Childhood marriage

Childhood marriage ! Part- 22

সায়ন : এই মেয়ে কই যাও?
ছোঁয়া : ঘুমাতে
সায়ন : ঘুমাতে চাইলে ঘুমাও আমিতো মানা করছি না কিন্তু বালিশ কাঁথা নিয়ে কোথায় যাচ্ছো?
ছোঁয়া : কোথায় আর যাব,নিজের ঘুমানোর জন্য বিছানা করছি
সায়ন : কেন এত্ত বড় বেড তোমার চোখে পড়ে না?
ছোঁয়া : না পড়ে না,এখন হাতটা ছাড়েন আর আমাকে আমার কাজ করতে দেন প্লিজ
সায়ন : কে বলেছে তোমাকে এসব ফাউল কাজ করতে?
ছোঁয়া : দেখুন বাবা-মা ঐ রুমে ঘুমাচ্ছে তাই আমাকে আজ রাতে এখানেই থাকতে হবে আর আপনার সাথে এক বিছানায় থাকাতো সম্ভব না তাই আজকের মত ফ্লোরেই ব্যবস্থা করছি।কালকে থেকে ঐ রুমে ঘুমাব প্রমিস
সায়ন : কেন আমার সাথে এক বিছানায় ঘুমানো সম্ভব নয় কেন?
ছোঁয়া : কেন আবার আপনিইতো বলেছিলেন…
সায়ন : আরে ওটাতো অনেক পুরনো কথা।তখনতো আমি তোমাকে স্ত্রী হিসেবেই মানতে পারছিলাম না কিন্তু এখনতো আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি…
ছোঁয়া : ভালোবাসা!জানেনতো আমার মনটা না আপনার মত এত ঘন ঘন বদলায় না তাই এত ইজিলি সবকিছু ভুলতে পারব না
সায়ন : ইজিলিতো ভুলতে বলিনি,তুমি সময় নাও যতদিন ইচ্ছে হয়।আমার কোন তাড়া নেই কিন্তু তবুও আমাকে ক্ষমা করে দাও প্লিজ…
ছোঁয়া : দেখুন আমি আর এই প্রসঙ্গে কোন কথা শুনতে চাই না।আমার ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমাব…
সায়ন : ওকে ফাইন আর কিছু বলছি না তবে একটা কথা তুমি এখানে এক বিছানায় আমার পাশে ঘুমাবে।এ ব্যাপারেও আমি দ্বিতীয়বার কোন কথা শুনব না
ছোঁয়া : বললেই হল?আমার যেখানে ইচ্ছে সেখানে ঘুমাব তাতে আপনার কি?
সায়ন : আমার অনেককিছু,আমার বউ ফ্লোরে ঘুমাবে আর বিছানায়!কক্ষণও না,তুমি যদি ফ্লোরে ঘুমাও তাহলে আমিও ফ্লোরেই ঘুমাব…
ছোঁয়া : আপনার যা ইচ্ছে হয় করেন তাতে আমার কি?চুপচাপ শুয়ে পড়লাম…
সায়ন : ছোঁয়া আমার কথা না শুনে ফ্লোরেই শুয়ে পড়ল!ঠিক আছে দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা…আমিও ওর পাশেই শুয়ে পড়লাম
ছোঁয়া : আরে আরে কি করছেন আপনি?যান নিজের জায়গায় গিয়ে ঘুমান…
সায়ন : না যাব না
ছোঁয়া : দেখুন কোন রকম ঝামেলা না করে চুপচাপ বেডে গিয়ে ঘুমান
সায়ন : বললাম তো যাব না,গেলে আমার বউকে সাথে নিয়েই যাব
ছোঁয়া : উফ!আবার ড্রামা শুরু করেছে,কে বলেছে যে ড্রামা শুধু কুইনই হয় এখনতো দেখছি ড্রামা কিংও হয়(মনে মনে)
সায়ন : এখনও বল যাবে কিনা নাহলে কিন্তু আমি ঘুমিয়ে পড়ব
ছোঁয়া : না যাব না
সায়ন : আচ্ছা ঠিক আছে,গুড নাইট
ছোঁয়া : প্লিজ আমার কথাটা একটু বোঝার চেষ্টা করুন,আপনি এমনিতেই এত অসুস্থ তার উপর যদি আবার মেঝেতে ঘুমান তাহলেতো ঠাণ্ডা লেগে অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাবে…

