বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 66 (Last-Part)

part-65(last part)
আমান ও আসে তিশার পাশে,,,আজ চারজনের খুশিতে সবাই খুশি,,,আবির আমান ওরা তো সব চেয়ে বেশি খুশি তাদের জীবনে এতো সুন্দর একটা মুহূর্ত বলে কথা তাই তারা মিস করতে চায় নাই,,আর আবিরের বাবা আর আমানের বাবা ওরা তো দাদা হচ্ছে তাই একটু খুশিতে আত্নহারা,,,
অনুষ্ঠান শেষে তিথি তার গহনা গুলো খুলছে আর গভীর ভাবে চিন্তা করছে কি যেন,,,আবির মুখ মুছতে মুছতে রুমে ডুকে দেখে তার মহারানি অনেক গভীর ভাবে চিন্তায় ব্যস্ত,,,,
আবিরঃ কি ব্যাপার আমার পাগলীটা এতো কি ভাবছে?
তিথিঃ আমি ভাবছি যে আমার ভাগের দইটা কে খাইলো,,৷
আবিরঃ কিইইই?
তিথিঃ কি হলো চিল্লাও কা???
আবিরঃ সিরিয়াসলি তিথি??
তিথিঃ কি?
আবিরঃ তুমি তো এতো দই খেলে আবার তারপর ও বলো তোমার ভাগ্যের টা কে খাইছে.?
তিথিঃ আরে সত্তিই,,,জানো আমি না একটা দই রেখে একটু অইদিকে গেলাম এসেই দেখি সেটা নাই আর,,,,
আবিরঃ তারপর তো পুরো সাতটা খেলে,,,,একটু কম খাও প্লিজ এখন
তিথিঃ এই একদম আমার খাবারে নজর দিবে না বলে দিলাম,,,এমনি আমি কত কম খাই,,,,
আবিরঃ হ্যাঁ তুমি এতো কম খাও যে চার পাঁচ জনের খাবার টুকু একা শেষ করো,,,,
তিথিঃ কিইইই?এতো বড় কথা বলতে পারলে?হ্যাঁ হ্যাঁ এখন তো বলবেই আমি তো এখন মোটা হলাম কিউট আর নাই তাই,,,(ন্যাকা ন্যাকা কান্না করে)
আবির মুচকি হেসে ভাবে কি বউ যে কপালে জুটেছে তার,,,,,তিথিকে জড়িয়ে ধরে বলে
আবিরঃ আমার বউ অনেক বেশি কিউট ওকে,,,,আমার বউ এতো কিউট যে মাঝে মাঝে ভাবি তাকে আমি গাপুশ করে খেয়ে ফেলি,,,,
তিথিঃ আমি কি বার্গার নাকি যে খাবে?
আবিরঃ না তুমি তো আমার তোতাপাখি,,,
তিথিঃ অই আমার আর কত নাম দিবে?
আবিরঃ যত মাথায় আসে,,,আচ্ছা ওষুধ খেয়েছিলে?
তিথিঃ ওয়াক ওষুধ কি মানুষ খায়
আবিরঃ না মানুষ কেন খাবে তোমার মত এলিয়েনরা খায়,,,চুপচাপ খেয়ে নাও,,,
তিথি একদম ওষুধ খেতে চাচ্ছে না,,আবির জোর করে প্রতি দিন তাকে ওষুধ খাওয়ায়,,,ওষুধ খাওয়ানোর সময় তো আবিরকে কি কি যে করতে হয়,,,,
পরের দিন,,,,
আজ আবির বাসায় থেকেই অফিসের কাজ করছে,,,তিথি আলমারি খুলে সব কাপড় নিচে ফেলছে,,,
আবিরঃ কি করছো কি এইসব?
তিথিঃ কেন চোখে দেখো না?
আবিরঃ চোখে তো ঠিক দেখতেছি কিন্তু তুমি এইভাবে কাপড় গুলো কেন ফেলছো??
তিথিঃ আজ আমি কি পড়বো তা ভাবছি,,,
আবিরঃ এতো কাপড় থাকতে আবার ভাবতে হয় একটা পড়ে নাও,,,
তিথিঃ না একটা ও পড়বো না,,সব গুলো খুবই বাজে লাগছে,,,
আবিরঃ আচ্ছা আমি দেই কেমন
তিথি চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে,,,আবির এসে তিথিকে কাপড় দেখায় সব গুলো তিথির অপছন্দ লাগছে,,,খুবই বিরক্তি লাগছে এখন আবিরের কাছে কারণ সে দুই ঘন্টা ধরে তিথির এমন বাহানা,,,
আবিরঃ যেটা পড়ে আছো অইটাই বেটার,,,
তিথিঃ আমি কি তোমার মত খবিশ নাকি যে শাওয়ার না নিয়ে থাকবো???
