বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -3 !! Part- 19
পাহাড়ি মেয়েদের মত শাড়ি পড়েছে ব্লাউজ ছাড়া,, চুল গুলো খোপা করা,, চুলে একধরণের ফুল ও লাগানো,, চোখে ঘাড়ো কাজল,,তিথি লজ্জায় আবিরের দিকে তাকাচ্ছে না,,,আবির তো আর তার মধ্যে নাই,,,তিথির এমন রুপ দেখে তো আবির আজ সে ভাবে ক্রাশ খায়,,,তার মধ্যে তিথির সে লজ্জা মাখা চেহারা যা দেখে আবির আরো বেশি ক্রাশিত তার তোতাপাখির উপর,,,
আবিরের নজর যেন আজ সরছে না তার তোতাপাখির উপর থেকে,,,,তিথি আবিরের দিকে তাকিয়ে দেখে সে নিজে ও আবিরের দিকে তাকিয়ে থাকে খিল করে হেসে দেয়
তিথিঃ বজ্জাত এনাকন্ডা এইটা কি পড়লেন হা হা হা
আবির গামছা টা একটু ঘাড়ে টেনে বলে
আবিরঃ কেন খারাপ লাগছে বুজছি??
তিথিঃ আরে না পুরো এই খানকার মত লাগছে,,,বাই দ্যা রাস্তা মিস্টার বজ্জাত আজ কিন্তু আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে,,,
আবিরঃ ওহ তাই ধন্যবাদ মিস বকবক
তিথিঃ এক কাজ করিয়েন ভার্সিটিতে ও এই রকম পড়ে যাইয়েন আপনাকে দেখে মেয়েরা ফিদা হয়ে যাবে
আবিরঃ অহ রেলি??ধন্যবাদ ম্যাম
তিথি আজ আবিরের অনেক মজা নেয়,,,আবিরের ফোনে ও চার্জ নাই,,আবির কাউকে ফোন ও করতে পারছে না আর তিথির তো কোনো খেয়াল এই নাই আদিবাসীদের সাথে পুরো মিশে গেছে,,,হেসে ধুলে কথা বলছে,,
আবির হরিয়া ওর সাথে পাহাড়ি এলাকা টা একটু ঘুরে দেখে,,অনেক দূরে একটা দোকানে কারেন্ট আছে আবির তাড়াতাড়ি অই খানে গিয়ে ফোন চার্জ দেয়,,,পাশে একটা দোকানে একটা শাড়ি দেখে কালো শাড়ি চারপাশ টা লাল পাইড় দিয়ে ঘেরা,,শাড়ি কেন জানি তার খুব নিতে ইচ্ছে করছে তিথির জন্য,,,,,আবির চার পাঁচ না ভেবে শাড়ি টা নিয়ে নেয়,,,
এই দিকে,,
তিথিঃ আরে বাহা আপু এই খানে এতো সাজাচ্ছে কেন??
মহিলাঃ আমাদের এই খানে ছোট একটা মেলা হয় প্রতি বছর,, আর আজ তা হবে,,,সব মেয়েরা কাঁচা ফুলের গহনা পড়ে আর ছেলেরা লাল ফতুয়া পড়ে,,আমাদের এই খানে ছোট ছোট উৎসব গুলো সবাই অনেক আনন্দ করে,,,তোমার কি ভাগ্য দেখো তোমরা আজ এই উৎসবে যোগ দিতে পারবে,,,
তিথিঃ ওয়াও
মহিলাঃ আজকে আবার নানা রকম খাবার ও বানানো হবে,,,তার সাথে গান বাজনা সব হবে,,,
তিথি তো আজ মহা খুশি,,,পাহাড়ি অনুষ্ঠান মানে অনেক কিছু তিথির জন্য,,,,
এই দিকে সন্ধ্যা হয়ে আসছে কিন্তু আবিরের আসার কোনো খবর নাই,,,,তিথির অনেক টা ভয় করছে কারণ ডাকাত দল গুলো তাদের পিছনে পড়ে আছে আগে থেকে,,,নানা রকম চিন্তা তার মাথায় ঘুরছে,,
তিথিঃ আপু হরিয়া কোথায়??
