেনি।সেদিন মার্কেটে মা হয়ত কোন প্রবলেমের কারনে পৌছাতে পারেনি।কাঁদতে কাঁদতে বলল রুহী।
রোয়েন রুহীর সামনে বসে ওর গাল চেপে ধরলো।আগের দিন তোমার কিডন্যাপ হয়ে যাওয়া পর দিন তোমাকে পালাতে বলা সেটা একটা আসল মা কখনোই পারতোনা রুহী।কারন মা ভাবতো আমার মেয়েকে একা বের হতে দেয়া যাবেইনা।কারন তোমার জীবন ঝুঁকিপূর্ণ ছিলো তখন।রুহী সব ভাবো।বলে উঠলো রোয়েন।
,
,
,
,
,
না না এমন না আমার মা।ওনিই আমার মা আমিই ওনার মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলল রুহী।জানি বিশ্বাস করবানা তুমি।বাট নিজের বাবাকে তো বিশ্বাস করবা।ধরো কথা বলো তোমার বাবার সাথে।রোয়েন ফোনে আজিজ রায়হানের নম্বরে ডায়াল করলো।ফোন রিসিভ হতেই রুহীর কানে ফোন দিলো রোয়েন।
অপর পাশ থেকে আজিজ রায়হান কথা বলে উঠলেন।হ্যালো স্যার বলেন।
বাবা আমি বলে কেঁদে দিলো রুহী।
রুহী কাঁদছিস কেন মা?চিন্তিত হয়ে পড়লো আজিজ রায়হান।
বাবা একটা সত্যি কথা বলবা?কাঁদছে রুহী।
জি মা বল।বলে উঠলেন আজিজ রায়হান।
আমি কে বাবা?জিজ্ঞেস করলো রুহী।
এসব কি প্রশ্ন রুহী?তুই আমার মেয়ে।বলে উঠলেন আজিজ রায়হান।
আমার মাকে বাবা?বলে উঠলো রুহী।
তোর মা!!এসব কি বলছিস রুহী?কিছু বুঝতে পারছিনা।
বাবা প্লিজ বলো আমার কিডন্যাপিং এর পিছনে কে দায়ী?কাঁদতে কাঁদতে বলল রুহী।
রুহী স্যার কই?জিজ্ঞেস করলেন আজিজ রায়হান।
আমার সামনে।বলে উঠলো রুহী।
ওনি তোকে সব বলেছে?জিজ্ঞেস করলেন আজিজ রায়হান।
জি বাবা। কিন্তু সব মিথ্যা মা এমন করবেনা তাইনা বাবা?বলল রুহী।
রুহী ওনি যা বলেছে সব সত্যি।আনিলাই এসব করিয়েছে।বাবা তুমি ও সেই একই মিথ্যা কথা গুলো বলছো কেন?
রুহী আজ তোকে সব জানাবো।আজিজ রায়হান সব বলতে লাগলেন।রুবীনা ওর ওনার বিয়ে রুহীর জন্ম,রুবীনার মৃত্যু, আনিলার সাথে ওনার বিয়ে রুহীর কিডন্যাপিং, রুপন্তীকে আনিলা বেগমের অত্যাচার,রুপন্তীর নম্বর ইউজ করে স্করপিয়নদের সাথে আলাপ সব খুলে বললেন আজিজ রায়হান।রুহীর কানে কিছুই ঢুকছেনা।যেন পাথর হয়ে গেছে ও।
,
,
,
,
,
রুহী শুনতে পাচ্ছিস মা?রুহী!!!!ডাকতে লাগলেন আজিজ রায়হান।
জি বাবা শুনছি।রুহীর চোখ জোড়া আর ভিজে আসছেনা।
কিছু বল মা।বলে উঠলেন আজিজ রায়হান।
বাবা কি বলবো।মায়ের সম্পর্কের ওপর থেকে বিশ্বাস উঠে গেছে।দুনিয়টাই বিশ্বাসের অনুপযুক্ত আজ।বেঁচে আছি আমরা সবাই এই মিথ্যা দুনিয়ায় মিথ্যা সুখ নিয়ে বেঁচে আছি মিথ্যা মানুষ গুলো কে আপন ভেবে বেঁচে আছি।এই দুনিয়াটাই আসলে কিছুনা।ক্ষনিকের সুখ মাত্র।শুকনো গলায় বলল রুহী।
মেয়ের কথায় কলিজা ফেঁটে যাচ্ছে আজিজ রায়হানের।মুহূর্তের মাঝে মেয়েটা কেমন হয়ে গেলো।ভাবতে থাকে আজিজ রায়হান।
বাবা মায়ের সাথে আমি ও কেন মারা গেলাম না?বলে উঠলো রুহী।সাথে সাথে রোয়েন ফোন টা কেড়ে নিলো।রুহী ফোনের দিকে চেয়ে আছে আর রোয়েন রাগী চোখে রুহীকে দেখছে।রোয়েন রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে কানে ফোন রাখলো আপনার সাথে পরে কথা হচ্ছে।বায়।ফোন কেঁটে দিলো রোয়েন।
রুহীকে কিছু বলতে যাবে তখনই রুহী উঠে রোয়েনের সামনে থেকে চলে গেলো।আজিজ রায়হান ফোন পকেটে ঢুকিয়ে পিছনে তাকাতেই চমকে উঠলো।সাইফ রহমান আর রেহান ভ্রু কুঁচকে ওনার দিকে চেয়ে আছে।