আবিরঃ আল্লাহ রে,,,,
তিথিঃ কি?

আবিরঃ আচ্ছা আমি মার্কেট থেকে এনে দিচ্ছি ওকে,,,,
আবির এই বলে চলে যায়,,,তিথি মন খারাপ করে দাদির রুমে যায়,,,
দাদিমাঃ এ কি আমার বিউটিফুলের কি হলো?
তিথিঃ আমার একটা ও ভালো কাপড় নাই আলমারিতে,,,,(মুখটা ছোট কর)
দাদিমাঃ এতো কাপড় থাকতে নাই?
তিথিঃ অইসব ভালো লাগে না,,,,আচ্ছা দাদিমা তোমার থেকে একটা কাপড় দাও তো
দাদিমা উঠে অনেক গুলো শাড়ি দেখায় তিথির একটা ও পছন্দ হয় না,,,,
তিথিঃ অই লাল টা কি?
দাদিমাঃ অইটা আমার বিয়ের বেনারসি শাড়ি,,,,
তিথিঃ আমি অইটাই পড়বো,,,
তিথির এমন আবদারে দাদিমা মানা করে না দিয়ে দেয় পড়তে,,,তিথি তো বেশ খুশি এইটা পেয়ে,,,দাদির বেনারসি শাড়ি পড়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে,,,,বেশ ভালোই লাগছে তাকে,,পেটে হাত দিয়ে আয়নায় নিজেকে নিজে দেখছে সে কখন থেকে,,,আবির কিছু শপিং করে এসে দেখে রুমে তিথি লাল বেনারসি শাড়ি পড়ে আছে,,,,
আবিরঃ বাহা অনেক কিউট লাগছে তো আমার বউকে,,,কার এইটা?
তিথিঃ দাদিমার বিয়ের শাড়ি,,,,
আবিরঃ তুমি শেষ মেষ দাদিমার শাড়ি আনলে আল্লাহ,,,,
তিথিঃ এইসব কি.?
আবিরঃ দেখে নাও,,,
অনেক গুলো কাপড় আনে থ্রি পিছ শাড়ি অনেক,,,তিথির তো একটা ও ভালো লাগে নাই,,,
আবির কিছু বলতে ও পারে না তিথিকে কিছু বললেই গাল ফুলিয়ে বসে থাকে,,,খিটখিটে টাইপের হয়ে যায় ইদানিং,,,এইভাবে কেটে যায় আরো দুই মাস,,তিথির ডেলিভারি টাইম হয়ে আসছে,,,রাতে আবিরের বুকে মাথা দিয়ে হাতে কি যেন গনছে,,,,
আবিরঃ কি হলো?
তিথিঃ কই কি?
আবিরঃ তাহলে কি গনতেছো এইভাবে?
তিথিঃ ওহ আচ্ছা,,,আমি ভাবতেছি আমার এই বেবী আসার পর আমরা আরো কত গুলো বেবী নিবো আচ্ছা শুনো আমরা কিন্তু ৫ টা বেবী নিবো কেমন,,,,
তিথির এমন কথা শুনে আবির পুরো বেক্কল হয়ে যায়,,,প্রথম বেবী আসবে এর কারনে তিথির যে জিদ আবদার রাগ এতে আবিরের অবস্থা টাইট করে আবার কিনা আরো পাঁচটা,,,,
আবিরঃ ওহ মাত্র পাঁচটা?
তিথিঃ কম হইছে তাই না?আমিও তো ভাবি এতো কম বেবী দিয়ে কি হয়,,আচ্ছা সমস্যা নাই ৮-৯ টা নিবো হেপ্পি তো?
