Childhood marriage

Childhood marriage 2 !! Part- 32

#লেখিকা-সানজিদা সেতু
রুমের সামনের বারান্দার এক কোণে মন খারাপ করে বসে আছে ছোঁয়া,খুব কান্না করতে ইচ্ছে করছে কিন্তু সবাই কি ভাববে এটা ভেবে চুপ করে আছে।ওকে এভাবে বসে থাকতে দেখে লোপা ওর কাছে এগিয়ে আসলো
লোপাঃ কি রে,এখানে বসে আছিস কেন?ভেতরে চল
ছোঁয়াঃ তুই যা,আমার যেতে ইচ্ছে করছে না
লোপাঃ কেন রে,মন খারাপ?কি হয়েছে আমাকে এটলিস্ট বল…
ছোঁয়াঃ তুই ভার্সিটি ফোরামে খবরটা দেখিসনি?
লোপাঃ হুম দেখেছি,আরে আমিতো তোকে কংগ্রাচুলেট করতে ভুলেই গেছি!কংগ্রাচুলেশন্স দোস্ত,তুইতো দেখছি দিনমানে সেলিব্রিটি হয়ে গেছিস!
ছোঁয়াঃ লোপা প্লিজ ফাযলামি করিস না,তুই জানিস না সেই দুপুর থেকে আমাকে কি কি ফেস করতে হয়েছে
লোপাঃ আচ্ছা,তা কি কি হয়েছে আপনার সাথে শুনি
ছোঁয়াঃ পুরো ক্যাম্পাসে যেখানেই গেছি সবাই এমনভাবে তাকাচ্ছিল যেন কোন নিকৃষ্ট জন্তু ওদের সামনে হেঁটে বেড়াচ্ছে!আমার ডিপার্টমেন্টের অবস্থাতো আরও বেশি খারাপ,সারাক্ষণ সবাই আমাকে নিয়ে উল্টো পাল্টা কথা বলছে,আমি যে আশেপাশেই আছি সবকিছু শুনতে পাচ্ছি সেদিলে কারো কোন খেয়ালই নেই!
লোপাঃ আমার মনে হয় তুই একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলছিস

ছোঁয়াঃ আমি বাড়াবাড়ি করছি!আরে তুই বুঝবি কিভাবে?তোর ক্যারেক্টার নিয়েতো কেউ প্রশ্ন তোলেনি।সবাই বলছে আমি নাকি এ্যাট এ টাইম দুজনের সাথে ডাবল গেম খেলছি!আমাকে ওরা বাজারের মেয়েদের সাথে তুলনা করছে!তার উপর আবার তোদের ভাইয়া…
লোপাঃ ভাইয়া!মানে সায়ন ভাই?উনার সাথে আবার কি করেছিস?
ছোঁয়াঃ বিশ্বাস কর,আমি উনার গায়ে হাত তুলতে চাইনি কিন্তু উনিও আর সবার মত আমার ক্যারেক্টার নিয়ে…আমি আর সহ্য করতে পারিনি…
লোপাঃ কিন্তু তাই বলে তুই…আমি জাস্ট ভাবতে পারছি না তুই আসলেই একটা…
ছোঁয়াঃ কি করব বল,আমি যেখানেই যাচ্ছি সবাই আমাকে কিভাবে ট্রিট করছে দেখ,ইভেন হলেও…
(লোপা হঠাৎই খেয়াল করলো ওদের আশেপাশে যেসব মেয়েরা থাকে তারাও ছোঁয়াকে তীক্ষ্ণভাবে পরখ করছে!হঠাৎ করেই ছোঁয়ার প্রবলেমটা ও বুঝতে পারলো আর ওকে শক্ত করে ধরে রাখলো)

(পরদিন)
সকাল থেকেই সায়ন ছোঁয়াকে খুঁজে বেড়াচ্ছে কিন্তু মেয়েটার কোন পাত্তাই নেই!মনে হচ্ছে যেন আজকে ক্যাম্পাসেই আসেনি কিন্তু এমনটাতো হওয়ার কথা না…তার উপর আবার ও যেখানেই যাচ্ছে মনে হচ্ছে যেন সবাই ওর দিকেই তাকিয়ে আছে আর ওর ব্যাপারেই কানাকানি করছে!কাহিনীটা কি কিছুই বুঝতে পারছে না,ক্লাস করতে আর ভাল লাগছে না তাই সেন্ট্রাল লাইব্রেরির দিকে চলে আসলো আর আসতেই মারুফ আর লোপার সাথে দেখা…
সায়নঃ আচ্ছা দোস্ত সবাই আমার দিকে এভাবে তাকাচ্ছে কেন বলতো?আর লোপা,তোমার বান্ধবী কোথায় বলতো সকাল থেকে খুঁজে বেড়াচ্ছি বাট ম্যাডামের কোন পাত্তাই নেই!

