বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 64

চোখের কোণায় পানি এসে যায় সত্যি যে তার স্বপ্ন টা আজ সত্যি হলো,,,মা হওয়ার অনুভূতি যে কত মধুর,,,মা শব্দতা শুনতেই ভালো লাগে আর যখন নিজে সে অনুভূতির সাথে জড়িয়ে যায় তাহলে তো খুশির ঠিক এই নাই,,,,
আবির তিথির বুকে মাথা রেখে বলে
আবিরঃ আমাদের ছোট পরী যখন আসবে আমি তাকে সব সময় আমার বুকে আগলে রাখবো,,,কখনো আমার পরীকে কাঁদতে দিবো না,,,
তিথি একটু রাগী সুরে বলে
তিথিঃ আপনার বুকে শুধু আমি ঘুমাবো আর কেউ না হু,,,
আবিরঃ আর কেউ কেন ঘুমাবে?আমার মেয়ে ঘুমাবে এখানে,,,
তিথিঃ না একদম না,, আপনার বুকে শুধু আমি ঘুমাবো আপনার মেয়ে ও না হুম,,,আপনার বুকে শুধু ঘুমানোর অধিকার আমার
আবিরঃ ওরে আল্লাহ কি হিংসেটু রে নিজের মেয়েকে পর্যন্ত হিংসে করছে,,,,
তিথিঃ হু যা ইচ্ছে ভাবুন কিন্তু আপনার বুক শুধু আমার,,,,
আবিরঃ হুম আমার বুক শুধু তোমার এই,,,কিন্তু তিথি আমাদের ছোট পরীটা তাহলে কোথায় ঘুমাবে হুম?
তিথিঃ কেন আমার বুকে,,
আবিরঃ তাহলে আমি?
তিথিঃ তাহলে আপনি কি হু,,,আপনি আর আমার বেবী আমার বুকে ঘুমাবেন৷
আবিরঃ তাহলে তুমি আর আমার মেয়ে ও আমার বুকে,,,
তিথি আবিরের বুকে কয়েকটা ঘুষি দিয়ে বলে
তিথিঃ জ্বি না আপনার বুকে শুধু আমি হু,,,
আবিরঃ আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে,,,,

তিথি আবিরের হাতটা টেনে হাতে শুয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করছে আর আবিরকে বলছে
তিথিঃ শুনেছি প্রেগন্যান্সির সময় নাকি মেয়েরা মোটা হয়ে যায়,,,
আবিরঃ তুমি তো এমনি মুটি আরো মুটি হবা মানে পুরো কিউটের একটা ড্রাম হবা,,,,
আবির ফাজলামি করে কথাটা বলে উঠে,,,তিথি উঠে বসে চোখের পানি টপটপ করে ফেলতে থাকে,,,
আবিরঃ এই সরি সরি আমি তো মজা করলাম,,আমার বউ অনেক কিউট আর মোটা হলেও কি হইছে হুম তুমি তো আমার কিউটি মায়াবতী থাকবে সব সময় ওকে,,,
তিথিঃ প্রেগন্যান্সির সময় নাকি হাজবেন্ড তার বউকে লাভ করে না,,,আর মুটি হলে তো একদম নয় তাহলে কি তুমি ও??
আবিরঃ হাহা কখনো না ম্যাম,,,আমার কিউটি আমার কাছে সব সময় এমন থাকবে,,,প্রেগন্যান্সির সময় মেয়েরা আরো বেশি কিউট হয় ওকে,,,আর হ্যাঁ আমার বউ আমার কাছে মায়াবতী ছিলো আছে থাকবে বুজলে আমার কিউটি মায়াবতী,,,,
তিথিঃ আচ্ছা আপনি আমাকে কিভাবে জড়িয়ে ধরবেন যখন আমার পেট ইয়া বড় হবে(হাত দিয়ে পেট বড় দেখিয়ে)
আবির হেসে উঠে তার পাগলির কান্ড দেখে,,,
আবিরঃ তা সময় হলে বুজবে কিভাবে ধরি,,,,কিছু খেয়েছিলে তা বলো?
