Childhood marriage 2 !! Part- 26
#পর্ব-২৬
#লেখিকা-সানজিদা সেতু
ছোঁয়াঃ (অবাক হয়ে)উনি এখানে কি করছেন!!!
লোপাঃ কি আবার করবে,উনিইতো ক্লাবের প্রেসিডেন্ট
ছোঁয়াঃ কিহ!তোরা আমাকে আগে কেন বলিস নি?
লোপাঃ কারণ বললে তুই আর এই ক্লাবে জয়েন করতি না
ছোঁয়াঃ বুদ্ধিটা কি তোর মাথা থেকেই বেরিয়েছে নাকি…
লোপাঃ সায়ন ভাইয়ের…
ছোঁয়াঃ জানতাম…দাঁড়া দেখাচ্ছি মজা,আমার সাথে ফাযলামি!
লোপাঃ এই এই কোথায় যাচ্ছিস?প্রোগ্রামের মাঝখানে এমন করে না বাবু,প্রোগ্রামটা শেষ হতে দে তারপর যা ইচ্ছে হয় করিস
ছোঁয়াঃ ঠিক আছে,তবে তাই হোক…
সায়নঃ মঞ্চে উঠতেই সেকেণ্ড রোর কর্ণারের একটা সিটের দিকে চোখ আটকে গেল,ওখানে ছোঁয়া আর লোপা বসে আছে।যেখানে সব মেয়ে হাজার রকম প্রসাধনীর ভিড়ে নিজেকে কৃত্রিমতার আবরণে ঢাকায় ব্যস্ত,এই মেয়ে সেখানে যেন একটু বেশিই অকৃত্রিম।
পরেছে একটা সিম্পল পার্পল কালারের শাড়ী,তার উপর হালকা জরির কাজ করা,লম্বা চুলগুলো একপাশে বেণী করে সামনে এনে রেখেছে,কানে ছোট্ট একটা স্বর্ণের দুল যেটা আমাদের বিয়ের সময় মা ওকে পরিয়ে দিয়েছিল,নাকে সাদা পাথর বসানো একটা নোজপিস।গায়ে আর কোন গহনা নেই আর প্রসাধনী?সেটা কি জিনিস এই মেয়ে বোধহয় তার কিছুই জানে না।তারপরেও ওর দিক থেকে চোখ ফেরানো যাচ্ছে না,তাহলে ওর ওই টানা টানা চোখদুটোতে হালকা কাজল,কপালে ছোট্ট একটা টিপ আর চিকন ঠোঁটে একটু লিপস্টিকের ছোঁয়া দিলে যে কতটা সুন্দর লাগবে ভাবতেই পুরো শরীর শিহরিত হয়ে উঠল!যাই হোক অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিলাম,একবার ছোঁয়ার দিকে তাকাতেই দেখলাম আমার দিকে কটমট করে তাকাচ্ছে,যা বোঝার বুঝে নিয়েছি আজকে আমার কপালে দুঃখ আছে…
অরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম শেষ হয়েছে বেশ কিছুক্ষণ আগে,সায়ন আর ওর গ্যাং ক্লাব হাউজে সবকিছু গোছগাছ করতে ব্যস্ত কিন্তু আজকে যেন কারোরই কাজে কোন মন নেই,সবাই শুধু একটু পর পর আড়চোখে সায়নকে দেখায় ব্যস্ত।শুরুতে খেয়াল না করলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যপারটা খেয়াল করল সায়ন…
সায়নঃ কাকে কোন দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছিল তার একটা কমপ্লিট রিপোর্ট আমার চাই,ওকে ফাইন এখনই দিতে হবে না বাট কাল বিকালের মধ্যে আমার কাছে সাবমিট করতেই হবে।আর ক্লোজিং এর দ্বায়িত্বে কে কে ছিল?
তানিঃ আমি,তন্ময় আর আসিফ
সায়নঃ ওকে তাহলে ডেকোরেশনের সবকিছু তোর কাছে রাখ,ব্যাকস্টেজের সবকিছু তন্ময় আর সাউন্ড সিস্টেমের দায়িত্ব আসিফের ঠিক আছে?
তানিঃ ওকে
সায়নঃ ব্যানারের দ্বায়িত্বে কে ছিল?
(কেউ কোন উত্তর দিল না)
সায়নঃ ব্যানারের দ্বায়িত্বে কে ছিল?
তানিঃ মে বি দীপু
সায়নঃ I can’t take it any more.What’s wrong with you guys?Any problem?
