Mafia Boss- Season- 3

Married To The Dark King-  Mafia Boss- Season 3 !! Part- 35

রেহান নিচে বসে পড়তে নিলে রুপন্তী ওর হাত ধরে সামলালো।রোয়েন রুহী একে অপরের দিকে তাকালো।রেহান ধীর পায়ে হেঁটে রোয়েনকে পার করে দেয়ালের ছবি গুলোর দিকে তাকালো।একটা ছবিতে মাকে প্রেগন্যান্ট দেখাচ্ছে।রোয়েন জোর করে চোখ বুজে নিজেকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করলো।রুহী রোয়েনের হাত শক্ত করে ধরলো।
এসব কি?মাম্মার ছবি এখানে কেন?আপনি কে?মাকে কি করে চিনেন?রেহান বলে উঠলো।
রোয়েন রেহানের কাছে এসে দাঁড়ালো রেহান তোমার মা আমার ও মা।বলে উঠলো রোয়েন।
আপনি আমাদের সাথে থাকেননা।এখানে আসার পর আপনার সাথে প্রথম দেখা হয়েছে।আপনি মায়ের ছেলে হলে কেন দূরে থাকছিলেন এতোদিন?বাবা আপনাকে কেন চিনলোনা?আপনি তো তার ও ছেলে।একনাগাড়ে বলতে লাগলো রেহান।রোয়েনের চোখজোড়া লাল হয়ে আছে।পুরো শরীর কাঁপছে ওর।
রেহান এতো কিছু বলতে পারবোনা আমি।আমি তোমার বাবার সাথে দেখা করতে চাই।ওনার কাছে আমার সব উত্তর।যেগুলোর জন্য আমি ২১ বছর ধরে অপেক্ষা করছি।
রেহান রুপন্তী আর রুহী রোয়েনের দিকে তাকিয়ে আছে।রোয়েন ওদের সবাইকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো আজিজ রায়হানের বাসার উদ্দেশ্যে।
সাইফ রহমানের রুমে ঢুকে পড়লো রোয়েন।
সাইফ রহমান শুয়েছিলেন।রোয়েন কে দেখে উঠে বসলেন।
রোয়েন বাবা তুমি?সাইফ রহমান চোখে চশমা জড়িয়ে বসলেন।বাবা আপনার কাছে আমার অনেক প্রশ্নের জবাব আছে।যেগুলোর জন্য আমি একুশ বছর ধরে অপেক্ষা করছি।বলে উঠলো রোয়েন।
কি প্রশ্ন?কিছুটা অবাক হলেন সাইফ রহমান।
রায়না রহমানের সাথে আপনার বিয়ের বয়স কত বছরের?জিজ্ঞেস করে উঠলো রোয়েন।
মানে কি বলছো এসব?জিজ্ঞেস করে উঠলেন সাইফ রহমান।
মানে রায়না রহমানের একটা ছেলে ছিলো পাঁচ বছরের।যে কিনা হারামী বাপের জন্য মাকে হারিয়ে ফেলেছিলো।বলে উঠলো রোয়েন।
তাকে তুমি চিনো?বলো সে কই?কিছুটা উত্তেজিত কন্ঠে জিজ্ঞেস করে উঠলেন সাইফ রহমান।সেই ছেলে টা আমি।বলে উঠলো রোয়েন।
ঠিক তখনই সাইফের চোখের সামনে ভেসে উঠে প্রথম দেখায়,রায়না রহমান রোয়েকে কিভাবে জড়িয়ে কেঁদেছিলো,রেহান আর রোয়েন কিভাবে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেছিল।কারন এ যে হৃদয়ের টান।সাইফ রহমান খাট থেকে নেমে রোয়েনকে জড়িয়ে ধরলেন।বাবা তোমাকে অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি।কোথায় খু্ঁজিনি?শেষে হাল ছেড়ে দেই।রোয়নকে সামনে এনে বললেন সাইফ রহমান।কিন্তু আমার মন বলছিলো তুমি আসবে।বলে উঠলেন সাইফ রহমান।