লোপাঃ আপনি এই কথা জিজ্ঞেস করছেন!আপনাদের জন্যইতো এতকিছু হয়ে গেল আর এখন এমন ভাব করছেন যেন কিছুই হয়নি!
সায়নঃ মানে!আমিতো কিছুই বুঝতে পারছি না,একটু ক্লিয়ার করে বলবে?
লোপাঃ আপনি…
(মারুফ লোপাকে থামিয়ে দিল)
মারুফঃ তুই আসলেই কিছু জানিস না?
সায়নঃ কি জানবো?কোনকিছু কি হয়েছে?
মারুফঃ ওয়েট…
(মারুফ নিজের ফোনটা সায়নের দিকে বাড়িয়ে দিল)
সায়নঃ কি এটা?
মারুফঃ ভিডিওটা দেখ
(সায়ন ফোনটা হাতে নিয়ে ভিডিওটা অন করলো আর একটু দেখতেই চোখ কপালে উঠে গেল)
সায়নঃ এটাতো…
মারুফঃ কাল দুপুরে তুই আর আয়ান ছোঁয়ার সাথে যা করেছিস তার ভিডিও
সায়নঃ কিন্তু এটা…
মারুফঃ কথা না বাড়িয়ে পুরো ভিডিওটা দেখ,আরও অনেককিছু আছে
(পুরো ভিডিওটা দেখেতো সায়নের মাথায় রক্ত উঠে গেল)
সায়নঃ এটা কে করেছে?How dare he!
মারুফঃ যে পোস্ট করেছে সে ছেলে নাকি মেয়ে আমরা কেউই জানি না,কাল দুপুরের পরপরই ভিডিওটা ভার্সিটি ফোরামে আপলোড করা হয়েছে আর তার পর পরই সব গ্রুপ আর পেজে ছড়িয়ে পড়েছে।ইনফ্যাক্ট আপলোড হওয়ার ঘন্টাখানেকের মধ্যেই একেবারে ট্রলে পরিণত হয়েছে
সায়নঃ কিন্তু এতকিছুতো…
মারুফঃ তোদের কালকের ভিডিওটার সাথে এডিট করে কিছু এ্যানিমেশন জুড়ে দেওয়া হয়েছে যাতে তোর আর আয়ানের সাথে কিছু ইন্টিমেট দৃশ্য সেট করা হয়েছে।আর আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে আয়ান আর ছোঁয়ার সেদিন রাতে ল্যাবে আটকা পড়ার ঘটনাটা,সবাই রীতিমতো বলাবলি শুরু করেছে যে সেদিন ওটা কোন কোইনসিডেন্স ছিল না,ওরা ইচ্ছে করেই…
সায়নঃ হোয়াট রাবিশ!ওরা এসব নোংরা কথা ভাবলো কি করে!
মারুফঃ শুধু তাই না,রাতারাতি আরও প্রায় ডজন খানেক ভিডিও আপলোড হয়েছে আর সবই ছোঁয়া আর তোদের ট্রাইএ্যাঙ্গেল লাভ রিলেশন নিয়ে
সায়নঃ হোয়াট!
