Childhood marriage

Childhood marriage 2 ! Part- 11

#লেখিকা-সানজিদা সেতু
ছোঁয়াকে সায়ন নিজের রুম থেকে বের করে দিয়েছে ঘণ্টা খানেক হয়ে গেল।এতক্ষণেও ওর ঘুম আসেনি,দাদীর পাশে শুয়ে শুধু এপাশ ওপাশ করেছে।শেষে বিরক্ত হয়ে রুমের বাইরেই চলে এসেছে
ছোঁয়াঃ বেয়াদব,শয়তান এত রাতে একটা মেয়ের সাথে কেউ এরকম করে!মেয়েদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় সেই ম্যানার্সটুকুও নেই!পুরাই খাটাশ,দাঁড়া বেটা,তোর ক্লাসতো আমি নিচ্ছি।এই বেটাকে শিক্ষা দিতে না পারলে আজকে আমার ঘুমই আসবে না…কি করি কি করি…হুম পেয়েছি,মি.মাহবুব হাসান সায়ন গেট রেডি..মু..হা..হা
(কিছুক্ষণ পর)
ছোঁয়াঃ বেটা দেখি দরজা বন্ধ করে ঘুমাচ্ছে,কিন্তু আমার নামও ছোঁয়া এত সহজেতো হার মানছি না।খুব সাবধানে উত্তর পাশের জানালাটা খুলে দিলাম,তারপর বালতি ভর্তি পানিটা ছুড়ে দিয়েই পালালাম।আমাকে রুম ছাড়া করা তাইনা,আজকেতো আপনাকে বিছানা ছাড়া করলাম খুব তাড়াতাড়িই এই রুম এভেন বাড়িও ছাড়া করব আই স্যয়ার…
সায়নঃ সবে ঘুমটা একটু গাঢ় হয়ে এসেছিল,তখনই ঘুমটা ভেঙ্গে গেল।ঠাণ্ডা কিছু একটা গায়ে এসে পড়ল,ওহ গড!পুরো ভেজা কাক বানিয়ে দিয়েছে,এটা ছোঁয়া ছাড়া অন্য কারো কাজ হতেই পারে না।এই মেয়েকেতো আমি…ছোঁয়া…ছোঁয়া…
ছোঁয়াঃ দাদীর পাশে শুয়ে শুয়ে খাটাশটার চিৎকার চেঁচামেচি শুনছি,সেই শান্তি লাগছে,ডিসকো ডান্স দিতে ইচ্ছে করছে
সায়নঃ ছোঁয়া…ছোঁয়া…গেল কোথায় ফাযিলটা!নিশ্চয় ঘাপটি মেরে কোথাও পড়ে আছে
ছোঁয়াঃ হিহিহি প্রচণ্ড হাসি পাচ্ছে কিন্তু দাদী ঘুমাচ্ছে তাই মুখ টিপে হাসছি
সায়নঃ ছোঁয়া…ছোঁয়া…নাহ আজকে আর এই মেয়েকে পাওয়া যাবে না,ওদিকে সবাই ঘুমাচ্ছে বেশি চিল্লাচিল্লি করলে সবার ঘুম ভেঙ্গে যাবে।এখনকার মততো ছেড়ে দিলাম কিন্তু শাস্তিতো তোমাকে পেতেই হবে,তুমি আমাকে বালতি ভর্তি পানিতে চুবিয়েছো না,তোমাকেতো আমি পুরো পুকুর ভর্তি পানিতে চোবাব হুহ
সায়ন রাগে ফুসতে ফুসতে সোফায় গিয়ে শুয়ে পড়ল
(সকালে)
সকাল সকাল উঠেই কলেজে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে নিল ছোঁয়া,কারণ একটাই সায়নের মুখোমুখি যেন না হতে হয়
ছোঁয়াঃ যাক বাবা,রেডিতো হয়ে নিয়েছি এখন ভালোই ভালোই বেটা উঠার আগেই বেরিয়ে যেতে পারলেই হয় নাহলে যে আমাকে আজকে কি করবে আল্লাহই জানে…
(ছোঁয়া বেরিয়ে যাবে তখনই দাদীর গলা শুনতে পেল)
দাদীঃ ছোঁয়া…
ছোঁয়াঃ এই রে এখন কি করি?দাদীর সাথে বকবক করতে গেলে যে দেরি হয়ে যাবে…তার থেকে বরং না শোনার ভান করে কেটে পড়ি
(দাদী ততক্ষণে ওর অনেক কাছে চলে এসেছে)
দাদীঃ কি রে এতবার করে ডাকছি,শুনতে পাচ্ছিস না?
