Married To The Dark King- Mafia Boss- Season 3 !! Part- 52
আরো বেশ কিছুদিন কেঁটে যায়।রুহী ভীষন চুপচাপ হয়ে গেছে।সবার সাথে তেমন কথাও বলেনা।বেশির ভাগ সময়ে নিজেকে রুমে বন্দী রাখে এর মাঝে ওর টেস্ট পরীক্ষার রেজাল্ট চলে আসে।আশানুরূপ রেজাল্ট হয়নি যার কারনে রুহীর মন ভীষন খারাপ হয়ে যায়।রুহীর ফাইনাল পরীক্ষার দিন গুলোতে ও রোয়েনের সঙ্গ পায়নি রুহী।আগের মতোই খুব কম কথা বলতো রোয়েন।রোয়েনের বাসায় ও যায়নি আর।রোয়েন ফোন করলে কথা বলতো তাছাড়া নিজে আর কল করতোনা।কান্নাকাটি করতে ও ভুলে গেছে রুহী।
ফাইনাল পরীক্ষার ১৫দিন পরে রুহীদের ভার্সিটিতে একটা পার্টির এ্যারেঞ্জমেন্ট করা হয়েছে।পার্টি হবে ধানমন্ডির একটা হোটেলে।সকাল থেকেই বান্ধুবীরা রুহীকে কল দিয়ে পাগল বানাচ্ছে।রুহী তেমন একটা কল রিসিভ করছে না কারোর।ও যাবেনা কোথাও এটাই সিদ্ধান্ত রুহীর।বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতেই আনিলা বেগম রুহীকে পার্টিতে যেতে জোর করতে লাগলেন।যাবিনা কেন রুহী?বলে উঠেন আনিলা বেগম।মা আমার ভালো লাগছেনা।ঘরেই থাকবো আমি।বলে উঠলো রুহী।
দেখ রুহী ঐখানে ভালো লাগবে তোর। সবাই আছে ঐখানে।কয়দিন পর তো ওদের থেকে আলাদা হয়ে যাবি তখন তোর নিজেরই কষ্ট হবে।পার্টিতে যা ভালো লাগবে।বললেন আনিলা বেগম।
মা ভালো লাগছেনা।আর তাছাড়া রোয়েন জানতে পারলে রাগ করবে।বলে উঠলো রুহী।সমস্যা নেই রুহী আমি কল করে দিবোনে।বললেন আনিলা বেগম।
মা প্লিজ জোর করোনা।ভালো লাগছেনা আমার(রুহী)।দেখ রুহী সবসময় মন খারাপ করে থাকিস এটা আমার ভালো লাগেনা।তুই যাবি এ যাবি।এটাই লাস্ট ডিসিশন।যা রেডি হয়ে নে।বলে উঠলেন আনিলা বেগম।
ওকে আমি যাবো।কথাটা বলে রুমের দরজা লাগিয়ে দিলো রুহী।বেগুনী রং এর একটি সিল্কের শাড়ী পরে নিলো সেই সাথে হালকা অর্নামেন্টস আর একটু সাজ।চুল গুলো খোপায় গুঁজে নিলো রুহী।হাতে রোয়েনের দেয়া ব্রেসলেটটি পরতে গিয়ে কেঁদে দিলো।মুখ চেঁপে খুব কাঁদছিলো রুহী।চোখ মুছে বেরিয়ে পড়লো হোটেলের উদ্দেশ্যে।পার্টিতে পৌছুতেই রিধিমা নাহিদা রাদিয়া এসে রুহীকে জড়িয়ে ধরলো।আমরা তো ভেবেছিলাম তুই আসবিইনা।ফোন ধরছিলিনা কেন?
অভিমান করে জিজ্ঞেস করলো নাহিদা।
সরি রে।আর এমন হবেনা।বলে উঠলো রুহী।
,
,
,
,
হয়েছে হয়েছে এখন চল।ঐখানে ড্যান্স হচ্ছে।রাদিয়া লাইটিং করা একটা জায়গা দেখিয়ে বলল। রুহীকে নিয়ে ওরা সেখানে চলে গেলো।নাহিদা রাদিয়া সবাই ওদের বয়ফ্রেন্ড নিয়ে এসেছে।অবশ্য রিধিমার বিয়ে হয়ে গেছে।ওর জামাই এসেছে।জামাইর সাথে নাচছে রিধিমা।আর নাহিদা রাদিয়া ওদের বয়ফ্রেন্ডদের সাথে।
রুহীর ভীষন খারাপ লাগছে।চেয়ে ও কিছু বলতে পারছেনা ওদের।হঠাৎ সুদর্শন একটা ছেলে রুহীর পাশে এসে দাঁড়ালো।
হ্যালো।বলে উঠলো ছেলেটা।
হায়।বলে অন্যপাশে সরে গেলো রুহী।ছেলেটা রুহীর পাশে এসে দাঁড়ালো।Can we dance?হাত বাড়ালো সে।আম নট ইন্টারেস্টেড বলে সরে গেলো রুহী।।
নাচ শেষে নাদিয়া রাদিয়া রিধিমা রুহীর কাছে এসে দাঁড়ালো।সরি দোস্ত অপেক্ষা করানোর জন্য।বলে উঠলো ওরা।
ইটস ওকে।মন খারাপ করে বলল রুহী।রুহী তোর হয়েছেটা কি বলতে পারিস?চেহারার এমন হাল করেছিস কেন?বলল নাহিদা।
না আমি ঠিক আছি।বলে উঠলো রুহী।ওরা আর কিছু বলল না।খাবার শেষে রুহী একটা জুস নিয়ে একটা চেয়ারে বসলো।
জুস মুখে দিতেই কেমন জানি লাগতে থাকে ওর।মাথা ঘুরে যায় রুহীর।রুহীর চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে।হঠাৎ কেউ ওর সামনে এসে দাঁড়ায়।রোয়েন??আস্তে করে বলল রুহী।লোকটা রুহী কে কোলে তুলে চলে যেতে লাগলো।
এদিকে পার্টি শেষ পর্যায়ে এলো।রায়িদা, নাহিদা,রিধিমা রুহীকে এখানে ওখানে খুঁজতে লাগলো।রুহীর নম্বরে অনেকবার কল দেয়ার পর ও অপরপাশ থেকে রুহীর রিসপন্স পাওয়া গেলোনা।
হঠাৎ একজন অচেনা লোক এসে জানালো রুহী চলে গেছে অনেক আগেই।
ওরা বেশ অবাক হলো।রুহী ওদের না বলেই চলে গেলো কিন্তু কেন?