মারুফঃ পুরো জিনিসটা এত তাড়াতাড়ি আপলোড হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে কেউ আগে থেকেই এ্যানিমেশনগুলো রেডি করে রেখেছিল,হয়তো ছোঁয়াকে যেকোনভাবে ট্র‍্যাপে ফেলাটাই ওদের উদ্দেশ্য ছিল আর কালকের ভিডিওটা জাস্ট বোনাস হিসেবে পেয়ে গেছে
সায়নঃ কিন্তু কে?কার এত বড় দুঃসাহস!মারুফ এক কাজ কর,কাল দুপুরে ক্যাফেটেরিয়ায় কে ভিডিও করেছে খুঁজে বের কর তাহলেই আসল কালপ্রিট বের হয়ে যাবে
মারুফঃ কোন লাভ নেই,কাল এত মানুষ ভিডিও করেছে যে আলাদাভাবে আইডেন্টিফাই করা জাস্ট ইম্পসিবল।আসলে ওখানে তোরা যে নাটক শুরু করছিলি তাতে…বুঝিসইতো বিনা পয়সায় নাটক দেখতে বাঙালী অলয়েজ আগে আগেই থাকে
সায়নঃ Oh shit!how could i act like such a fool?লোপা,ছোঁয়া এখন কোথায়?
লোপাঃ রুমে,সকাল থেকে একবারও রুম থেকে বের হয়নি
সায়নঃ কিন্তু এভাবেতো…ওকে এক্ষুনি এখানে আসতে বলো
লোপাঃ সেটা আর সম্ভব হবে না
সায়নঃ কিন্তু কেন?
লোপাঃ সকালে ডিপার্টমেন্ট থেকে ওকে ফোন করা হয়েছিল,ওকে টেম্পোরারিভাবে সাসপেন্ট করা হয়েছে
সায়নঃ হোয়াট!কিন্তু ওরা এভাবে কিভাবে…এখন বুঝতে পারছি কাল সন্ধ্যায় ও আমার সাথে এমন কেন করেছিল।এমনিতেই এসব নিয়ে প্রেশারের মধ্যে ছিল তার উপর আমিও ওর ক্যারেক্টার নিয়ে…নাহ এভাবে বসে থাকলে চলবে না,আমাদের এক্ষুনি কিছু একটা করতে হবে…
(ওরা যখন কথা বলছে তখনই ওখানে আয়ান চলে আসলো)
সায়নঃ তুই!এখানে কি করতে এসেছিস?
আয়ানঃ দেখ সায়ন,এখন নিজেদের মধ্যে ঝামেলা করার সময় নেই।কি হয়েছে সেটা তুইও জানিস আর আমিও জানি তাই বলছি আর ঝামেলা না বাড়িয়ে এখন একসাথে কাজ করতে হবে।এই সময় সব থেকে জরুরি বিষয় হচ্ছে যেভাবেই হোক ছোঁয়াকে এই সিচুয়েশন থেকে বের করে আনতে হবে তাই বলছি….