ছোঁয়াঃ আর উপায় নেই,উত্তর দিতেই হবে।জ্বি দাদী?
দাদীঃ কিরে কি সমস্যা
ছোঁয়াঃ কোন সমস্যা নেই দাদী,একটু তাড়াহুড়োর মধ্যে ছিলাম তাই খেয়াল করিনি
দাদীঃ সে যাই হোক,তুই আজকে আমার রুমে ঘুমিয়েছিলি কেন?দাদুভাই কি তোকে কিছু…
ছোঁয়াঃ কিছু!সেইতো সবকিছুর জন্যে দায়ী,বেটা বজ্জাত মাঝ রাতে আমাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে!(মনে মনে)
দাদীঃ কি রে,কথা বলছিস না কেন?
ছোঁয়াঃ না না দাদী,তেমন কিছু না।ঐ বান্দরটার সাথে আমি থাকব না তাই…
দাদীঃ এটা কেমন কথা রে সই,সেতো তোর…
ছোঁয়াঃ দেখো দাদী,ঐ লোকের সাথে এক ছাদের নিচে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না,তোমার ইচ্ছে হয় তুমি গিয়ে থাকো
দাদীঃ এই ছোঁয়া…আমার কথাটা শোন মা,এই দেখো বেরিয়ে গেল…
ছোঁয়াঃ যাক বাবা,দাদীর হাত থেকে কোনরকমে বাঁচা গেল।এখন ভালই ভালই কলেজে যেতে পারলেই হয় নাহলে আবার ঐ শয়তানটা যে কি করে বসবে…

(তখনই)
সায়নঃ আমাকে কিছু বলছিলেন?
ছোঁয়াঃ এই দেখো,শয়তানের নাম নিলাম আর শয়তান এসে হাজির(মনে মনে)
সায়নঃ এই যে ম্যাডাম,কি ভাবছেন?
ছোঁয়াঃ কই কিছু না তো
সায়নঃ তাই নাকি!আচ্ছা ঠিক আছে,চল যাওয়া যাক
ছোঁয়াঃ যাওয়া যাক মানে!কোথায় যাব?
সায়নঃ কোথায় আবার,যেখানে যাচ্ছিলে
ছোঁয়াঃ আমিতো কলেজে যাচ্ছি
সায়নঃ আমিও সেখানকার কথাই বলছি
ছোঁয়াঃ ও হ্যালো,আমাদের কলেজটা কিন্তু গার্লস কলেজ সো…
সায়নঃ সো হোয়াট?
ছোঁয়াঃ আপনি ঢুকতে পারবেন না
সায়নঃ ঢুকতে চাইছেটা কে?
ছোঁয়াঃ মানে!
সায়নঃ অত মানে টানের উত্তর দিতে পারব না,ঝটপট বাইকে উঠে পড় নাহলে কিন্তু তোমারই দেরি হয়ে যাবে
ছোঁয়াঃ আমি কেন বাইকে উঠতে যাব!আমার হাত-পা সব ঠিক আছে,আমি একাই চলে যেতে পারব
সায়নঃ উঠবে নাকি মাকে ডাকব?
ছোঁয়াঃ ডাকতে চাইলে ডাকেন,আমি কি কাউকে ভয় পাই নাকি
সায়নঃ মা…ও মা…
মাঃ কি রে খোকা,ডাকছিস কেন?
