Married To The Dark King- Mafia Boss- Season 3 !! Part- 48
ঘুমন্ত রুহীকে দেখছে রোয়েন।এতো মায়া লাগে মেয়েটাকে ঘুমে।কেমন গুঁটিসুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে রোয়েনের বুকের মাঝে।রুহীর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিতেই খেয়াল করলো রুহীর শরীর খুব কাঁপছে আর শরীরে ও ভীষন জ্বর।তড়িঘড়ি করে রুহীকে বালিশে শুইয়ে উঠে বসলো রোয়েন।রুহীকে দুটো কাথা দিয়ে জড়িয়ে দিলো ভালো মতো।মেয়েটার তো কাঁপা বন্ধ হচ্ছে না।রোয়েন এবার রুহীকে জড়িয়ে শুয়ে পড়লো।
হঠাৎ খেয়াল করলো ওর গলায় লাল লাল দাগ হয়ে আছে।আচড়ের দাগের মতো লাগছে।রোয়েন এবার বসে রুহীর কাঁধ হাত ভালো মতো চেক করলো।সব জায়গায় একই রকম দাগ হয়ে গেছে।কাল রাতের রাগ পশু বানিয়ে দিয়েছে ওকে।কি করে পারলো ও এমন টা করতে? ভীষন রাগ হচ্ছে রোয়েনের নিজের ওপর।
বাথরুম থেকে রুমাল ভিজিয়ে রুহীর মুখ হাত পা ভালো করে মুছে দিতে লাগলো রোয়েন।যদি একটু কমে যায় জ্বরটা।রুহীর সাথে এতো কিছু হচ্ছে কিন্তু কোন খবর নেই ওর। চোখ ও খুলছেনা।রোয়েন বারবার ওর কপালে হাত রেখে দেখছে। জ্বর যেন একটু কমে এলো।
রুহীর মুখে একটু পানি ছিটালো রোয়েন।এবার কিছুটা কেঁপে উঠলো রুহী।ওর চোখের পাতা পিটপিট করছে।
রুহী!!!!রুহী!!!!আস্তে আস্তে ডাকছে রোয়েন।
রুহী খুব কষ্টে চোখ খুলল।হাত পা খুব ব্যাথা হয়ে আছে।মাথাটা ও ভীষন ব্যাথা করছে।রোয়েন সামনে বসে আছে।কিছু একটা বলার চেষ্টা করলো রুহী।
কি বলো রুহী?কি লাগবে?জিজ্ঞেস করতে লাগলো রোয়েন।
রুহী আবার ও কিছু বলার চেষ্টা করলো।
রোয়েন এবার কানের সামনে মুখ নিয়ে গেলো।কি বলবে বলো?
আই লাভ ইউ রোয়েন।অসুস্থ গলায় বলল রুহী।
রোয়েন মাথা উঠালো।এটা কোন কথা(ভাভাগো কি মেয়েরে?এতো জ্বরের মাঝে ও বলছে ভালোবাসে)?কিছু খাবে?
মাথা নাড়ালো রুহী।তিতা লাগছে মুখে।ফিসফিসিয়ে বলল রুহী।
না করলে চলবেনা রুহী।কিছুতো খেতে হবে।কথা গুলো বলে ল্যান্ডলাইন দিয়ে কল করে খাবার পাঠাতে বলল রোয়েন।
রুহীকে টেনে উঠিয়ে ওয়াশরুমে নিয়ে ফ্রেশ করিয়ে আনলো রোয়েন।
বাথরুম থেকে বের করিয়ে রুহীর মুখ ভালো করে মুছে দিলো তোয়ালে দিয়ে।রুহীর চুল গুলো স্বযত্নে আচড়ে দিলো।কি চুলরে বাবা?এতো জট কেন?
