Childhood marriage

Childhood marriage 3 !! Part- 35

ছোঁয়াঃ বলছি..আপনাকে কোথাও যেতে হবে না,আপনি বরং আজ রাতটা এখানেই থাকুন
সায়নঃ (অবাক হয়ে)এখানে!এই রুমে!Are you sure?
ছোঁয়াঃ হ্যাঁ..এতে এতো অবাক হওয়ার কি আছে?
সায়নঃ যা বলছো ভেবে বলছোতো?
ছোঁয়াঃ হ্যাঁ কিন্তু…এই আপনার মাথায় কি চলছে বলুনতো?
সায়নঃ সটান হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লাম।হাম তুম এক কামরে মে বান্ধ হো…
ছোঁয়াঃ সবসময় খালি উল্টো পাল্টা চিন্তা!দেখি সরুনতো…
সায়নঃ একি!বালিশ নিয়ে তুমি আবার কোথায় যাচ্ছো?
ছোঁয়াঃ কোথায় আবার?আপনি এখানে ঘুমালে আমারওতো একটা ব্যবস্থা করা লাগবে তাইনা?তাই ভাবছি আজকে লোপার সাথেই ঘুমাবো
সায়নঃ (হতাশ স্বরে)ওহ তাই বলো,আমিতো ভাবলাম…
ছোঁয়াঃ কি ভবেছিলেন?আমিও আপনার সাথে এখানে একসাথে…অসম্ভব…
সায়নঃ কেন?এখানে ঘুমালে কি সমস্যা?
ছোঁয়াঃ (সমস্যা আপনার না,আমার।আপনিতো নিজেকে সামালে নেবেন কিন্তু আমি?আর আমি চাইনা এতো তাড়াহুড়োয় কোন ডিসিশন হোক তাই…)সমস্যা আছে বলেইতো…ওসব আপনার না জানলেও চলবে
সায়নঃ কিন্তু…
ছোঁয়াঃ এখন চুপচাপ শুয়ে পড়ুনতো,আমার ঘুম পাচ্ছে সো..গুড নাইট…
(সায়নকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ছোঁয়া বেরিয়ে পড়লো)
সায়নঃ যাব্বাবা,এটা বউ নাকি অন্যকিছু?এতোটা পাষাণও কি মানুষ হতে পারে!

ঘড়ির কাঁটাটা তিনের ঘরে পা দিতেই ফোনটা বেজে উঠলো ছোঁয়ার।আর দশ জনের মতো স্বাভাবিক ঘুম ঘুমোয় না ছোঁয়া,ওর ঘুমটা খুব হালকা,সামান্য শব্দেই ঘুম ভেঙ্গে যায়।আজকেও তার ব্যতিক্রম হয়নি,একবার রিং বাজতেই ঘুমটা ভেঙ্গে গেল।ফোনের স্ক্রিনে সায়নের নামটা দেখে বেশ অবাকই হলো ছোঁয়া
ছোঁয়াঃ উনি আবার এখন কেন…হ্যা..হ্যালো?
সায়নঃ একটু বাইরে আসবে?
ছোঁয়াঃ এখন!কিন্তু কেন?
সায়নঃ একটু দরকার আছে,এসোনা প্লিজ…
ছোঁয়াঃ কিন্তু কারণটাতো বলবেন…
সায়নঃ একবার এসোই না তাহলেইতো সব জানতে পারবে…
ছোঁয়াঃ ঠিক আছে ঠিক আছে আসছি