সায়নঃ আমরা বের হচ্ছি তাই
মাঃ ও..আচ্ছা দেখে শুনে যাস আর ছোঁয়াকে নামিয়ে দিয়েই কিন্তু চলে আসবি,একদম দেরি করবি না
ছোঁয়াঃ মা তুমি!তুমিই উনাকে…
মাঃ হ্যাঁ আমিই বলেছি তোকে কলেযে নিয়ে যাবে।যেই কয়দিন সায়ন এখানে আছে ওই তোকে নিয়ে যাবে আবার নিয়ে আসবে
ছোঁয়াঃ আমি এই লোকটার সাথে কোত্থাও যাব না,আমি একাই যেতে পারব
মাঃ ছোঁয়া!তুই কিন্তু দিন দিন বেয়াড়া হয়ে যাচ্ছিস।যা বলছি চুপচাপ কর
ছোঁয়াঃ কিন্তু মা…
মাঃ কোন কিন্তু না,আমি আর কোন কথা শুনতে চাই না
ছোঁয়াঃ মা…ও মা…
সায়নঃ মা কি বলল শুনতে পাওনি?
ছোঁয়াঃ (দাঁতে দাঁত চেপে)পেয়েছিতো
সায়নঃ তাহলে…ওকে বাইকে উঠার জন্য ইশারা করলাম
ছোঁয়াঃ কি আর করার বাধ্য হয়ে উঠে বসলাম,এত রাগ হচ্ছে ইচ্ছে করছে বেটার মাথায় বাঁশ দিয়ে দুইটা বাড়ি দেই।কোন কুমতলবে যে এত দরদ দেখাচ্ছে আল্লাহই জানে
সায়নঃ বুঝতে পারছি রাগে গজগজ করছে কিন্তু ম্যাডাম আমার সাথে পাঙ্গা নিলেতো এসব সহ্য করতেই হবে।যত রাগার রেগে নাও আজকেই তোমার সব রাগ পানিতে মিশিয়ে দিব…
(কিছুক্ষণ পর)
ছোঁয়াঃ ব্যাস ব্যাস আমাকে এখানেই নামিয়ে দিন
সায়নঃ কেন?তোমার কলেজতো এখনও বেশ খানিকটা দূরে
ছোঁয়াঃ এটুকু আমি হেঁটেই যেতে পারব
সায়নঃ হুম বুঝলাম
ছোঁয়াঃ কি বুঝলেন?
সায়নঃ বুঝলাম যে তুমি আসলে আমার সাথে তোমার বান্ধবীদের পরিচয় করিয়ে দিতে চাইছো না।কাহিনী কি বলতো?ভয় পাচ্ছো যে ওরা আবার আমার উপর ক্রাস না খেয়ে বসে

ছোঁয়াঃ হুহ নিজের চেহারাটা একবার আয়নায় দেখেছেন?
সায়নঃ অফকোর্স দেখেছি,আর দেখেছি বলেইতো বলছি ওরা ডেফিনেটলি ক্রাস খাবে…
ছোঁয়াঃ হুহ যে আমার বান্দরের মত চেহারা!তার উপর নাকি সবাই ক্রাস খাবে
সায়নঃ ওকে দেন চ্যালেঞ্জ?
ছোঁয়াঃ শুনুন এসব চ্যালেঞ্জ ট্যালেঞ্জের মধ্যে আমি নেই।আমাকে নামিয়ে দিতে বলেছি সো…
সায়নঃ ওকে ফাইন,দেন বাই
ছোঁয়াঃ ওকে
সায়নঃ ছোঁয়া…
ছোঁয়াঃ আবার কি?
সায়নঃ তোমার ক্লাস শেষ হবে কখন?
ছোঁয়াঃ সেটা জানা কি খুব জরুরী?
সায়নঃ অফকোর্স,নাহলে বুঝব কিভাবে আমাকে আবার কখন আসতে হবে
ছোঁয়াঃ আসতে হবে মানে!আপনি আবার কেন আসবেন?
সায়নঃ আচ্ছা তুমি কি আসলেই এমন বোকা নাকি…
ছোঁয়াঃ মানে?
সায়নঃ মানে ভুলে গেছো আসার সময় মা কি বলে দিয়েছে?
