Childhood marriage

Childhood marriage 2 !! Part- 17

#পর্ব-১৭
#লেখিকা-সানজিদা সেতু
আজ সারাদিনই সায়নের ফোনটা ট্রাই করে যাচ্ছে রিয়া,কিন্তু ওপাশ থেকে কোনই রেসপন্স পাওয়া যাচ্ছে না।রিয়া বরাবরই একটু দেরি করে ঘুম থেকে উঠে,আজকেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।ঘুম থেকে উঠেই সায়নের এতগুলো মিসকল দেখে মনে পড়ল আজ ভোরে সায়নকে ঘুম থেকে উঠানোর কথা ছিল বাট…
রিয়াঃ ইশ রে,কেন যে এত ঘুমাতে গেলাম!বাট ব্যপার না,এতগুলো ফোন যখন দিয়েছে ট্রেন তাহলে ঠিকই ধরতে পেরেছে।কিন্তু এখন আমার ফোন ধরছে না কেন?সকাল গড়িয়ে বিকেল,বিকেল গড়িয়ে রাত হয়ে গেল অথচ একটাবার আমার সাথে কথা বলার প্রয়োজন বোধ করল না!একবার ঢাকায় ফিরুক,তারপর দেখাচ্ছি মজা…

সায়নঃ তুমি কি আজকে এখানে ঘুমাবে নাকি?গতবার কি করেছিলাম মনে নেই?
ছোঁয়াঃ দেখুন গতবার কিছু বলিনি বলে ভাববেন না যে এবারও কিছু বলব না,এবার কোন বাড়াবাড়ি করলে কিন্তু আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না
সায়নঃ তুমি কিন্তু…
ছোঁয়াঃ আপনি বেডে ঘুমান আর আমি সোফায় ঘুমাব,আশা করি কোন প্রবলেম হবে না
সায়নঃ ছোঁয়া…
ছোঁয়াঃ আপনি জার্নি করে এসেছেন,অনেক ক্লান্ত সো ঘুমান,গুড নাইট
সায়নঃ বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু
ছোঁয়াঃ দেখুন আমার এক্সাম চলছে সো প্লিজ ডোন্ট ডিস্টার্ব মি,আপনার মত আপনি থাকেন আর আমাকেও আমার মত থাকতে দিন ওকে?
সায়নঃ কিসের এক্সাম?তুমি কি এবার এইচএসসি দিচ্ছো নাকি?
ছোঁয়াঃ হুম আর মাত্র একটা এক্সাম আছে,তারপর প্র‍্যাক্টিকাল
সায়নঃ ওহ আচ্ছা ঠিক আছে,তুমি তাহলে মন দিয়ে পড়।গুড নাইট…