তিথিঃ হুম খেয়েছিলাম
আবিরঃ কম খাইও তুমি তো খাইতে গেলে পুরো টেবিলের খাবার একা শেষ করো,,,,
তিথিঃ এই যে শুনেন স্যার আমি এখন একা না ওকে,,,এখন আমার সাথে আমার বেবী ও আছে তো এখন আমাকে বেশি বেশি খেতে হবে,,,,
আবিরঃ হ্যাঁ বেশি বেশি খেতে খেতে পুরো ড্রাম হইও,,,,
তিথিঃ এই আমাকে তুমি একদম ড্রাম বলবা না বলে দিলাম
আবিরঃ কই বলি নাই তো,,,আচ্ছা শুনো এখন ঘুমাবে চুপচাপ
তিথিঃ না আমি এখন রোমাঞ্চ করবো
আবিরঃ কিইইই(চোখ গুলো বড় বড় করে)
তিথিঃ ভুতুম পেঁচার মত চোখ গুলো এতো বড় বড় করো কেন?
আবিরঃ তুমি প্রেগন্যান্ট ওকে এখন থেকে নিজের খেয়াল রাখা শিখো রোমাঞ্চ নয় ম্যাম,,,,
তিথিঃ বাহা আমি প্রেগন্যান্ট হতে না হতেই আপনি আমাকে পর করে দিলেন,,,ও আমি এখন বুজি কেউ না,,,(কান্না কান্না ভাব করে)
তিথি গাল গুলো পুরো ফুলিয়ে ফেলে,,,বেশ কিউট এই লাগছে,,,আবির তিথির গালে হাত রেখে নাকে চুমু দিয়ে বলে
আবিরঃ আমার বউয়ের এই রাগী ওয়ালা চেহারা উফফফ সে কিউট,,,
তিথিঃ একদম কথা বলবেন না হু,,,,
আবিরঃ ওকে বলবো না শুধু বউকে জড়িয়ে ধরে কত কি করবো কে জানে,,,,,(দুষ্টুমি ইঙ্গিতে)
তিথি আবিরের দুষ্টু মিষ্টি প্রেম চলতেই থাকে,,,,
সকালে,,,,
আজ আবির অফিসে যায় নাই,,,সকালে আবির আর তিথি নাস্তা করতে আসে দেখে সবাই এক সাথে বসে নাস্তা করছে,,,আবির ভাবতে থাকে এই খুশির খবর কিভাবে সবাই কে দিবে এতো বড় খুশির খবর যে,,পিছন থেকে আমানের বাবা চিৎকার করে বলে
আমানের বাবাঃ কি রে কই সবাই,,,
সবাই পিছনে তাকিয়ে দেখে আমানের বাবা-মা,,আমান আর তিশা এসেছে,,আমানের বাবার হাতে মিষ্টির প্যাকেট,,,,আবিরের বাবাকে এসে জড়িয়ে ধরে বলে
আমানের বাবাঃ খুশির খবর রে বন্ধু
আবিরের বাবাঃ কি হইছে তা তো বল,,,,
আবিরের মাঃ হ্যাঁ ভাই সাহেব কি হলো এমন যে আপনি এতো খুশি,,,,
আমানের বাবাঃ আমি দাদা হচ্ছি,,,,
সবাই তো এই কথা শুনেই অনেক খুশি হয়ে যায়,,,তিশা লজ্জা মাখা মুখ করে রেখেছে,,,,আবিরের মা এসে তিশাকে জড়িয়ে ধরে বলে
আবিরের মাঃ অনেক খুশি হলাম এতো বড় খুশি যে দিলে আমাদের,,,,
আবিরঃ মা আমার ও কিছু বলার আছে,,,,,
আবিরের বাবাঃ পরে বলিস এখন এতো বড় খুশির খবর শুনলাম যে খুশিতে নাচতে ইচ্ছে করছে,,,
আবিরঃ যদি নাচার কারন দুইগুণ হয় তাহলে?
আবিরের মাঃ মানে?