ছোঁয়াঃ কি?
সায়নঃ তোমাকে নিয়ে যেতে বলেছে আর যদি আমি তোমাকে ছাড়াই বাড়ি ফিরে যাই তাহলে আমার খবর আছে
ছোঁয়াঃ বললাম না,আপনাকে আসতে হবে না,আমি একাই চলে যাব আর প্রমিজ মাকে কিছুই বলব না
(তখনই ওখানে লোপা চলে আসলো)
লোপাঃ ওই শয়তান তুই একা একা চলে আসলি কেন?আমাকে একবার বললিও না!জানিস আমি কতক্ষণ তোর জন্যে ওয়েট করেছি?
ছোঁয়াঃ আ..আমি আসলে…
লোপাঃ এই এক মিনিট এক মিনিট,উনাকেতো ঠিক…
সায়নঃ হাই আমি সায়ন
লোপাঃ সায়ন ভাইয়া!ভাইয়া আমাকে চিনতে পারেননি?আমি লোপা..আপনাদের বাড়ির কয়েক বাড়ি পরেই আমাদের বাড়ি
সায়নঃ ও হ্যাঁ এবার চিনেছি।আচ্ছা লোপা,আমাকে একটা হেল্প করবে?
লোপাঃ কি হেল্প?বলেন…
সায়নঃ তোমাদের ছুটি হবে কখন?
ছোঁয়াঃ লোপা…কিছু বলিস না…(চাপা গলায়)
লোপাঃ এইতো মোটামুটি চারটার দিকে বলা যায়
ছোঁয়াঃ সর্বনাশ!উফ এই ছুড়ির পেটে কিছুই থাকে না(মনে মনে)
সায়নঃ থ্যাঙ্ক ইউ,নাউ বাই আর ছোঁয়া..ঠিক চারটায় এখানেই মনে থাকে যেন…
(সায়ন চলে গেল,ছোঁয়া ওর দিকে তাকিয়ে একটা ভেংচি কাটলো)
লোপাঃ ওই তুইতো বলিসনি যে ভাইয়া এসেছে
ছোঁয়াঃ বলেছি তোর মনে নেই
লোপাঃ কখন বললি?

ছোঁয়াঃ বলেছিলাম না এক বেয়াদব খাটাশ লোকের পাল্লায় পড়েছি
লোপাঃ ছোঁয়া…তারমানে সেদিন থেকে তুই সায়ন ভাইয়ার উপর এত এত অত্যাচার করছিস!
ছোঁয়াঃ আর উনি যে আমার সাথে এত কাণ্ড করল তার কি হবে?
লোপাঃ এই এক মিনিট দাঁড়াতো,তোকে ভাল করে একটু দেখে নেই
ছোঁয়াঃ আমাকে আবার দেখার কি আছে?
লোপাঃ এই ছোঁয়া..তোর চোখে মুখে এসব কি?দেখি এদিকে আয়তো..তোর কি শরীর টরীর খারাপ নাকি?
ছোঁয়াঃ আরে না,সব ওই শয়তানটার কাজ
লোপাঃ কেন?ভাইয়া আবার কি করল?
ছোঁয়াঃ কি করেনি তাই বল,রঙের সাথে গ্লু মিশিয়ে…
লোপাঃ হিহিহি সত্যি!ভাইয়া এসব করেছে!
ছোঁয়াঃ আমি কি মিথ্যে বলছি?এই তুই হাসছিস কেন?মজা নিচ্ছিস না?
লোপাঃ তো আর কি করব,এতদিনে তোর সাথে টক্কর দেয়ার মত কাউকে পাওয়া গেছে।আমার যে কি খুশি লাগছে!হিহিহি…
ছোঁয়াঃ হাস হাস এখনতো তোরই দিন,তবে মনে রাখিস একদিন আমারও দিন আসবে।সেদিন আমি হাসবো আর তোরা কাঁদবি
লোপাঃ সে যখন হবে তখন দেখা যাবে,এখনতো একটু হেসে নেই..হিহিহি…
ছোঁয়াঃ লোপা…তুই কি আমার বন্ধু নাকি শত্রু!