(কিছুক্ষণ পর)
ছোঁয়াঃ হ্যাঁ বলুন কি দরকার
সায়নঃ বলছি কিন্তু তার আগে…
ছোঁয়াঃ আরে,কি করছেন আপনি?
সায়নঃ উফ ছোঁয়া,এতো লাফালাফি করছো কেন?
ছোঁয়াঃ আশ্চর্য!এভাবে হুট করে চোখ বাঁধছেন আবার জিজ্ঞেস করছেন লাফাচ্ছি কেন!
সায়নঃ কেন ভয় পাচ্ছো নাকি?
ছোঁয়াঃ ভয়!কিসের ভয়?আপনি বাঘ নাকি ভাল্লুক?
সায়নঃ উহু দুটোর কোনটাই না,আমি তার চেয়েও ভয়ংকর
ছোঁয়াঃ মানে?
সায়নঃ মানে আমি হচ্ছি পুরুষ প্রজাতি আর এতো রাতে একা একটা মেয়ের জন্য একজন পুরুষ মানুষ বাঘ ভাল্লুকের চেয়েও ঢের বেশি ভয়ংকর বুঝেছো?
ছোঁয়াঃ সবই ঠিক আছে তবে থিওরিতে কিঞ্চিৎ ভুল আছে
সায়নঃ (অবাক হয়ে)ভুল!কিসের ভুল?
ছোঁয়াঃ ওটা পুরুষ না,পরপুরুষ আর সেটা আপনি কোন ভাবেই হতে পারেন না
সায়নঃ মানে?
ছোঁয়াঃ আপনি না একটা আস্ত গাধা,আরে বাবা,আপনিতো আমার স্বামী তাই…
(ছোঁয়ার কথা শুনে সায়ন বেশ শব্দ করেই হেস্ব উঠলো)
ছোঁয়াঃ (অবাক হয়ে)একি,আপনি হাসছেন কেন?
সায়নঃ তাহলে স্বীকার করছো যে আমি তোমার…
ছোঁয়াঃ (এই রে..কি বলতে কি বলে ফেললাম!)ক..ক্ক..কই,আমি আবার কখন…
সায়নঃ ঠিক আছে ঠিক আছে,আর বলা লাগবে না আমার জন্য ওই একবারই যথেষ্ট।এখন চলো আমার সাথে
ছোঁয়াঃ যেতেই হবে?
সায়নঃ (মুচকি হেসে)ভয় পেও না,নিজের বউকে কিডন্যাপ করার কোন রকম ইচ্ছে আমার নেই
ছোঁয়াঃ দেখুন আপনি কিন্তু…
সায়নঃ শসসস…চলো
ছোঁয়াঃ কিন্তু…
সায়নঃ আমি আছিতো সো ডোণ্ট ওয়ারি