সায়নতো গুড নাইট বলে ঘুমিয়ে পড়ল কিন্তু নাইটটা কিন্তু কোনভাবেই গুড হল না।তখন প্রায় মাঝরাত,ছোঁয়া তখনও টেবিলে বসে পড়ছে,হঠাৎ করেই কারো গোঙানির আওয়াজ শুনতে পেল।চমকে উঠে আশেপাশে তাকাতেই দেখলো সায়ন বিছানাতে শুয়ে কেমন ছটফট করছে!ছোঁয়া এক মুহূর্তও চিন্তা না করে সায়নের দিকে ছুটে গেল…
ছোঁয়াঃ এই যে শুনছেন,কি হয়েছে আপনার?এমন করছেন কেন?
(সায়ন যেন কিছুই শুনতে পাচ্ছে না,শুধু ছটফট করছে,মনে হচ্ছে যেন তীব্র কোন যন্ত্রণা হচ্ছে)
ছোঁয়াঃ এই যে শুনছেন?আপনার কি খুব বেশি কষ্ট হচ্ছে?মানুষটাতো দেখছি কোন কথাই বলছে না!কি যে করি…উনার কি প্রবলেম বুঝব কিভাবে?আচ্ছা জ্বর আসেনিতো?বুঝব কিভাবে,তার জন্যতো গায়ে হাত দিতে হবে কিন্তু….
(অনেক্ষণ সাত-পাঁচ ভেবে অবশেষে সায়নের কপালে হাত রাখলো ছোঁয়া,প্রায় সাথে সাথেই চমকে উঠল)
ছোঁয়াঃ হায় হায়!এতো দেখি জ্বরে পুরো শরীর পুড়ে যাচ্ছে!কিন্তু হঠাৎ করে এসব…নিশ্চয়ই বৃষ্টিতে ভিজে…কিন্তু এখন কি করব?এত রাতেতো কোন ডক্টরকেই পাওয়া যাবে না,মা-বাবাকে ডাকব?না থাক অনেক রাত হয়ে গেছে,সবাই ঘুমাচ্ছে তাই ডাকাডাকি ঠিক হবে না।কিন্তু উনাকে এই অবস্থায়…নাহ কিছু একটাতো করতেই হবে কিন্তু কি করি..কি করি…
চট করেই চিন্তাটা মাথায় আসলো ছোঁয়ার,এক বালতি পানি আর একটা পাতলা সুতি কাপড় নিয়ে এসে সায়নের মাথার পাশে বসে পড়ল তারপর আলতো হাতে ওর পুরো শরীর ভেজা কাপড়টা দিয়ে মুছে দিতে লাগলো।তাতে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হল,তারপর অনেক্ষণ ধরে ওর মাথায় পানি ঢাললো কিন্তু তাতেও জ্বর ছাড়ছে না দেখে উঠে দাঁড়ালো।কিচেনে গিয়ে ঝটপট একটা স্যুপ বানিয়ে নিয়ে আসলো তারপর অনেক কষ্টে সায়নকে কিছুটা স্যুপ খাইয়ে ঔষধ খাইয়ে দিল।কিছুক্ষণের মধ্যেই সায়নের জ্বরটা ঘাম দিয়ে ছেড়ে গেল,ছোঁয়া যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো।কিন্তু বিপত্তিটা বাঁধলো অন্য জায়গায়,ছোঁয়া যখন উঠতে গেল তখন একটা হালকা টান অনুভব করল।পেছন ফিরতেই বুঝতে পারলো আসল ঘটনা কি,সায়ন ছোঁয়ার হাতটা টেনে ধরে রেখেছে।সায়নের তখন ঘুমে অজ্ঞান,হয়তো কি করছে না করছে তার কিছুই জানে না আর তাই খুব আলতো করেই ছোঁয়ার হাতটা ধরে রেখেছে।ছোঁয়া চাইলেই হাতটা ছাড়িয়ে উঠে আসতে পারতো কিন্তু কোন এক অজানা কারণে উঠতে ইচ্ছে করল না বরং নিজে থেকেই সায়নের অন্য হাতটা শক্ত করে ধরে ওর বেডের পাশেই বসে রইল!