আবিরঃ না আমি তো ৫০ টা পুরো কম্পলিট করবো,,,
তিথি মুখ বাঁকা করে অন্য দিকে ফিরে যায়,,,আবির সব সময় তিথিকে এইভাব বলে,,কি করবে তার বউটা যে এমন এমন কথা বলে,,,,
রাতের ৩ টা বাজে হঠাৎ আবিরের ফোনে কল আসে,,ঘুম ঘুম ভাবে কলটা রিসিভ করে নাম্বার না দেখেই,,,
আমানঃ আবির আমি বাবা হয়েছিইইই,,,(অনেক খুশিতে)
আবিরঃ এইটা নতুন কি?অনেক আগে তো শুনেছি যে তুই বাপ হয়েছিস,,,আচ্ছা এতো রাতে এইটা বলতে ফোন করলি উফফফ
আমানঃ হারামি আমার ছেলে হইছে,,,,
আবিরঃ বাহা কবে প্রেগন্যান্ট হলি তুই???
আবির ও এখন তিথির মত ধরতে গেলে হয়ে গেছে,,,আমান তো রেগে ধমক দেয় উঠে বসে আবির ধমক খেয়েই,,,,আমানের খুশিতে যেন খুব খুশি লাগছে তার,,,
আবিরঃ কখন নিয়ে গেলি তিশাকে মেডিকেল?
আমানঃ এনেছি রাতের ১ টায়,,,আমার যে কি আনন্দ লাগছে জানি না,,,
আবিরঃ আচ্ছা আমি আসছি,,,
আমানঃ আরে না না সকালে আসিস,,এই সময় তিথিকে একা ফেলে আসা উচিত নয় একদম,,,
আমান কলটা কেটে দেয়,,,আবির ফোন পাশে রেখেই তিথির দিকে তাকিয়ে আছে,,ঘুমান্ত তিথিকে অনেক টা মায়াবী লাগছে,,,,,তিথির মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে,,,রাতটা এইভাবেই পার করে আবির,,,
সকালে,,,

সবাই তো অনেক আনন্দ আজ তিশা আমানের পুত্র সন্তান জন্ম নিলে যে,,,খুশিতে যেন তাদের মন ভরে যায়,,সবাই তিশাকে দেখতে যায় কিন্তু তিথিকে নেয় নাই,,,আবির ও যায় নাই তিথি বাসায় একা তাই,,এই সময় তিথিকে একা রেখে যাওয়া যাবে না তাই সে যায় নাই তার মায়াবতী কে একা রেখে,,,এমা এ কি মন খারাপ করে চকলেট খাচ্ছে আর টম এন্ড জেরি দেখছে তিথি,,,,,,
আবিরঃ এতো চকলেট খাইও না পরে আমার মেয়ে মোটা হবে,,,
তিথিঃ এই একদম চুপ,,,(ধমক দিয়ে)
আবিরঃ এতো রাগ বাবারে,,,,
তিথিঃ খুব বাজে আপনি হু
আবিরঃ আপনি??? আমার বউ বুজি রেগে আছে,,,?
তিথিঃ হুম অনেক
আবিরঃ কেন?
তিথিঃ তিশার বেবীকে কেন দেখতে নিলে না?
আবিরঃ তোমার শরীর খারাপ তিথি,,আর এই সময়ে না যাওয়া বেটার,,বাড়িতে আনলে তখন না হয় দেখিও কেমন,,,
মনটা খুব খারাপ হয়ে যায় তিথির,,,আবির তিথির সামনে গিয়ে বসে,,,
আবিরঃ নুডুলস খাবে?
তিথিঃ জিজ্ঞেস করতে হয় এইটা?
আবির মুচকি হেসে কিচেনে চলে যায়,,তিথি টিভি দেখছে আর চকলেট গুলো গবগব করে খাচ্ছে,,,হালকা পেট যেন ব্যাথা শুরু হয়,,,তেমন পাত্তা না দিয়ে আবার টিভি দেখছে কিন্তু ব্যাথাটা যেন প্রচুর পরিমাণ বেড়ে যায়,,,,উঠে দাঁড়াবে সে শক্তি টুকুও যেন তার নেই,,,
তিথিঃ শুনো আ,,মার পেট ব্যাথা করছে
তিথির মুখ দিয়ে যেন আওয়াজ বের হচ্ছে না,,,খুব কষ্ট হচ্ছে তার কথা বলতেই,,,আবিরকে ডাকার শক্তি টুকু তার নেই,,পাশে থাকা পানির গ্লাস নিচে ফেলে দেয়,,,গ্লাস ভাঙ্গার আওয়াজ পেয়ে দৌড়ে আসে আবির,,এসেই দেখে তিথি ব্যাথায় কেমন যেন করছে,,
আবিরঃ তিথি কি হলো???