মহিলাঃ আরে ও তো তোমার স্বামীর সাথে গেছে,,এতো ক্ষনে তো এসে যাওয়ার কথা এখনও লেন আসছে না কে জানে,,,আচ্ছা দাঁড়াও হরিয়ার বাপ রে কই তাদের দেখে আই বার লাই,,,
মহিলাটা আর তার স্বামী ঘর থেকে বের হয়ে দেখে আবির আর হরিয়া আসছে,,,আবির কিছু টা মুচকি হেসে তিথির সামনে যায়,,,,তিথির চোখে পানি দেখে বলে
আবিরঃ কি হয়ছে তুমি কাঁদছো কেন???কিছু হয়েছে??তোমার খারাপ লাগছে???
আবির তো ভয়ে প্রশ্ন করেই যাচ্ছে,,,,তিথি আবিরকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়,,,,আবির কিছুই বুজছে না,,,
তিথিঃআ,,,পনি ক,,,,ই ছিলেন (কান্না করে করে)আপনি জানেন আমার কত ভয় করছিলো আপনার কিছু হয় নাই তো কত কিছু যে মাথায় আসছে(নাক টেনে টেনে আবিরের ফতুয়া ভিজিয়ে)
আবির মুচকি হেসে বলে
আবিরঃ দূর পাগলী আমি ঠিক আছি,,আর এই তো পাশেই গেয়েছিলাম,,,,
আবির তিথিকে সরিয়ে দিয়ে হাতে একটা প্যাকেট দিয়ে বলে
আবিরঃ আজকে নাকি এই খানে কি অনুষ্ঠান,,,,তোমার সব কাপড় তো ওই ডাকাত দলের অই খানে রেখে আসলে আর আনলে খাবার এর ব্যাগ(তিথির মাথায় হালকা বারি দিয়ে)
তিথিঃ ওহ আচ্ছা আমি না খাবার এর ব্যাগ আনলাম আর আপনি কেন নিজের ব্যাগ ফেলে আসলেন হুম
আবিরঃ আমি তো ভুলেই গেছি উল্টো জবাব যে রেডি থাকবে সব সময় ম্যাডাম এর কাছে,,,
তিথিঃ হু
আবিরঃ যাই হোক এই টা পড়ে নিয়ো
তিথিঃ আর আপনি???
আবিরঃ আমি যা আছে তা পড়বো আর কি(এক গাল হাসি নিয়ে)
তিথির মনটা আনন্দে ভরে যায় আবির তার জন্য শাড়ি এনেছে এই ভেবে,,আবার নিমিষেই মুখটা মলিন হয়ে যায় এই ভেবে যে আবির নিজের জন্য কিছু আনে নাই,,,আনবে কি ভাবে যে টাকা তার কাছে ছিলো তা দিয়ে শুধু শাড়ি টাই কিনতে পারছে,,,আর টাকা যা আছে তা তাদের যে শহরে যেতে হবে এই ভেবে আবির আর কিছু নেই নাই,,,,
ভালোবাসার মানুষ এর জন্য সব করতে ইচ্ছে করে হোক না সেটা সামান্য কিছু,,,,
মহিলাটি একটা লাল ফতুয়া আর একটা শাড়ি নিয়ে আসে,,,আবিরকে ফতুয়া টা টি দিয়ে পড়ে রেডি হতে বলে,,কিন্তু তিথি আবিরের দেওয়া শাড়ি টি পড়ে,,,
আবির রেডি হয়ে সে কখন থেকে অপেক্ষা করছে শুধু ক নজর তার মায়াবতী কে দেখার জন্য,,,চারপাশে ঢোল বাজানো হচ্ছে,,,অনেক পাহাড়ি মেয়েরা হাত ধরে ধরে ঢুলে ঢুলে নাচ্ছে,,,,,এক পাশে নানা রকম পিঠা,,শরবত রাখা হয়ছে,,,নাগরদোলা ও রয়েছে যেখানে বাচ্চারা ও অনেক আনন্দের সাথে উঠছে,,তেমন একটা লাইট নাই কিন্তু চারপাশে যে জাক যমজ তা দেখে শহরের ও অনুষ্ঠানকে হার মানাবে,,,আবির চারপাশ দেখে মুগ্ধ হয়ে আছে কারণ তার দেখা বেস্ট অনুষ্ঠান মনে হচ্ছে আজ,,,
কিছু ক্ষন পর,,,,
হরিয়াঃ আবির ভাইয়া ওই দেহো তিথি আপ্পা আইয়ে(আঙুল দিয়ে ইশারা করে)