(সবাই মাথা নিচু করে ফেলল)
সায়নঃ যদি কোন প্রবলেম নাই থাকে তাহলে এত টাইম কেন লাগছে?ঝটপট কাজ শেষ কর,কয়টা বাজছে সেদিকে খেয়াল আছে?
রাকিবঃ Sorry yaar I am really very sorry
সায়নঃ তোর আবার কি হল!কিসের সরি?
রাকিবঃ আমি যদি আগেই জানতাম ওই মেয়েটাই তোর…তাহলে ওকে র্যাগিং করার কথা মাথায়ও আনতাম না,সরি এগেইন…
সায়নঃ তুই কি ছোঁয়ার কথা বলছিস?
রাকিবঃ তাছাড়া আর কার কথা বলব?মারুফ আমাকে সব খুলে বলেছে আর সব শুনে আমার নিজেরই অনেক গিল্টি ফিল হচ্ছে
সায়নঃ সব খুলে বলেছে মানে!মারুফ?
মারুফঃ টেনশন নিস না,যা বলতে বলেছিস তাই বলেছি (ফিসফিস করে)
সায়নঃ আচ্ছা ঠিক আছে,এখন কি কাজগুলো শেষ হবে নাকি এভাবেই চলবে?
(সবাই আবারও সায়নের দিকে তাকিয়ে মুচকি করে হাসলো)
সায়নঃ হোয়াট?কি সমস্যা তোদের এভাবে কি দেখছিস?
আসিফঃ না মানে দোস্ত মেয়েটা কিন্তু অনেক সুন্দর,আমাদের সবারই কিন্তু বেশ পছন্দ হয়েছে
সায়নঃ কি যা-তা বলছিস বলতো
দীপুঃ আর লুকিয়ে লাভ নেই দোস্ত,আমরা সব জানি
তানিঃ তুই যে ওই ডাইনীটার খপ্পর থেকে বেরিয়ে এসেছিস এটা নিয়েই আমরা খুশি ছিলাম।মনে একটা কিঞ্চিৎ সন্দেহ ছিল বাট মেয়েটাকে দেখার পর সব সন্দেহ সব ভয় দূর হয়ে গেছে
রাকিবঃ হ্যাঁ দোস্ত,তুই মোটেও ভুল করিস নি,I can swear she is the right choice for you…
সায়নঃ আরে তোরা যা ভাবছিস তেমন কিছু না,আমি জাস্ট ওকে পছন্দ করি এর বেশি কিছুই না আর আমার ব্যাপারে আদৌ ওর কোন ফিলিংস আছে কিনা তাওতো আমি জানি না
সবাইঃ হোয়াট!
আসিফঃ Stop kidding Sayon
সায়নঃ I am serious
তানিঃ সিরিয়াসলি!তুই জাস্ট ওকে পছন্দ করিস!
রাকিবঃ এর থেকে বেশি কিছু নাতো?ঠিক করে ভেবে বলবি কিন্তু
সায়নঃ আমি ভেবেই বলছি
রাকিবঃ ওকে,তাহলেতো আমার রাস্তা ক্লিয়ার
সায়নঃ মানে?
রাকিবঃ মানে মেয়েটাকে আমার অনেক পছন্দ হয়েছে সো..আই ক্যান ট্রাই
সায়নঃ ট্রাই!কিসের ট্রাই
রাকিবঃ কিসের আবার ট্রাই?তুই যেহেতু মেয়েটাকে ভালোবাসিস না সো আমারতো একটা চান্স আছে তাই…
তানিঃ রাকিবের বাচ্চা…তোরেতো আমি…
রাকিবঃ আচ্ছা রাগতো সায়নের করা উচিত তাহলে তুই কেন এত হাইপার হচ্ছিস?
তানিঃ হাইপার হচ্ছি তাইনা?দাঁড়া হাইপার কাকে বলে তোকে দেখাচ্ছি
সায়নঃ আরও মার তানি,আমার পক্ষ থেকেও দুই চারটা চড় থাপ্পড় দিয়ে দিস…
রাকিবঃ কেন আমি আবার কি করলাম?আরে ভাই একটা মেয়েকে লাইকতো অনেকেই করতে পারে বাট লাভতো একজনই করতে পারে আর তুই যেহেতু জাস্ট লাইক করিস সো…অবশ্য তুই যদি ওকে লাভ করতি তাহলে নাহয় অন্য ব্যাপার ছিল…
মারুফঃ ক্যারি অন রাকিব,এটাইতো চাইছিলাম।সায়ন বাবু,তুই যতই অস্বীকার করিস না কেন আমি কিন্তু ঠিকই বুঝতে পারছি তুই অলরেডি ছোঁয়ার প্রেমে পড়ে গেছিস।ব্যপারটা তুই যত তাড়াতাড়ি মেনে নিবি তোর জন্য ততই ভাল হবে (মনে মনে)
আসিফঃ এক্স্যাক্টলি আমিও ট্রাই করতে চাই
দীপুঃ আমি আবার বাদ যাব কেন?আমারওতো কোন জিএফ নেই সো আমিও চান্সটা নিতে চাই
আসিফঃ কি রে মারুফ তুই কিছু বলছিস না যে?