তিথিঃ আ,,মার,
আবির তিথিকে তাড়াতাড়ি কোলে করে গাড়িতে নিয়ে যায়,,,,তিথির ব্যাথা যেন বেড়েই যাচ্ছে আবির খুব স্পিডে ড্রাইভ করছে,,,
মেডিকেল তিথিকে এইভাবে কোলে করে আনতে দেখে সবাই আসে,,সবাই মেডিকেল এসেছে তিশার বেবীকে দেখতে কিন্তু তিথিকে এইভাবে দেখে আবিরের মা কিছু টা ভয় পেয়ে যায়,,,তিথিকে কেবিনের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়,,,
আবিরের মাঃ তিথির মাকে আমি কল দিচ্ছি,,,
তিথির মা বাবা ও এসে যায়,,,,আবিরের খুব চিন্তা হচ্ছে আর তিথির বাবা ও অনেক চিন্তায় বসে আছে,,,,
কিছু ক্ষন পর বাচ্চার কান্নার আওয়াজ আসে,,সবার মুখে তো এক রাশ হাসি,,,ডাক্তার বের হওয়ার পর আবির তাড়াতাড়ি গিয়ে জিজ্ঞেস করে
আবিরঃ আমার তিথি ঠিক আছে?
ডাক্তারঃ জ্বি আপনার ওয়াইফ ঠিক আছে আর আপনার মেয়ে ও,,,,
আবিরের বাবাঃ আমার নাতনি হয়েছে??
ডাক্তারঃ জ্বি উনি কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছে,,,
আবিরের মাঃ আলহামদুলিল্লাহ
সবার হাসি যেন বেড়ে যায়,,,নার্স এসে আবিরের কোলে বাচ্চাটি দেয়,,,প্রথম স্পর্শ পায় সে তার মেয়ের,,,অজান্তেই চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়ে যায় আবিরের,,বাবা হওয়ার আনন্দ যে এতো টা মধুর,,,,আবিরের মা তিথির মা এসে দাঁড়ায়
আবিরের মাঃ আমাকে দে,,,
তিথির মাঃ না না আমাকে দাও,,
দাদিমাঃ আগে আমি নিবো আমাদের ছোট তিথিকে,,,
দাদিমা আবিরের কোল থেকে বেবীটা নেয়,,সবাই ঘিরে ধরে বেবীকে,,
আবিরের মাঃ চোখ গুলো আমার আবিরের মত,,,
তিথির মাঃ ঠোঁট পুরো আমার তিথির,,,
এরা তো বাচ্চাকে নিয়েই মেতে উঠে,,,আবির কেবিনের ভিতরে গিয়ে দেখে তিথি শুয়ে আছে,,হাতে সেলাইন দেওয়া,,তিথির কপালে গিয়ে চুমু একে দিয়ে বলে
আবিরঃ মায়াবতী,,,,,
চোখ খুলেই দেখে আবির পাশে বসে আছে,,চোখ দেখে বুজা যাচ্ছে সে কেঁদেছে,,,
তিথিঃ কাঁদলে কেন?
আবিরঃ বড্ড বেশি ভালোবাসি মায়াবতী ,,,
মুচকি হেসে আবিরের দিকে তাকিয়ে আছে,,,আবির যে বড্ড বেশি যে ভালোবাসে তার বজ্জাত তাকে,,,
তিথিঃ আমিও মিস্টার বজ্জাত এনাকন্ডা,,,,
তিথির কপালে কপাল রেখে বলে
আবিরঃ আমার খুব ভয় হইছে যখন তোমাকে ডাক্তার নিয়ে যায়,,,,
তিথিঃ ভয় কিসের আমি তো ঠিক আছি,,,তো আপনার রাজকুমারী কই?
আবিরঃ আমার রাজকুমারী তার দাদি নানি বাকিদের কাছে,,সবাই তো উঠে পড়েছে কে আগে কোলে নিবে,,,
তিথি হেসে উঠে,,,,

কিছু ক্ষন পর সবাই আসে তিথিকে দেখতে,,,আবিরের মা এসে তিথির কপালে চুমু দিয়ে বলে
আবিরের মাঃ অনেক অনেক ধন্যবাদ
সবাই অবাক হয়ে যায় এই কথা শুনে,,,
আবিরঃ কিসের ধন্যবাদ মা?
