ঘৃণা ও প্রেম!! লেখাঃ নিলান্তিকা নাদিয়া
© নিলান্তিকা_নাদিয়া
মেয়েটা আমার পায়ের সামনে মাথা নিচু
করে বসে আছে।
মেয়েটার মুখ এখনও আমি দেখিনি ভাল মত।
১ টা লোক আহত অবস্থায় পরে আছে।
অস্পষ্ট ভাবে কিছু বলার চেস্টা করছে।
আমি ঠিক বুঝতে পারছিনা।মুখের কাছে
কান নিলাম।
শুধু এত টুকুই শুনলাম -” আমার মেয়েটা কে
দেখো। ওর কেউ নেই। ওর দায়িত্ব তোমার
এখন থেকে”.
বলেই মেয়েটার হাত আমার হাতে দিয়ে
লোকটা মারা গেল।
এত ক্ষনে বুঝললাম এ মেয়েটা এনার মেয়ে।
।
কিন্তু এর চেয়ে বেশি অবাক হলাম আমি
যাকে মেরেছি সে নাকি তার মেয়েকে
আমার কাছে দিয়ে গেল? ???
আজব!!!!!!!”!””””
.( আচ্ছা লোক টা কে? কেনো মেরেছি পরে
বলব)
এইসব যখন ভাবছিলাম তখন পিছন থেকে হঠাত
শব্দ হল পিছনে তাকাতেই দেখলাম দরজাটা
খুলছে।
আমি উঠে দাড়াতেই আমার হাত থেকে
মেয়েটার হাত পরে গেল।
এবার বললাম –
দেখুন এখন আমাদের হাতে আর সময় নেই।
এখুনি এইখান থেকে বের হতে না পারলে
আমরা এইখানে আটকা পরে যাব।
আপনার হয়ত সমস্যা নেই কিন্ত আমার হবে।
আপনাকে নিয়ে যাওয়া কোনো রকম ইচ্ছে
আমার ছিল না।
বা এখনও নেই।
কিন্তু আপনার বাবার শেষকথা ছিল ‘ আমার
মেয়ের দায়িত্ব তোমার।”
তাই আপনাকে রেখে যেতে পারছিনা।
এখন জলদি উঠুন।
হাত বারিয়ে দিলাম।
দেখুন প্লিজ জলদি করুন।
মেয়েটা উঠছিলল না তাই হাত ধরে তুললাম।
মনে হচ্ছে মেয়েটার মধ্যে জীবন নেই।
মরা একটা লাশ।
হবেইনা কেন?? মেয়েটার রাজ্য, মেয়েটার
বাবা কিছুই এখন অবশিষ্ট নেই।
আমি সামনে ঘুরে যাচ্ছিলাম।
হাতে টান অনুভব হল।
মেয়েটা তার জায়গায় দাড়িয়ে- আছে।
দরজা টা এখন লাগতে শুরু করেছে ১ বার
লেগে গেলে আর খুলবেনা।
মেয়েটাকে কোলে তুলে নিলাম।
মেয়েটার মুখ তখন ও দেখা হয়নি।
এলোমেলো চুলে মুখ ঢাকা।
দরজা দিয়ে ঢুকেই পৃথিবী তে পৌছে
গেলাম।
রাত তখন ৩ টা।
থমথমে পরিবেশ। পৃথিবীরর মানুষ এখন ঘুমে
আচ্ছন্ন।
ঝড়ের বেগে বাতাসের আগে ছুটে চললাম
বাসার দিকে।
এই প্রথম মেয়েটা আমাকে আরো শক্ত করে
জরিয়ে ধরল।মেয়েটার নখের আঁচড় আমার
বুকে বুঝতে পারছি।
একবার মেয়েটার দিকে তাকালাম।
মেয়েটা আমার বুকে মাথা গুঁজে আছে।
আমি ছুটে চলেছি বাসার দিকে।
।
বাসার সামনে এসে থামলাম ।
মেয়েটা কে নামাতে গেলাম যেই তখন ই
মেয়েটার মুখটা দেখতে পেলাম।
মেয়েটা ঘুমিয়ে গেছে।
মেয়েটার মুখ দেখে মনে হচ্ছে কোনো পরি ।
মুখটা চাদের আলোর মত জ্বল জ্বল করছে।
মনে হচ্ছে চাদ কে কোলে করে রেখেছি।
কোমড় এর নিচ পর্যন্ত দীঘল কালো চুল গুলা
বাতাসে উড়ছে। মেয়েটা একটু নড়ে উঠোতেই
ঘোর কাটল ।
ঘরে গেলাম।
রুমে ওকে শুইয়ে দিয়ে সরতে যেই যাব
দেখলাম মেয়েটার চুলের সাথে আমার
হাতের ঘড়ি আটকে গেছে।
চুলের প্যাঁচ খুলছিলাম।
জানালা দিয়ে চাদের আলো পড়ছে
মেয়েটার মুখে।
মনে হচ্ছে শুধু চেয়েই থাকি। আদর করি।
কিন্তু ও তো শত্রুর মেয়ে।
কিভাবে ভালবাসা যায় ওকে।
আর ও কি পারবে ওর বাবার খুনিকে
ভালবাসতে।
মেয়েটার হাতে পায়ে গলায় অনেক ক্ষত
চিহ্ন আছে।
কি করব?? ওষুধ লাগাব? ?