কোঁকড়া চুলে একটু জট বেশিই থাকে।অসুস্থ গলায় বলল রুহী।
হুম।তোমার চুলের যত্ন নিতে নিতে আমাদের জীবনের ৬০বছর পার হয়ে যাবে।
রুহী মলিন হাসলো।ওর একদমই ভালো লাগছেনা।মাথাটা কেমন ঘুরাচ্ছে।হঠাৎ দরজায় নক পড়ায় রুহীকে ছেড়ে দরজা খুলতে চলে গেলো রোয়েন।
রুম সার্ভিসের লোকটা ট্রলিতে করে ওদের খাবার এনেছিলো।সেগুলোই দিয়ে গেলো।
রুহীর সামনে সুপের বাটি নিয়ে বসলো রোয়েন।আর এক গ্লাস দুধ।
কোনমতে জোরজবরদস্তি করে সুপটাতো খাওয়ানো গেলো কিন্তু দুধটুকু খাওয়ানোর সময় ঘটলো বিপত্তি।
আমি খাবো না প্লিজ।মাথা নাড়ছিলো রুহী।
দেখো এটা না খেলে শরীরে শক্তি হবেনা।আমরা ঘুরবো কিভাবে বলো?ধমক দিয়ে বলল রোয়েন।
রুহীর চোখজোড়া জলে ভরে উঠলো।কিন্তু কাঁদলো না ও।
রোয়েন রুহীর চোখজোড়া মুছে দিলো।কাঁদতে হবেনা।খেয়ে নাও।বলে উঠলো রোয়েন।রুহীর মুখে গ্লাস বাড়িয়ে দিলো রোয়েন।
গ্লাস মুখে নিয়ে একটু দুধ মুখে নিতেই শরীর গুলিয়ে আসলো রুহীর।বমি করে রোয়েনের শরীর ভরিয়ে দিলো।
রোয়েন দাঁতে দাঁত চেপে চোখ বুজে নিজেকে কন্ট্রোল করে নিলো।
রুহী রোয়েনের দিকে তাকিয়ে আছে ভয় ভয় চোখে।
রোয়েন রুহীকে নিয়ে ফ্রেশ করিয়ে আনলো।এভাবে পরপর দুইদিন রুহীর খেয়াল রেখে রুহীকে সুস্থ করে তুলল রোয়েন।
তিনদিনের দিন
রুহী আর রোয়েন সকালের নাস্তা সেড়ে রেডি হচ্ছে। রুহী হোয়াইট লং শার্টের সাথে একটা ব্ল্যাক লেডিস প্যান্ট পরে নিলো।রোয়েন ও কালো একটা শার্ট পরে হাতা গুলো গুঁজে দিলো কুনুই পর্যন্ত।চোখে সানগ্লাস পরে নিলো।রুহীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো সুবলং ঝড়নার উদ্দেশ্যে। সেখানে কিছুক্ষন থেকে কাপ্তাই এর জন্য বেরিয়ে পড়বে ওরা।
বেশকিছুক্ষন জার্নির পরে এসে পৌছুলো সুবলং এ।একটা রেস্ট হাউজ ভাড়া করলো ড্রেস চেঞ্জ করতে কারন ঝড়নার কাছে গেলে ভিজে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে তাই।
রুহী একটি গেঞ্জী আর ট্রাউজার পরে নিলো। রোয়েন কালো গেঞ্জী আর থ্রিকোয়াটার প্যান্ট।রুহীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো ওরা।পাহাড়টা সবুজ পাতায় ঘেরা আর মাঝ বরাবর পানি গড়িয়ে পড়ছে অঝোর গতিতে।ঝড়নার পানি ওদের ভিজিয়ে দিচ্ছে।রুহীর মুখে পানি পড়ায় খুব হাসছে ও।রোয়েন রুহীকে পলকহীন ভাবে দেখছে।এসময় টা এখানেই থেমে যেতো!!!!ভাবছে রোয়েন।