আবিরের মাঃ আমাদের ঘরে এই ছোট পরীটাকে আনার জন্য,,,,,
তিথির মা তিথির হাত ধরে বসে আছে,,,
তিথির মাঃ আমার ছোট মেয়েটা কত বড় হয়ে গেছে,,,আজ সে নিজে মা হয়েছে,,,,
তিথিঃ আমি সব সময় তোমার ছোট মেয়ে থাকবো হু,,,
তিথির মাঃ এখন তো মা হলি নিজে,,এখন বুজবি হুম দেখবি তোর মেয়ে তোর থেকে ডাবল হবে,,,
সবাই হেসে উঠে,,,আমান ও আসে তিথিকে দেখতে পুরো পরিবার যেন খুশিতে মেতে উঠে,,,,
চার বছর পর,,,,,
আবির অফিস থেকে এসেই তা মেয়েকে আগে দেখে,,,,
আবিরঃ আম্মুউ আমার আম্মু কই দেখো পাপ্পা এসেছি,,,
আবিরের বাবাঃ মনে হয় আজ বাড়িতে কেউ নাই,,,,
আবিরের বাবা আর আবির বাড়ি ফিরে দেখে পুরো বাড়ি ফাঁকা,,,,খাদিজা রান্না করছে,,,খাদিজার ও বিয়ে হয় খাদিজা আর তার বর এই বাড়িতেই থাকে,,,খাদিজাকে তারা নিজের মেয়ের মত যে করে,,,
আবিরঃ কি ব্যাপক আজ কই?
খাদিজা এগিয়ে এসে বলে
খাদিজাঃ ভাইজান কিছু লাগবে কি?
আবিরঃ তোর ভাবিমনি কই?আর বাকি সবাই কই?
খাদিজাঃ সবাই তো সুইমিং পুলের অইখানে,,,
আবিরের বাবাঃ বিকাল টাইম হয়তো অইখানে বসে আড্ডা দিচ্ছে,,,,
আবির আর আবিরের বাবা ফ্রেশ হয়ে সুইমিংপুলের পাড়ে যায়,,,গিয়ে যা দেখে তা দেখে তো পুরো থ,,দাদিমা,নানিমা আবিরের মা তিথি আর আবিরের আদরের মেয়ে মুখে ফেইস প্যাক মুখে লাগিয়ে চোখে শসা দিয়ে সবাই সুইমিংপুলের পাড়ে হালকা আধা শুয়ো হয়ে আছে,,পার্লারের মেয়েরা তাদের হাতের আঙ্গুল গুলো সুন্দর করে সাইজ করছে,,,,
এইসব দেখে তো আবিরের বাবা গালে হাত দিয়ে বলে
আবিরের বাবাঃ এইসব কি?
আবিরঃ নিশ্চয়ই এই সব তিথির বুদ্ধি,,,,
আবিরের বাবাঃ সব ঠিক আছে কিন্তু শেষ মেষ এই বুড়ো বয়সে আমার মা আর শাশুড়ি ও কিনা আল্লাহ রে কি দেখাইলা এইসব,,,
আবিরঃ আমার দুই মা,,এক বড় মা আর এক আমার আদরের মা আবার আমার বউ ও খোদা কি হচ্ছে এইসব,,,
আবিরের বাবা আর আবির পুরো অবাক,,প্রতি দিন কিছু না কিছু হয়,,তিথি আবিরের মেয়ে তো আরো বুড়ি,,,,সব সময় তার কথা চলবেই,,তিথি কি তিথির থেকে দিগুণ সবাই তো অনেক আদর করে,,পড়াশুনায় বেশ ভালো আবিরের মত,,মায়ের মত চলাফেরা কথা কিন্তু অভ্যাস আর সভাব পুরো বাবার মত পেয়েছে,,,
আররহমা আক্তার তুহুরা আবির তিথির আদরের কন্যার নাম,,,
আবিরঃ আম্মাজান এইসব কি?
