বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 63

তিথি আবিরের ঘাড়ে মাথা রেখে চুপ করে আছে আর আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে,,,,আবিরের কাছে এই মুহূর্ত টা বেশ ভালো লাগে,,তিথির আঙ্গুলের ভাজে নিজের আঙ্গুল রেখে আকাশের চাঁদ দেখছে দুইজনে,,,মিষ্টি কিছু মুহূর্ত পাড় করছে এইভাবে আকাশের দিকে তাকিয়ে,,,,
আবির তিথির হাতটি শক্ত করে ধরে বলে
আবিরঃ কিছু কথা বলবো যা জানা খুবই জরুরি তোমার,,,
তিথিঃ কি কথা??
আবিরঃ কিছু সত্যি,,,মায়রার ব্যাপারটা না বলে অনেক বড় ভুল করেছি আমি চাই না নিয়ার ব্যাপারটা ও না বলে সেম ভুল করি,,,,
তিথিঃ নিয়া?কে এই নিয়া?
আবিরঃ আমার কলেজ ফ্রেন্ড,,,আসলে আমার ফ্রেন্ড না
তিথিঃ তাহলে?
আবিরঃ আমার জিএফ ছিলো,,,
জিএফ ছিলো কথাটা শুনেই তিথির রাগ উঠে যায়,,,দাঁড়িয়ে যায় আবিরের হাতটি সরিয়ে,,,,
আবিরঃ পুরো কথা শুনে তারপর না হয় সিদ্ধান্ত নিও প্লিজ,,,,
তিথিঃ কি কথা আর?
আবিরঃ নিয়া আমার জিএফ ছিলো ঠিক কিন্তু জাস্ট ফ্রেন্ডের বাজির কারনে,,
তিথিঃ মানে?
আবিরঃ শিহাব আর আমি ছোট বেলা থেকে একে অপরকে সহ্য করতে পারতাম না,,,আমরা দুইজন কখনো ভালো ভাবে এক সাথে থাকতেই পারতাম না,,,আমি সব সময় আমানের সাথেই বড় হয়েছি,,আমান ছাড়া এক মুহূর্ত আমি চলতেই পারতাম না,,,,বাবার ব্যবসায় বিদেশ যায় সাথে মাকে আর আরুকে ও নিয়ে যায়,,আর আমার ইন্টার আমি নানুর বাড়ি মানে এখানেই শেষ করি,,,খুব ইচ্ছে ছিলো এখানে পড়ার যার কারনে আমান আর আমি এখানে পড়ি নানুর কাছে থেকে,,,,
আবির উঠে দাঁড়ায়,পকেটে হাত দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বলে উঠে
আবিরঃ ছোট বেলা থেকে যে জিনিস আমার পছন্দ হতো শিহাব তা কেড়ে নিতো,,ওর উপর একটা জিদ রাগ আমার জন্ম নেয়,,,কলেজে ইন্টার ফাস্ট ইয়ার শেষ করি আমরা,,,মেয়েদের ক্রাশ আমান আর আমি ছিলাম শিহাবও ছিলো,,,কিন্তু আমি আর আমান তেমন পাত্তা দিতাম না,,,নিয়া কলেজে নতুন আসে দেখতে অনেক সুন্দর,,,কিন্তু সে এখানকার নয় বাহির থেকে আসছে একটু অহংকারী ছিলো যার কারনে আমার তেমন ভালো লাগতো না,,সব সময় আমার আগে পিছনে ঘুরতো,,,কয়েক মাস পর জানতে পারি শিহাব নিয়াকে পছন্দ করে তাকে প্রোপজ করবে কিন্তু নিয়া আমাকে নাকি পছন্দ করতো,,,,সে সুযোগ নেই আমি
তিথিঃ মানে আপনি তাই বলে ??
