আমার ক্রাশ বর সিজন- 2 !! Part- 10
হঠাৎ করে অনু রিদির পিছনে লাগে বলে,”আজ কলেজে যাবো না।
তোমার সাথে তোমার ভার্সিটিতে যাবো।
তোমার সাথে করে প্লিজ আমাকে নিয়ে চলো আপু।”
রিদি বলে,”অনু সব সময় বাচ্চা দের মতো বায়না করতে নাই।যাহ নিজের লেখাপড়াতে মন দাও।”
অনু বল,”সারাবছর ধরে তো লেখাপড়া করি।
প্রেম পিরিতি তো আর করি না মাঝ রাস্তায় দাড়িয়ে। ”
রিদি বলে,”তোর মধ্যে প্রেম করার গুণ নাই।
সেই জন্য প্রেম পিরিতি তোর নসীবে নাই।”
রিমা বলে,”বাড়ির সবাই তো অনুকে নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেছে কি জানি মেয়ের কপালে কি আছে।আর উনি আছে উদাসীন কবি হয়ে। ”
এদিকে অনু নো টেনশন ডু ফুর্তি মুডের ভাব ধরো বসে থাকে।
রিদি অনুর এমন গা ছাড়া অবস্থা দেখে বলে,”বাহ মনে তো তোমার ভালোই রং লেগেছে দেখতে পারছি! ”
অনু :মনের রং তো দেখা যায় না।
মুখে রং মাখলে না দেখতে পারতে।
রিমা বলে,”আপু ফাজিলের কথা বাদ দাও।আমরা মরি চিন্তা করে আর ম্যাডাম ফুলি আছে নো চিন্তায়।”
অনু রিমার চুলে একটু টান দিয়ে বলে,”সব সময় আমার পিছনে লাগতে হবে কেনো রে?
আমি নিজের প্রোটেকশন নিজে করতে জানি।”
রিমা বলে,”তোর প্রটেকশন এর কথা শুনলে আমার কলিজায় সেকা লাগে।”
অনু রিমাকে বলে,”যাহ শয়তান মাইয়া আমার সামনে থেকে যা।আমাকে একটু নিজেকে নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতে দে।”
রিমা মুখ ভেঞ্চি কেটে চলে যায়।
এরপর রিদি বলে,”আচ্ছা চল তোকে আজ সাথে করে নিয়ে যাবো। কিছুদিন পর তো চলে যাবি তখন তো আর বায়না করতে পারবি না আমার কাছে।”
অনু তো খুশিতে গদগদ হয়ে রিদিকে জড়িয়ে ধরে চুমা দিয়ে ছেড়ে দেয়।
তারপর মনের আনন্দে রেডি হয়ে রিদির সাথে ওর ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
কিন্তু ভার্সিটিতে রিদি আর অনুর জন্য সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছিলো তা তাদের অজানা।
ভার্সিটিকে ঢুকতেই অনু দেখে রুবি অারিয়ানে গায়ের সাথে ঘষাঘষি করার চেষ্টা করছে।
এমন বিব্রতকর অবস্থায় আরিয়ান কে দেখে অনুর তো মাথা পুরো মাথায় আগুন উঠে যায়।
আরিয়ান রুবিকে নিজের থেকে দূরে রাখতে যতো চেষ্টা করছে রুবি ততো আরিয়ান কে নিজের কাছে টানতে থাকে।
নাহ এসব আর বেশী সময় ধরে অনু সহ্য করতে পারলো না।
অনু সোজা গিয়ে রুবির চুলের মুঠি ধরে আরিয়ানের কাছে থেকে ছাড়িয়ে এনে গালে কষিয়ে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয়।
রুবি নিজের গালে হাত দিয়ে অনুর দিকে তাকিয়ে বলে,”বেয়াদব মেয়ে তোমার এতো সাহস তুমি আমাকে থাপ্পড় দাও? জানো আমি কে? ”
অনু বলে,”জানবো না আবার!!