আবিরঃ মানে মা তুমি ও দাদি হচ্ছো,,,আর দাদিমা তুমি বড় দাদি আর বাবা তুমি দাদু হচ্ছো,,,,
সবাই তো খুশিতে যেন আত্নহারা হয়ে যায়,,, আমান এসে আবিরকে জড়িয়ে ধরে,,,তিশা গিয়ে তিথিকে জড়িয়ে ধরে,,,,
আমানঃ ছোট বেলা থেকে সব সময় আমাদের সব কিছু এক সাথে হয়েছে,, শুধু বিয়েটা তুই আমার আগে করলে ও দেখ হারামি আমরা দুইজন এক সাথেই বাবা হচ্ছি,,,,
সবাই হেসে দেয়,,,আবিরের মা গিয়ে খুশিতে গলার চেইন খুলে তিথিকে পড়িয়ে দেয়,,হাতের দুইটা চুড়ি খুলে একটা তিথিকে আর একটা তিশাকে পড়িয়ে দেয়,,,,,
আজ যেন রহমান বাড়ি খুশিতে মেতে উঠে,,,,
পরিবারের খুশি যেন আরো বেশি বাড়িয়ে দেয় নতুন সদস্যরা,,,
আবির তিথির সাথে সাথে আমান তিশার জীবনে ও খুশির আলো আসে,,,,আর আরু সে তো তার পড়াশুনা শেষ করতে থাকে,,আহাদ চায় তার আরু যেন নিজের পড়াশোনা শেষ করে তার ইচ্ছে কে দাম দেয় আহাদ,,,তাই তারা এখন বাচ্চা নেয় না,,,
সাত মাস পর,,,,
পুরো বাড়িতে আজ আয়োজন হচ্ছে,,চারপাশে আলোতে ভরে উঠে,,,আবিরের নানি মামিরা আত্মীয় স্বজনরা সবাই আসে,,,আরিশা আজ একটা নীল শাড়ি পড়ে বেশ কিউট লাগছে তাকে,,,চুল গুলো খোপা করে খাবারের দিক গুলো দেখছে সব কিছু ঠিক আছে কিনা,,,,
আহাদ তার বউকে দেখে যেন পুরো থ,,,কত কিউট যে লাগছে তার বউকে,,,পিছন থেকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে বলে
আহাদঃ আমরা ও কি আমাদের জীবনে একটু টুকটুকে কিউট বেবী আনতে পারি?
আরিশাঃ ফাজলামি কেন করছো এইভাবে হুম,,,,ছাড়ো আগে তারপর বলছি,,,,
আহাদঃ না আগে উত্তর দাও,,,,
আরিশাঃ উফফফ ছাড়ো তো সবাই আছে দেখবে কেউ,,,,
আহাদঃ দেখুক এতে কার কি হুম,,,আমি আমার বউকে জড়িয়ে ধরে আছি এতে কে কি ভাববে তা আমি কেয়ার করি না,,,,
আরিশাঃ আহাদ প্লিজ বুজো আজ অনুষ্ঠান বাড়িতে,,,,ভাবি তিশা রেডি হয়েছে কিনা আমাকে তো দেখতে হবে,,,
আহাদঃ দেখিও কিন্তু এখন বলো যে আমরা ও কি আমাদের ঘর আলো করে একটা বেবী আনতে পারি?
আরিশাঃ বেবী আনতে বললে কি এখন আনা যাবে পাগল??
আহাদঃ এখন না গেলে ও তো চেস্টা তো করতে পারি হুম,,,
আরিশাঃ ওকে কিন্তু এখন তো ছাড়ো প্লিজ,,,,
পিছন থেকে খালামনি হালকা কাশি দিয়ে বলে
খালামনিঃ রোমাঞ্চ করার জন্য রুম আছে বাচ্চারা,,,
আহার আর আরিশা লজ্জা পেয়ে যায়,,,আহাদ তাড়াতাড়ি চলে যায় অইখান থেকে খালামনি মুচকি হেসে আরিশার কাছে গিয়ে বলে
খালামনিঃ তো বল কখন দাদি হবো?