আবিরঃ হ্যাঁ শিহাবের উপর জিদ করে আমি নিয়াকে প্রোপজ করি শিহাবের সামনেই,,,শিহাব প্রচুর রেগে যায় অইদিন সে হেরে যায় আর আমি জিতে যাই,,কিন্তু নিয়াকে আমার একদম ভালো লাগতো না,,,তবুও ওকে সহ্য করেছি শুধু মাত্র শিহাবের উপর জিদের কারনে,,,
তিথিঃ তারপর এমন কি হলো যে নিয়া আপনার সাথে নাই?
আবিরঃ কলেজের সব ফ্রেন্ড একটা পার্টি রাখি,,,সবাই ছিলাম শিহাব ও ছিলো নিয়া আমার ড্রিঙ্ক এর মধ্যে নিয়া কিছু মিশিয়ে আমাকে খাওয়ায়,,একটা রুমে নিয়ে যায়,,হুঁশ ছিলো না আমার আমান ও ছিলো না কিন্তু শিহাব দেখে,,,শিহাব আমাকে অই রুম থেকে বের করে অনেক কষ্ট করে তারপর সে নিয়াকে থাপ্পড় মারে অনেক,,,যার কারনে নিয়া তার উপর রাগ করে নিজের জামা কাপড় কিছু টা ছিড়ে শিহাবের নামে দোষ দেয় যে সে তার ধর্ষণ করতে চেয়েছে,,,আমি ও রেগে শিহাবকে মারি প্রচুর এই ভেবে যে সে আমার মামাতো ভাই হয়ে একটা মেয়ের সাথে কিভাবে এতো নিচ কাজ করতে পারে,,,,,,কলেজ থেকে শিহাবকে বের করে দেয় পুলিশ কেস না করে কারন নানা ভাই নাম করা একজন মানুষ,,আর বড় মামাকে সবাই ভয় পায়,,,আমিও আর নিয়ার সাথে তেমন রিলেশন রাখি নাই ইন্টার শেষ করেই আমি আর আমান চলে যাই লন্ডনে,,,
তিথিঃ আর অই নিয়া পেত্নী,,,
আবিরঃ পেত্নী? নামকরন করে দিলে?
তিথিঃ এমন মেয়ের মাথায় এতো খারাপ বুদ্ধি আসতে পারে তাকে আর কি বলবো আমি,,,,
আবিরঃ জানি না তারপর সে কোথাও,,,কিন্তু হ্যাঁ শিহাবের উপর জিদ রাগ আমার ছিলো কিন্তু সে আমার সাহায্য করতেই আমাদের বাড়ি আসে আর সব কিছু তো জানোই,,,
তিথি রাগী লুক নিয়ে কোমড়ে হাত দিয়ে আবিরের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে
তিথিঃ আর কয়টা মেয়ে আছে আপনার লাইফে তা বলেন?প্রথমে তো অই মায়রা ডাইরিয়া কায়রিয়া আসছে এখন আবার নিয়া টিয়া কিয়া ও,,,পরে আবার অন্য কেউ আসবে না তো?
আবিরঃ না আর কেউ না,,,,
তিথিঃ অই আপনি তাকে কিস করেন নাই তো?
আবিরঃ নাউজুবিল্লাহ কিসব বলো হ্যাঁ?? আমি যদি মন থেকে কারো জন্য ফিল করি সে তুমি,,,কাউকে কিস করলে তা তুমি বুজলে,,,,
তিথিঃ ভাগ্যিস করেন নাই,,,না হলে আপনার কপালে এখন শনি থাকতো হুম,,,,
আবিরঃ হুম আমি তো আগে থেকে জানতাম যে আমার বউ একটা এলিয়েনের রানী হবে তাই আর সাহস করে কাউকে কিস তো দূরে থাক হাতটা ও ধরি নাই,,,,
তিথি মুখ বাঁকা করে অন্য দিকে তাকায়,,পিছন থেকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে ঘাড়ে কিস করে বলে
আবিরঃ আমি শুধু তোমাকে ভালোবাসি,,,আমার মনে যদি কেউ জায়গা করে নেয় সে তুমি,,তুমি প্রথম নারী যে আমার মনে নিজের জন্য ফিলিংস তৈরি করেছে,,,সত্যি বলতে ভালোবাসি তা না বড্ড বেশি ভালোবাসি তোমাকে মায়াবতী আমি,,,,
তিথিঃ আমিও আপনাকে ভালোবাসি,,,,
আবিরঃ রেগে নাই তো তুমি?