আজিজ যা বলছিলে সব সত্যি?জিজ্ঞেস করলেন সাইফ রহমান।
মাথা নোয়ালো আজিজ রায়হান জি ভাই।
সাইফ রহমান খাটে বসে পড়লেন।রেহান ও সাইফ রহমানকে শান্ত করার চেষ্টা করছে।আমি জানতাম আনিলা অনেক লোভী আর স্বার্থপর কিন্তু এমন নোংরামি করবে সেটা ভাবতেই পারছিনা।বলে উঠলেন সাইফ রহমান।আমার রুবীনা বেঁচে থাকলে রুহীর সাথে এমন কিছু হতোনা।।মন খারাপ করে বললেন সাইফ রহমান।ফুপি এটা কি করে পারলো রুহীর সাথে?নিজের মেয়ে না হোক বোনের মেয়ে তো।রুহীকে এতো বছর বড় করলেন এতোটুকুকি মায়া হয়নি ওনার?অভিমানী গলায় বলতে লাগলো রেহান।
সাইফ রহমান দুহাতে মুখ ঢেকে বসে রইলেন।মেয়েটা সেখানে কেমন বোধ করছে কে জানে?নিশ্চয় কাঁদছে।বলতে লাগলেন সাইফ রহমান।
নাহ ও কাঁদছিলোনা।কেমন জানি কথা বলছিলো রুহী।নিজেকে শক্ত করে রেখছিলো।বলে উঠলেন আজিজ রায়হান।
,
,
,
,
,
সেদিনের পর থেকে রুহী নিজেকে গুঁটিয়ে ফেলেছে।চুপচাপ থাকে সারক্ষন।খেতে চায়না।রোয়েন জোর করে খাওয়ায়।সারাক্ষন কি যেন চিন্তা করে বসে।রোয়েন কিছু জিজ্ঞেস করলে হু হা করে উত্তর দেয়।কলেজে গিয়ে ও তেমন একটা কথা বলেনা।বাসার কারোর সাথে কথা বলেনা।রোয়েন ভালোবেসে কাছে টানতে চাইলে ও সাড়া দেয়না।কান্না ও করছেনা রুহী।এভাবে একসপ্তাহ চলে যায়।রোয়েনের তো সহ্য হচ্ছেনা রুহীর এমন উদাসীন ভাব।রুহীর হাত টেনে খাট থেকে উঠিয়ে দাঁড় করালো।হাতে একটা লম্বা কোট ধরিয়ে রোয়েন বলল পরে নাও।রুহী চুপচাপ কোটটা পরে নিলো।রোয়েন রুহীর চুল গুলো ঝুঁটি করে দিলো।রুহী কোন কথাই বলছেনা।রোয়েন রুহীর হাত ধরে বাহিরে নিয়ে এলো।গাড়িতে করে রুহীকে টেমস নদীর পাড়ে নিয়ে এলো।অনেকেই এসেছে।লন্ডনের একটি টুরিস্ট স্পট এটি।ভীষন সুন্দর জায়গাটা।রুহীকে জড়িয়ে ধরে হাঁটছে রোয়েন।রুহী আগের মতোই হু হা করে জবাব দিচ্ছে।রোয়েন রেগে রুহীকে নিজের সামনে আনলো।এই মেয়ে তোমার সমস্যা কি?এমন করছো কেন?কি হয়েছে সেটা বলো না কেন?তোমার ভালো লাগছে না খারাপ লাগছে জানা বা তো।চিৎকার করে উঠলো রোয়েন।রুহী রোয়েনকে সরিয়ে সামনে যেতে নিবে রোয়েন রুহীর কাঁধ চেঁপে ধরলো।রুহী রোয়েনের দিকে তাকাচ্ছেনা।রোয়েন জোর করে রুহীর ঠোঁটে ঠোঁট বসালো।রুহীর হাত জোড়া রোয়েনকে জড়িয়ে ধরছেনা।রুহীর রেসপন্স না পেয়ে সরে এলো রোয়েন।তুমি এমন কয়দি থাকতে পারো দেখবো আমি।রাগী গলায় বলে রুহীর হাত ধরে হাঁটতে লাগলো রোয়েন।সামনে নৌকা পেয়ে রুহীকে নিয়ে নৌকায় উঠে গেলো রোয়েন।রুহীর মুখে হালকা পানি ছিটায় রোয়েন কিন্তু রুহী চুপচাপ বসে আছে।
রোয়েন দাঁতে দাঁত চেঁপে বসে আছে।নৌকায় যাতায়ত শেষে রুহীকে নিয়ে উঠে পড়লো রোয়েন।বাসায় ফিরে আসতেই রুহী ফ্রেশ হয়ে নিলো।ওয়াশরুম থেকে বেরুতেই রোয়েন রুহীকে দেয়ালের সাথে চেঁপে ধরলো।
রুহী কথা বলো,এমন চুপ থাকতে পারোনা তুমি।কথা বলো। নাহলে খুব খারাপ হয়ে যাবে।প্লিজ স্পিক আপ।ড্যাম ইট স্পিক আপ।কথা বলো রুহী।নিজেকে এভাবে রাখতে পারোনা তুমি।কি সমস্যা বলো রুহী।কথা না বললে কেমনে বুঝবো কি হয়েছে তোমার?কথা বলো চিৎকার করে বলল রোয়েন।রুহী আগের মতোই আছে তবে ওর চোখের কোনা ভরে উঠেছে।রুহী কিছু বলো, তোমার এ রুপ নিতে পারছিনা আমি।প্লিজ কথা বলো রোয়েন ঝাঁকালো জোরে রুহীকে।
হঠাৎ কেঁদে দিলো রুহী।
|
|
|
|
|
চলবে