আমার ক্রাশ বর সিজন- 2 !! লেখাঃ এঞ্জেল ফ্রোজেন ( নিশি )
আমার ক্রাশ বর সিজন 2
ওরে আল্লাহ আজ কতো বছর পর আমার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে গো।
আজ এতো দিনের স্বপ্ন আমার পূরণ হবে ভাবা যায়।
আজ আমার বিয়ে এটা স্বপ্নের থেকে কোনোদিক দিয়ে আমার কাছে কম কিছু না।
আমি বধূ সেজে বসে আছি আমার চারপাশে হাজার হাজার মানুষের ভীর সবাই আমার বিয়ের দাওয়াত খেতে আসছে।
এইতো কাজী সাহেব চলে আসছে গো।
কাজী সাহেব বলেন মা “কবুল “।
তিন কবুল এক সাথে বলে দিলাম আমার বিয়ে কম্পিলিট।
ওরে কি মজারে আমার বিয়ে হয়ে গেছে ভাবা যায়।
আমি সবার সামনে দাঁড়িয়ে নাচতে শুরু করে দিয়েছি।
এমন সময় ধপাস করে পড়ে গেছি।- আমার ক্রাশ বর সিজন- 2
সামনে তাকিয়ে দেখি মাদার তেরেসা ঝাড়ু হাতে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে বলছি,”কি হয়েছে তোমার সাত সকালে আমার রুমে আসছো কেনো?”
অনুর মা :ওরে আমার লাট সাহেবের কন্যা রে সাত সকাল বেলা পেয়েছে উনি।
বেলা বারোটা বাজে সেদিকে মহারানীর কোনো খেয়াল নেই?
অনু বলে,”বারোটা বাজুক আর সাতটা বাজুক তাতে আমার কিছু না।
আহা কি সুন্দর স্বপ্ন দেখছিলাম আমার বিয়ের। এই তোমার জন্য আমার স্বপ্ন টা ভেঙ্গে গেছে।
তুমি এক নাম্বারের কুফা মহিলা।
তোমার জন্য আমি সংসার করতে পারলাম না।আমি নিজের তিন কবুল বলা বরটা কেও দেখতে পাইলাম না।
সে দেখতে কেমন সুন্দর ছিলো।”
অনুর মা বলে,”ওরে বেহায়া, নির্লজ্জ মেয়ে এতো অল্প বয়সে বিয়ের জন্য মন উতোলা কেনো?”
অনু বলে,”এই তো এইবার এস এস সি পরিক্ষা দিয়েছি। আর কিছুদিন পর ষোলো তে পা দিবো তাও বলো অল্প বয়সে মন উতোলা কেনো? মনের খবর নেওয়ার জন্য মনের মানুষ খুঁজি বোঝে না সে বোঝে না।”
অনুর মা :এই তোর মতো বেহায়া কোন মেয়ে আছে রে? যে কলেজে পা না দিয়ে দিন রাত বিয়ের চিন্তা করে?এতোটা অধঃপতন হলো কি ভাবে তোর?
অনু :কি যে বলো না তুমি মাম্মা।- আমার ক্রাশ বর সিজন- 2
আমার দাদী জান ষোলো বছর বয়সে দুই সন্তানের মা হয়েছিলো।
তার নাতনী হয়ে যদি ষোল তে বিয়ে না করতে পারি তাহলে কি সম্মান থাকে বলো?
অনুর মা এবার ঝাড়ু দিয়ে অনুকে পিটাইতে ওর পিছনে ছুঁটতে শুরু করে আর বলতে থাকে,
“বেয়াদব বেহায়া মেয়ে লেখাপড়ার চিন্তা বাদ দিয়ে সে আছে বিয়ের চিন্তা নিয়ে।
আরে এতো বড়লোক বাবার মেয়ে হয়ে তার মন মানুষিকতা কেমন? আল্লাহ এ মেয়ের কি করবো আমি তুমি বলো।”
আজ তার রেজাল্ট দিবে সে দিকে তার কোনো খেয়াল নেই।
অনু দৌড়াতে দৌড়াতে বলে,”আরে রেজাল্ট দিবে তাতে আমি কি করবো? আমি এতো খারাপ স্টুডেন্ট না যে ফেল করবো!