বাবার আওয়াজ পেয়ে লাফিয়ে উঠে,,,চোখ থেকে শসা নিয়ে খেতে খেতে বাবাকে জড়িয়ে ধরে
তুহুরাঃ পাপ্পা,,,,
আবিরঃ এইসব কি লাগালে?পুরো পেত্নী লাগছে যে সবাই কে?শুধু আমার মাকে কিউট লাগছে,,,
তুহুরাঃ এইটা ফেইস প্যাক বলে পাপ্পা,,,জানো স্কিনের জন্য কত ভালো হয়,,,
আবিরঃ একদম বাজে,,,আপনার স্কিন এমনিতেই অনেক মলিন,,,,এইসব দিয়ে আরো নষ্ট হবে
তুহুরাঃ বাট মাম্মা বললো যে?
আবিরঃ তোমার মাম্মার কথা বলে লাভ আছে,,,,
তিথি উঠে এসে ক্ষেপে যায়,,
তিথিঃ অই বজ্জাত সমস্যা কি হ্যাঁ??
তুহুরাঃ মাম্মা একদম বকবে না আমার পাপ্পাকে হু,,,,
তিথিঃ বাও মেয়েকে সোজা ঘাড়ে ধরে পানিতে চুবাবো ফাজিল গুলা,,,
আবিরঃ একদম আমার মাকে কিছু বলবে না হু,,,
আবির তার মেয়েকে রুমে নিয়ে যায়,,ফ্রেশ করে বিছানায় বসায়,,,
তুহুরাঃ পাপ্পা আমাকে তুমি জানো আজ আমি এতো গুলা ফুল বাগান থেকে তুলেছি,,,
আবিরঃ বাহা তো আমার রাজকুমারী আজ স্কুলে কি কি করলো শুনি আগে তা,,,
তুহুরা স্কুলের আব কাহিনী বলে,,আবির তার মেয়ের চুল গুলো সুন্দর করে বেঁধে দিচ্ছে,,,তুহুরার চুল গুলো বেশ লম্বা,,,চোখ গুলো আবিরের মত মায়াবী,,,তিথির মত অনেক টা দেখতে,,,বেশ কিউট তুহুরা পুরো বাড়ি যেন তার দুষ্টুমিতে মেতে উঠে,,,আবির তার মেয়েকে ছাড়া এক মুহূর্ত চলতেই পারে না,,,
সন্ধ্যায় আমান তিশা আর তাদের ছেলে তুশার আসে,,,ছেলেটা পুরো তার বাপের কপি পুরো,,দেখতে মাশাল্লাহ সে কিউট তুহুরার সাথে সব সময় থাকে একই স্কুলে দুইজন পড়ে,,,আরিশা আর আহাদ ও আসে আরিশা আর আহাদের ২ বছরের একটা ছেলে আয়িশা,,,,
তুহুরা দৌড়ে এসে আরিশাকে জড়িয়ে ধরে
তুহুরাঃ ফুফু,,,
আরিশাঃ ওলে আমার কিউটি,,,
তুহুরা আরিশাকে ছেড়ে তুশারকে জড়িয়ে ধরে দুইজনে অনেক গল্প করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে,,,
দাদিমাঃ আজ অনেক ভালো লাগছে সবাই কে এক সাথে দেখে,,,
আবিরের মাঃ আয়িশাকে আমার কাছে দে,,,আয়িশা চলো আমরা নানাভাই কই দেখে আসি,,,
সবাই এক সাথে বসে নাস্তা করছে গল্প করছে,,,,
তিশাঃ দেখতে দেখতে চারটি বছর কেটে গেলো,, (বাচ্চাদের দিকে তাকিয়ে)
আরিশাঃ হ্যাঁ তিশা সময় যে কোন দিক দিয়ে চলে যায় জানি না,,,,,
তিথিঃ কিন্তু আমার আর হলো না ফুটবল টিম বানানোর (গভীর ভাবে চিন্তা করে)
সবাই হেসে উঠে,,,,
তিশাঃ আজও সে স্বপ্ন বুজি,,,,
তিথিঃ স্বপ্ন দেখতে বয়স লাগে মা তিশা,,,
আরিশাঃ হ্যাঁ ভাবি আমি ও চাই ফুটবল টিমের ফুফু হতে
তিশা আরিশা মুখ চেপে হেসে,,,আমান আহাদ আর আবির এক পাশে বসে অনেক গল্প করছে,,,লাইফটা কত সুন্দর করে গড়ে উঠেছে তিন জনের,,,তাদের এতো ভালোবাসার বউ বাচ্চা পেয়ে,,,
সবাই খাওয়া দাওয়া শেষ করে অনেক ক্ষন আড্ডা দেয়,,,তিশা আমান আরিশা আহাদ এরা আজ থেকেই যায় এখানে,,,
বাচ্চারা আজ দাদিমার কাছে শুবে বলে অনেক বাহানা করে দাদিমা তো কত কাহিনী শুনায় তাদের এতই যেন তাদের জন্য দাদিমা বেস্ট গল্পকার হয়ে উঠে,,,
তিশা ফ্রেশ হয়ে বসে এসে দেখে আমান রুমে নাই,,,বারান্দায় গিয়ে দেখে আমান দাঁড়িয়ে আছে
তিশাঃ কি হলো এখানে যে?