সায়ন : শরীর খারাপ করলে আমার করবে তাতে তোমার কি?আমার ঘুম পাচ্ছে সো ডোন্ট ডিস্টার্ব মি
ছোঁয়া : এখন কি করব উনিতো আমার কোন কথাই শুনছেন না।এই যে শুনছেন?
সায়ন :….
ছোঁয়া : আপনি কি ঘুমিয়ে পড়েছেন?
সায়ন : পাগলী মেয়ে এত তাড়াতাড়ি কেউ ঘুমায়?কিন্তু এখন একদম কথা বলা যাবে না(মনে মনে)
ছোঁয়া : কি আশ্চর্য!উনি এত তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লেন কি করে?হয়তো ঔষধে কড়া ঘুমের ডোজ আছে…
সায়ন : হিহিহি কি বুদ্ধি!পাগলী একটা…(মনে মনে)
ছোঁয়া : এই যে শুনছেন..কি ঘুম রে বাবা!বলছি একটু উঠুন না প্লিজ…
সায়ন : ডাকো ডাকো আরো বেশি করে ডাকো।তোমার ভয়েজটা যে মিষ্টি,মন চায় সবসময় শুধু শুনতেই থাকি শুনতেই থাকি(মনে মনে)
ছোঁয়া : উফ!অসহ্য,এ দেখি আস্ত একটা কুম্ভকর্ণ।যে ঘুম দিচ্ছে আমাকে কেউ কিডন্যাপ করে নিয়ে চলে গেলেও মনে হয় টের পাবে না
সায়ন : কিহ্ আমার বউকে কিডন্যাপ করবে!কার এত বড় সাহস?একবার চেষ্টাতো করুক,মেরে হাড্ডি গুড্ডি ছুটিয়ে দিব…(মনে মনে)
ছোঁয়া : এই যে…শুনতে পাচ্ছেন…(চিৎকার করে)
সায়ন : উফ!কানের পোকা একেবারে বের করে দিল!কি হয়েছে?তোমার জ্বালায় কি একটু শান্তি করে ঘুমাতেও পারব না?
ছোঁয়া : বলছি যে প্লিজ উপরে গিয়ে ঘুমান…
সায়ন : আমিতো বলেছি তুমি না গেলে আমিও যাব না
ছোঁয়া : আচ্ছা ঠিক আছে আমিও যাচ্ছি তবুও আপনি নিচে ঘুমাবেন না প্লিজ…
সায়ন : রিয়েলি!আচ্ছা চলো..তুমি আমার একমাত্র বউ,তোমার আবদার কি ফেলতে পারি?তুমি যখন বলেছো তখন আমরা উপরেই ঘুমাবো…
ছোঁয়া : এহ্ এখন ন্যাকামি হচ্ছে!একমাত্র বউ বলে কথা,আরে বেটা এতক্ষণ তোরে কে উপরে ঘুমাইতে কইছিল?আমিইতো নাকি আমার আরেকটা সতীন আছে হুহ?(মনে মনে)
সায়ন : কি হল আবার কি ভাবছো?ঘুমাবে না?
ছোঁয়া : হ্যাঁ হ্যাঁ আসছি।উনার গায়ে চাদরটা ঠিক করে দিলাম তারপর অনিচ্ছা সত্বেও উনার পাশে গিয়ে শুয়ে পড়লাম
সায়ন : ও শুয়ে পড়তেই ওকে জড়িয়ে ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসলাম
ছোঁয়া : আরে আরে এটা কি হচ্ছে?ছাড়ুন বলছি
সায়ন : উহু
ছোঁয়া : উহু মানে?ছাড়ুন বলছি,আমাকে একটু শান্তিতে ঘুমাতে দিন প্লিজ
সায়ন : ঘুমাও না,কেউ কি নিষেধ ত
করেছে?