আরিশাঃ মানে?(লজ্জা মাখা মুখ নিয়ে)
খালামনিঃ মানে তোর কোল জুড়ে যেন একটা ফুটফুটে একটা বাচ্চা আসে,,,,
লজ্জায় অইখান থেকে চলে যায় আরিশা,,,খালামনি প্রচুর হেসে উঠে,,,,
এইদকে,,,
তিথি আয়নার সামনে দাড়িয়ে আছে,,মেহেরুন কালারের শাড়ি পড়েছে আজ তিথি,,,চুল গুলো খোপা চুলে লাল গোলাপ ফুল,,,চোখে ঘাড়ো কাজল আর ঠোঁটে লাল লিপস্টিক,,,বেশ কিউট লাগছে তিথিকে অনেক টা কিউট হয়ে গেছে আরো,,,প্রেগন্যান্সির সময় তো মেয়েরা আরো বেশি সুন্দর আর কিউট হয়ে যায়,,,আগে থেকে অনেক টা মোটা ও হয়ে গেছে,,,, আয়নায় পেট ধরে দাঁড়িয়ে আছে তিথি,,,
তিথিঃ ইয়া আল্লাহ কত মুটি লাগছি আমি,,,ইশ এই জন্য বজ্জাত বলে কম খেতে কিন্তু আমি তো শুনি নাই এই জন্য হয়তো এমন ফুটবলের মত ফুলে গেছি,,,
আবির ওয়াশরুম থেকে শাওয়ার নিয়ে এসে চুল মুছতে মুছতে বাহিরে এসে দেখে তার বউ আয়নায় দাঁড়িয়ে কান্না কান্না ভাব নিয়ে কত যে অভিযোগ করছে নিজে নিজের উপর,,,
আবিরঃ আমার বউ এতো কিসের অভিযোগ করছে নিজে নিজে শুনি?
তিথিঃ আমি কত মোটা হয়ে গেছি দেখো,,,,
আবির তাওয়ালটা বিছানায় রেখে তিথিকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে ঘাড়ে থুতনি রেখে আয়নায় তাকিয়ে বলে
আবিরঃ আমার বউকে মোটা বলার এতো সাহস কার হয়েছে হুম?আমার বউ অনেক কিউট লাগে ওকে,,,
তিথিঃ একদম মিথ্যা বলবে না ওকে,,,
আবিরঃ কিসের মিথ্যা বলছি হুম,,,আমার বউ আরো বেশি কিউট হইছে ওকে,,,
তিথিঃ আচ্ছা আজ বললে না যে আমাকে কেমন লাগছে?
আবিরঃ আমার মায়াবতী কে সব সময় মায়াবতী লাগে ওকে,,,,
আবির তিথিকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে কপালে চুমু দিয়ে বলে
আবিরঃ হে মায়াবতী অনেক ভালোবাসি,,,
তিথিঃ হু আমিও মিস্টার বজ্জাত এনাকন্ডা,,,,
আবিরঃ এখনও এই নাম??

তিথিঃ তাহলে কি নামে ডাকবো হুম???
আবিরঃ কেন জানেমান,,কলিজা,,মাই হার্ট,,,মাই লাভ,,জানু,,আরো কত কি আছে,,,
তিথিঃ জ্বি না আমার কাছে এই নাম বেস্ট লাগে ওকে,,,আমি আমার বজ্জাত কে সব সময় বজ্জাত এই ডাকবো,,,,,
আবিরঃ ওকে আর কি করার,,,
আবির তিথির গালে চুমু দিয়ে জড়িয়ে ধরতে যায় যে তিথির পেট আগে থেকে বড় হওয়ায় ভালো ভাবে জড়িয়ে ধরতে পারে না,,,তিথি তো এইবার পুরো কেঁদেই দেয়
তিথিঃ দেখলে তো এইবার আমি অনেক মোটা হয়ে গেছি তাই,,,
আবিরঃ দূর পাগলি,,,
আবির তিথিকে পিছনে ঘুরিয়ে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে,,,
আবিরঃ এইবার তো হলো ম্যাম,,,শুনো আমার বউয়ের চোখে পানি মানায় না বুজলে ঠোঁটে মিষ্টি হাসি মানায়,,,,
তিথিঃ আচ্ছা আমার বেবী আপনার মত হবে তো??
আবিরঃ না একদম না,,আমার বেবী তোমার মত কিউট হবে,,,,
তিথিঃ জ্বি না আমার আপনার ভ্রু আর চোখ বেশ ভালো লাগে,,,তাই আমি তো চাই আমার বেবীর চোখ আর ভ্রু যেন আপনার মত হয়,,,
আবির হেসে দেয়,,,
আরিশা দরজায় নক করে হালকা কাশি দিয়ে বলে উঠে
আরিশাঃ এহেম এহেম ভিতরে কি আসতে পারি??
আবির আরিশার আওয়াজ পেয়ে তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেয় তিথিকে,,একটু সরে দাঁড়িয়ে বলে
আবিরঃ কিরে এইভাবে কেন আসলি হুম?
আরিশাঃ কেন এসে কি বিরক্তি করলাম??