লোপাঃ তুই যা ভাববি তাই
ছোঁয়াঃ লোপা…যা তোর সাথে আমি আর কথাই বলব না…
লোপাঃ শোন ছোঁয়া,তুই ভাইয়ার সাথে যা করেছিস তার কাছে এটাতো কিছুই না
ছোঁয়াঃ কেন কি করেছি আমি?
লোপাঃ এটাও তুই আমাকে জিজ্ঞেস করছিস?তুই জানিস না তুই কি করেছিস!একটা মানুষকে জংলী বিছুটি..এটা কি কোন স্বাভাবিক মানুষের কাজ?
ছোঁয়াঃ আচ্ছা মানলাম আমি কাজটা একদম ঠিক করিনি কিন্তু উনি?উনি কি ঠিক করেছেন?
লোপাঃ যাই বলিস দোস্ত,তোকে কিন্তু খুব কিউট লাগছে।ঠিক একটা পিচ্চি জোকারের মত…
ছোঁয়াঃ লোপার বাচ্চা,তোকেতো আমি…
লোপাঃ জোকার জোকার ছোঁয়া ইজ এ জোকার…
ছোঁয়াঃ আ..লোপা..তোকে আর আজকে ছাড়ব না…

(ছুটির পর)
ছোঁয়া ইচ্ছে করেই আধা ঘণ্টা আগে ক্লাস থেকে বেরিয়ে এসেছে,তারজন্যে ছোট্ট একটা মিথ্যেও অবশ্য বলতে হয়েছে।
ছোঁয়াঃ যাক বাবা,ভালই ভালই বেরোতে পেরেছি এখন ওই বান্দরটা আসার আগে আগেই এখান থেকে চলে যেতে পারলেই হয়
সায়নঃ হাই…
ছোঁয়াঃ আ…আপনি!
সায়নঃ হ্যাঁ আমি,কেন অন্য কাউকে এক্সপেক্ট করছিলে নাকি?
ছোঁয়াঃ আপনি…আপনি এখানে কি করছেন?
সায়নঃ কি আর করব,তোমাকে নিতে আসলাম
ছোঁয়াঃ সেটাতো চারটায় আসার কথা,এখনতো সাড়ে তিনটাও বাজেনি
সায়নঃ আমার আইডিয়া তাহলে ঠিকই ছিল
ছোঁয়াঃ কোন আইডিয়া?
সায়নঃ যে তুমি একটু আগে আগেই চলে আসবে
ছোঁয়াঃ কিন্তু কেন?
সায়নঃ কেন আবার?আমার সাথে যেন যেতে না হয় সেই জন্যে
ছোঁয়াঃ এ..এমন কোন কারণ নেই।আ..আমিতো এ..এমনি…
সায়নঃ হুম বুঝলাম,টাইম ওয়েস্ট না করে বাইকে উঠো
ছোঁয়াঃ হুম,চুপচাপ উঠে বসলাম

(কিছুক্ষণ পর)
ছোঁয়াঃ আরে আরে এইদিকে কোথায় যাচ্ছেন?বাড়িতো ওইদিকে…
সায়নঃ কেন ভয় লাগছে নাকি?
ছোঁয়াঃ ভয়!কিসের ভয়?
সায়নঃ যদি তোমাকে গুম করে দেই হাহাহা…
ছোঁয়াঃ এটা কোন ধরণের ফাযলামি!
সায়নঃ ভয় লাগলে বল,ফেরত চলে যাব
ছোঁয়াঃ আমি কেন খামোখা ভয় পেতে যাব!আপনি কি বাঘ নাকি ভাল্লুক?
সায়নঃ তার থেকেও ভয়ংকর কিছু,আমি একটা যুবক ছেলে আর তুমি একটা যুবতী মেয়ে…
ছোঁয়াঃ হাহাহা ভেরি ফানি,এখন মুখ বন্ধ করে গাড়ি চালান।মুখে যাই বলিনা কেন,ভেতরে ভেতরে কিন্তু ঠিকই ভয় লাগছে কিন্তু এটা ওই ফাযিল বেটাকে মোটেও বুঝতে দেয়া যাবে না
সায়নঃ বাইকটাকে জায়গামত দাঁড় করালাম।আমরা এসে গেছি,নামো…
ছোঁয়াঃ নামবো মানে!আমাকে এখানে কেন আনলেন?