কিন্তু মেয়েটা ত জেগে নেই।
ওকে ধরা কি উচিত হবে? ?
কিন্তু ক্ষত স্থান ঠিক না করলে ইনফেকশন
হবে।
তাই ওষুধ এনে লাগিয়ে দিলাম সাত পাচ না
ভেবে।
।
আমি ফ্রেশ হয়ে নিয়ে চেঞ্জ করলাম।
ফোন টা বেজে উঠল।
প্রথম ফোন দিয়েছে।
প্রথম –
কিরে ঠিক আছিস শুন্য? ?
।
শুন্য- ঠিক আছি।
প্রথম -খুব চিন্তা হচ্ছিল তোকে নিয়ে।
এতক্ষন য়োর ফোনে ফোন যাচ্ছিল না। তাই
বুঝে নিয়েছিলাম তুই ওইখান থেকে ফিরিস
নি।
এখন চিন্তা মুক্ত।
কোমান্ডর তোর কথা জিজ্ঞাস করছিল।
আমি এখন তাকে রিপিট দিব।
কাল কে সময় মত চলে আসিস।
।
শুন্য- হুম।
চলে আসব।
আমাকে নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
জানিস ই তো আমাকে।
don’t worry yr.
.
শুন্য- এতক্ষন উপরে যা যা হচ্ছিল সব আমি
আমার ভাষায় বর্ননা
করছিলাম।
এখন বলি আসল কাহিনি কি-
আমি শুন্য।
আমরা কাজ করি আমাদের কোমান্ড white
lord এর জন্য। মানব কল্যাণ এর জন্য।
আমাদের কাজ হচ্ছে দুনিয়া থেকে সব
negativity দুর করা।
আমাদের ১ টা ক্লাব আছে যেখানে সব
সোলজার দের ট্রেনিং দেওয়া হয়।
তাদের inner strength কে জাগিয়ে তোলা হয়।
মানে তাদের ভিতরে যে শায়িত শক্তি আছে
তা বের করে আনা হয়।
তাদের প্রশিক্ষন দিয়ে শক্তিশালী করে
তোলা হয় বাইরের খারাপ লোক দের থেকে
দুনিয়ার লোক দের বাঁচানোর জন্য।
এটা white lord পরিচালনা করে।
এই ক্লাবে অনেকের ই নিজস্ব আলাদা
আলাদা টিম আছে।
white lord ঠিক করে কে কোন মিশন এ যাবে।
আজ আমি আর আমার ৩ সাথি গিয়েছিলাম।
নাবা আহত হয়ায় ওকে নিয়া বাকি ২ জন চলে
যায়।
আর আমি dark lord কে মারতে সক্ষম হই।
আর এই মেয়েটি dark lord এর মেয়ে।
কিন্তু কি মায়াবি।
মনেই হবেনা এটা dark lord এর মেয়ে।
ওকে ত নিয়ে এলাম কিন্তু কেউ জানতে
পারলে ত ওকে মেরে ফেলবে।
ওকে আগলে রাখব কি করে।
কি করে বাঁচাব ওকে।
ও তো দুনিয়া সম্পকে জানেও না।
ওর পৃথিবী আর আমার পৃথিবী আলাদা।
ওকি মেনে নিবে? ??