আমান তিশাকে নিজের দিকে ফিরে ঘাড়ে কিস করে বলে
আমানঃ আমার বউয়ের জন্য অপেক্ষা করছি তাই,,,
তিশাঃ কি হচ্ছে কি ছাড়ো তুশার এসে যাবে,,,
আমানঃ আজ সে আসবে না আজ আমার দিন থুক্কু রাত,,,আজ শুধু রোমাঞ্চ করবো বউয়ের সাথে,,,
তিশা অনেক ছুটার চেস্টা করে কিন্তু পারে নাই,,,,আমান তিশাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আর নিজের ভালোবাসায় রাঙ্গায়,,,
এইদিকে,,,
আরিশার কপালে চুমু দিয়ে হাঁটু ঘেরে বসে ছোট একটা রিং আরিশার দিকে এগিয়ে বলে
আহাদঃ হে প্রিয়তমা আমার জীবনে এসে আমার জীবন টা এতো সুন্দর করে সাজানোর জন্য অনেক অনেক অনেক ভালোবাসা,,,তুমি ছাড়া যে এই আমিটা সম্পন্ন পুরো ,
আরিশার চোখের কোণায় পানি জমে যায়,,,আহাদ উঠেই চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে
আহাদঃ এই চোখে যেন কখনো আর পানি না দেখি,,,,তোমার চোখের পানি যে আমি সহ্য করতে পারি না,,,খুব বেশি যে ভালোবাসি আমি আমার প্রিয়তমাকে,,,
আরিশা আহাদকে জড়িয়ে ধরে,,,,
আরিশাঃ আমিও যে অনেক ভালোবাসি,,সত্যি ভাবি নাই এতো ভালোবাসার মত একটা জীবন সাথী পাবো,,,,
আরিশাকে সরিয়ে হাতের আঙ্গুল রিংটি পড়িয়ে চুমু দিয়ে বলে
আহাদঃ আমার বুক ভরা ভালোবাসা শুধু আমার প্রিয়তমার জন্য,,,,
মুচকি হেসে তাকিয়ে আছে আহাদের দিকে,,আহাদ তার প্রিয়তমাকে নিজের ভালোবাসায় আজ রাঙ্গায়,,,
এইদিকে,,,,
তিথির বুকে আজ আবির শুয়ে আছে,,একটু উপরে তাকিয়ে তিথির গালে আলতো করে চুমু দিয়ে বলে
আবিরঃ আমি ভাবতেছি যে আমাদের তুহুরা তো একা ওর জন্য একটা ভাই বোন আনি,,,,
তিথিঃ কেন তুশার আছে আয়িশা আছে আবার কাকে?
আবিরঃ আরে আমাদের ফুটবল টিম তো কম্পলিট করতে হবে,,,,
আবিরের কথায় তিথি মুচকি হেসে দেয়,,,,আবির তিথির ঠোঁটে ডুব দেয়,,,,কিছু ক্ষন পর ঘাড়ে কিস করতে থাকে,,,হঠাৎ দরজার নক পড়ে
আবিরঃ উফফফ এই সময় আবার কে?
তিথিঃ আচ্ছা দেখি,,,
আবিরঃ না আমি রোমাঞ্চ করছি যার ইচ্ছে নক করুক,,,
তুহুরাঃ পাপ্পায়ায়ায়ায়ায়া মাম্মায়ায়ায়ায়ায়া
তিথিঃ আরে তুহুরা
আবির অন্য দিকে ফিরে কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে আছে,,তুহুরা এসে তিথির কাছে বসে
তিথিঃ কি হলো ঘুমাও নাই যে?
তুহুরাঃ আমার চকলেট গুলো কই?