আবিরঃ বিরক্তি তো করিস নাই কিন্তু রোমাঞ্চের বারোটা বাজালি,,,
আরিশাঃ এই ভাইয়া একদম এইভাবে বলবি না ওকে,,,মাম্মাকে ডেকে বলবো তুই কি করছিলি,,,
আবির এসে আরিশার চুল টেনে বলে
আবিরঃ যা বল,, এতো বড় হলি সব সময় তবুও মাম্মা পাপ্পা করিস যা হাট,,,
আরিশাঃ এই তুই আমার চুল কেন টানলি?আজ তোর খবর আছে,,,,,
আরিশা আর আবির ঝগড়া করতে লেগে যায়,,দুইজনে বালিশ ছুড়াছুড়ি করতে ব্যস্ত হয়ে যায়,,,তিথি এক পাশে বসে ভাই বোনের ঝগড়া দেখছে,,,
কিছু ক্ষন পর মা এসে দেখে পুরো রুমের বারোটা বাজাই রাখছে,,,আরিশা আবির তো বাচ্চাদের মত মারামারি করছে,,,
আবিরের মাঃ এই তোরা কি মানুষ হবি না জীবনে??
আরিশাঃ মাম্মা ভাই আমার চুল টেনেছে আগে,,,,
আবিরঃ না মা এই আরুর বাচ্চা আমাকে মেরেছে,,,,
আবিরের মাঃ উফফফ তোরা কি এখনও ছোট??? আর আবির কিছু দিন পর একটা বাচ্চার বাপ হবি এখনও সে বাচ্চামি,,,
আবিরের মা প্রচুর বকা দেয় আবির আর আরিশাকে,,,এইসব এর খুব মজা নেয় তিথি বেশ ভালোই লাগছে তার আবিরকে আর আরিশাকে এইভাবে ফাজলামি করতে দেখে,,,
আবিরের মাঃ এই আবির শুন তুই আর তোর বাপ আমান আহাদ সব ছেলেরা বাহিরে চলে যায় এইটা মেয়েদের অনুষ্ঠান এখানে যেন একদম না দেখি,,,,
আবিরঃ ওমা এইটা কেমন কথা হ্যাঁ? তিথি কি একা মা হবে?আমিও তো বাবা হবো তাহলে তো আমার ও পুরো অধিকার আছে অনুষ্ঠানে থাকার,,,
আবিরের মাঃ বেশরম ছেলে এক চড় লাগাবো যে এইসব কথা আর মুখেও আনবি না,,,যা বলছি তা কর অনুষ্ঠানের আশে পাশে ও যেন না দেখি,,,,
আবিরঃ কিন্তু মা এমন কি অনুষ্ঠান যে ছেলেরা থাকতে পারবে না?
আবিরের মাঃ আজ তিথি আর তিশাকে সাত মাসের পিঠা খাওয়ানো হবে,,তারপর ওদের আনন্দের জন্য তোর নানি দাদি আরু ওরা মিলে সামান্য আয়োজন করেছে নাচ গানের,,,,
আবিরঃ সব দেখি মেয়েদের বেলায়,,,,
তিথিঃ মা কেন জানি আমার মনে হচ্ছে কিছু জ্বলছে খুব (হেসে)
আরিশাঃ রাইট ভাবি আমার ও কেন জানি খুব ঘ্রাণ লাগছে জ্বলার,,,,
আবিরঃ আর কিছু বল তোদের নাক তো না বাঁশ এক একটা,,,
আবির রেগে রুম থেকে চলে যায়,,,তিথি আরিশা আর আবিরের মা হাসতে থাকে,,,,
কিছু ক্ষন পর,,,
নিচে অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যায়,,,তিশা আর তিথিকে এক সাথে বসানো হয়,,,বেশ সুন্দর লাগছে দুইজনকে,গোলুমলু হয়ে গেছে দুইটাই,,,,নানি এসে দুইজনের কপালে আলতো করে চুমু দিয়ে কিছু টাকা দেয়,,দাদিমা ও সেম এসে তিথিকে আর তিশাকে সোনার নেকলেস দেয়,,,,
দাদিমাঃ বেয়াই সাহেবা হয়ে যাক একটা ঝাকানাকা ডান্স,,,,
নানিমাঃ এই বয়সে?