তুমি ফালতু বেহায়া একটা মেয়ে।
যার স্বভাব শুধু ছেলেদের গায়ে পড়ে কথা বলা কাছে আসার চেষ্টা করা।”
রুবি বলে,”তুমি আমার গায়ে হাত দিয়ে ভুল করেছো মেয়ে তোমার সাথে কি হবে তা তুমি ভাবতেও পারছো না।”
অনু বলে,”আমি তোমার মতো ফালতু মেয়েদের সাথে কথা বলতে আমার রুচিতে লাগে।”
এমন সময় রুবি তার ফোনে কিছু করে।
তারপর সোজা অনুকে থাপ্পড় দিতে যায়।
এমন সময়
আরিয়ান রুবির হাত ধরে বলে,”ভুল করেও অনুকে টাস্ করার সাহস করবে না রুবি তাহলে তোমার সাথে কি হবে তা তুমি ভাবতেও পারবে না।”
রুবি আরিয়ানের বুকের উপর হাত রেখে তাকে ধাক্কা দিতে দিতে বলে,”কে হয় এ মেয়ে তোমার? তোমার এতো জ্বলে কেনো মেয়েটার জন্য? ”
আরিয়ান বলে,”অনু আমার বিয়ান হয়।
আর তার থেকে বড় কথা অনু অনেক ভালো মেয়ে তোমার মতো ছেলেদের গায়ে পড়ে কথা বলে না।”
রুবি বলে,”ওহ তাই নাকি? আমিও তোমাকে পছন্দ করি ঐ মেয়েটাও পছন্দ করে তাহলে দুজনের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? ”
আরিয়ান বলে,”জানিনা অনু আমাকে পছন্দ করে কি না তবে তোমার মতো গায়ে পরা স্বভাবের নয়।”
রুবি বলে,”আমি তোমাকে ভালোবাসি!
তোমাকে নিজের করে পাবার জন্য সব সময় চেষ্টা করি।
কিন্তু তোমরা কি করো তা কি সবাই জানে?
যাকে পছন্দ করো না তাকে সবার আড়ালে জড়িয়ে ধরে কি প্রমাণ করতে চাও?
আমি খারাপ হলে মেয়েটা কোনোদিক দিয়ে দুধে ধোয়া?
অনু কি তোমাকে জড়িয়ে ধরে নাই কখনো? তোমরা লোক চক্ষুর আড়ালে পাপ করলে তা জায়েজ আর আমি সামনে করতে চেষ্টা করলে তা হারাম?বাহ কি নিয়ম তোমাদের? ”
আরিয়ান এবার সবার সামনে রুবির গালে একটা থাপ্পড় দিয়ে বল,”আগে জানতাম তুমি খারাপ তবে এতোটা বেশী খারাপ তা আগে জানা ছিলো না।আরে সেদিন কি হয়েছিলো না জেনে অন্যের চরিএের দিকে আঙ্গুল তুলতে যেওনা।
বাকি চার আঙ্গুল কিন্তু ফিরে তোমার দিকে উঠবে সে কথা ভুলে যেওনা।”
এমন সময় সেখানে রুবির ভাই মামুন চলে আসে সে এসে দেখে রুবিকে আরিয়ান থাপ্পড় দিচ্ছে।
রুবি তার ভাইকে দেখে দৌড়ে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে তার ভাইয়াকে অনুর দিকে ইশারা করে বলে,”এই মেয়েটার জন্য তোমার বোনকে ঐ ছেলেটা থাপ্পড় দেওয়ার সাহস করেছে।”
মামুন অনুর দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।
মামুনের এমন ভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে রিদি খুব ভয় পেয়ে যায়।
রিদি তাড়াতাড়ি অনুর হাত ধরে সেখান থেকে নিয়ে যেতে চেষ্টা করে।
কিন্তু তার আগেই মামুন অনুর একহাত ধরে জোড়ের টান দিয়ে রিদির থেকে ছাড়িয়ে নিজের শরীরের সাথে মিশিয়ে ফেলতে চেষ্টা করে।
আরিয়ান অনুকে মামুনের বুকে দেখে তো রাগে আগুনের খনি হয়ে যায়।অনু নিজের হাত ছাড়াতে চেষ্টা করে।কিন্তু এতো শক্ত করে ধরে রেখেছে যে ছাড়াতে পারছিলোনা।