তিথিঃ কেন?

আবিরঃ এই যে আমার অতীত শুনে,,,,
তিথিঃ আপনার অতীতে কি ছিলো না ছিলো তা আমার জানার দরকার নাই,,,আমার কিছু যায় আসে না আপনার অতীত নিয়ে,,,আমি শুধু জানি আপনার বর্তমান আমি ভবিষ্যত আমি ব্যস,,,অতীত নিয়ে যদি পড়ে থাকি তাহলে আমাদের এতো সুন্দর বর্তমান নষ্ট হয়ে যাবে আমি চাই না অতীতের কিছু ভুলের কারনে আমাদের এতো সুন্দর বর্তমান নষ্ট হোক,,,,
আবিরঃ মাঝে মাঝে ভাবি যে আমার বউটা এতো ভালো বুজে আমাকে,,,,
তিথিঃ আপনাকে বুজতে আমার বয়ে গেছে হু,,,আমি আমার হাজবেন্ডকে বুজি ওকে,,,,
আবিরঃ হুম সেটাই,,,,
তিথিঃ আচ্ছা শুনেন,,,,
আবিরঃ কি?
তিথিঃ ঘুরতে যাবেন?
আবিরঃ এখন? রাত তো অনেক হয়েছে,,,,
তিথিঃ দূর তো কি হইছে?
আবিরঃ ওকে আমি গাড়ির চাবিটা তাহলে রুম থেকে নেই তুমি নিচে অপেক্ষা করো,,,
তিথিঃ না গাড়ি করে না,,,,
আবিরঃ তাহলে?
তিথিঃ সাইকেল করে,,,আমি আপনার সামনে বসবো আপনি চালাবেন,,,,
আবিরঃ পাগলি,,,এতো অদ্ভুত শখ তোমারই জাগতে পারে,,,
তিথিঃ কেন অন্য কারো থেকে বুজি আশা করছিলেন(অভিমানের সুরে)
আবিরঃ না তো,,, এতো তাড়াতাড়ি মরার ইচ্ছে নাই বুজলেন,,,
তিথিঃ হু,,,
আবির তিথিকে নিয়ে নিচে নেমে যায়,,,মেঝ মামার ছেলের সাইকেলটা নেয়,,তিথি আবিরের সামনে বসে আবির তিথিকে জড়িয়ে ধরে সাইকেল চালানো শুরু করে,,রাতে দুইজন গ্রামের গুলো দিক ঘুরে আসে,,বাতাসে যেন আরো বেশি ভালো লাগছে মুহূর্ত টুকু,,,ছোট ছোট খুশি আমরা করে নিতে পারি প্রিয় মানুষটির সাথে সামান্য কিছু মুহূর্তে,,,,অল্প আবদার যে অনেক বেশি খুশি দেয়,,,রাতে স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়া যে সত্যি মধুর মুহূর্ত,,,,
সকালে,,,
সবাই সার্জেক যায় সেখানে সবাই আনন্দ করে অনেক,,,,
দুইদিন পর,,,
সবাই আজ চলে আসবে নানু অনেক মানা করে বলে আর কিছু দিন থেকে যেতে কিন্তু আবিরের অফিসের জরুরি একটা মিটিং পড়ায় এসে যেতে হচ্ছে,,,সবার তো কাজ ও আছে ঘুরলে তো আর হবে না,,,,সবাই নানুর বাড়িতে ব্যস মজা করে বেশি তো তিথি করে তার সুন্দর একটা মুহূর্ত এখানে জন্ম নেয় সে কি করে এখানের মুহূর্ত গুলো ভুলে যাবে,,,,