(কিছুক্ষণ পর)
চোখ থেকে কাপড়টা সরে যেতেই অবাক হয়ে গেল ছোঁয়া,ওরা যেই বাসাটায় থাকে এটা যে সেটারই ছাদ বুঝতে বেশ সময় লাগলো ওর।লাগারই কথা,আসলে চিরচেনা ছাদটাকেতো আর চেনার মতো রাখা হয়নি।কোন ধরণের কৃত্রিম আলো নেই ছাদে কিন্তু তবুও আলোর কোন অভাব হচ্ছে না।উপরে চাঁদের স্বচ্ছ সাদা আলো আর নিচে মাটির প্রদীপ যার থেকে ভাজা সরিষের তেলের তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধ ভেসে আসছে।
প্রদীপগুলোকেও নিদৃষ্ট প্যাটার্নে সাজানো আছে,প্রতিটা ফুলের টবকে ঘিরে মিটিমিটি জ্বলছে সবগুলো আর ছাদের ঠিক মাঝখানে অনেকটা লাভ শেপে বড় একটা জায়গাকে ঘিরে রাখা হয়েছে।পুরো জায়গাটা গোলাপ ফুলের পাপড়ি ছড়ানো আর তার ঠিক মাঝখানে দুটো চেয়ার
ছোঁয়াঃ এ..এসব..আপনি!
সায়নঃ কি করব বলো,একমাত্র বউয়ের বার্থডেতো আর শুধু কেক কেটে নিরামিষভাবে সেলিব্রেট করতে পারিনা তাই…
(ছোঁয়া আর দেরি করলো না,ছুটে গিয়ে সায়নকে জড়িয়ে ধরলো,প্রথমে কিছুটা অবাক হলেও একটু পরেই নিজেকে সামলে নিল সায়ন)
ছোঁয়াঃ Thank you thank you thank you so…much
সায়নঃ এতোটাও কিন্তু এক্সপেক্ট করিনি
ছোঁয়াঃ ইশ রে,আবারও গোলমাল করে ফেলেছি,ঝটপট সরে দাঁড়ালাম।এতোকিছু কখন করলেন?
সায়নঃ তুমি যখন লোপার ঘরে চলে গেলে তখন
ছোঁয়াঃ এতকিছুর কিন্তু দরকার ছিল না
সায়নঃ এতকিছু আর কোথায় দেখলে?এখনওতো…
ছোঁয়াঃ (অবাক হয়ে)আরও কিছু বাঁকি আছে নাকি?
সায়নঃ বলছি…এসো আমার সঙ্গে
(ছোঁয়ার হাত ধরে ওকে সেই লাভের মাঝখানে রাখা চেয়ারে এনে বসালো সায়ন)
ছোঁয়াঃ এখন?
(আড়ালে রাখা একটা প্যাকেট বের করলো সায়ন)
সায়নঃ এই নাও ধরো
ছোঁয়াঃ (অবাক হয়ে)এটাতো আইসক্রিম!তাও আবার আমার ফেভারিট ভ্যানিলা ফ্লেভার!আপনি কিভাবে…
সায়নঃ তোমার সব পছন্দ অপছন্দই আমি জানি তাই…
ছোঁয়াঃ শুধুই পছন্দ অপছন্দ?
(সায়ন উত্তর দেওয়ার আগেই বেশ জোরেই দুটো শব্দ হলো,অবাক চোখে ছোঁয়াআকাশের দিকে তাকালো।একটার পর একটা আতশবাজি তীরের বেগে আকাশের দিকে উঠে যাচ্ছে আর উপরে উঠেই রঙ বেরঙের আলোকছটা ছেড়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে।সায়নের হাত ধরে ছোঁয়া অবাক চোখে সেদিকে তাকিয়ে আছে,রীতিমতো বাচ্চাদের মতো লাফাচ্ছে মেয়েটা)
সায়নঃ ওকে এতোটা খুশি দেখে আনন্দে প্রাণটা ভরে গেল।চুপচাপ ওর পেছনে এসে দাঁড়ালাম,পকেট থেকে ওর জন্য আনা গিফটটা বের করে ওকে পরিয়ে দিলাম
ছোঁয়াঃ এটাতো…
সায়নঃ তোমার বার্থডে প্রেজেন্ট,Happy birthday Chowa…
ছোঁয়াঃ Thanks
সায়নঃ আমার একটা রিকুয়েস্ট রাখবে?
ছোঁয়াঃ কি রিকুয়েস্ট?
সায়নঃ যা কিছুই হয়ে যাক,যেই পরিস্থিতিতেই থাকো না কেন নেকলেসটা সবসময় সাথে রাখবে প্লিজ…
ছোঁয়াঃ কথা দিচ্ছি,এটা কখনও নিজের থেকে আলাদা করব না,কক্ষণও না….

সন্ধ্যা ৭টা…
সেন্ট্রাল ক্যাফেটেরিয়ার আজকের চিত্রটা একটু আলাদা।এমনিতেও জায়গাটা কখনও ফাঁকা থাকে কিন্তু এতোটা ভীড়ও কখনও হয় না,আজ এখানে একেবারে উপচে পড়া ভীড়।হবে নাই বা কেন?পুরো সিএসই ডিপার্টমেন্টটায় যে আজকে এখানে জড়ো হয়েছে!
আসলে ব্যাপারটা হচ্ছে প্রত্যেকটা ব্যাচকেই আজ এখানে ইনভাইট করা হয়েছে আর ইনভাইটেশনটা পাঠিয়েছে স্বয়ং সায়ন।প্রিপারেশন সব কমপ্লিট,গেস্টরাও সবাই এসে গেছে কিন্তু যার জন্যে অপেক্ষা তারই দেখা নেই।এন্ট্রি গেটের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে তাই সায়ন ননস্টপ পায়চারি করছে আর একটু পর পর ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে।ওকে এভাবে দেখে রাকিব এগিয়ে গেলো ওর দিকে
রাকিবঃ কি রে,এখানে কি করছিস?
সায়নঃ দেখ না,সবাই চলে আসলো আর ম্যাডামের এখনও কোন খোঁজ নেই!এতক্ষণে তো চলে আসার কথা ছিল,এতো দেরি কেন হচ্ছে বুঝছি না
রাকিবঃ এসবের কি দরকার ছিল?কেন করছিস এসব?
সায়নঃ দরকার আছে দোস্ত,এসব আমি শখে করছি না,করছি ভয়ে
রাকিবঃ ভয়!কিসের ভয়?
সায়নঃ দেখ আমিতো আর সবসময় এখানে থাকতে পারব না আর আমার বউটা যে সুন্দরী,দেখা গেল আমার অবর্তমানে কেউ আমারই মতো ওর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে তাই ভাবলাম ভয়টা সত্যি হওয়ার আগেই সবাইকে আমার আর ওর ব্যাপারটা জানিয়ে রাখি
রাকিবঃ ওহ তারমানে এটা তোর One kind of safety measure?
সায়নঃ হুম..তা বলতে পারিস
রাকিবঃ কিন্তু ভাবি যদি রেগে যায়?
সায়নঃ রাগলে রাগবে,ওর রাগ আমি ঠিক ভাঙিয়ে ফেলবো
রাকিবঃ তা অবশ্য ভালোই বলেছিস
সায়নঃ এখনও আসছে না কেন বলতো?
রাকিবঃ এতো টেনশন না করে একবার ফোন করে দেখ না…
সায়নঃ ঠিক বলেছিস,দাঁড়া দেখছি।হ্যালো লোপা,কোথায় তোমরা?
লোপাঃ আর বলবেন না ভাইয়া,এখনও পার্লারেই আছি।আসলে আজকে না এখানে অনেক ভীড় তাই একটু সময় লাগছে
সায়নঃ কেন যে এসব ঝামেলা করতে গেলে!ওকেতো এমনিতেই অনেক ভালো লাগে,আবার এসব মেকাপ টেকাপের কি দরকার ছিল?
লোপাঃ আপনারা দেখছি দুজনেই একই রকম,তাসুও এই একই কথা বলছিল।আরে বাবা,আজকের পুরো আয়োজনটা যখন ওকেই ঘিরে তখন একটু স্পেশাল কিছুতো করতেই হবে তাইনা?

