Mafia Boss- Season- 3

Married To The Dark King-  Mafia Boss- Season 3 !! Part- 31

বাঁকা হেসে ফোন টা রুহীর সামনে ধরলো রোয়েন।রেহানকে কল দেয়া আছে।ও সব শুনেছে।রুপন্তী কে ফিরিয়ে আনবে রেহান।বলে উঠলো রোয়েন।মুখে মিষ্টি হাসির ঝলক ফুঁটে উঠলো রুহীর।রোয়েনকে জড়িয়ে ওর গালে চুমু খেলো রুহী।থ্যাংক ইউ।কিভাবে সব এতো ইজিলি হ্যান্ডেল করো?রোয়েনের গলা জড়িয়ে বলল রুহী।লাইফটা এতোটাই কম্পলিকেটেড ছিলো সেটা বুঝবেনা।ছোট থেকে মা বাবা ছাড়া বড় হয়েছি।৫বছর বয়সে এতিম খানায় দিয়ে এসেছিলো।সেখান থেকে ১০ বছর বয়সে মামা নিয়ে আসে অস্ট্রিয়ায়।ডাক্তারি করে ফিরে এসে দেখি মামা আর নেই।বাংলাদেশে চলে আসি।রুহীর দিকে তাকিয়ে কথা গুলো বলতে বলতে রোয়েনের চোখের কোনা গড়িয়ে অশ্রু ঝড়তে থাকে।কে দিয়ে এসেছিলো এতিম খানায়?কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করে রুহী।ওর নিজের ও দুচোখ গড়িয়ে পানি পড়ছে।
আমার বাবা।কথাটা বলেই রুহীকে সরিয়ে রুমে চলে যায় রোয়েন।
কতোবড় খারাপ ওর বাবা।কি করে পারলো নিজের ছেলেকে এতিম খানায় দিতে?ভাবতে থাকে রুহী।
রুপন্তী গাড়িতে এসে বসলো।ড্রাইভার গাড়ি ড্রাইভ করছে।রুপন্তী মুখে হাত চেঁপে কাঁদছে।সেদিন কতো বড় ভুল করেছিলো ও তা টের পাচ্ছে আজ।রেহানের বলা কথা গুলো মনের এককোনে জেগে উঠলো।
“আমার মন হৃদয় থেকে সম্পূর্ন ভাবে হারিয়ে গেছো তুমি আমি তো ক্যারেক্টার লেস ছেলে,আমার তো একটা দিয়ে হয়না তাইনা?ওহ তুমি তো আমার থার্ডক্লাশ গার্লফ্রেন্ড গুলোর মতো নও তাইনা?তাহলে তো তোমাকে অন্যাভাবে ট্রিট করতে হয় তাইনা “।রুপন্তী জোরে কেঁদে দিলো।ভালোবাসা এতো সহজে শেষ করে দিলো ওনি?রুপন্তী তো রেহান কে ছেড়ে থাকার কথা ও ভাবতে পারেনা।ওর শরীর মন সকাল বিকেল রাত সব জুড়েই তো শুধু রেহান।
রেহানকে কিভাবে ভুলে থাকবে ও?কথা গুলো ভেবেই রুপন্তীর কান্না দ্বিগুন পরিমানে বেড়ে গেলো।হঠাৎ গাড়ি থামতেই মুখ থেকে হাত সরালো রুপন্তী।এয়ারপোর্টে এসেছে ভেবে চারপাশে তাকাতে লাগলো।কিন্তু সেখানে মেইন রোড আর ৩৩ তলা একটি ভবন।
আমার এয়ারপোর্ট যাওয়ার কথা ছিলো আঙ্কেল।এখানে কোথায় আনলেন?ড্রাইভারকে ইংরেজিতে জিজ্ঞেস করলো রুপন্তী।
স্যারের আদেশ।বলে উঠলো ড্রাইভার।
কোন স্যার?জিজ্ঞেস করলো রুপন্তী।
আমার।হঠাৎ পাশ থেকে কথাটা শুনে পাশে তাকালো রুপন্তী।রেহান দরজা খুলে রুপন্তীর পাশে এসে বসলো,ইউ সুড গো ড্রাইভারকে বলল রেহান।ড্রাইভার চলে গেলো।
আ আপনি?এখানে?জিজ্ঞেস করে উঠলো রুপন্তী।
আমি এখানে কেন? কিভাবে এলাম?কোথা থেকে এলাম? এসব পরে জেনো।আগে আমাকে জবাব দাও কই যাচ্ছিলে তুমি?রুপন্তীর দিকে একটু ঝুঁকে প্রশ্ন করলো রেহান।নিচে তাকালো রুপন্তী।বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছিলাম।কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলল রুপন্তী।