বাড়ি ফিরে আসার পর মা অনেক খুশি হয়,,,দাদি আবিরকে চোখ মেরে বলে
দাদিমাঃ তো কেমন কাটলো হানিমুন,,,,
আবিরঃ তুমি ছাড়া কেমন যেন নিরামিষ লেগেছে,,ইশ যদি তুমি থাকতে না তাহলে আরো বেশি মজা হতো,,,,
দাদিমাঃ ফাজিল ছেলে এতো সুন্দর বউ তো পাঠালাম তারপর ও এমন বলিস,,,
আবিরঃ বউ থাকলে কি হইছে তুমি তো ছিলে না আর,,,
সবাই হেসে দেয়,,,
আরিশা তার শশুড়বাড়ি চলে যায় আহাদের সাথে,,আর আমান তিশা ও তাদের বাড়ি সবাই সবার মত চলে যায়,,,
রুমে গিয়ে তিথি ফ্রেশ হয়ে নেয়,,,দুপুরের খাবার খেয়ে নিজের রুমে যায় গিয়ে দেখে আবির চুপচাপ বসে আছে গালে হাত দিয়ে,,,
তিথিঃ কি হলো কি ভাবছেন?
আবিরঃ ভাবছি যদি হানিমুন টা আবার করি কেমন হতো,,,,
তিথি হালকা থাপ্পড় দিয়ে বলে
তিথিঃ ফাজলামি অফ করেন তো,,,
আবিরঃ আমার একটা অভিযোগ তোমার উপর,,,,
তিথিঃ কি?
আবিরঃ আমাকে আপনি বলা প্লিজ অফ করবে,,,তুমি করে বলবে খুব ইচ্ছে করে আমার বউয়ের মুখে তুমি শুনতে,,,,,
তিথিঃ আমার চেয়ে আপনি বলতে খুব ভালো লাগে,,,
আবিরঃ আমার কাছে একদম ভালো লাগে না,,,আমার ও ইচ্ছে করে আমার বউয়ের মিষ্টি মুখে তুমি ডাক শুনতে ইশ বউ যখন বলবে এই শুনো কই গো বাহা কত কিউট,,,
তিথি হেসে দেয়,,,
আবিরঃ কি হলো হাসলে যে?
তিথিঃ আপনার পাগলামি দেখে,,,,
আবিরঃ হুম তোমার জন্য পাগল হলাম আর কি,,,,
তিথিঃ আচ্ছা শুনেন,,,,
আবিরঃ জ্বি বলেন ম্যাম,,,,
তিথিঃ তুমি বলবো কিন্তু আজকে নয় সময় হোক তখন,,,,
আবিরঃ আর এই সময় আসবে কখন ম্যাম???
তিথিঃতা না হয় অন্য দিন বলবো,,,,,
আবিরঃ বউয়ের মুখে তুমি ডাক শুনতে ও অপেক্ষা করতে হবে হায়রে আল্লাহ,,,,,
তিথির প্রচুর হাসি পায় আবিরের এমন কিউট ফেস দেখে,,,আবির বেশ বুজে তিথি মজা নিচ্ছে,,তিথিকে টেনে নিজের কাছে নিয়ে ঘাড়ে কামড় দিয়ে বলে
আবিরঃ বেশ মজা নিচ্ছো তাই না?