সায়নঃ পার্কে মানুষ কেন আসে?
ছোঁয়াঃ প্রশ্নটা আমি আগে করেছি
সায়নঃ ওহ
ছোঁয়াঃ ওহ কি?উত্তরটা দিন বলছি…
সায়নঃ প্রশ্নটা যেন কি ছিল?
ছোঁয়াঃ (দাঁতে দাঁত চেপে)আমাকে এখানে কেন আনলেন?
সায়নঃ তোমার সাথে প্রেম করব তাই
ছোঁয়াঃ আপনি…শাট আপ
সায়নঃ কেন?আমি কি তোমার সাথে প্রেম করতে পারিনা?
ছোঁয়াঃ নাহ,এতই যখন প্রেম করতে ইচ্ছে করছে তখন অন্য কাউকে খু্ঁজে নিন না..
সায়নঃ হায় হায়,নিজের স্বামীকে কোন বউ অন্য মেয়ের সাথে প্রেম করতে বলে!এই জন্যেতো তোমাকে নোবেল দেয়া উচিত
ছোঁয়াঃ ওই মিয়া,কে আপনার বউ!আমি কারো বউ টউ না বুঝেছেন?
সায়নঃ বললেই হল!তুমি আমার একমাত্র বিয়ে করা বউ আর তুমি..
ছোঁয়াঃ বললাম না আমি কারো বউ না,আর একবার এসব বললে না…
সায়নঃ এই রে রেগে গেছে দেখছি,আচ্ছা বাবা সরি
ছোঁয়াঃ আপনার যদি এখানে থাকতে ইচ্ছে হয় থাকেন,আমি গেলাম
সায়নঃ আরে ছোঁয়া…আর একটু প্লিজ..আমি আসলে একটা ফ্রেণ্ড এর সাথে দেখা করতে এসেছি।বেশিক্ষণ লাগবে না,দেখা করেই চলে যাব প্রমিজ
ছোঁয়াঃ এটা আগে বললে কি হত?
সায়নঃ আচ্ছা বাবা সরি
ছোঁয়াঃ তা কোথায় আপনার ফ্রেণ্ড?
সায়নঃ ওদিকে ওই লেকের ধারে আছে বলল,চল ওদিকটায় যাই
ছোঁয়াঃ আচ্ছা চলুন
(কিছুক্ষণ পর)
ছোঁয়াঃ অনেক দূরতো চলে আসলাম,কোথায় আপনার ফ্রেণ্ড?এদিজেতো কাউকেই দেখা যাচ্ছে না…
সায়নঃ দেখবে দেখবে একটু পরেই চোখে সরষে ফুল দেখবে
ছোঁয়াঃ মানে!!!
সায়নঃ মানে…এই যে মানে,এবার একা একাই উত্তরটা খুঁজে নাও।বলেই ওকে এক ধাক্কায় লেকের পানিতে ফেলে দিলাম
ছোঁয়াঃ কিছু বুঝে উঠার আগেই দেখলাম আমি পানিতে,কি করব কিছুই বুঝতে পারছি না
সায়নঃ কাল রাতে আমার গায়ে বালতি ভর্তি পানি ঢেলেছিলে না..তার শাস্তি এটা।চাইলে বাড়ির পুকুরেও ডুবাতে পারতাম কিন্তু তাতে মার ঝাড়ি খাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে তাই…কি ব্যাপার কিছু বলছো না যে!সব লাফালাফি বন্ধ হয়ে গেল?
ছোঁয়াঃ কোন জবাব দিতে পারলাম না,মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি
সায়নঃ এটা কি হল!ও কোন জবাব দিচ্ছে না কেন?এতক্ষণেতো আমার চৌদ্দ গুষ্ঠী উদ্ধার করে দেয়ার কথা!কাহিনীটা কি?ওহ শিট!ব্যাপারটাতো আমার মাথায়ই ছিল না…ছোঁয়া…উঠে আসো..