তাই কোনো চিন্তা নেই আমার।
আর ভালো সুন্দর বর পেতে হলে লেখা-পড়াতে ভালো দক্ষ থাকতে হয়।
দেখতে একটু সুন্দর কম হলেও সমস্যা নেই মোটামুটি নিজেকে সুন্দর ভাবে প্রেজেন্টস করা টাই আসল হুহ।
আমার সব গুন আছে শুধু বরটাই নেই গো মাম্মা আফসোস। ”
অনুর মা বলে,”এই তুই থামবি বেয়াদব মেয়ে সারাদিন বিয়ের কথা মুখে।তোর বিয়ের কিছু করি আমি।আজ তোকে পিটিয়ে তোর এই বিয়ের ভুত ঘাড়ে থেকে নামাবো।”
এমন সময় অনু আবিরের সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে গিয়ে কোমর ধরে বসে থাকে।
আবির বলে,”আরে অনু মনু তোর লাগে নাই তো সোনা? ”
অনু বলে,”ধাক্কা দিয়ে ফেলে কোমর ভেঙ্গে বলছো লাগে নাই তো? ”
অাবির বলে,”না রে অনু মনু তোকে দেখতে পাই নাই এই জন্য।নাহলে কি আমি আমার সুন্দরি বোনটার ব্যাথা সহ্য করতে পারি বলতো সোনা? ”
অনু আবির কে জড়িয়ে ধরে বলে,”দেখো না ভাইয়া মা সারাদিন আমার পিছনে লেগে থাকে। এখন তো ঝাড়ু পিটা করতে আসছে।
ইশশ কতো নোংরা ঝাড়ু নিয়ে আসছে।”- আমার ক্রাশ বর সিজন- 2
আবির বলে,”ঝাড়ু তো নোংরা থাকে।নোংরা পরিষ্কারের জিনিশ কি ক্লিন থাকে? ”
অনু বলে,”আমি ওতো শতো বুঝি না।আমাকে ঝাড়ু পিটা করতে হলে নতুন ঝাড়ু এনে তা সেনেটাইজার দিয়ে ক্লিন করে আনবে না হলে অযথা ঝাড়ু নিয়ে পিছনে দৌড় দিবা না।”
অনুর মা এ কথা শুনে বলে,ওরে আমার নবাবজাদি গো! আইছে সেনেটাইজার দিয়ে ক্লিন করতে।”
এমন সময় তাদের বাড়ির কাজের মেয়ে রহিমা এসে বলে,”আফা ঝাড়ু ডা আমারে দেন,
রোজ রোজ কি শুরু করছেন আপনেরা,,
খালি ঝাড়ু লইয়া দৌড়ানি দেন পিটাইবেন তো না।মাঝ খানে আমার কামের বারোটা বাজিয়ে দেন খালি খালি।”
অাবির বলে,”এবার তোমাদের ঝগড়ার ষোলআনা পূর্ণ হলে বলো অনুকে সাথে নিয়ে ওর স্কুলে যাবো রেজাল্ট আনতে ওদিকে রিমা মনে হয় অপেক্ষা করছে।”
অনু :-বুঝি বুঝি সব বুঝি আমি!
আবির বলে,”কি বুঝিস তুই? ”
অনু ::-কি আর বুঝবো যা বোঝাও তাই বুঝি!