(সকালে)
ভোরের আলো এখনও ঠিকভাবে ফুটতে শুরু করেনি,গরমের এই সময়টাতে স্বাভাবিকভাবেই ভোরের দিকে একটু ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা ভাব থাকে তাই এই সময়ের ঘুমটাও একটু বেশিই গভীর হয়।আজকেও তার ব্যতিক্রম হয়নি বরং তার সাথে ষোলকলা পূর্ণ করেছে সকালের মৃদুমন্দ দক্ষিণা বাতাস,মাঝে মাঝেই কিছু পাখির ডাক ভেসে আসছে হয়তো খাবারের সন্ধানে বের হচ্ছে।সায়নের ঘুমটা হঠাৎ করেই ভেঙ্গে গেল,মাথাটা কেমন যেন ভারী ভারী লাগছে,কাল রাতে কখন কিভাবে ঘুমিয়েছে কিছুই মনে করতে পারছে না,সবকিছুই কেমন যেন ভাসা ভাসা মনে হচ্ছে,শুধু মনে আছে কাল রাতে ওর কিছু একটা হয়েছিল আর তখন কেউ একজন ওর দিকে খেয়াল রাখছিল।বুকের উপরে মনে হচ্ছে খুব ভারী কিছু চেপে বসেছে,আসলেই কি কিছু আছে নাকি…যাই হোক পিটপিট করে চোখ মেলে তাকালো সায়ন আর তাকাতেই চমকে উঠল।ওর বুকের উপরে মাথা রেখে ছোঁয়া ঘুমিয়ে আছে!
সায়নঃ এই মেয়ে এখানে কি করছে?কখন আসলো এখানে আর ওর সাহস হল কিভাবে আমার সাথে এভাবে…
(সায়ন হঠাৎ করেই খেয়াল করল ছোঁয়া চেয়ারে বসে আছে,বিছানায় না,শুধু ওর মাথাটা সায়নের বুকের উপর আর ছোঁয়া না,সায়ন নিজেই ছোঁয়ার হাত চেপে ধরে রেখেছে)
সায়নঃ ওহ শিট তারমানে কাল রাতে ছোঁয়াই আমাকে…তারমানেতো ও সারারাত ঘুমাতেই পারেনি আর যেটুকুই ঘুমিয়েছে এভাবে বসে!কিভাবে সম্ভব?ওকে কি ঠিক করে শুইয়ে দিব?না থাক তখন যদি আবার ওর ঘুম ভেঙ্গে যায়…তারথেকে বরং এভাবেই থাক,আরেকটু ঘুমাক
(কিছুক্ষণ ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে সায়ন নিজেও ঘুমিয়ে পড়ল)

ছোঁয়ার ঘুম ভাঙলো আরও কিছুক্ষণ পর,সায়ন তখনও ঘুমাচ্ছে।ঘুম ভেঙেই ছোঁয়া দেখল সায়ন একহাতে ওকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে আর ও নিশ্চিন্ত মনে সায়নের বুকে শুয়ে আছে
ছোঁয়াঃ ইশ,কি লজ্জা কি লজ্জা!ছোঁয়া…তুই আসলেই একটা ইডিয়েট,উনি নাহয় অসুস্থ তাই বুঝতে পারছেন না এক্স্যাক্টলি কি করছেন কিন্তু তুই?তুইতো সুস্থ তাহলে এসব উল্টো পাল্টা কাজ ক্রন করছিস!Now shut up and get up quick…
ছোঁয়া আর এক মুহূর্তও সময় নষ্ট না করে উঠে বসলো,ছোঁয়ার নড়াচড়াতে সায়নেরও ঘুম ভেঙ্গে গেল।দুজনের দিকে দুজনের চোখ পড়তেই ওরা মাথা নিচু করে ফেলল,আসলে দুজনেই বেশ আনইজি ফিল করছে তাই এই সিচুয়েশনে ঠিক কি বলা বা করা উচিত কিছুই বুঝতে পারছে না।দুজন দুজনের দিকে তাকাতে পর্যন্ত পারছে না,অনেক্ষণ চুপ থাকার পর দুজনে একসাথে বলে উঠল…
“Sorry…আমি আসলে…কাল রাতে…”