মারুফঃ ইয়ে মানে আমার একটু কাজ আছে,আমি একটু আসছি।You guys carry on…
আসিফঃ ভালই হল,একটা কম্পিটিটর কমলো…
সায়নঃ (চিৎকার দিয়ে) Shut up you idiots.আর কোন কথা না,চুপচাপ নিজের নিজের কাজ শেষ কর understand?
(সায়ন যখন সবার উপর নিজের রাগ ঝাড়ছে ঠিক তখনই ছোঁয়া আর লোপা দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলো,ছোঁয়াকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে প্রচণ্ড রেগে আছে।লোপা প্রাণপণে চেষ্টা করছে ওকে শান্ত করার কিন্তু কিছুতেই পারছে না)
ছোঁয়াঃ এসবের মানে কি?চাইছেন টা কি আপনি?
(ছোঁয়ার কথা শুনে সবাই ওর দিকে ঘুরে দাঁড়ালো,সবাই ওর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।সায়ন সবাইকে ইশারায় চলে যেতে বলল,একে একে সবাই বেরিয়ে গেল)
সায়নঃ এবার বল কি সমস্যা?
ছোঁয়াঃ আপনি জানেন না কি সমস্যা!Why can’t you leave me alone?
সায়নঃ কারণ আপনার শাশুড়িমা মানে আমার মা চান আমি সবসময় আপনার দিকে খেয়াল রাখি সো…
ছোঁয়াঃ তাই বলে আমার সাথে চালাকি করে…
সায়নঃ কি চালাকি করলাম?
(তখনই মারুফ ঘরে ঢুকল,সবার দিকে একবার চোখ বুলিয়েই থমকে দাঁড়ালো)
মারুফঃ ইয়ে মানে আমি একটা কাজে বাইরে গিয়েছিলাম তাই…সিচুয়েশন মনে হচ্ছে বেশ গম্ভীর,আমি বোধহয় ভুল সময়ে এসে পড়েছি।আচ্ছা তোরা কথা বল আমি বাইরে ওয়েট করছি
সায়নঃ তার আর দরকার হবে না,তুই এখানেই থাক
মারুফঃ তুই শিওরতো?
সায়নঃ হ্যাঁ তুইতো সবই জানিস সো তোর থেকে লুকানোর কিছু নেই,তুই এখানেই থাক
মারুফঃ ওকে
সায়নঃ তো মিসেস মাহবুব,এবার বলেন আপনার সাথে আমি ঠিক কি চালাকি করেছি
ছোঁয়াঃ আপনি এই ক্লাবের প্রেসিডেন্ট আগে বলেননি কেন?
সায়নঃ কেন বললে কি করতে?জয়েন করতে না তাইতো?
ছোঁয়াঃ ঠিক তাই
সায়নঃ সেই জন্যেইতো বলিনি
ছোঁয়াঃ আপনি!!!আপনি আসলেই একটা…
সায়নঃ যা ইচ্ছে হয় বলতে পারো,I don’t care
ছোঁয়াঃ ঠিক আছে জয়েন করেছি তো কি হয়েছে,এখনতো কুইট করতেই পারি তাইনা?
সায়নঃ মানে?
ছোঁয়াঃ মানে আমি ক্লাব থেকে রিজাইন করছি
সায়নঃ Are you sure?
ছোঁয়াঃ অবশ্যই
সায়নঃ বাট আমি কিন্তু শিওর না
ছোঁয়াঃ মানে?
সায়নঃ মানে ভাইভার সময় একটা এগ্রিমেন্টে সাইন করেছিলে মনে আছে?
ছোঁয়াঃ হ্যাঁ ওটাতো মেম্বারশিপের একটা জেনারেল ফর্ম ছিল,সবাইকেইতো সাইন করতে হয়েছে
সায়নঃ ফর্মে কি লেখা ছিল একবার পড়ে দেখেছো?