সায়নঃ ঠিক আছে ঠিক আছে,আচ্ছা তোমরা কি ওর সাথেই আছো?
লোপাঃ না ভাইয়া,ওকেতো ভেতরের রুমে নিয়ে গেছে।আমি আর বৃষ্টি বাইরে ওয়েটিং রুমে ওয়েট করছি
সায়নঃ আচ্ছা ঠিক আছে,ওর হয়ে গেলেই সোজা এখানে চলে আসবে কেমন?
লোপাঃ আচ্ছা ভাইয়া
(লোপার সাথে কথা শেষ হতেই সায়নের ফোনে একটা আননোন নম্বর থেকে কল আসলো)
সায়নঃ হ্যালো,কে বলছেন?
– আমি কে সেটা আপনার না জানলেও চলবে,আপনার বউ কোথায় আছে জানেন?
সায়নঃ মানে!কি বলতে চাইছেন আপনি?
– আপনার বউ আই মিন ছোঁয়া,ও এখন আমার কাছে।চিন্তা করবেন না,ওকে খুব যত্নে রাখা হয়েছে…
(আর কিছু না শুনেই ফোনটা কেটে দিল সায়ন,ডায়াল করলো লোপার নাম্বারে)
লোপাঃ হ্যালো ভাইয়া…

সায়নঃ ছোঁয়া কোথায় লোপা?
লোপাঃ একটু আগেই না বললাম ও…
সায়নঃ চেক করো ও ভেতরে আছে কিনা কুইক…
লোপাঃ কিন্তু ভাইয়া…
সায়নঃ যা বলছি তাই করো,ফর গডস সেক আর কোন প্রশ্ন করো না…
লোপাঃ হ্যাঁ ভাইয়া আমি..হোয়াট দ্য…
সায়নঃ কি হয়েছে লোপা?Is everything all right?
লোপাঃ ভাইয়া ছোঁয়া ভেতরে নেই আর বিউটিশিয়ান আপুটা অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে পড়ে আছে…
(ফোনটা কেটে দিল সায়ন,আগের সেই নাম্বারটা ডায়াল করলো)
সায়নঃ কে আপনি?কি করেছেন ছোঁয়ার সাথে?
– তেমন কিছুই না,ওই একটু…যাক গে,এবারে কাজের কথায় আসি।আপনাকে একটা মেসেজ পাঠিয়েছি,বউকে যদি দেখতে চান তাহলে এক ঘণ্টার মধ্যে আমার পাঠানো ঠিকানায় চলে আসবেন নাহলে কিন্তু…
চলবে…