ঘৃণার মেরিন

ঘৃণার মেরিন Season 3 !! Part- 19

মেরিন : সবার মৃত্যু দেখে মরবেন … আপনি ১বার নয় ২বার নয় বার বার আমার বিশ্বাস ভেঙেছেন । কককি দোষ করেছিলো আমার বাচ্চাটা … আমি তো বলেই ছিলাম যে চলে যাবো আপনাকে ছেরে … তবে কেন আবারও ছলনা করলেন? আমি এমনিতেও চলে যেতাম আমার বাচ্চাকে নিয়ে … অনেক দূরে … থাকতাম না আপনাদের ভীরে … বাবাকে পেয়েছি … বাবাকে এই কনিকা খানের কাছে ফেরত দিয়ে দাদুভাইকে আপনাদের সবার কাছে রেখে সত্যিই আমি বহুদূরে চলে যেতাম। সত্যি বলছি। কিন্তু সেটা করতে দিলেন না … ঘৃণার মেরিনের ঘৃণা এবার দেখবেন… ওদের থেকেও ভয়ংকরভাবে আপনাকে মারবো … just দেখতে থাকুন …
মেরিনকে বলার জন্য নীড়ের কাছে হাজারও কথা আছে । কিন্তু বলতে পারছেনা । কারন মুখ বন্ধ ।
মেরিন : জানেন নীড় সবার মতো আপনার মুখেও কেন টেপ দিয়েছি ? কারন আমি আর আপনার প্রতি দুর্বল হতে চাইনা আপনার ওপর … চোখ জোরাও বেধে দিতাম । কিন্তু চোখ বেধে দিলে এতো শত আয়োজন দেখবেন কি করে জা…ন । আপনি আমাকে অস্বীকার করেছেন মেনে নিয়েছি… আমাকে ঘৃণা করেছেন মেনে নিয়েছি … অন্যের হাত ধরেছেন মেনে নিয়েছি … অন্যের কথায় আমাকে সন্দেহ করেছেন মেনে নিয়েছি … নিজেকে ব্যাবহার করে আমার মনটাকে ক্ষতবিক্ষত করেছেন সেটাও মেনে নিয়েছি… কিন্তু এবার সব লিমিট ক্রস করেছেন…
নীড় কেবল মেরিনের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে । মেরিন ignore করে কনিকার দিকে গেলো ।

মেরিন : মিসেস খান …. “মা” … আপনাকে তো জাদুঘরে রাখা দরকার। মহান ন্যায়বিচারকারী মহিলা আপনি। salute to u… আপনি জজ কেন হলেন না বলুন তো ? পতিভক্তা স্ত্রী … স্বামিকে মেরে ফেলার জন্য নিজের ১১ বছরের সন্তানকে জেলে পাঠিয়ে দিলেন … কি ভালোবাসা … আরে এতোই যখন ভালোবাসা তখন নিজের স্বামি আর অন্য মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ করতে পারেননি? ছিঃ… কেমন স্ত্রী আপনি? চেহারা দেখে ভালোবেসেছিলেন বাবাকে… আপনি কেবল মা নামের নয় … স্ত্রী নামেরও কলঙ্ক । আজকে যা যা হচ্ছে এই সব কিছুর জন্য আপনি আর আপনি দায়ী …
কনিকারও ক্ষমা চাওয়ার আছে। কিন্তু বলতে পারছেনা ।
মেরিন নীলিমার সামনে গেলো ।
মেরিন : বাংলায় প্রবাদ বলে ফুপু নাকি কুকুরের রুহু হয় … খালামনি নাকি মায়ের থেকে ভালো হয়…কিন্তু আমার বিপরীত … আমার ফুপু অনেক ভালো … ছোটবেলায় তোমার কাছে মায়ের থেকেও বেশি ভালোবাসা পেয়েছি । কিন্তু যখন… মায়ের স্নেহের হাত উঠে গেলো তুমিও মুখ ফিরিয়ে নিলে। যখন তোমার সবথেকে প্রয়োজন ছিলো তোমাকেও পাইনি। তবুও এই কদিন অনেক ভালোবাসা দিয়েছো।
নীলিমা : ….
মেরিন নিহালের সামনে গেলো ।
মেরিন : খুজেও তোমার কোন দোষ-ভুল পাইনি। নিজের মা কে মারতেও আমার হাত কাপবে না । কিন্তু তোমাকে মারতে আমার হাত কাপবে … তাই তোমাকে সবথেকে সহজ মৃত্যু দিবো । মারার ইচ্ছা নেই তোমায়। তবুও মারবো । কারন তুমি নীড়ের বাবা … আর আমি মেরিন বন্যা নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনকে ঘৃণা করি… i just & just hate নীড় … নীড় নামটাকে … নীড়ের চেহারাটাকে … নীড়ের পদবী টাকে… নীড়ের অস্তিত্বকে ঘৃণা করি…just ঘৃণা করি । যতোদিন বেচে থাকবো আপনাকে ঘৃণা করবো। আপনি আমার #ভালোবাসার_নীড় থেকে হলেন #ঘৃণার_নীড় …
জন… bring the guns….