আবির পিছনে তাকিয়ে তো মুগ্ধ হয়ে যায় আজ তার তোতাপাখিকে দেখে,,,
ব্লাউজ ছাড়া কালো শাড়ি পড়েছে,,তিথি এক তো ফর্সা তার মধ্যে কালো শাড়ি এতে তিথিকে দারুণ মানিয়েছে,,,তার সাথে কাঁচা ফুলের গহনা,,ঘাড়ো করে চোখে কাজল আর লিপস্টিক দেয় এক রকম লাল জাতীয় ফুল দিয়ে যা ঠোঁটে দেওয়ায় পুরো লিপস্টিক এর মতো লাগে,,চুল গুলো খোপা আর আর চুলে সাদা বেলি ফুল দিয়ে মালা বানিয়ে খোপায় লাগায়,,,,ইসসস আজ যা লাগছে তিথিকে,,,,আবিরের নজর শুধু আটকে যাচ্ছে তিথির উপর,,, সে তো আবার প্রেমে পড়ে যায় নতুন করে তার তোতাপাখির,,,,
আবির বুকের বাম পাশে হাত দিয়ে আস্তে করে বলে
আবিরঃ এই মেয়ে আমাকে একদিন মেরে ছাড়বে তার এমন রুপ দেখিয়ে,,,,তাকে নতুন নতুন রুপে দেখে তো আমি বারবার তার প্রেমে পড়ি,,,তার এই মায়াবী মুখে যত বার তাকাই তোত বার এই প্রেমে পড়ে যাই,,,,কি আছে এই মেয়ের মাঝে জানি না শুধু জানি ভালোবাসি,,,হ্যাঁ আমি এই এলিয়েন কে ভালোবেসে ফেলেছি,
তিথি হাসি দিয়ে আবিরের দিকে তাকায় আবির তো আরো শেষ এই বার,,,,এক তো বেচারা তিথির রুপে ফিদা তার মধ্যে তিথির সে মায়াবী হাসি যা দেখে আবিরের হার্ট বিট আরো বেশি বেরে যায়,,,
নাই দ্যা রাস্তা আজ কিন্তু আবিরকে ও সে লাগছে,,,আদিবাসীদের লুঙ্গি ত্র সাথে লাল ফতুয়া আর একটা সবুজ গামছা,,,, মুখে অবশ্যই মেকাপ করে নাই কিন্তু আবিরকে এতো হ্যান্ডসাম লাগছে যে এই রুপে বলার বাহিরে,,,তিথির ফোন টা বের করে আবিরের কয়েকটা পিক তুলে নেয় কিন্তু আবির টের ও পায় না যে তার পিক তিথি তুলে রেখেছে,,,,
তিথি আর মহিলাটি বাকি মেয়েদের সাথে হাত ধরে নাচতে থাকে,,,একবার গোল হচ্ছে আবার দূরে যাচ্ছে,, তাদের মাঝ খানে আগুন জ্বালানো হয়েছে,,আগুনকে ঘিরে তার নাচছে,,,,,তিথির হাসি যেন কয়েক গুণ বেরে যায়,,,আর আবিরের হাসি বারে তিথির হাসি দেখে,,,নিজের ফোনে তিথির সে হাসি মাখা মুখ খানি আবদ্ধ করে,,,তিথির হাসি,,,তার নাচ সব কিছু আজ আবির আবদ্ধ করে নেয় তার মুটো ফোনে,,,,,
ছেলেরা ও বাহানা করে তারা ও মেয়েদের সাথে নাচবে,,,,মেয়েরা প্রথমে মানা করে কিন্তু পরে আবার রাজি হয়,,,আবির তিথির কাছে যায় হরিয়াকে ফোন দিয়ে,,,হরিয়া ভিডিও করতে থাকে আবির আর তিথির নাচ, পাহাড়ি এক ধরনের গান বাজানো হয় আবির তিথি না বুজলে ও নিজেদের মধ্যে আজ যেন হারিয়ে যায়,,,,একে অপরের অনেক কাছে আসে আর মেতে উঠে আনন্দে উৎসবে সব আদিবাসীদের সাথে,,,,
প্রায় অনেক ক্ষন পর সবাই হয়রান হয়ে যায়,,,নাচ গান সব কিছু তারপর ও চলতে থাকে,,তিথি মেয়েদের সাথে এক পাশে চলে যায় আর আবির হরিয়া ও তার বাপ এর সাথে বাকি ছেলেদের সাথে অন্য পাশে,,,