ছোঁয়াঃ (একটু কনফিউজড হয়ে)না মানে..আসলে..কি লেখা ছিল ওটাতে?আপনি কি আবার আমার সাথে কোন ট্রিক করেছেন?
সায়নঃ ওর দিকে কাগজটা বাড়িয়ে ফহরলাম।একেবারে নিচের দুই লাইন পড়ে দেখো
ছোঁয়াঃ ঝটপট পড়তে লাগলাম,এটাতে তো…এসবের মানে কি?
সায়নঃ একবার ক্লাবের জয়েনিং এগ্রিমেন্টে সাইন করার পর আর এক বছরের মধ্যে ক্লাব থেকে রিজাইন করতে পারবে না,শুধুমাত্র ক্লাব যদি চায় তাহলেই একমাত্র মেম্বারশিপ বাতিল করতে পারবে।যদি কেউ নিয়ম অমান্য করে তাহলে ক্লাবের পুরো রাইট আছে তার বিরুদ্ধে লিগ্যাল এ্যাকশন নেওয়ার…
ছোঁয়াঃ হোয়াট!এটা কি মগের মুল্লুক নাকি!
সায়নঃ যদি তাই মনে হয় তো তাই।যাই হোক ক্লাব থেকে রিজাইন করার কথাটা আপাতত ভুলে যাও আর নেক্সট এক বছর আমার মানে ক্লাবের সাথেই থাকতে হবে সো বি প্রিপেয়ার্ড
ছোঁয়াঃ আপনাকেতো আমি..
সায়নঃ দেখে নেবে তাইতো?ওকে আই এ্যাম ওয়েটিং ফর দ্যাট…
(ছোঁয়া লোপাকে টানিতে টানতে বেরিয়ে গেল,মারুফ ওদিক থেকে চোখ ফিরিয়ে সায়নের দিকে তাকালো,সায়ন এখনও মুচকি মুচকি হাসছে)
মারুফঃ বাপ রে বাপ,এটা মেয়ে না কি!দেখেতো বোঝা যায় না এই মেয়ে এত জেদি আর রাগী…
সায়নঃ জেদের আর কি দেখলি,ও যে কতটা জেদি তা একমাত্র আমিই জানি
মারুফঃ অবশ্য তোর মত এমন এ্যারোগেন্ট পাবলিকের জন্য এমন একজনই সুইটেবল
সায়নঃ হুম জানি তাইতো…
মারুফঃ বাই দ্য ওয়ে এই নতুন নিয়মটার ব্যাপারটা কি বলতো?
সায়নঃ কোন নিয়ম?
মারুফঃ ওই যে মেম্বারশিপ বাতিলের ব্যাপারটা
সায়নঃ ওহ ও কিছু না,আসলে অমন কোন নিয়মই নেই
মারুফঃ তাহলে?
সায়নঃ ওটা শুধুমাত্র ছোঁয়ার এগ্রিমেন্টটাতেই লেখা ছিল
মারুফঃ কিন্তু কেন?
সায়নঃ কারণ আমি জানতাম ও এমন কিছুই করবে তাই আগে থেকেই সব ঠিক করে রেখেছিলাম
মারুফঃ জিও বস,এই না আমার দোস্ত..কিন্তু একটা ব্যাপার কিছুতেই আমার মাথায় আসছে না
সায়নঃ কোন ব্যাপার?
মারুফঃ সব ছেড়ে তুই ভাবীকে এই ক্লাবে রাখার জন্য এমন উঠে পড়ে লাগতে গেলি কেন?
সায়নঃ কি করব বল,মা ওর দিকে খেয়াল রাখতে বলেছিল।আমি এত করে বললাম হোস্টেলে থাকার দরকার নেই,বাবা একটা বাসাও ঠিক করে দিল কিন্তু এই মেয়ে কি এত সহজে মানবে!একেবারে বেঁকে বসেছে,কিছুতেই আমার সাথে থাকবে না!আর তাছাড়া…
মারুফঃ তাছাড়া কি?
সায়নঃ ওই আয়ানটাও আজকাল ছোঁয়ার পেছন পেছন ঘুরঘুর করছে,যেভাবেই হোক ওই ছেলেকে ওর থেকে দূরে রাখতে হবে তাই…
মারুফঃ ওহ হো জেলাস..হুম?