কিছুক্ষন অপেক্ষার পর ওরা সবাই চলে গেলো।বেশ গভীর রাতেই রুহীর ঘুম ভাঙ্গলো।মাথাটা ভীষন ঘুরছে।শোয়া থেকে উঠে বসে মাথা চেপে ধরলো রুহী।হঠাৎ আশেপাশে তাকিয়ে রুহী আঁৎকে উঠলো।
,
,
,
,
ওর জামা কাপড় একটাও জায়গামতো নাই।সবকিছুই কেমন ওলটপালট হয়ে আছে।শাড়ীটা নিচে পড়ে আছে।পাশে একটা অচেনা পুরুষ ঘুমিয়ে আছে অর্ধনগ্ন অবস্থায়।রুহীর মাথা একদম কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে।এসব কি হয়ে গেলো ওর সাথে?ডুকরে কেঁদে উঠলো রুহী।তারপর নিজেকে কোনমতে সামলে নিয়ে শাড়ীটা কোনমতে গায়ে পেঁচিয়ে বেরিয়ে পড়লো হোটেল রুম থেকে।
সেদিন ঘরে ফিরে রুহী আনিলা বেগমের রুমে গিয়ে ওনাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।
হঠাৎ রুহীকে এভাবে কাঁদতে দেখে অপ্রস্তুত হয়ে পড়লেন আনিলা বেগম।সামনে ফিরে মেয়েকে ধরে খাটে বসালেন ওনি।
কি হলো রুহী?কাঁদছিস কেন মা?জিজ্ঞেস করে উঠলেন আনিলা বেগম।
রুহী কেঁদে কেঁদে কাল যা হলো আর আজ যা দেখলো সব বলতে লাগলো।
আনিলা বেগম কিছুটা চিন্তায় পড়ে গেলেন। কি করবেন এখন ওনি।
বাসার কাউকে জানানো যাবেনা এ কথা।সেদিনের মতো রুহীকে কিছুটা সামলে নিলেন।
আজিজ রায়হান রোয়েন আর রুহীর বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।তা খেয়াল করে রুহীকে একদিন বললেন,
রুহী দেখ এতোদিন থেকে রোয়েন তোর সাথে সেভাবে যোগাযোগ রাখছেনা।আর একথা শুনলে হয়ত বিয়ে ও করতে চাইবেনা।
এর থেকে ভালো হয় তুই এ বিয়ে না করে দেয়।কারন পরে যখন রোয়েন জানবে তখন তোকে অপমান করে ছেড়ে দিবে।
রুহী জানে রোয়েন ওর সাথে যোগাযোগ করছেনা ঠিকই কিন্তু কখনো ছেড়ে যাবেনা।কিন্তু রোয়েন কে এভাবে ওর জীবনে জড়াতে ও পারেনা।কারন ও এখন নষ্ট হয়ে গেছে।রোয়েনের সাথে এখন বিয়ে হওয়া মানেই ওকে ধোঁকা দেয়া।নাহ রুহী সেটা করবেনা।ও চলে যাবে খুব দূরে কোথাও চলে যাবে।আজিজ রায়হানের সামনে এসে বসলো রুহী।বাবা আমি এ বিয়ে করতে পারবোনা।মেয়ের কথায় ভীষন অবাক হলেন আজিজ রায়হান।কেন মা?কি হলো?জিজ্ঞেস করতে লাগলেন আজিজ রসয়হান।
ওকে এখন আর ভালো লাগেনা আমার।বিয়ে করতে পারবোনা।আজিজ রায়হান থ হয়ে গেলেন।যে মেয়ে রোয়েন ছাড়া কিছু বুঝে না আর আজ নাকি তাকে ভালো লাগেনা।কি বলছিস এসব?কিছুটা রেগে গেলেন আজিজ রায়হান।
জি বাবা। আর এখানে ও থাকতে চাচ্ছিনা আমি।থাকলেই ওকে দেখতে হবে প্রতিনিয়ত। সেটা আমি পারবোনা বাবা।তুমি আমার বাহিরে যাওয়ার ব্যাবস্থা করে দাও।ছলছল চোখে বলল রুহী।মেয়েকে অারো অনেক বুঝিয়ে ও কাজ হলোনা। শেষমেষ জিজ্ঞেস করলেন আজিজ রায়হান,কই যেতে চাস?লন্ডন যাবো।সেখানেই পড়াশুনা শেষ করবো আমি।বলে উঠলো রুহী।
|
|
|
চলবে