তিথিঃ আপু(মহিলা টিকে ডেকে)আমার না খুব পিপাসা পেয়েছে,,,
মহিলা টির হাতে একটা ঝুড়ি ছিলো তাই সে ইশারা করে দেখিয়ে দেয় যে অই দিকে সব আছে খেয়ে নিতে,,, তিথি দূরে ওই খানে চলে যায় আর সামনে একটা গ্লাসে দুধ টাইপের কিছু ছিলো অই টা গটগট করে খেয়ে ফেলে,,,এক ধরনের টেস্ট তিথির মাথা হালকা ঘুরতে থাকে,,,তখন তিথি আর খেতে লাগে,,কয়েক গ্লাস খাওয়ার পর তিথির প্রচুর হাসি পাগ,,,আর খুব ইচ্ছে করছে তার নাচতে,,,
দুরে গিয়ে সবাই কে চুপ করে বলে
তিথিঃ খামুশ জনগণ বাসি
তিথি একটা টুলে উঠে যায় আর চিৎকার করে সবাই কে চুপ করতে বলে,,সবাই চুপ আর তাকিয়ে আছে তিথির দিকে,, আবির কিছু বুজপছে না তিথি কেমন যেন ঢুলে ঢুলে কথা বলছে আর তার হাসি কেমন যেন আজিব টাইপের,,,,,,, আবিরের কাছে কেমন যেন লাগছে,,,তিথি গান গায় যা পুরো বাজে
আবিরঃ এই এলিয়েন এর কি হলো আবার,,আর তার গান উফফফ যখন তখন কান নিয়ে যাওয়ার প্লেন করেছে এই মেয়ে,,,,
পাশ থেকে হরিয়া বলে উঠে,,,,
হরিয়াঃ ভাইয়া আপ্পা মনি মনে হয় ওই ওষুধ ওয়ালা দুধ খাইছে,,,
আবিরঃ কিসের ওষুধ,,
হরিয়াঃ পাহাড়ি কিছু পাতা দেয় দুধে,,যা নেশার মত কাজ করে খাওয়ার পর,,,, মনে হয় আপ্পা তাই খাইছে,,
আবিরঃ ইয়ায়া আল্লাহ এই এলিয়েন কে নিয়ে আমি যে কি করি,,কিছু না কিছু গোলমাল করে ছাড়বে,,,
তিথি নাচতে থাকে আর তার গান তো আছেই,,,আবির আর পারছে না তিথির কাছে গিয়ে বলে
আবিরঃ তিথি নেমে আসো
তিথিঃ আরে বজ্জাত যে,,ওই জানো বজ্জাত তুমি না কত কিউট(আবিরের গাল ধরে) পুরো গুলুমলু কিউট এর পুরো ডিব্বা,,,
আবিরঃ ওহ তাই ধন্যবাদ তিথি,,,এই বার প্লিজ নেমে আসো পড়ে গেলে ব্যাথা পাবে,,,,
তিথিঃ আমি পড়লে তুমি আছো না আমায় বাঁচানোর জন্য,,, (এক গাল হাসি নিয়ে)
এই দিকে হরিয়া সব ভিডিও করতে থাকে তিথির কান্ড গুলো আবিরের ফোনে,,,,
তিথি নেমে আবিরের ঘাড়ে দুই হাত রেখে চিৎকার করে বলে
তিথিঃ আই লাভ ইউ বজ্জাত এনাকন্ডাআয়ায়ায়া,,,অনেক অনেক অনেক ভালোবাসি তোমায়,,,জানি না কি ভাবে শুধু জানি আমার এই মন তোমায় অনেক ভালোবাসে,,,
কথাটা শুনে যে আবির কতটা খুশি তার ধারণা টুকু হয়তো তার নাই,,তার মায়াবতী তাকে ভালোবাসে আর নিজের মুখে শিকার করলো এই ভেবে যে আবির কতটা খুশি তার ধারণা হয়তো নাই তার,,তিথি সবার সামনে আবিরকে হুট করে গালে চুমু দিয়ে বলে
তিথিঃ এই বজ্জাত তোমায় আনি অনেক ভালোবেসে ফেলেছি,,আমার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখো এই চোখে শুধু তোমার জন্য ভালোবাসা রয়েছে,,,মিস্টার বজ্জাত এনাকন্ডা ভালোবাসি তোমায় আমি অনেক,,,
চলবে,,,,,,