সায়নঃ জেলাস,কিসের জেলাস আমি মোটেও জেলাস টেলাস না।ওই এমনিই একটু…
মারুফঃ হ্যাঁ হ্যাঁ বুঝি বুঝি সব বুঝি…দেখ দোস্ত তুই স্বীকারকর আর না কর প্রেমেতো তুই পড়ে গেছিস,এটা যত তাড়াতাড়িমেনে নিবি তোর জন্য ততই ভাল
সায়নঃ ব্যাস ব্যাস অনেক বুঝে ফেলেছিস এখন যাতো…
মারুফঃ হ্যাঁ হ্যাঁ যাচ্ছি
সায়নঃ আর শোন সবাইকে ভেতরে পাঠিয়ে দিস কেমন?
মারুফঃ ওকে…
(পরদিন সকালে)
CSE ডিপার্টমেন্টের নোটিশ বোর্ডের সামনে বিশাল বড় জটলা বেঁধে আছে,সবাই বোর্ডে কি যেন দেখছে।ছোঁয়ার আজকে ক্লাসে আসতে একটু দেরি হয়ে গেছে তাই একরকম তাড়াহুড়ো করেই ক্লাসে ঢুকেছে তাই নোটিশ বোর্ডের দিকে খেয়ালই করেনি।ক্লাসরুমে কাউকে না পেয়ে আবারও বাইরে বেরিয়ে গেল,রুমের বাইরে বেরোতেই এক ফ্রেণ্ডের সাথে দেখা
ছোঁয়াঃ সবাই কোথায় গেছে বলতে পারবে?আর আজকে কি ফার্স্ট ক্লাসটা হবে না নাকি?
– কেন তুমি জানো না?
ছোঁয়াঃ কি জানব?
– ম্যাম অসুস্থ তাই ক্লাস নেবেন না আর সবাইতো নোটিশ বোর্ডের দিকে গেছে
ছোঁয়াঃ তারমানে আসার সময় ওখানে যেই ভিড় দেখলাম সবই আমাদেরই বন্ধু বান্ধবী?
– মে বি
ছোঁয়াঃ ওরা ওখানে কি করছে?
– আরে এই সেমিস্টারের প্রজেক্ট ডিস্ট্রিবিউশন করে দিয়েছেতো তাই কার কি প্রজেক্ট পড়েছে আর কার সাথে পড়েছে তাই দেখতে গেছে।তা তোমার কার সাথে পড়ল?
ছোঁয়াঃ আমিতো ঠিক জানি না
– আমিও জানি না,চলো একসাথেই যাই,দেখে আসি
ছোঁয়াঃ আচ্ছা চলো,আচ্ছা তোমার নামটা যেন কি?
– ও হ্যাঁ হাই আমি আকাশ,তুমি?
ছোঁয়াঃ আমি ছোঁয়া
আকাশঃ আচ্ছা ঠিক আছে আলাপ পরেও করা যাবে,এখন চলো যাওয়া যাক
ছোঁয়াঃ আচ্ছা এই প্রজেক্টের ব্যাপারে তুমি কি কিছু জানো?
আকাশঃ তেমন কিছুই জানিনা বাট শুনেছি এটাতে আমাদেরকে একজন সিনিয়র ভাইয়া অথবা আপুকে এ্যাসিস্ট করতে হবে আর পুরো সেমিস্টারে তার সাথেই কাজ করতে হবে…
ছোঁয়াঃ সর্বনাশ!না জানি কার না কার সাথে পড়বে,আমারতো এখনই অনেক ভয় লাগছে
আকাশঃ আর ভয় পেতে হবে না,আমরা প্রায় চলেই এসেছি…
ছোঁয়াঃ নোটিশ বোর্ডের দিকে যতই এগিয়ে যাচ্ছি ভয়ে চোখ মুখ শুকিয়ে যাচ্ছে।সিনিয়রদের নিয়ে এত আজেবাজে কথা শুনেছি যে তাদের সাথে কাজ করতে হবে শুনেই ভয়ে গায়ে কাটা দিয়ে উঠছে…
ছোঁয়া নোটিশ বোর্ডের কাছাকাছি যেতেই সবাই ওর দিকে কেমন যেন চোখ পাকিয়ে তাকাতে লাগলো।কেউ কেউতো অলরেডি ফিসফিস করে কথা বলাও শুরু করেছে।এবাই এমন অস্বাভাবিক বিহেভ কেন করছে ছোঁয়ার মাথায় আসছে না,আকাশও ব্যাপারটা খেয়াল করেছে কিন্তু কিছু না জেনে কিছু বলতেও পারছে না তাই চুপচাপ ছোঁয়ার পাশে হেঁটে যাচ্ছে…
চলবে….