ছোঁয়া : এভাবে গায়ের উপর হাত-পা তুলে চেপে ধরে রাখলে ঘুমানো যায়?
সায়ন : তাতে তোমার কি সমস্যা?
ছোঁয়া : আমারইতো সমস্যা,এমন মহিষের মত ভারী শরীর নিয়ে আমাকে এমনভাবে চেপে ধরে রেখেছে আবার বলছে কি সমস্যা!(মনে মনে)
সায়ন : উফ ছোঁয়া এত নড়াচড়া করছো কেন,চুপচাপ ঘুমাও না…
ছোঁয়া : এভাবে ধরে রাখলে ঘুমাব কি করে?
সায়ন : কি করে আবার চোখ বন্ধ করে,আমি কি তোমার চোখ ধরে রেখেছি?
ছোঁয়া : উফ অসহ্য
সায়ন : অসহ্য হোক আর যাই হোক সহ্যতো তোমাকে করতেই হবে
ছোঁয়া : দেখুন শেষবার জিজ্ঞেস করছি ছাড়বেন কিনা বলুন…
সায়ন : নাহ
ছোঁয়া : আপনার সমস্যা কি?
সায়ন : আমার আবার কি সমস্যা?আমারতো কোন সমস্যা নেই,আমিতো আমার বউকে জড়িয়ে ধরেছি অন্য কাউকেতো ধরিনি…
ছোঁয়া : হে আল্লাহ এ কার পাল্লায় পড়লাম!
সায়ন : তোমার বরের মানে আমার পাল্লায়।এখন আর বিরক্ত না করে চুপচাপ ঘুমাওতো…
ছোঁয়া : ঘুম!এভাবে ঘুমানো যায়?
সায়ন : কেন যাবে না?আলবত যাবে,একবার ট্রাইতো করো..
ছোঁয়া : কিন্তু কিভাবে?
সায়ন : নড়াচড়া বন্ধ করে আমার বুকে মাথা রাখো তারপর চোখদুটো বন্ধ কর দেখবে ঘুম আপনা-আপনিই চলে আসবে…
ছোঁয়া : বললেই হলো?
সায়ন : একবার ট্রাইতো করো আর শোন এখন থেকে কিন্তু এভাবেই ঘুমাতে হবে সো প্র্যাক্টিস শুরু কর বুঝলে?
ছোঁয়া : হুহ প্র্যাক্টিস মাই ফুট!নেহায়েত আপনি অসুস্থ তাই কিছু বলতে পারছি না,নাহলে কখন আপনার মাথা ফাটিয়ে দিতাম…(মনে মনে)
(কিছু্ক্ষণ পর)
সায়ন : ছোঁয়া…
(ছোঁয়ার কোন সাড়া-শব্দ নেই)
সায়ন : ঘুমিয়ে পড়েছো?
(কোন উত্তর নেই)
সায়ন : যাব্বাবা এতক্ষণ ঝগড়া করল ঘুমাতে পারবে না বলে আর এদিকে আমাকে একা রেখেই ঘুম!স্ট্রেঞ্জ…ঠিক আছে আমি আর একা একা জেগে থেকে কি করব?
ওর কপালে একটা ভালোবাসার পরশ বুলিয়ে দিলাম তারপর বললাম,”Good morning বউ and love you so much.কবে যে তুমি আমার মনের কথাটা বুঝবে…”

(সকালে)
ছোঁয়া : ভোরের দিকে ঘুম ভাঙল,উনি এখনও আমাকে জড়িয়ে ধরে রেখেছেন কিন্তু বাঁধনটা বেশ হালকা তাই খুব সাবধানে উনার হাতটা সরিয়ে দিয়ে উঠে বসলাম।হুহ্ সারারাত ধরে আমাকে জ্বালিয়ে জ্বালিয়ে এখন কেমন নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে দেখো!দেখে মনে হচ্ছে যেন ভাজা মাছটাও উল্টে খেতে পারে না অথচ…
আর দেরি করা যাবে না তাই ঝটপট নামাজ আদায় করে কিচেনের দিকে ছুটলাম।বাবা-মা একটু পরেই বেরিয়ে পড়বেন তাই নাস্তা রেডি করে উনাকে ডাকতে গেলাম।জনাব এখনও ঘুম!এই যে শুনছেন?
সায়ন :….
ছোঁয়া : বলছি যে আপনি কি ঘুম থেকে উঠবেন না?বাবা-মা তো একটু পরেই চলে যাবে তাই বলছি তাড়াতাড়ি উঠো পড়ুন।এই যে…শুনতে পাচ্ছেন…
সায়ন : গুড মর্নিং বউ…
ছোঁয়া : বাবা-মা রেডি হয়ে গেছেন আর মারুফ ভাইয়াও চলে এসেছে…
সায়ন : বল কি!আমাকে একটু আগে ভাগে ডাকতে পারলে না?
ছোঁয়া : আগে-ভাগে!আপনি জানেন আপনাকে আমি কতক্ষণ ধরে ডাকছি?
সায়ন : ও আচ্ছা আচ্ছা তুমি যাও আমি এক্ষুণি ফ্রেশ হয়ে আসছি
ছোঁয়া : ফ্রেশ হয়ে আসছি মানে!আপনি একা একা ফ্রেশ হতে পারবেন?
সায়ন : কেন পারব না?অবশ্যই পারব…
ছোঁয়া : হয়েছে হয়েছে আর বাহাদুরি দেখাতে হবে না,দেখি আমার কাঁধে ভর দিয়ে একটু উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুনতো…
সায়ন : বললামতো আমি একাই পারব…
ছোঁয়া : দেখুন আপনার জন্য আবার মার কাছে বকা খাওয়ার কোন ইচ্ছে আমার নেই।তাই বলছি চুপচাপ উঠে দাঁড়ান নাহলে কিন্তু খুব খারাপ হয়ে যাবে…
সায়ন : Okey okey don’t freak out just cool down baby…
ছোঁয়া : Don’t call me that okey?
সায়ন : তো কি বলে ডাকতে হবে তুমিই বলে দাও
ছোঁয়া : উফ!অসহ্য…
সায়ন : হাউ স্যুইট,রাগলে আমার বউটাকে তো সেই কিউট লাগে
ছোঁয়া : বিড়বিড় করে কি বলছেন?
সায়ন : কই কিছু নাতো
ছোঁয়া : এখন ভালই ভালই উঠবেন নাকি গায়ে পানি ঢেলে দিব?
সায়ন : আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে উঠছি।ওর কাঁধে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়ালাম
ছোঁয়া : উনাকে ওয়াশরুমে নিয়ে গেলাম।উনি ফ্রেশ হয়ে বের হলে সোজা ডাইনিং টেবিলে নিয়ে গেলাম…
মা : এখন কেমন আছিস বাবা?
সায়ন : হ্যাঁ মা ভাল
বাবা : তুই আবার এত সকালে উঠতে গেলি কেন?
সায়ন : উঠেছি কি আর সাধে?তোমার বউমা এই শীতের মধ্যে গায়ে পানি ঢেলে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে…
ছোঁয়া : তো কি করব?এমন কুম্ভকর্ণের মত ঘুমালে আর কিই বা করার আছে?
মা : আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে,কথা পরেও বলা যাবে আগে নাস্তা করে নে।ওদিকে আবার ট্রেনের সময় হয়ে যাচ্ছে…
ছোঁয়া : আর কয়েকদিন থাকলে হতো না?
বাবা : না রে মা,যেতেই হবে।টেনশন নিস না খোকা একটু সুস্থ হলেই তো তুই আবার আমাদের কাছে চলে আসবি…
ছোঁয়া : হ্যাঁ কিন্তু তবুও…
মা : মন খারাপ করে না মা…