হাত বাড়িয়ে রুহীর চুলের গভীরতা পার করে ওর কাঁধে হাত ছোঁয়ায় রোয়েন।
রুহী চোখ বুজে বড় নিশ্বাস নেয়।রোয়েন রুহীর ভিজা গালে আলতো করে ঠোঁট ছোঁয়ায়।রুহী রোয়েনের গেঞ্জীর কলার চেপে ধরলো।
রোয়েন সরে এলো রুহীর কাছ থেকে।রুহীকে নিয়ে বেশ কিছু ছবি তুলল।ছবি তুলা হলো বেশ কিছু।রুহী এবার জেদ করতে লাগলো স্পীড বোট এ উঠবে।
রোয়েন রুহীকে নিয়ে স্পীড বোটে উঠলো।এভাবে বেশ কিছুক্ষন ঘুরাঘুরির পর কাপ্তাইয়ে ফিরে এলো ওরা।অবশ্য হোটেল থেকে লাঞ্চ করেই এসেছিলো তাঝ ফ্লাক্সে করে গরম কফি কিনে নিয়ে এলো ওরা।কিছুক্ষন রেস্ট করে পার্কে এলো রোয়েন আর রুহী।ঘাসের ওপর বসে পড়লো ওরা।সাথে আছে গরম কফি।রোয়েন কফিতে চুমুক দিয়ে পাশে তাকালো।সামনেই আগুন জ্বলছিলো।
রুহীকে আগুনের হালকা আলোয় চমৎকার লাগছে।
ওদের রিসোর্টের পাশেই কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্ক।
জানো এখানকার তোমার সাথে কাঁটানো প্রত্যেকটা সময় কতোটা যে ভালো কেঁটেছে বলে বুঝাতে পারবোনা।সময় গুলো স্বপ্নের মতো ছিলো।সবসময় এভাবেই থাকতে পারতাম।কথা গুলো বলার সময় রুহীর চোখের কোনা বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়তে লাগলো।
রোয়েন মুখ বাড়িয়ে অশ্রু শুষে নিলো।
রুহী পাশে রোয়েনের দিকে তাকালো।আমার চোখের পানি তোমার সহ্য হয়না তাইনা?সন্তুষ্টির হাসি দিয়ে বলল রুহী।
রোয়েন মুচকি হেসে কফিতে চুমুক দিলো।
রুহী এবার ঘাসের ওপর থাকা রোয়েনের হাতের দিকে তাকালো।আঙ্গুলে ওদের এংগেজমেন্টের আংটিটা আছে।রুহী চট করে রোয়েনের হাতের ওপর হাত রেখে বলল এ দুটো হাত একে অপরের জন্যই তৈরি তাইনা?
হুম।রোয়েন রুহীর হাত শক্ত করে ধরলো।
রুহী আরো কাছে এগিয়ে এসে রোয়েনের ঠোঁটের কোনায় ঠোঁট ছুঁয়ালো। রুহী সরে আসতে নিবে তখনই রোয়েন ওর গাল ধরে রুহীর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবালো।
রাত গভীর হচ্ছে।ঝিঁঝিঁ পোকারা ডাকছে।রোয়েন রুহীকে বুকে নিয়ে ঘাসের ওপর শুয়ে আছে।রোয়েন আচমকা রুহীকে নিচে দিয়ে ওর বুকে মাথা রাখলো।অনেক হয়েছে আমার বুকে শোয়া এখন থেকে আমি এখানে শুবো।
রুহী মুচকি হেসে রোয়েনের চুল হাতিয়ে দিতে লাগলো।
এভাবে কিছুক্ষন থাকার পর রোয়েন রুহীকে নিয়ে রিসোর্টে চলে এলো।
ডিনার সেড়ে রুমে চলে এলো ওরা।কিছুক্ষন গল্প সল্প করে রুহীকে বুকে ঘুমিয়ে পড়লো রোয়েন।
চলবে?