হঠাৎই ওরা খেয়াল করল যে দুজনে একই কথা একসাথে বলছে
সায়নঃ আচ্ছা তুমি আগে বল তারপর আমি বলছি
ছোঁয়াঃ না না আপনিই আগে বলুন প্লিজ…
সায়নঃ আমি…আসলে…ঠিক কি বলব…
(হঠাৎ ছোঁয়া উঠে গিয়ে সায়নের কপালে হাত দিল,সায়নতো পুরো অবাক ওর কাণ্ড দেখে তাই কিছুই বলতে পারলো না)
ছোঁয়াঃ আপনার জ্বর কি এখনও আছে?দেখেতো মনে হচ্ছে নেই কিন্তু…থার্মোমিটারটা যে কোথায় রাখলাম..কাজের সময়ই এগুলোকে গায়েব হতে হবে!উফ অসহ্য…
সায়নঃ থার্মোমিটার লাগবে না,আমার জ্বর নেই
ছোঁয়াঃ আপনি বললেই হল!আগে আমি মেপে দেখিব তারপর বিশ্বাস করব
সায়নঃ কি আশ্চর্য!আমার জ্বর আছে কি নেই সেটা আমিই জানব না!
ছোঁয়াঃ এইতো পেয়েছি,দেখি চুপ করে বসুনতো আমি টেম্পারেচার মাপবো
সায়নঃ কিছুতেই না,আমি বলছি জ্বর নেই মানে নেই।সো এসব থার্মোমিটার টিটারের কোন দরকার নেই
ছোঁয়াঃ আমিও বলে দিচ্ছি আপনার টেম্পারেচারতো আমি মেপেই ছাড়ব,দেখি আপনি কিভাবে আটকান…
সায়নঃ নাহ এই মেয়ে দেখছি এভাবে শুনবে না অন্য ব্যবস্থা করতে হবে
ছোঁয়াঃ কি ব্যবস্থা করবেন শুনি?দেখি মুখটা খোলেনতো…
ছোঁয়া জোর করে সায়নের মুখ খোলানোর চেষ্টা করল।সায়ন মুখতো খুললই না উল্টো ছোঁয়াকে দূরে সরানোর চক্করে ওকে নিয়েই হুড়মুড় করে বিছানায় পড়ে গেল।ছোঁয়া নিচে আর সায়ন ওর উপরে,ছোঁয়া ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলেছে।একটু পরে চোখ মেলে সায়নকে এভাবে দেখে আরও আনইজি ফিল করতে লাগলো,সায়নেরও একই অবস্থা তাই ছোঁয়াকে ছেড়ে দিয়েই উঠে বসলো।ছোঁয়াও উঠে বসলো,দুজনেই মাথা নিচু করে আছে,কেউই কোন কথা বলছে না
(কিছুক্ষণ পর)
সায়নঃ সরি
ছোঁয়াঃ ইটস ওকে
সায়নঃ Thanks
ছোঁয়াঃ কেন?
সায়নঃ কাল রাতে আমার জন্যে যা যা করলে তার জন্যে
ছোঁয়াঃ ও ওটাতো আমি…আসলে আমার জায়গায় অন্য কেউ হলেও তাই করতো
সায়নঃ তা হয়তো করতো কিন্তু এখন যেহেতু তুমি করেছো সো ধন্যবাদটা তোমারই প্রাপ্য
ছোঁয়াঃ আচ্ছা,আপনি ফ্রেশ হয়ে নিন আমি বরং আপনার খাবারের ব্যবস্থা করি
(ছোঁয়া চলে যাচ্ছিল,সায়ন পেছন থেকে ওকে ডাক দিল)
সায়নঃ ছোঁয়া…
ছোঁয়াঃ জ্বি?

সায়নঃ সরি
ছোঁয়াঃ কিন্তু কেন?
সায়নঃ এতদিন তোমার সাথে অযথাই অনেক ঝগড়া করেছি তাই,আই প্রমিজ আর কক্ষনো এমন করব না
ছোঁয়াঃ ইটস ওকে
সায়নঃ ইটস ওকে মানে কি?তুমিওতো কতবার শুধু শুধু আমার পেছনে লেগেছো তারজন্য সরি বলবে না?
ছোঁয়াঃ আমি মোটেও শুধু শুধু ঝগড়া করিনি,সব হয়েছে আপনার জন্য
সায়নঃ তারমানে তুমি সরি বলবে না?
ছোঁয়াঃ আমি কেন সরি বলতে যাব?দোষ আপনার সো আপনি সরি বলবেন
সায়নঃ আচ্ছা ঠিক আছে,তোমাকে বলতে হবে না আমিই বলছি,”Mrs Tasniya Mahbub Chowa,I am sorry.Please accept my apology…”
ছোঁয়াঃ হুম your apology is accepted
সায়নঃ Thank you
ছোঁয়াঃ আচ্ছা এখন কি আমি যেতে পারি?
সায়নঃ ওয়েট…জাস্ট এক মিনিট প্লিজ
ছোঁয়াঃ জ্বি?
সায়নঃ আচ্ছা এতদিন আমরা যত ঝামেলা করেছি চল সব ভুলে যাই আর নতুন করে সবকিছু শুরু করি
ছোঁয়াঃ মানে?
সায়নঃ মানে…Just asume as we are strangers.আমরা কেউ কাউকে চিনি না,আজকেই আমাদের পরিচয় হল সো সবকিছু আজকে থেকেই শুরু হবে
ছোঁয়াঃ ওকে…তাহলে এখন?
সায়নঃ এখন…হুম এখন আমরা নিজেদের পরিচয় দিব।Hi,I am Mahbub Hasan Sayon,you?ছোঁয়ার দিকে হাত বাড়িয়ে দিলাম
ছোঁয়াঃ Tasniya Mahbub Chowa,উনার সাথে হ্যাণ্ডশেক করলাম
সায়নঃ Nice to meet you.So…friends?
ছোঁয়াঃ Okey friends