তিথিঃ এতো রাতে চকলেট খেলে যে দাঁতে পোকা হবে,,,
তুহুরাঃ না হবে না তোমার কাছে থাকলে সব শেষ হয়ে যায়,,,
আবির হেসে দেয় কথাটা শুনেই,,,
তুহুরাঃ পাপ্পা তুমি ঘুমাও নাই?
আবিরঃ না তোমার কথা শুনে ঘুম ভেঙ্গে গেছে,,,নিয়ে যাও চকলেট গুলো না হলে সকালে একটা ও পাবে না,,
তিথি রাগী লুক দিয়ে তাকায় আবির আর তুহুরা দিকে,,,তুহুরা উঠে আবিরকে হাই ফাইভ দেয়,,,বাপ মেয়ে তিথিকে প্রচুর চেতায়,,,,
তিথিঃ হইছে??
তুহুরাঃওকে গুড নাইট
তুহুরা চলে যায় তিথি রাগী লুক দিয়ে বলে
তিথিঃ অই আমি চকলেট সব খাই ফেলি হ্যাঁ?
আবিরঃ রাখো কখন হু,,,
তিথিঃ কথা নাই যাও
আবিরঃ ওলে বাবারে আমার বউটা দেখি রাগে পুরো ফুলে আছে,,,
তিথি রেগে ফুলে আছে আবির তিথিকে কোলে করে হাঁটতে শুরু করে,,,
তিথিঃ এই কি কোলে কেন নিলে?
আবিরঃ একটু পর পর কেউ না কেউ আসবে তাই,,,কেউ যাতে আর ডিস্টার্ব না করে তাই আমরা এমন জায়গায় যাচ্ছি,,,,
তিথি আর কিছু বলে না,,,,আবির তিথিকে ছাদে নিয়ে যায় তিথিকে দোলানায় বসিয়ে একটা সাদা বেড তাড়াতাড়ি গেস্ট রুম থেকে এনে ছাদে বিছায়,,,,ছাদের দরজা লাগিয়ে তিথিকে কোলে করে নিয়ে গিয়ে বলে
আবিরঃ মনে আছে সে প্রথম রাত যেদিন আমরা নানুর বাড়ির ছাদে রোমাঞ্চ করলাম,,,
তিথি লজ্জা মাখা মুখ নিয়ে বলে
তিথিঃ কিভাবে ভুলবো অই রাত,,,,
আবির তিথির হাত ধরে নিজের কাছে টেনে নেয়,,,কপালে চুমু দিয়ে বসে আছে তিথি আবিরের চোখে চুমু দিচ্ছে পরম আদরে,,,
চাঁদ যেন আজ সাক্ষী হয়ে যায় আবার তাদের ভালোবাসার,,,,দুইজনে যেন তাদের ভালোবাসায় গভীরে চলে যায়,,,আকাশের তারা সুন্দর যে চাঁদ শীতল বাতাস সব যেন আজ সাক্ষী আবির তিথির ভালোবাসার,,,,
ভালোবাসা হলো ছোট ছোট মুহূর্ত গুলো কে জীবনের সেরা মুহূর্ত গড়ে তুলা,,সম্পর্কে রাগ অভিমান ভালোবাসা সব কিছু থাকে,,,কিন্তু অবিশ্বাস নয়,,,একটা সম্পর্কে সম্মান আগে থাকতে হয় তারপর বিশ্বাস থাকতে হয়,,তারপর ভালোবাসা,,সম্মান বিশ্বাস ভালোবাসা ছোট ছোট অভিমান ঝগড়া এইসবে তো গড়ে উঠে একটু মিষ্টি সম্পর্ক,,,,,
ভালো থাকুক আবির-তিথি,,,আমান-তিশা,,আহাদ-আরিশা,,,তিনটি কাফেলের ভালোবাসা যেন থেকে যাক এমন,,,
~~~~~~~~~~~সমাপ্ত ~~~~~~~~~~~
,,,,♥আমি বিদায় নিলাম সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেম আর হ্যাঁ আমাকে কেউ ভুলবেন না কিন্তু না হলে তিথির স্পেশাল রেসিপি সবাই কে খাওয়াবো হুম,,,আল্লাহ হাফেজ আসসালামু আলাইকুম,,,,, ♥

বিঃ দ্রঃ “ লেখাঃ ইসরাত জাহান ” লেখকের লেখা অন্য গল্প গুলো পড়তে এখানে ক্লিক করুন !!

আমাদের ফেসবুক পেজ