আবির বলে,একটা থাপ্পড় দিয়ে ষোলটা দাঁত ভেঙ্গে দিবো তোর ফাজিল মেয়ে।নিজে সারাদিন এইসব প্রেম আর বিয়ের চিন্তা করিশ বলে সবাই এক চোখে দেখিস।”
অনু বলে,”আমি এইসব কথা একদম বলি নাই,,যার মনে যা থাকে তা লাফাই ওঠে তোমার হয়ছে তাই।আচ্ছা বাদ দাও চলো এবার স্কুলে যায় নাহলে ঐ দিকে ড্রামা কুইন কান্নাকাটি শুরু করে দিবে।”
আচ্ছা ওরা স্কুলে যাক ততো সময় পরিচয় দিয়ে দেওয়া যাক।
(গল্পের নায়িকা আরিয়াত খান অনু।
বাবা শহরের একজন বড় বিজনেসম্যান।
অনুর বাবা মা অনু আর আবির কে নিয়ে খুব ভালো আছে।আবির অনুর বড় ভাই।
অনু এবার মাএ এস এস সি পরিক্ষা দিয়েছে।- আমার ক্রাশ বর সিজন- 2
সে খুব দুষ্টু আর একটু বিয়ে পাগলি টাইপ বাকিটা না হয় গল্পের মাঝে জেনে যাবেন।)
এদিকে অনু স্কুলে আসার পথে রিয়াকে ওদের গাড়িতে করে পিক করে নেয়।
গাড়ীতে বসে রিমা অনুর হাত ধরে বলে,”দেখ বান্ধবী আমার হাত একদম ঠাণ্ডা বরফ হয়ে গেছে রেজাল্টের চিন্তায়।”
অনু ::-যাক তাহলে ভালোই হবে,, আমার টাকা খরচ করে আইসক্রিম খেতে হবে না তোর নরম কচি হাত দুখানি খেলেই চলবে আমার।
রিমা অনুর কাছ থেকে নিজের হাত সরিয়ে নিয়ে বলে,”শয়তান মাইয়া ,, বজ্জাত মাইয়া সারা বেলা খালি খাওয়ার চিন্তা রাস্তার ফকির কে দেখলে পর্যন্ত ক্রাশ খাওয়া তাই না? ”
অনু তাড়াতাড়ি রিমার মুখ চেপে ধরে বলে বেদ্দপ মাইয়া ভাইয়ার কানে যদি এ কথা যায় আমার মান সম্মান কোথায় যাবে ভাবছিস একবার ও?
রিমা কানে কানে বলে,”ফকিন্নি তুই যার তার উপর ক্রাশ খাবি এই পিচ্চি বয়সে তা তোর বাড়ির মানুষ জানবে না তা কি হতে পারে বলতো সোনা।”
অনু :ক্রাশ এখন সব বয়সে খাওয়া যায়।তা ছাড়া সুন্দর জিনিষ দেখলে তো তার প্রশংসা করবো।
এমন সময় আবির বলে,”এই তোমরা এবার! থামো! দুজনের গল্প তো এই জীবনে শেষ হবে না।
গল্পে এতো বিভোর যে স্কুলে পৌঁছে গেছি সেদিকে খেয়াল নেই।”
এরপরে দু বান্ধবী কার থেকে নেমে এক দৌড়ে স্কুলের ভেতরে প্রবেশ করে সোজা রেজাল্ট বোর্ডের কাছে গিয়ে নিজেদের রেজাল্ট খুঁজতে থাকে।
রেজাল্ট খোঁজার সময় তো দুজনের হার্টবিট খুব বেড়ে যায়।
কারণ কেউ জানে না কি আছে তাদের কপালে।- আমার ক্রাশ বর সিজন- 2
একটু পর দু জনে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে খুব জোরে তারপর খুব জোড়ে চিৎকার দিয়ে ওঠে। কারণ দুজনে খুব ভাল রেজাল্ট করেছে।
অনু এক দৌড়ে আবিরের কাছে এসে তাকে জড়িয়ে ধরে বলে,”ভাইয়া আমি পেরেছি ভালো রেজাল্ট করতে এবার দাও আমার গিফট! ”
আবির বলে,”গিফট নিতে হলে তো গিফট কর্ণার এ যেতে হবে।”
তিনজন মিলে একটা শপিং মলে যায়।
সেখান থেকে অনু অনেক গুলো ড্রেস কিনে নেয় গিফট হিসাবে।
আবির ও কিছু একই রকমের ড্রেস রিমাকে কিনে দেয়।
এমন সময় আবির সব কিছুর বিল পে করতে যায়।
আর এই সুযোগে অনু আর রিমা ঘুরছিলো এদিকে সেদিকে।
হঠাৎ করে অনুর চোখ একটা ছেলের উপর আটকে যায়।
(আপনাদের সবার অনু ফিরে এসেছে তবে আগের থেকে বেশি দুষ্টু সে।😎😎
দেখা যাক সামনে সে তার ক্রাশকে পায় কি না!! 🙆🙆)
‘
চলবে….
এক পলকে দেখে নিন সহজে গল্প খুঁজে পাওয়ার সুবিধার্থে দেওয়া হল