সায়নঃ ওহ ছোঁয়া…
ছোঁয়াঃ আবার কি?
সায়নঃ সবকিছু যেহেতু নতুন করে শুরু করছি তাহলে আগেরবারের মত আর এবার ঝগড়া কর না প্লিজ
ছোঁয়াঃ মানে কি,আগেরবার কি আমি ঝগড়া করেছি?নাকি আপনি?
সায়নঃ আমি আবার কখন ঝগড়া করলাম,সবসময়তো তুমিই কর
ছোঁয়াঃ এই যে শোনেন,আমি কিন্তু মোটেও ঝগড়া করি না।সবসময় আপনিই শুরু করেন আর পরে আমার দোষ দেন দ্যাটস নট ফেয়ার…
সায়নঃ সবাই জানে মেয়েরা ঝগড়াটে,ছেলেরা না
ছোঁয়াঃ সব মেয়ে ঝগড়াটে না আবার সব ছেলেও কিন্তু ধোয়া তুলসীপাতা না বুঝেছেন?
সায়নঃ তুমি কিন্তু আবারও ঝগড়ার দিকে মোড় নিচ্ছো
ছোঁয়াঃ শুরুটা কে করেছিল শুনি?
সায়নঃ কে আবার তুমি
ছোঁয়াঃ আমি নাকি আপনি?বেটা বজ্জাত,নিজে শুরু করে আবারও আমার উপর দোষ চাপাচ্ছে!তোরেতো আমি…
সায়নঃ এই এক মিনিট এক মিনিট
ছোঁয়াঃ আবার কি?
সায়নঃ আচ্ছা আমরা আবারও ঝগড়া কেন করছি?
ছোঁয়াঃ কারণ আপনি ঝগড়া করার নতুন একটা ইশ্যু ক্রিয়েট করেছেন
সায়নঃ তা ইশ্যুটা কি?
ছোঁয়াঃ আসলেইতো ইশ্যুটা কি?আমারতো মনে নেই,আপনার মনে আছে?
সায়নঃ উহু
ছোঁয়াঃ তারমানে এতক্ষণ আমরা কোন ইশ্যু ছাড়াই…
সায়নঃ হুম