তিথিঃ আরে না সত্যি,,,প্লিজ ছাড়ুন
আবিরঃ ছাড়বো না আমার বউ আমি ধরে রেখেছি আমি আদর করছি এতে কার কি,,
আবির তিথির দুষ্টু মিষ্টি ঝগড়া লেগেই থাকে,,
এইভাবে কেটে যায় চার মাস,,,এই চার মাসে আবির তিথির ভালোবাসা যেন আরো বেড়ে যায়,,দুইজনে দুইজনকে ছাড়া কিছু বুজে না,,,খুব ভালোবাসে আবির তার মায়াবতীকে আর তিথি সে তো তার বজ্জাত এনাকন্ডাকে নিজের চেয়ে ও বেশি চায়,,,রাগ অভিমান তাদের যত থাকুক না কেন জাস্ট কয়েক ঘন্টার জন্য,,,,ঝগড়া করবে আবার এই ভালো হবে এইভাবে তাদের চারটি মাস পার করে দেয়,,,
আজ আবির অনেক বড় একটা ডিল পায়,,,খুশিতে তিথিকে কল দেয়
আবিরঃ হ্যালো,,,,
তিথি কান্নার সুরে বলে উঠে
তিথিঃ প্লিজ আপনি তাড়াতাড়ি আসুন,,,,
আবিরঃ কেন কি হয়েছে,,,,
তিথিঃ অনেক বড় ঘটনা হয়েছে প্লিজ আসুন তাড়াতাড়ি,,,
আবিরঃ প্লিজ আগে কান্না অফ করো,,,আমি এখনই আসছি,,,
আবির প্রচুর ঘাবড়ে যায় হঠাৎ তিথি কান্না করছে এমন কি হয়েছে যে তিথি কান্না করছে,,ভয়ে মাকে কল দেয় কেউ কল ধরে না ভয় যেন আরো বেশি বেড়ে যায় বুকে,,,গাড়ি অনেক স্পিডে ড্রাইভ করতে থাকে,,,
কিছু ক্ষনে বাড়ি পৌঁছে যায়,,বাড়ি পুরো ফাঁকা হঠাৎ দেখে মা কিচেন থেকে আসছে,,
আবিরঃ কই ছিলে এতো ক্ষন তুমি মা?
আবিরের মাঃ কেন কি হলো আবার?
আবিরঃ কয়বার কল দিয়েছি আমি?

আবিরের মাঃ আমি তো কিচেনে ছিলাম তাই জানি না,,,কেন কি হয়েছে?
আবিরঃ তিথি কই?
আবিরের মাঃ সে তো রুমে,,সে সন্ধ্যায় রুমে ডুকেছে আর আসে নাই,,,
আবির আর কিছু না বলে উপরে দৌড় দেয়,,মা কিছু টা মুচকি হেসে বলে
আবিরের মাঃ পাগল ছেলে একটা,,,,
আবির রুমের দরজা নক করতেই খুলে যায়,,পুরো রুম অন্ধকার আবিরের বুকে যেন ভয় আরো বেশি বেড়ে যায়,,,,
আববিরঃ তিথি দেখো আমি এসে গেছি কই তুমি?
তিথির কোনো আওয়াজ নাই,,,আবির ভিতরে ডুকতেই পায়ের কাছে কিছু যেন বাজে,,লাইট অন করতেই যাবে দরজা লাগানোর শব্দ শুনে,,,
আবিরঃ তিথি কই তুমি??
তিথি আবিরের চোখে একটা কালো কাপড় বেঁধে দেয়,,,হুট করে চোখ এইভাবে বাঁধাতে আবির আরো ঘাবড়ে গিয়ে বলে
আবিরঃ কি হলো কি তিথি??কিছু বলবে?
তিথিঃ ইশশ কিছু বলবেন না আজ,,,
আবির আবিরকে নিয়ে বিছানায় বসায়,,আবিরের গা থেকে কোটটা খুলে শার্টের বুতাম খুলতে থাকে,,,
আবিরঃ কি করছো কি শার্ট কেন খুলছো?