আজ তোমাদের দুই ভাইকে সব বলতে চাই।রেহানকে কল দিলেন সাইফ রহমান।তার কিছুক্ষন পর রেহান রুমে এলো।বাবা কল দিয়েছিলে?জিজ্ঞেস করলো রেহান।
হুম কথা ছিলো তোর সাথে।(সাইফ রহমান)
কি কথা?ভ্রু কুঁচকালো রেহান।
তোদের বাস্তবটা বলতে চাই।বলে উঠলেন সাইফ রহমান।সেইবার অস্ট্রিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরি।বাংলাদেশে ফিরেই জানতে পারি রায়না যার সাথে আমার বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো সে একটা মেন্টাল এ্যাসাইলামে ভর্তি।বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো মানে?ভ্রু কুঁচকালো রেহান।হুম ওর সাথে আগে আমার বিয়ে হতে পারেনি কারন ও সাজিদ রায়হান চৌধুরী নামক এক লোকের সাথে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে ফেলেছিলো।সেই মেন্টাল এ্যাসাইলামে চলে গেলাম আমি।সেখানে রায়না আর রেহানকে পাই।রায়নাকে আগের থেকে ভালোবাসতাম আমি।
ভালোবাসার মানুষটাকে ঐ অবস্থায় দেখে ভেঙ্গে পড়ি আমি।ওকে ওর স্বামী সাজিদ মারদর করে পাগল বানিয়ে দিয়েছিলো আর এই এ্যাসাইলামে রেখে যায়।তারপর শুনতে রায়নার আরেকটা ছেলে আছে যাকে সাজিদ এতিম খানায় দিয়ে আসে।সেই এতিম খানায় চলে যাই কিন্তু তাকে খু্জে পাইনি।তারপর রায়নাকে বিয়ে করে অস্ট্রিয়া নিয়ে যাই।আর রেহান কে নিজের ছেলে হিসেবে আদর যত্ন দিয়ে বড় করি।
রেহান নিজের কানকে বিশ্বাস করাতে পারছেনা।এতবছর যাকে বাবা মনে করে আসছিলো আসলে সে বাবা না।চোখ জোড়া জ্বালা করছে রেহানের।আপনাকে থ্যাংকস বাবা আমার মা ভাইকে এতো ভালো রেখেছেন।বাবার আদর দিয়েছেন আমার ভাইকে।কাঁদতে কাঁদতে বলল রোয়েন।
যাই হোকনা কেন?তোমরা দুজনেই আমার ছেলে আমার রোয়েন আর রেহান।বলে রোয়েন আর রেহানকে জড়িয়ে ধরলেন সাইফ।কিন্তু রেহান কিছু বলছেনা।কাঁদতে ও পারছেনা।সে একটা আলাদা ঘোরে চলে গেছে।
এরপর থেকে রোয়েন রেহান রুপন্তী রুহী সবাই মিলে রায়না রহমানে স্মৃতিশক্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে থাকে।বেশ কিছুদিন পার হয়ে যায় কিন্তু ওনার কোন উন্নতি হচ্ছেনা।
রোয়েনকে একটা পার্টিতে ইন্ভাইট করা হয়েছে যেখানে সকল ক্ষমতা ধারী মাফিয়া গ্রুপ লিডাররা এ্যাটেন্ড করছে।রোয়েন ও উপস্থিত হলো সে পার্টিতে।পার্টি হোস্ট করছে নাইট লিডার আকরাম যে কিনা রোয়েনের বেশ ভালো একজন বন্ধু।ডিনার শেষে ড্রিংকস করলো সবাই।নাচ গান সব চললো।গানের মাঝেই রোয়েন খেয়াল করলো একটা জটলা।অনেক মানুষের জটলা।সেখানে চিরচেনা একটা মুখ দেখলো রোয়েন।সেদিকে পা বাঁড়ায় ও।মানুষের সমাগম ছেড়ে সামনে আসতেই লোকটাকে আর পেলো না রোয়েন।ফোন হাতে নিয়ে একটা নম্বর ডায়াল করে কানের সামনে ধরলো ও।
চলবে