কেন?জিজ্ঞেস করলো রেহান।
আমার ঘুরা শেষ।তাই ফিরে যাচ্ছিলাম।বলল রুপন্তী।
ঘুরতে এসেছিলে?জিজ্ঞেস করে উঠলো রেহান।
হুম।বলে উঠলো রুপন্তী।
আর কোন কারন নেই এখানে আসার?জিজ্ঞেস করে উঠলো রেহান।
কাউকে মানাতে এসেছিলাম।বাট তার মন আর হৃদয় থেকে আমার নাম মুছে গেছে।তাই চলে যাচ্ছি।এখানে থাকার সকল অধিকার হারিয়ে ফেলেছি।
রেহান সাথে সাথে রুপন্তী কে বুকের সাথে জড়িয়ে নিলো।কি মনে হয়?তোমার নাম মুছে গেছে হৃদয় থেকে?মন থেকে শুনো রুপন্তী।আমার প্রত্যেকটা হৃদকম্পন তোমার নামে।রাগটা ও বুঝোনা বোকা মেয়ে?সেভাবেই জিজ্ঞেস করলো রেহান।রুপন্তী সরে আসতে চাইলো।এখানে থাকার অধিকার হারিয়ে ফেলেছি।আমাকে যেতে দিন।এখানেই থাকবা।থাকতে হবে কারন তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবোনা আমি।ভালোবাসি তোমাকে।বলেই রুপন্তীর ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরলো রেহান।রুপন্তীর চোখ বড় হয়ে গেলো।প্রায় ত্রিশ মিনিট কিস করলো রেহান।রেহান সরে আসতেই
রুপন্তী জ্বলজ্বল চোখে তাকিয়ে থাকলো রেহানের দিকে।রুপন্তীর দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে রেহান বলল সব জেনে গেছি আমি।আ’ম সরি রুপন্তী।তোমার কথা শুনার চেষ্টা করিনি আমি।রাগ টা এতোটাই চেপে বসেছিলো যে কোন কথা শুনার ধৈর্য শক্তি হারিয়ে ফেলোছিলাম।মাফ করে দাও প্লিজ।রুপন্তীর দুগালে হাত রেখে বলল রেহান।রুপন্তীর চোখের অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে।রেহান কে জড়িয়ে জোরে কাঁদতে লাগলো রুপন্তী।রেহান জড়িয়ে রাখলো রুপন্তীকে।রোয়েনের পিছু চলে এলো রুহী।রোয়েন কালো কোটের কলার ঠিক করছিলো।সরি।বুঝিনি রাগ করবে তুমি।রুহীর কথায় রোয়েন রুহীর কাছে এসে দাঁড়ালো।রুহীকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বলল।এটা আমার জীবনের সত্যি রুহী।কথা গুলো ভুলে যাবো কিন্তু সেগুলো মিথ্যা হয়ে যাবেনা।কষ্ট গুলো বুকে নিয়ে বাঁচতে শিখেছি।বাঁচতে গিয়ে দুহাতে অনেক প্রান কেড়ে নিয়েছি।শুধু মাত্র বাঁচার তাগিদে।মাঝে মাঝে মনে হতো মরে যাই।কথাটা বলতেই রুহী হাত বাড়িয়ে রোয়েনের মুখ চেপে ধরলো।রোয়েন রুহীর হাত সরিয়ে আবার বলতে লাগলো।এখন অনেক বাঁচতে মন চায়।বাঁচার কারন হিসেবে তোমাকে পেয়েছি।এখন তোমাকে নিয়ে বাঁচতে ইচ্ছে হয় হাজার হাজার বছর।রোয়েন থেমে গেলো রুহীর কম্পনে আর নাক টানার শব্দে ।রুহীকে সামনে আনলো রোয়েন।রুহী কেঁদে কেঁটে একাকার করে ফেলেছে।রুহীর গালে ঠোঁট ছুঁয়ালো রোয়েন।