তিথিঃ বললাম তো চুপ থাকতে,,,,
আবিরের শার্টটা খুলে কালো একটা পাতলা শার্ট আবিরকে পড়িয়ে আবার বুতাম লাগাতে থাকে,,,
আবিরঃ একবার শার্ট খুললে আবার লাগাছো ব্যাপার কি বলবে?
তিথিঃ উফফ একটু চুপ থাকবেন আপনি? বড্ড বেশি বকবক করেন তো,,,, (ধমক দিয়ে)
তিথির এমন ধমক খেয়ে তো আবির পুরো শকড,,ভাবে কি এমন হলো তিথির যে সে এমন করছে,,,
তিথিঃ আপনি কিছু ক্ষন বসেন আমি না বলা পর্যন্ত আপনি চুপচাপ বসে থাকবেন ওকে,,,
তিথি কিছু ক্ষন পর আবিরকে বলে উঠে
তিথিঃ চোখের বাঁধনটা খুলে ফেলুন,,,
চোখ থেকে কালো কাপড়টা খুলে হালকা অন্ধকার লাগছে কিন্তু আলো হয়ে উঠে তিথির সুন্দর মুখখানি,,,মোমাবাতি জ্বালাচ্ছে তিথি পুরো রুম মোমবাতি জ্বালিয়েই আলো করে ফেলে,,নিচে অনেক গুলো বেলুন আর গোলাপ ফুলের পাঁপড়ি ছড়ানো,,,বিছানার উপর ফুলের পাঁপড়ি,,,একটা বেলুন মাথার উপর ঝুলানো তিথি উঠে বেলুনটা ফাটিয়ে দেওয়ার সাথে সাথে কিছু ফুলের পাঁপড়ি এসে আবিরের মাথার উপর পড়ে,,
আবিরঃ এতো কিছু??
তিথি আসতে আসতে আবিরের সামনে আসে,,,আবিরের ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে বলে
তিথিঃ ইশশ আজ কোনো কথা নয় ওকে,,,
আবির তো পুরো থ,,এই কে সে ভাবছে এইটা,,,কালো একটা গ্রাউন পড়া,,,চুল গুলো খোলা লাল লিপস্টিক মুখে কোনো মেকাপ নাই,,,আগে থেকে তিথি অনেক টা মোটা হয় গাল গুলো আরো ফুলা বেশ কিউট লাগছে তাকে আরো বেশি,,,আবির তো পুরো ক্রাশিত আজ তার মায়াবতীকে এই রুপে দেখে,,,কালো গ্রাউনটা কিছু টা শর্ট বেশ কিউট লাগছে তিথিকে ফর্সা গায়ের রঙ তার উপর পড়েছে কালো ড্রেস,,,,আবির মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে তার মায়াবতীর দিকে,,,
আবিরঃ এতো কিছু কেন.?
তিথিঃ বললাম তো কোনো কথা বলবেন না আজ,,,,
তিথি আবিরের কাছে আসে পা টা একটু উঁচু করে আবিরের ঘাড়ে হাত রাখে,,,আবির গালে নিজের গাল আলতো করে ছুঁয়ে দেয়,,,,কপালে চুমু একেঁ দেয়,,,তিথির পরম আদরের স্পর্শে আবির তার চোখ বন্ধ করে ফেলে,,
আবির তিথির কোমড় শক্ত করে ধরে নিজের কাছে টেনে নেয় আরো,,,তিথি ঘাড়ের পিছনে এক হাত আর এক হাত আবিরের গালে রেখে আবিরের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট বিলিয়ে দেয়,,,এইভাবে আবির তিথির কাছ থেকে আজ সারপ্রাইজ পাবে ভাবে নাই,,,,
কিছু ক্ষন পর,,,,
আবিরের ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে লজ্জায় আবিরের দিকে তাকাতে পারছে না,,,মুখে আজ লজ্জায় ভরা কিন্তু আজ সব লজ্জা ভুলেই যে তিথি এইভাবে আবিরকে আদর করবে আবির বুজতেই পারে নাই,,,
আবিরঃ আজ আমার বউ এতো রোমান্টিক ব্যাপার কি…?