জন ট্রলিতে করে গান নিয়ে এলো ।
মেরিন : these r my real dearling … কোনটা আগে use করা যায় ? লটারি করে নেই … কি দিয়ে লটারি করি? গান গেয়ে … জন … let me love you গানের let me hate version রিলিজ হয়েছে ? থাক এটাই নেই ।
মেরিন ১টা গান হাতে নিলো ।
মেরিন : গান তো হাতে নিলাম… কিন্তু কাকে আগে উরাবো মিস্টার চৌধুরী ? আপনার মা-বাবা না মামিমনি … কাকে ? বলুন না মিস্টার চৌধুরী …
জন : ম্যাম।let them go… ple…
মেরিন এমন ভাবে তাকালো যে জন চুপ হয়ে গেলো ।
মেরিন : জন … আপাদত তোমাকে মারার আমার নূন্যতম কোন ইচ্ছা নেই। so এখন এই মুহুর্তে আমার চোখের সামনে থেকে । right now… please …
জন : sorry mam…
মেরিন : get out please …
জন জানে কথা বারালে মেরিন ক্ষেপে যাবে। এর থেকে ভালো একটু আড়ালে দারিয়ে থাকুক। কারন জন জানে যে নীড়কে শেষ করে মেরিন নিজেকেও শেষ করে দিবে … আর জনের কাছে মেরিন ওর ছোটোবোন। তাই চায়না মেরিনের কোনো ক্ষতি হোক। জন কেবল মেরিনের চোখের আড়ালে গিয়ে দারালো ।
মেরিন : জনটাও না পচা হয়ে গিয়েছে । whatever … let me finish … আগে মিসেস খান কেই মারি …
বলেই মেরিন কনিকার দিকে এগিয়ে গেলো ।

কবির আর দাদুভাই মেরিনের কাল-কোটরি তে এসে পৌছালো । ভেতরে ঢুকলো ।
কবির : বাবা… এখানে এতো অন্ধকার কেন ?
দাদুভাই : এখানে চোখ ঝলসানো আলো … আলো লাগলে কেবল দেয়ালে টাচ কর । তাহলেই দেখবে।
কবির দেয়ালে হাত রাখলো । আর আলো জ্বলে উঠলো। অনেক আলো । কিন্তু আলো দেখে কবিরের মনের ভয় যেন বেরে গেলো । কারন দেয়াল গুলো কালো । আর জায়গায় ঝুলে আছে গান …
কবির : এতো গান কেন ? এগুলোকি just decoration এর জন্য ?
দাদুভাই : না … জান নেয়ার জন্য …
কবির : মানে ?
দাদুভাই : চলতে থাকো । সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবে …
২জন এগিয়ে যেতে লাগলো । দাদুভাই তো ধেই ধেই করে এগিয়ে যেতে লাগলো । কবির অবাক হয়ে দাদুভাইয়ের পিছু পিছু এগিয়ে যেতে লাগলো । যেতে যেতে বড় ধরনের জানালা পরলো । কবির কৌতহলের বশেই জানালার দিকে তাকালো । আর তাকিয়ে আতকে উঠলো । কারন কনিকা-নিহাল-নীলিমা-নীড় হাত পা মুখ বাধা অবস্থায় । নীড়কে চেনেনা। ৩জনের রক্তাত্ব লাশ পরে আছে । যা দেখে কবির আতকে উঠলো। তখন দেখলো ১টা মেয়ে গান নিয়ে কনিকার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে । যার পেছন দিক দেখতে পেলো । আসলে ওটা মেরিন …
মেরিন গান লোড করতে নিলো … কবিরও আর দেরি না করে দেয়ালে ঝুলে থাকা গানগুলোর মধ্যে ১টা গান নিলো। দ্রুত লোড করলো । ওদিকে মেরিনও shoot করার জন্য হাত ওঠালো। কবির কনিকাকে বাচানোর জন্য মেরিনের হাত বরাবর নিশানা তাক করলো । কেবল ট্রিগার প্রেস করতে নিলো আর দাদুভাই এসে হাত ওপরে তুলে দিলো ।
দাদুভাই : কি করছিলি কি ? ও তোর মেয়ে মেরিন…
কবিরের হাত ওপরে তুলতে তুলতে কবিরের হাতে ট্রিগার চাপ লেগেও গেলো । আর
বুলেট গিয়ে লাগলো সেই বিশাল ঝুমুরের লোহার অংশে। যেটা সেখানে আঘাত খেয়ে গিয়ে পরলো মেরিনের মাথায়… মেরিনের আর shoot করা হলো না ।
জন : ম্যাম…
মেরিন পিছে ঘুরলো। মাথায় হাত দিয়ে ১৫-২০ ফুট দূরে থাকা জানালার দিকে তাকালো। দেখলো কবির আর দাদুভাই দারিয়ে আছে । কবিরের হাতে গান…
মেরিন যেন শত যন্ত্রনার মধ্যেও হাজার সুখ পেলো । মুখে হাসি নিয়ে
বলল : বাবাহ… আমার বাবাহ… বাবাহ …
মেরিন কবিরের দিকে হাত বারিয়ে কাপা কাপা পায়ে এগিয়ে যেতে লাগলো ।
সবাই মেরিনের হাত বরাবর তাকালো । দেখলো কবির দারিয়ে আছে। মেরিন হাটতে হাটতে পরে গেলো …
কবির জানালার ভেতর দিয়েই ঢুকে দৌড়ে মেয়ের কাছে গেলো। দৌড়ে গিয়ে মেয়েকে জরিয়ে ধরলো। নিজের কোলে মেরিনের মাথা নিলো।
কবির : বাবুই পাখিটা আমার …
কতোদিন পর বাবুইপাখিটা শুনলো মেরিন … চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পরলো। মুখে হাসি । বহু কষ্টে হাতটা তুলে কবিরের মুখ ছুয়ে দিলো ।
মেরিন : আমার বাবাহ .. বা..
আর বলতে পারলোনা … চোখ বন্ধ করে ফেলল ।