এমন সময় রুবি তার ব্যাগ থেকে ফোন বাহির করে সেদিনের ভিডিও তার ভাইকে দেখিয়ে বলে,”
ভাই মেয়েটার কতো বড় কলিজা দেখেছো তোমার ছেলেদের মারধোর করেছে।”
মামুন বলে,”শালীর তো দেখছি হেব্বি পোলাদের মতো স্টাইল। তাহলে কোথায় তোমার স্টাইল এতো সময় আমার হাত থেকে তো নিজেকে ছাড়াতে পারছে না।”
অনু বলে,”সাহসের অনেক কিছু দেখা বাকী আছে। তা দেখলে তো আপনার কলিজায় আঘাত লাগবে।”
কথা বলা শেষে অনু সোজা মামুনের পায়ের উপর জোড়ে করে একটা লাথি দিয়ে দেয়।
তারপর আবার সোজা হয়ে ওর মেইন পার্টে একটা লাথি দিয়ে দেয়।
আরিয়ান অনুর এমন কান্ড দেখে একদম অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।
আচমকা এমন কিছু হওয়াতে মামুন বুঝে উঠতে পারে না আর অনুর হাত ছাড়া পেয়ে ছুটে পালিয়ে যায় আরিয়ানের কাছে।
মামুন নিজেকে ঠিক করে নিয়ে আরিয়ানের কাছে গিয়ে অনুর হাত ধরতে যেইনা হাত বাড়িয়ে দেই ঠিক।
তখনি আরিয়ান মামুনের হাত ধরে বলে,”একবার অনুকে স্পর্শ করে শিক্ষা হয়নি।এবার যদি অনুর দিকে হাত বাড়ানোর চেষ্টা করেন তো আমি আপনার কি নাজেহাল অবস্থা করবো তা আপনি স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারবেন না।”
মামুন বলে,”কি সম্পর্ক এই মেয়ের সাথে যে কারণে আমার সাখে টক্কর নিতে চাইছিস? ”
অারিয়ান অনুকে সামনে এনে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে বলে,”অনু আমার জান হয়।আমি অনুকে ভালোবাসি। নিজের জানের কেউ ক্ষতি করলে কি করে আমি তা দেখবো বলেন?
এমন সময় সেখানে পুলিশের গাড়ির আওয়াজ শুনে মামুন আর বেশী কথা না বাড়িয়ে বলে,”তুই আমার বোন কে কাঁদিয়ে ভুল করেছিস। আমি তোর কলিজায় আঘাত করে সে ভুলের মাশুল শোধ করে নিবো কথাটা মনে রাখবি বলে রুবিকে সাথে নিয়ে চলে যায়।”
মামুন চলে যাবার পর অনু আরিয়ানের গলা ধরে সামনে দাঁড়িয়ে বলে, “সত্যি আপনি আমাকে ভালোবাসেন?আমি তো নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারছি না।”
আরিয়ান নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলে, “ফালতু কথায় কান দিতে নেই।”
এমন সময় সবাই এসে অনুর খুব প্রশংসা করতে শুরু করে দেয়।
তা দেখে আরিয়ান অনুকে বলে,”তুমি নিজেেকে নায়িকা মনে করো?তাহলে যাও পারলে নিজের বোনের জীবনটা সাজিয়ে দাও বলে সেখান থেকে চলে যায়।”
অনুর মাথার মধ্যে আরিয়ানের বলা কথা গুলো শুধু ঘুরপাক খাচ্ছিলো এর মানে কি?
এমন সময় অনু আশেপাশে রাজ কে খুঁজতে থাকে এখন এমন একটা সময় তাকিয়ে দেখে রাজ নেই!
কিন্তু কেনো রাজ তো সব সময় আরিয়ানের সাথে থাকে তাহলে আজ এখানে নেই কেনো সে কোথায়?
(ভুল এুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন সবাই)
‘
‘
‘
‘
চলবে….