বারান্দা তে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ভাবছিলাম
এইসব কথা।
হঠাত মনে হল কেউ আমার পিছে।
ঘুড়েই ১ ঝটকায় সেটাকে দেওয়ালের সাথে
লাগালাম।
চেয়ে দেখি মেয়েটা।
মেয়েটার হাতে ছুড়ি।
আমাকে মারতেই এসেছে তাহলে।
মারবেই না কেন।? আমি ওর বাবাকে
মেরেছি।
।
শুন্য- বাকা ১ টা হাসি দিলাম।
so sorry sweet hrt.আমাকে মারা এত সোজা
না।
তুমি ত সামান্য একটা মেয়ে।
আমার সাথে তুমি পাড়বে বলে মনে হচ্ছেনা।
মেয়েটার চোখের মনি কালো ছিল এখন নীল
থেকে আরও নীল হচ্ছে।
ব্যপার টা কি? .
মেয়েটা আমাকে ছাড়ানোর চেস্টা করছে।
কিন্তু কোনো কথা বলছেনা।
রাগে মেয়েটার মায়াবি মুখ হিংস্র হয়ে
উঠছে।
।
মেয়েটা এবার মুখ খুলল-
।
মেয়েটা- তুমি মরবে আর সেটা আমার হাতে
ই।
dark lord এর মেয়ে আমি ভুলে যেওনা।
।
শুন্য- তাই নাকি।
তুমি জানো গ্রুপ এ সবাও আমাকে কি বলে? ?
dark prince. আমার শক্তি সম্পকে তোমার
ধারনা নেই।
তোমার বাবাকে ত নিমিশেই শেষ করে
দিয়ে এলাম।
তুমি কি সেটা দেখনি? ?
।
আচ্ছা তোমার নাম কি? ?
মেয়ে- ছাড় আমাকে।
ছাড়।
u murderer. leave me.
শুন্য- (ছেড়ে দিয়ে) তোমাকে ধরে রাখার
আমার ইচ্ছা ও নেই।
কিন্তু dear তোমাকে যে আমার সাথেই
থাকতে হবে।
তোমার বাবা কি বলেছিল মনে আছে তো।
I hope আছে।
আর এটা তোমার দুনিয়ে না।
এটা আমার দুনিয়া।
এটা সম্পকে তোমার কোনো ধারনা নেই।
সো এখন ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পর।
miss princess.
মেয়ে- আমি থাকব এইখানেই থাকব আর
তোমাকে মারব।মনে রেখ তুমি।
।
শুন্য- হুম পরের টা পরে দেখা যাবে।
আগে তোমার নাম টা বল।
।
মেয়েটা- কিছু না বলে ঘুরে দাড়ালাম।
।
শুন্য- মেয়েটার পিঠে ১ টা চিহ্ন আকা।
অদ্ভুত রকমের ১ টা প্রজাপতি সেপ এর কিছু
আকা।
ধরার আগেই মেয়েটা চলে গেল।
সকাল-
শুন্য- সকালে গেলাম রুমে মেয়েটাকে চেক
করতে।
মেয়েটা রুমে নেই।।হঠাত ঘাড়ে কারো নখের
আঁচড় লাগল।
ঘাড়ে হাত দিয়ে ঘুড়ে তাকালাম।
হাত সামনে এনে দেখি রক্ত বের হচ্ছে।
মেয়েটা সামনে দাড়িয়ে ঠোট বাকা করে
হাসছে।
আমার চোখ ঝাপ্সা হয়ে আসছে।
মাটিতে লুটিয়ে পড়লাম।
।
মেয়ে- ওর কাছে যেয়ে বসলাম।
মুখটা চেপে ধরে – কি ভেবেছিলে তুমি
আমার বাবাকে মেরে বেচে যাবে? এত
সহস? ? আমিও ডার্ক লোর্ড এর মেয়ে।
আমার ও শক্তি কম না।
তুমি ভেবেছ আমি তোমার সাথে থাকতে এই
গ্রহে এসেছি?
ভুল ভেবেছ ।আমি এসেছিলাম তোমাকে
মারতে।
প্রতিশোধ নিতে।
আমার বাবাও তাই চেয়েছে। এর জন্যই
পাঠিয়েছে তোমার কাছে।
তুমি সেটা বুঝতে পারোনি।
আর নিয়ে এসেছ এইখানে আমাকে।
এবার শান্তি তে মরো।
হাতে রাখা ছুড়ি টা ওর বুকের উপর যেই
মারতে যাব।
।
শুন্য- অমনি ওর হাত টা ধরলাম।
চোখ খুললে ওকে মাটিতে ফেলে ওর উপর
ঘৃণা ও প্রেম” পর্ব– ২ উঠলাম।