দাদিমাঃ তো কি আমাদের নাতি বাবা হচ্ছে বলে কথা,
একটা গান দেওয়া হয় নানিমা আর দাদিমা তো যা নাচ,,,দুইজন বুড়া হলে কি হইছে বেশ ভালোই নাচতে পারে,,,আমানের মা তিশার পাশে বসে আর আবিরের মা তিথির পাশে,,,
এইদিকে,,,
আবির আমান আর বাকিরা বাগানে বসে আছে,,বাড়ি থেকে হাসাহাসির আওয়াজ আসছে গানের আওয়াজ,,,
আবিরঃ এই কেমন কথা হ্যাঁ? আমরা ও তো বাবা হচ্ছি আমাদের কেন এন্ট্রি দিলো না?
আমানঃ হ্যাঁ একদম,,,,শুধু মেয়েরা এলাও আমরা না
আহাদঃ কিন্তু আমাকে তো যেতে দিতে পারতো আমি তো ফুফা প্লাস মামা হই,,,
আবিরঃ আমি আর আমান বাপ হয়ে যেতে পারছি না আর তুমি ফুফা মামা হয়ে যাবে এমন হয়,,,,
আবিরের বাবাঃ কি আর করবি বল,,,তোর যে মা গেলে ঝাড়ু পিঠা করবে তোদের আর আমাকে তো রুমে উল্টো লটকাই রাখবে,,,
আমানের বাবাঃ আমার বউ তো পুরো জল্লাদ আমাকে তো খাবার ও দিবে না,,,,
তিথির বাবাঃ আমার বউ তো নাম্বার ওয়াম ঝগড়াটি কান নিয়ে যাবে বকবক করে,,,
আবিরঃ বাহা শশুড়আব্বা আপনার বউ দেখি আমার বউয়ের মত ঝগড়াটি এলিয়েন,,,
তিথির বাবাঃ জামাই বাবা তোমার বউ যে আমার বউয়ের মেয়ে থুক্কু আমার ও মেয়ে তাই আর কি,,,
সবাই হেসে উঠে,,,
এক দল মহিলারা বাড়ির ভিতরে যাচ্ছে,,,তাদের দেখেই বুজা যাচ্ছে আশে পাশের মহিলারা,,,আবিরের মাথায় একটা বুদ্ধি আসে
কিছু ক্ষন পর,,,
বাড়ির ভিতরে কয়েকজন মহিলা ডুকে মাথায় বড় করে ঘোমটা দেওয়া,,,কেমন যেন অন্য মহিলাদের চেয়ে বেশ লম্বা,,,,
তিথির মাঃ এমন হাতির মত মহিলারা কে?
আবিরের মাঃ তা তো বুজতে পারছি না,,দাড়ান আমি দেখে আসি,,,
আবিরের মা ছয় জন মহিলার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়
আবিরের মাঃ কে আপনারা??
সবাই ঘাবড়ে যায় কিছুটা,,,মাথার ঘোমটা টা টেনে নেয়,,,শাড়ি পড়ে তারা বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে,,,কিন্তু তারা যে জুতা না খুলেই আছে সে খেয়াল কারো নাই,,,,আবিরের বাবা বেশ ঘোমটা টেনে মেয়ালি কন্ঠে বলে
আবিরের বাবাঃ ভাবি সাহেবা শুনেছি আপনাদের বাড়তে আজ অনুষ্ঠান তাই আর থাকতে না পেরে এসে গেছি,,,,
আমানের বাবা হেসে উঠে আবিরের বাবার এমন কন্ঠ শুনে৷, আমানের মা উঠে এসে বলে
আমানের মাঃ আয়োজন টা কেমন যেন চিনা চিনা লাগছে,,,,,
আমানঃ আরে খালাম্মা কিয়া যে কন,,আমরা তো আজই গ্রাম থেকইয়া আইছি(কিছু টা মেয়েদের কন্ঠে)
তিথির নজর যায় তাদের পায়ের দিকে,,,জুতা দেখেই চিনে ফেলে যে এরা মেয়ে না ছেলে,,,মুচকি হেসে তিশাকে দেখায়
তিথিঃ তিশা দেখো এরা কিন্তু ভাইয়াপু,,,,
তিশাঃ মানে?