সায়নঃ ওকে তাই হবে বাট সবকিছুই শুধুমাত্র ছোঁয়ার জন্য…

(দুদিন পর)
আজ আয়ানের বার্থডে,পুরো বাড়িটাতে মেহমানে গিজগিজ করছে।সায়ন আর ছোঁয়া বাড়ির প্রবেশ মুখে দাঁড়িয়ে আছে,ছোঁয়াকে বেশ নার্ভাস দেখাচ্ছে তাই সায়নের হাতটা শক্ত করে ধরে রেখেছে।আসলে ভার্সিটির ওই স্ক্যান্ডালটার পর এই প্রথম সবার সামনে বের হল ছোঁয়া,এই কয়দিন নিজেকে রুমেই বন্দি করে রেখেছিল।না না,চিন্তা করবেন না পুরো ঘটনাটাই এখন সবার সামনে পরিষ্কার হয়ে গেছে,সায়ন আর আয়ানের মিলিত চেষ্টায় সত্যিটা বেরিয়ে এসেছে।রিয়া আর যে কয়জন ওকে এই কাজে সহায়তা করেছিল,সায়নরা সব প্রমাণ হাজির করার পর ওরাও সবার সামনে নিজের মুখে দোষ স্বীকার করে নিয়েছে।ভার্সিটি কর্তৃপক্ষ ছোঁয়ার কাছে অফিসিয়ালি ক্ষমা চেয়ে ওর সাসপেনশন অর্ডার বাতিল করে দিয়েছে।আসল অপরাধীদের তাদের সাজাস্বরূপ তৎক্ষণাৎ ছাত্রত্ব বাতিল করতে চেয়েছিল কিন্তু ছোঁয়ার অনুরোধে শুধুমাত্র লিখিত ওয়ার্নিং দিয়েই ছেড়ে দিয়েছে।ছোঁয়ার এই ডিসিশনে সায়ন কিন্তু মোটেও খুশি হয়নি,ও চাইছিল রিয়া উপযুক্ত শাস্তি পাক কিন্তু ছোঁয়া রাজি হয়নি,আসলে ছোঁয়া চায়নি ওর কারণে কারো জীবন নষ্ট হোক তাই…
আজকে এই বার্থডে পার্টিতে ছোঁয়া কিছুতেই আসতে চাইছিল না কিন্তু সবার অনুরোধে শেষমেশ রাজি হতে একরকম বাধ্য হয়েছে।কিন্তু এই পর্যন্ত এসে আর ভেতরে ঢোকার সাহস হচ্ছে না তাই চুপচাপ এখানেই দাঁড়িয়ে আছে
সায়নঃ কি হল,চল…

ছোঁয়াঃ না মানে…আমি…আসলে…
সায়নঃ কি হয়েছে ছোঁয়া?কি সমস্যা?
ছোঁয়াঃ আসলে ভাবছিলাম সবাই ব্যাপারটাকে ঠিক কিভাবে নেবে..মানে আমি বলতে চাইছিলাম সবাই যদি আবার আমাকে ভুল বোঝে,আমাকে নিয়ে আবারও হাসাহাসি করে,কটু কথা শোনায়…না না আমার ভেতরে যাওয়া ঠিক হবে না,আমি বরং এখনই চলে যাই সেটাই সবার জন্য ভাল হবে
(ছোঁয়া চলে যেতে নিল,সায়ন ওর হাত চেপে ধরলো)
সায়নঃ কোত্থাও যাবে না তুমি,চুপচাপ আমার সাথে ভেতরে চলো
ছোঁয়াঃ কিন্তু…
সায়নঃ ছোঁয়া,দেখি আমার চোখের দিকে একবার তাকাওতো
ছোঁয়াঃ হুম
সায়নঃ আমার উপর বিশ্বাস রাখো,আমি আছিতো তোমার পাশে,তোমার কিচ্ছু হবে না…
ছোঁয়াঃ কিচ্ছু বলতে পারলাম না,কি বলব উনার চোখে যে আমার সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেয়ে গেছি
সায়নঃ মুচকি হেসে ওর দিকে হাত বাড়িয়ে দিলাম
ছোঁয়াঃ নিজের অজান্তেই কখন যে উনার হাত ধরে হাঁটতে শুরু করেছি বুঝতেই পারিনি