ছোঁয়া : হুম
(কিছু্ক্ষণ পর)
ছোঁয়া : ভাইয়া আপনি একটু দেখেশুনে নিয়ে যাবেন কিন্তু আর ট্রেন ছাড়লেই আমাকে একবার ফোন দিয়ে জানাবেন প্লিজ…
মারুফ : ঠিক আছে ভাবী,তুমি কোন চিন্তা কর না…
ছোঁয়া : আর তোমরা পৌঁছেি কিন্তু আমাকে ফোন করবে ঠিক আছে?
বাবা : ঠিক আছে রে মা,ভাল থাকিস…
মা : শোন মা আমরা বাসায় গিয়েই ফুলিকে পাঠিয়ে দিব
ছোঁয়া : আবার ফুলিকে কেন মা?
মা : যাতে তোর কাজের চাপ একটু হলেও কমে।ফুলি বাড়ির সব কাজ করবে আর তুই শুধু আমার ছেলেটার দিকে খেয়াল রাখবি
ছোঁয়া : লাগবে না মা,আমি একাই সব ম্যানেজ করে নিতে পারব
মা : আমি জানিতো তুই পারবি কিন্তু তবুও আমার মেয়েটাকে তো এত কষ্ট দিতে পারিনা।তুই কোন চিন্তা করিস না মা,শুধু আমার ছেলেটার দিকে খেয়াল রাখ ও একটু সুস্থ হলেই আমরা তোকে নিয়ে যাব

ছোঁয়া : তুমি কোন চিন্তা কর না মা,তোমার ছেলের কোন অযত্ন আমি হতে দিব না।উনাকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সুস্থ করে তুলব…(আফটার অল আমিওতো উনার থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দূরে সরে যেতে চাই তাই যত তাড়াতাড়ি উনি সুস্থ হবেন আমার জন্য ততই ভাল…)
সায়ন : আমি জানি তুমি কি ভাবছো?বাট আই প্রমিস আমি সুস্থ হতে হতেই তোমার মন জয় করে নিব,তোমার সব অভিমান ভাঙ্গিয়ে আপন করে নিব।এবারে যদি না পারি তাহলে হয়তো আর কখনই তোমাকে ফিরে পাব না,চিরতরে তোমাকে হারিয়ে ফেলব।তাই যা করার এই কয়দিনেই করতে হবে…(মনে মনে)
To be continued..