চোখের পানি গুলোকে ঠোঁট দিয়ে শুষে নিয়ে রুহীর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবালো। রুহীর চোখের পানি রোয়েনের ঠোঁট ভিজিয়ে দিচ্ছে।বেশ কিছুক্ষন পর সরে এলো রোয়েন।দুহাতে রুহীর চোখ মুছে দিলো।আমি ছোট্ট একটা কাজ সেড়ে আসছি।তুমি রেস্ট করো।একদম কাঁদবেনা ওকে?রুহীর থেকে সরে এসে বলল রোয়েন।মাথা ঝাঁকালো রুহী।রোয়েন রুহীর কপালে চুমু দিয়ে বেরিয়ে গেলো।রেহান রুপন্তীকে কে নিয়ে ঘরে ঢুকেই কোলে তুলে রুমের দিকে পা বাঁড়ালো।আরে কই নিচ্ছেন আমাকে?জিজ্ঞেস করে উঠলো রুপন্তী।রেহান হেসে রুপন্তীকে নিয়ে রুমে ঢুকে দরজা লাগালো।রুপন্তীকে খাটে শুইয়ে দিয়ে ওর গলায় মুখ ডুবালো রেহান।ডাক্তারের সামনে বসে আছে রোয়েন।কল করেছিলাম আপনাকে(জার্মানি ভাষায়)বলে উঠলো রোয়েন।
হুম।বুঝেছি।বলে উঠলো ডাক্তার।
রায়না রহমান পেশেন্ট।আমার মা উনি।বলল রোয়েন।
ইয়েস।ওনি পাগল ছিলেন অনেক বছর যাবৎ।
মাস খানিক এখানে ভর্তি ছিলেন।অতীতের কোন কিছুই মনে নেই ওনার।বলে উঠলো ডাক্তার।
মা ভালো হবেননা?আর কি কিছু মনে আসার চান্স নেই ডাক্তার?জিজ্ঞেস করলো রোয়েন।
দুই তিনদিন বা এক সপ্তাহ পর পর কিছু মনে করানোর ট্রাই করতে পারেন।একেবারে কোন কিছু করবেননা।তাহলে ওনাকে বাঁচানো যাবেনা।বলে উঠলো ডাক্তার।রোয়েন বড় নিশ্বাস টেনে নিচে তাকালো।
হাল ছেড়োনা।তোমার মনের অবস্থা বুঝতে পারছি।চেষ্টা করে যাও।তোমার কষ্ট গড বুঝবেন এবং অবশ্যই হেল্প করবেন তোমাকে।রোয়েনের কাঁধে হাত রাখলো ডাক্তার।
রোয়েন উপরে তাকিয়ে মলিন হাসি দিলো।
রুপন্তীর ঠোঁটে চুমু খেয়ে সরে গেলো রেহান।রুপন্তী উঠে বসে পড়লো।নিচে তাকিয়ে রেহানের দিকে তাকিয়ে লজ্জা মাখা হেসে দৌড়ে বেরিয়ে গেলো।
বোনকে এভাবে দৌড়ে আসতে দেখে থামালো রুহী।কিরে চলে এলি যে?প্লেন চলে গেলো বুঝি?দুষ্টু হেসে বলল রুহী।
আপি জিজু কই?হেসে জিজ্ঞেস করলো রুপন্তী।
একটা কাজে বাহিরে গেলো।কেন কি হয়েছে?জিজ্ঞেস করলো রুহী।
দরকার ছিলো।বলে উঠলো রুপন্তী।
সন্ধ্যা নাগাদ ফিরে এলো রোয়েন।রুমে আসার কিছুক্ষন পর রুহী পানি নিয়ে এলো।খাটে মাথা নিচু করে বসে আছে রোয়েন।টি টেবিলের ওপর গ্লাসটা রেখে রোয়েনের পাশে বসে রুহী জড়িয়ে ধরলো রোয়েনকে।
মন খারাপ?আহ্লাদী গলায় প্রশ্ন করলো রুহী।
রুহীর দিকে মুচকি হেসে মাথা নাড়লো রোয়েন।
রুহী রোয়েনের নাকের ডগায় চুমু জিজ্ঞেস করলো বাংলাদেশে কবে ফিরছি?
রুহীকে খাটে শুয়াতে শুয়াতে প্রশ্ন করলো রোয়েন টিকিট করাবো কখনকার?
যতো জলদি পারো।বলে রোয়েনের গলা জড়িয়ে ধরলো রুহী।রুহীর নাকে নাক ঘষে দিলো রোয়েন।ফিসফিসিয়ে বলল রুপন্তী এখানে।
রুপন্তীর কথায় উঠতে যাবে রুহী ঠিক তখনই রুহীর ঠোঁটে চুমু খেয়ে বসলো রোয়েন।
চলবে