পার্টি বেশ জমে উঠেছে,ডিনার শেষ করে সবাই ডান্সফ্লোরে নেমে এসেছে।একটার পর একটা ডিজে মিউজিক বেজে যাচ্ছে আর তার সাথে চলছে ইচ্ছেমত একেকজনের একের রকমের নাচ।হঠাৎই সব মিউজিক বন্ধ হয়ে গেল আর মাইক্রোফোন হাতে আয়ানকে দেখা গেলো একেবারে ডান্সফ্লোরের মাঝখানে
আয়ানঃ Ladies and gentleman,আজকের দিনটা আমার জন্য অনেক ইম্পর্টেন্ট একটা দিন কারণ আজকের এই দিনেই আমি এই পৃথিবীর মুখ দেখেছিলাম।তাই এই স্পেশাল দিনেই আমি আমার জীবনের সবচেয়ে ইম্পর্টেন্ট কাজটা করতে চাই।আমি জানি কাজটাতে আমি একটু বেশিই তাড়াহুড়ো করে ফেলছি কিন্তু আই থিঙ্ক আজকে যদি কাজটা না করি তাহলে হয়তো অনেক দেরি হয়ে যাবে,হয়তো এই সুযোগটা আর কখনোই পাব না আর তার জন্য আমাকে সারাজীবন পস্তাতে হবে তাই…
যাই হোক,ছোঁয়া…যেদিন তোমাকে প্রথম দেখেছিলা সেদিনই তোমাকে আমার ভালো লেগেছিল,সেই ভালোলাগাটাই আস্তে আস্তে ভালোবাসায় পরিণত হয়েছে।আমি জানি,I am not perfect but I want to be perfect just for you.আমার জন্য তুমি এর মধ্যেই অনেক সাফার করে ফেলেছো বাট আই প্রমিজ আর তোমাকে কোন কষ্ট পেতে দেব না,সব রকম দুঃখ কষ্ট থেকে তোমাকে রক্ষা করব,পৃথিবীর সব সুখ তোমার হাতের মুঠোয় এনে দিব।Chowa,will you be my girlfriend?
(আয়ান ছোঁয়ার সামনে হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে,ছোঁয়া এতক্ষণ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিল এবার আড়চোখে সায়নের দিকে তাকালো।সায়নকে দেখে মনে হচ্ছে আয়ানকে এক্ষুণি কাঁচা খেয়ে ফেলবে,ছোঁয়ার মাথাটা আর কাজ করছে না কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না।ওদিকে আশেপাশে সবাই চিৎকার শুরু করেছে,ছোঁয়াকে হ্যাঁ বলে দিতে বলছে কিন্তু…)
আয়ানঃ কি হল ছোঁয়া?হাতটা ধরো…
ছোঁয়াঃ আ..আমার একটা কথা ছিল
আয়ানঃ ওসব পরে হবে আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও প্লিজ…
ছোঁয়াঃ Sorry I can’t because I am married
(এক নিঃশ্বাসে ছোঁয়া কথাগুলো বলেই মাথা নিচু করে ফেলল,হঠাৎ ওর এমন উত্তর শুনে সবাই অবাকের চরম সীমায় পৌঁছে গেছে,সবাই একজন আরেক জনের দিকে তাকাচ্ছে।একটু সময় নিয়ে ছোঁয়া আবারও মাথা তুলে তাকালো)
ছোঁয়াঃ সবাই ঠিকই শুনেছেন,I am married আর হাজবেন্ড…
(ছোঁয়া আর কিছুই বলতে পারলো না কারণ তার আগেই সায়ন ওর মুখ চেপে ধরে ওকে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে আসলো)
ছোঁয়াঃ ছাড়ুন আমাকে,কি করছেন এসব?
সায়নঃ ভেতরে এসব কি পাগলামি করছিলে?