হসপিটালে …
দাদুভাই : জন …
জন : জী স্যার …
দাদুভাই : কি হয়েছিলো ?
জন : …
দাদুভাই : আমি জানতে চেয়েছি যে কি হয়েছিলো … 📢📢📢
জন সবটা বলল। সব শুনে দাদুভাই নীড়ের দিকে তাকালো ।
কবির : বাবা … এসব কি ?
তখন তপু বের হলো । তখন নীড় ছুটে ডক্টরের দিকে যেতে নিলে দাদুভাই নীড়ের সামনে লাঠি তুলে ধরে ওর পথ আটকে ধরলো ।
দাদুভাই : এই বাধা উপেক্ষা করে আগে বারার সাহস করোনা …. জানে মেরে দিবো …
নীড় : নানুভা…
দাদুভাই : খবরদার … খবরদার। আমাকে নানাভাই তুমি বলবেনা… জন… জন…
জন : জী স্যার…
দাদুভাই : এই আবর্জনাটাকে বাহিরে ফেলে আসো। এখনি…
জন : ….
দাদুভাই: কিছু বলেছি জন…
জন নীড়কে ধরতে গেলে নীড় ক্ষেপে গেলো।
নীড় : don’t u dare to… আমি এখানেই থাকবো। দেখি আমাকে কে সরায়…
জন : স্যার ভালোভাবে বলছি এখন থেকে চলুন… না হলে আমি জোর করতে বাধ্য হবো ।
নীড় : আমি যাবোনা।
জন টেনে হিচরে নীড়কে বের করে দিলো ।
জন : আপনার কপাল ভালো যে আপনাকে জানে মারিনি …
বলেই জন চলে গেলো ।
দাদুভাই : তপু … দিদিভাই কেমন আছে ?
তপু : খুব খারাপ… ৭২ঘন্টা observation এ রাখতে হবে ।দেখি কি হয়…
কবির : বুলেট তো directly ওর মাথায় লাগেনি। বেগ অনেক কমার পর ওর মাথায় লেগেছে …
তপু : সে কারনেই এখনও বেচে আছে । তা না হলে … brain stroke … বিষ প্রয়োগ বুলেট … এতোকিছুর পর ওকে আবার হসপিটালে আনার সময় হতো নাকি । spot এই মারা যেত ।
দাদুভাই : brain stroke মানে ?
তপু : brain stroke মানে brain stroke…
বলেই তপু চলে গেলো ।
দাদুভাই : জন …
জন : জী স্যার ম্যামের brain stroke ও হয়েছিলো …
কবির : কিছুই বুঝতে পারছিনা … আমার মেয়ের এই পরিনতি কেন ? … কনা … এসব কি?
দাদুভাই : তোর বউকে জিজ্ঞেস করছিস কেন ? আমাকে জিজ্ঞেস কর… মা তো মাই …. ও তো মানুষের কাতারেই পরেনা । আজকে তোকে সব বলবো আমি । শোন …
দাদুভাইও কবিরকে সব বলুক। ততোক্ষনে আমিও অতীতটা বলি।