তিথিঃ পায়ের দিকে তাকাও তাহলে মানে কি বুজে যাবে,,,,
তিশা তাকিয়ে দেখে হেসে উঠে,,,আরিশা ও খেয়াল করে তিথি তিশার কথা শুনে,,,,,
দাদিমাঃ আরে বাদ দাও তো সবাই নাচছে নাচতে দাও,,,,আর আপনারা ও আনন্দ করেন খান আমাদের বাচ্চাদের দোয়া করে যাবেন,,,,
তারা মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক জানায়,,,,
গান বাজানোর সাথে সাথে সবাই নাচতে থাকে,,বড় মামি আর মেঝো মামি তিশা আর তিথিকে নিয়ে যায়,,তিশা তিথিকে মাঝখানে রেখে তাদের চারপাশে অন্য মহিলা আর আবির তারা নাচতে থাকে,,,,
আবিরের বাবা নাচতে নাচতে তার মাথা থেকে যে ঘোমটা পড়ে যায় সে খেয়াল নাই,,,আবিরের বাবার ঘোমটা পড়ে যাওয়ায় মেয়েরা দাঁড়িয়ে যায়,,,আবিরের মা মুখে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এই ভেবে যে এই কি দেখছে,,, আমানের মা এসে একজনের মাথার ঘোমটা টান দেয় দেখে আমানের বাবা,,,
আবিরের মাঃ বুড়ো বয়সে মেয়েদের শাড়ি পড়ে এখানে ছি লজ্জা করে না তোমার(আবিরের বাবাকে উদ্দেশ্য করে)
আবির আমান আর আহাদ তো ভয়ে শেষ যে শেষ মেষ কিনা ধরা খেয়ে গেলো,,,,,তিনজনে পালাতে থাকে যে আরিশা আর মামিরা সামনে এসে দাঁড়ায়,,,
আরিশাঃ আরে আরে কই পালাচ্ছেন আপনারা?আপনাদের চাঁদ মুখ খানি তো দেখান,,,,
আরিশা গিয়ে সব গুলোর মাথার ঘোমটা টেনে খুলে,,সবাই তো হাসতে হাসতে শেষ যে ছেলেরা এই কান্ড করেছে শেষ মেষ,,,,তিশা আর তিথির তো বেশ মজা নিচ্ছে,,,
আমানের মাঃ এইসব কি কান্ড হ্যাঁ??
নানিমাঃ ওদের বকা দিয়ে কি লাভ হুম,,ওদের ও তো ইচ্ছে জাগতে পারে অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ নেওয়ার,,,অরা ও তো বাবা হচ্ছে
দাদিমাঃ হ্যাঁ ওরা ও এখানে থাকবে,,,
আবির তো খুশি হয়ে এসে দাদিমাকে আর নানিমাকে জড়িয়ে ধরে বলে
আবিরঃ এই জন্য তোমরা দুইজন আমার কলিজার টুকরা উফফফ,,,,
নানিমাঃ হইছে হইছে আমাদের তো দেখতে আসেন নাই আসছেন আপনার বউকে দেখতে,,,
তিথিঃ(বজ্জাত হিটলার আমার শাড়ি পড়ে শেষ করেছে আজ খবর আছে তার হু)
দাদিমা আর নানিমা পারমিশন দেওয়ায় ছেলেরা ও অনুষ্ঠানে থাকে,,নাচ গান হইহল্লা করতে থাকে সবাই,,
আবির গিয়ে আত্র বউয়ের পাশে বসে,,,
আবিরঃ আমার মিষ্টি বউটাকে তো অনেক বেশি কিউট লাগছে এইভাবে,,, উফফফ আমি তো ফিদা আজ
তিথিঃ তুমি আমার শাড়ি পড়েছো?
আবিরঃ তো কি হইছে?
তিথিঃ হারামি আমার শাড়ি ছিড়ে কি করলে হ্যাঁ? আজ খবর আছে রুমে চলো একবার
আবিরঃ এতো কষ্ট করে আসলাম তা না উল্টো একটা শাড়ির জন্য এইভাবে বকা দিলা,,,
আমান ও আসে তিশার পাশে,,,আজ চারজনের খুশিতে সবাই খুশি,,,আবির আমান ওরা তো সব চেয়ে বেশি খুশি তাদের জীবনে এতো সুন্দর একটা মুহূর্ত বলে কথা তাই তারা মিস করতে চায় নাই,,আর আবিরের বাবা আর আমানের বাবা ওরা তো দাদা হচ্ছে তাই একটু খুশিতে আত্নহারা,,,
চলবে,,,,,