ছোঁয়াঃ যা করছিলাম একদম ঠিক করছিলাম,কাজটা আমার আরও আগেই করে ফেলা উচিত ছিল তাহলে হয়তো…
সায়নঃ দেখো ছোঁয়া,যা হয়েছে ওটা জাস্ট একটা অ্যাক্সিডেন্ট,এর জন্য তুমি কোনভাবেই দায়ী না
ছোঁয়াঃ সে যাই হোক,শুরু যখন করেছি শেষতো করতেই হবে।দেখি আমাকে যেতে দিনতো…
(ছোঁয়া চলে যাচ্ছিলো,সায়ন ওকে আটকালো।দুজনে দুজনের এত কাছাকাছি চলে এসেছে যে দুজনের নিঃশ্বাসের শব্দটাও যেন শুনতে পাচ্ছে।)
ছোঁয়াঃ আরে আপনি…
সায়নঃ শসসস…দেখো ছোঁয়া,তুমি যে বিবাহিত এই কথাটা যে সবার সামনে স্বীকার করেছো এটাই আমার জন্য অনেক,আমার পরিচয়টা এখনই সবাইকে বলার কোন দরকার নেই।আর কেউ খেয়াল করুক আর না করুক,তখন তোমার চোখের ভাষাটা আমি কিন্তু ঠিকই বুঝে নিয়েছি,ঐ চোখে আমি স্পষ্ট কষ্টের ছাপ দেখতে পেয়েছি।আমি চাই না চাপের মুখে তুমি কোন ডিসিশন নাও,যেদিন মন থেকে আমাকে মেনে নিতে পারবে,বুক ফুলিয়ে সবার সামনে বলতে পারবে আমিই তোমার হাজবেন্ড সেদিনই আমাকে সবার সামনে নিয়ে এসো তার আগে না…
ছোঁয়াঃ কিন্তু…
সায়নঃ ব্যাস আর কোন কথা না,অনেক রাত হয়ে গেছে আর ভেতরে যাওয়ার দরকার নেই,চলো তোমাকে পৌঁছে দিয়ে আসি

সায়ন আর ছোঁয়া বাইকে করে কিছুদূর এগোতেই হঠাৎ কোথা ঝমঝম করে বৃষ্টি নেমে এলো,তুমুল বৃষ্টিতে সামান্য দূরের জিনিসও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না।আশেপাশে মাথা গোঁজার মত কোন জায়গাও নেই তাই কোথাও দাঁড়িয়ে বৃষ্টি থামার জন্য ওয়েটও করতে পারছে না।সামান্য কথা বলতেই চাইলেও চিৎকার করে বলতে হচ্ছে
সায়নঃ ছোঁয়া…
ছোঁয়াঃ কি…
সায়নঃ এভাবেতো বেশিদূর যাওয়া যাবে না,আমি ঠিকমত কিছুই দেখতে পারছি না
ছোঁয়াঃ তাহলে?
সায়নঃ বলছিলাম যে ভার্সিটিতো এখান থেকে অনেক দূরে বাট আমাদের বাসাটা জাস্ট দশ মিনিটের পথ তাই…
ছোঁয়াঃ আচ্ছা চলেন
সায়নঃ মা..ম..মানে…
ছোঁয়াঃ কষ্ট করে আর অতদূর যেতে হবে না তার থেকে বরং…
সায়নঃ সত্যি!
ছোঁয়াঃ হুম

ওরা যখন বাসায় ঢুকলো তখনই সায়নের ফোনটা বেজে উঠল,মারুফ ফোন দিয়েছে
মারুফঃ কি রে,কোথায় তুই?ভাবীর সাথে আবার খারাপ বিহেভ করিসনিতো,দেখ এখানে কিন্তু মেয়েটার কোন দোষ নেই তাই বলছিলাম…
সায়নঃ টেনশন নিস না,আমি আর কোন পাগলামি করিনি
মারুফঃ সে যাই হোক আগে বল এতবার ফোন দিলাম ধরলি না কেন?জানিস আমাদের কত টেনশন হচ্ছিল…
সায়নঃ আরে বাইরে সেই বৃষ্টি হচ্ছে তাই ছোঁয়াকে নিয়ে…
মারুফঃ ওয়েট ওয়েট ও কি এখনও তোর সাথেই আছে?
সায়নঃ হুম
মারুফঃ তোরা কোথায় আছিস বলতো…
সায়নঃ আর বলিস না,বৃষ্টির জন্য আর ক্যাম্পাসের দিকে যেতে পারিনি তাই ওকে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম
মারুফঃ বাসায়!আচ্ছা ঠিক আছে রাখছি বাই…
সায়নঃ মানে কি,এই মারুফ এই…ধ্যাত কথা শেষ না করতেই কেটে দিল!
(একটু পরেই সায়নের ফোনটা আবার বেজে উঠল,মারুফের মেসেজ)
“টেনশন নিস না আজকে আর আমি বাসায় ফিরছি না,বাঁকিরাও যাতে না ফিরতে পারে সেই ব্যবস্থা করছি।Just relax bro and enjoy your date.All the best….”
চলবে…