[[[
অতীত …
১৩বছর আগে…
নীড়ের দাদুভাই মৃত্যু সয্যায়… মারা যাওয়ার আগে সে চায় নীড়-মেরিনের বি়য়ে দেখে যেতে । কারন নীড় তার একমাত্র নাতি। কিন্তু নীড় মেরিন ২জনই তো ছোট । মেরিনের ১১ আর নীড়ের ১৫ … তবুও শাহজাহান চৌধুরীর শেষ ইচ্ছা পূরন করার জন্য নীড়-মেরিনের কাবিন পরানো হলো। তার কিছুদিনের মধ্যেই তিনি মারা গেলেন।
নীড়ের মনে বরাবরই মেরিনের জন্য ১টা soft corner আছে । teenage … ১ম ১ম ভালোবাসা । তার ওপর বিয়ে । নীড়ের মন উড়ুউড়ু… নীড় মেরিনকে ছোটবেলা থেকেই বনপাখি ডাকতো। মেরিনকে কারো সাথে খেলতে দিতোনা । আর নিজেও অন্যকারো সাথে খেলতোনা ।
মেরিনেরও ছেলেমানুষই মন। নীড়ের জন্য ও কোনো বন্ধু বানাতে পারেনা। কারো সাথে খেলতেও পারেনা। আরো ছোটোবেলা থেকেই নীড় মেরিনকে অন্যকারো সাথে খেলতে দেয়না । নীড়ই মেরিনের একমাত্র খেলার সাথী …
.
ওদিকে …
মনির কবিরদের অফিসেই চাকরী করে । ম্যানেজার । ১দিন কবির জানতে পারে যে মনির ১জন smuggler… মনির কবির factory তেই smuggling এর জিনিষপত্র লুকিয়ে রাখে । সেই সাথে মনিরে-সেতুর নজর খান সম্রাজ্ঞে । ওর খান সম্রাজ্ঞের মালিক হতে চায় । কবির এগুলো জেনেই অফিস থেকে সোজা চলে যায় সেতু-মনিরের বাসায় । যেটা ছিলো কবিরের সবথেকে বড় ভুল । সেখানে গিয়ে কবির আর মনিরের মাঝে অনেক তর্ক বিতর্ক হয় । কবির পুলিশকে ডাকতে চায় । তখন সেতু এসে কবিরের মাথায় বারি মারে । কবির অজ্ঞান হয়ে পরে যায় । কবিরকে বন্দী করে ফেলে । কবির না ফিরলে সবাই চিন্তা করবে ভেবে মনির কনিকাকে ফোন করে বলে যে কবির অফিসের কাজে দেশের বাইরে গিয়েছে । যে কারনে কেউ আর মাথা ঘামালোনা । সব সম্পত্তি দখল করা আর নিজের নামে করানোর জন্য মনির ১জন লোককে কবিরের চেহারা দিলো। তার নাম আরফান । আরফান ৭দিনপর কবির ফয়সাল খান সেজে খান বাড়িতে ঢুকলো।

৫-৭দিনপর …
নিলয়-নীরা-নীড়-মেরিন ৪জন মিলে লুকোচুরি খেলছে … মেরিন গিয়ে বাবার গাড়ির back sit এ গিয়ে লুকালো । মেরিন ঘুমিয়েই পরলো । আর যখন ঘুম থেকে উঠলো তখন দেখলো যে গাড়িটা ১টা কেমন বদ্ধ factory type জায়গাতে …
মেরিন : এখানে কেন বাবার গাড়িটা … বাবা কোথাও এসেছে ?
তখন মেরিন হাসাহাসির শব্দ পেলো । মেরিন গাড়ির কাচ নামালো । ২টা কবির দেখতে পেলো । ১জন বাধা অবস্থায় ।
মেরিন : একি ২টা বাবা ??? মজার তো .. ছবির মতো । মনে হয় বাবা ম্যাজিক দেখানোর জন্যেই এখানে নিয়ে এসেছে । 😊😊😊
। দেখিতো কি হয়…
মেরিন বেশ interest নিয়ে দেখতে লাগলো । আর সেতু-মনির-আরফানের কথায় মেরিন বুঝতে পারলো যে বন্দী অবস্থায় আছে সেটাই ওর বাবা। আর যে মুক্ত সেটা ওর বাবা নয়। আর ওরা ৩জন মিলে ওর বাবাকে শেষ করে দিতে চায় …
.
((( মেরিন এখন মরবে না । আর সেতুর মৃত্যু আমার মনে হয়না সহজ হয়েছে । কারন মায়ের চোখের সামনে সন্তানের মৃত্যু হয়তো সবথেকে বড় কষ্টের । । )))
চলবে …