ছোঁয়াঃ জানেনই যখন তাহলে আগে বললেন না কেন?
সায়নঃ কারণ আমি নিজেও ভুলে গিয়েছিলাম
ছোঁয়াঃ ওহ তাহলে ঠিক আছে,আচ্ছা আমি তাহলে যাই
সায়নঃ ওকে
(ছোঁয়া চলে গেল,সায়নও ফ্রেশ হওয়ার জন্য ওয়াশরুমে ঢুকলো।ছোঁয়ার কথা মনে পড়তেই আনমনে হেসে দিল)
সায়নঃ মেয়েটা আসলেই একটা পাগলী আর এই পাগলীটার সাথে থাকলে আমি নিজেও কেমন সব উদ্ভট আচরণ করি যার অনেককিছুই আমার ক্যারেক্টারে নেই
(সায়ন যখন এসব ভাবছে তখনই ছোঁয়া রুমে ঢুকল,সায়ন তখনও ওয়াশরুমে।ছোঁয়া আস্তে আস্তে ওয়াশরুমের দিকে এগিয়ে গেল তারপর আস্তে করে দরজায় নক করল)
ছোঁয়াঃ এই যে শুনছেন?আর কতক্ষণ লাগবে?
সায়নঃ এইতো প্রায় হয়েই গেছে
ছোঁয়াঃ আপনার নাস্তা আর ঔষধ টেবিলে রেখে দিলাম,তাড়াতাড়ি বের হন নাহলে কিন্তু ঠাণ্ডা হয়ে যাবে
সায়নঃ আচ্ছা
ছোঁয়াঃ আল্লাহই জানে মানুষ এতক্ষণ ধরে ওয়াশরুমে কি করে,সেই কখন ঢুকেছে এখনও বের হওয়ার কোন নাম নেই!যা ইচ্ছে করুক তাতে আমার কি,আমি বরং যাই পড়তে বসি।বই খাতা সব নিয়ে বাইরের দিকের ঘরটাতে চলে আসলাম।এই ঘরটা আসলে একটা অফিস বলা যায়,প্রায়দিন বিকেলেই গ্রামের লোকজন বাবার কাছে নানান সমস্যা নিয়ে আসে,বাবা এখানে বসেই সেসবের সমাধান করেন।বিকেল ছাড়া অন্য সময় এটা একরকম ফাঁকাই থাকে,আমার রুমে এখন উনি আছেন তাই আমি এখানে চলে আসলাম একটু নিরিবিলিতে পড়াশোনা করব বলে
সায়নঃ পুরো শাওয়ার নিয়ে তারপর বের হলাম কিন্তু ছোঁয়া কই?ওকেতো কোথাও দেখতে পাচ্ছি না…টেবিলের উপর খাবারের ট্রে আর তারসাথে আমার ঔষধগুলো রেখে গেছে দেখলাম।ঝটপট খাওয়া শেষ করলাম,ভেবেছিলাম এর মধ্যেই ছোঁয়া চলে আসবে কিন্তু এই মেয়েরতো কোন খবরই নেই!অগত্যা রেডি হয়ে বাইরে চলে আসলাম
মাঃ কি রে খোকা,কই যাচ্ছিস?
সায়নঃ কোথাও না মা,ওই একটু টগরদের সাথে…
মাঃ কোত্থাও যাবি না তুই,আজ সারাদিন বাড়িতেই থাকবি
সায়নঃ কিন্তু মা…

মাঃ কোন কিন্তু না,ছোঁয়া বলছিল তোর নাকি জ্বর এসেছে…
সায়নঃ ও কিছু না মা,ওই কালকে একটু বৃষ্টিতে ভিজেছিলাম তাই…তুমি চিন্তা কর না এখন সব ঠিক হয়ে গেছে
মাঃ এই পাগলী মেয়েটা আমাদেরকে একবার ডাকেওনি!সারারাত জেগে একা একা কি যে করেছে…এমনিতেও ওর পরীক্ষা তার উপর এভাবে রাত জাগা…
সায়নঃ মার কথা শুনে হঠাৎই মনে পড়লো ছোঁয়াতো পরীক্ষা চলছে,এই জিনিসটা আমার মাথায় আগে কেন আসলো না!
মাঃ শোন জ্বর থাকুক আর না থাকুক তুই কিন্তু আজকে বাইরে যেতে পারবি না এটাই আমার শেষ কথা
সায়নঃ আচ্ছা মা,ছোঁয়া কোথায়?
মাঃ কোথায় আর যাবে,দেখ আশেপাশেই কোথাও আছে হয়তো…
মার সাথে কথা শেষ করে বাহির বাড়ির দিকে আসতেই থমকে দাঁড়ালো সায়ন,কিছুক্ষণ কিছু একটা নিয়ে চিন্তা করলো তারপর হনহন করে ওদিকে হাঁটা ধরলো…
চলবে…