ছোঁয়াঃ আমার কানে যেন কোন কথাই ঢুকছে না,ঐ ভাবেই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি
সায়নঃ ছোঁয়া…কি বলছি শুনতে পাচ্ছো না?উঠে আসো বলছি…
ছোঁয়াঃ …..

সায়নঃ নাহ এভাবে কাজ হবে না,আমাকেই কিছু একটা করতে হবে।আস্তে আস্তে আমিও পানিতে নেমে গেলাম।ছোঁয়া…আমার হাতটা ধরে উঠে আসো
ছোঁয়াঃ ….
সায়নঃ কি আশ্চর্য!এইটা মেয়ে না কি?এ দেখি আমার একটা কথাও শোন না!দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা…ওকে একরকম কোলে করে পানি থেকে বের করার চেষ্টা করলাম
ছোঁয়াঃ একি কি করছেন আপনি?ছাড়ুন বলছি…নাহ কথাতে দেখছি কাজ হবে না,দিলাম বসিয়ে এক কামড়
সায়নঃ আউচ!এইটা মেয়ে না জংলি বিলাই!ওকে আবার পানিতে ফেলে দিলাম,এই মেয়ে কি সমস্যা তোমার?এত জোরে কেউ কামড় দেয়!
ছোঁয়াঃ কোন উত্তর দিতে পারলাম না,আবারও মাথা নিচু করে ফেললাম
সায়নঃ এই দেখো আবার চুপ করে আছে,আরে বাবা প্রবলেমটা কি বলবেতো…না বললে আমি বুঝবোটা কিভাবে?
ছোঁয়াঃ ….
সায়নঃ Okey fine I’m sorry.
ছোঁয়াঃ It’s okey
সায়নঃ তাহলে হাতটা ধরো…প্লিজ…
ছোঁয়াঃ কি করব কিছুই বুঝতে পারছি না তাই একইভাবে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি
সায়নঃ ছোঁয়া…কি বলছি শুনতে পাচ্ছো না?ওদিকে তাকিয়ে আছো কেন?Look at me damn it…
ছোঁয়াঃ উনার দিকে একবার তাকয়েই চোখ নামিয়ে নিলাম
সায়নঃ ওর চোখের দিকে চোখ পড়তেই বুঝে ফেললাম আমার এখন কি করা উচিত।গায়ের জ্যাকেটটা খুলে ওর গায়ে জড়িয়ে দিলাম তারপর একরকম কোলে করেই ওকে উপরে নিয়ে আসলাম।অদ্ভূতভাবে মেয়েটা কোন প্রতিবাদই করল না!
(কিছুক্ষণ পর)
সায়নঃ ছোঁয়া…

ছোঁয়াঃ জ্বি?
সায়নঃ Are you okey?
ছোঁয়াঃ হুম
সায়নঃ এখন কি বাড়ি যাবে?
ছোঁয়াঃ হুম
সায়নঃ ওকে তাহলে বাইকে উঠো
ছোঁয়াঃ উনার কথামতই চুপচাপ বাইকে উঠে বসলাম
সায়নঃ ছোঁয়াকে এভাবে দেখতে কেমন যেন লাগছে,সেই চঞ্চল ডানপিটে মেয়েটাকে খুব মিস করছি…
চলবে….
#গল্পটা কিভাবে সাজাবো সেটা নিয়ে একটু টেনশনে আছি।মনমত আইডিয়া মাথায় আসছে না আর তাছাড়া আমার প্র‍্যাক্টিকালএক্সাম এখনও বাঁকি আছে তাই বর্তমানে খাতা আঁকাআকি নিয়েও বেশ ঝামেলায় আছি।আশা করি ব্যাপারটা সবাই বুঝতে পারবেন।কেমন লাগলো জানাবেন,নাইস নেক্সট বাদে কমেন্ট করলে খুশি হব…