তিথি চুপ করে আছে,,,আবির তিথিকে কোলে করে নিয়ে বিছানায় যায়,,,তিথির ঘাড়ে চুমু দিয়ে চুপ করে শুয়ে পড়ে,, তিথি আবিরের বুকে হাত রেখে শুয়ে বলে
তিথিঃ ওগো শুনছো আজ একটা কথা বলবো,,,,
আবিরঃ তুমি আমাকে তুমি কিরে বলছো??
তিথিঃ হুম বলেছিলাম যে তুমি করে ডাকবো তাই,,,
আবিরঃ মানে?তুমি তো বললে সময় হলে ডাকবে?
তিথিঃ ভেবে নাও সেই সময় হয়েছে,,,
আবির তো অনেক খুশি হয়ে যায় এই ভেবে যে তার মায়াবতী তাকে তুমি ডাকছে,,,তিথি আবিরের কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে
তিথিঃ এখন থেকে আমি আপনাকে শুধু ভালোবাসতে পারবো না,,,
আবির কিছু টা রেগে বলে
আবিরঃ মানে আর কাকে বাসবে হুম?

তিথিঃ আমাকে আপনার কারো সাথে শেয়ার করতে হবে এখন,,,কিছু যে করার নাই
আবিরঃ মেরে ফেলবো আমি বুজলে,,তুমি শুধু আমার বুজলে
আবির প্রচুর রেগে উঠে যেতে লাগে তিথি আবিরের হাতিটা ধরে বলে
তিথিঃ তোমার ভালোবাসায় যে ভাগ বসাচ্ছে তার সাথে দেখা করবে না?
আবিরঃ একবার নাম বলো তার খুন করে ফেলবো ওকে,,,,তুমি শুধু আমার বুজলে তুমি (প্রচুর রেগে)
তিথি মুচকি হেসে আবিরের হাতটা তার পেটে রেখে বলে
তিথিঃ আপনি তাকে বলে দেন আমি কার?
আবির পুরো চমকে যায় কথাটা শুনেই,,,
আবিরঃ মানে আ,,,মি.??
তিথিঃ মানে আমার স্বপ্ন গুলো পূরন হবে এখন,,,তুমি পাপ্পা আর আমি মাম্মা হবো (লজ্জা মাখা মুখ নিয়ে)
কথাটা শুনে আবির তো খুশিতে আত্নহারা হয়ে যায়,,তার যে খুব বেশি খুশি কাগছে এইভাবে যে তাকে কেউ পাপ্পা বলার আসছে,,তাদের ভালোবাসার অংশ,,,আবির হাঁটু ঘেরে বসে তিথির পেটে আলতো করে চুমু দিয়ে বলে
আবিরঃ তাড়াতাড়ি এসে যাও আমার রাজকুমারী,,বাপ মেয়ে পুরো বাড়ি উড়াউ ফেলবো,,,,
তিথিঃ মেয়ে হবে যে বলছে হুম?আমার তো ছেলে চাই,,,
আবিরঃ জ্বি না,,,আমার মেয়ে আসবে তোমার মত কিউটি,,,আর হ্যাঁ বাপ মেয়ে কিন্তু অনেক মজা করবো একদম কিছু বলবে না,,,
আবিরের খুশির ধারনা এই নাই,,,সে যে আজ অনেক খুশি বাবা হওয়ার কথা শুনেই,,,,
খানিকক্ষণ পর আবির আর তিথি শুয়ে আছে,,,আবিরের বুকে তিথি মাথা রেখে চুপ করে আছে,,,আবির তো কত প্লেন করছে কি কি করবে তার মেয়ের সাথে,,,আর তিথি তো চুপচাপ শুনছে,,
চোখের কোণায় পানি এসে যায় সত্যি যে তার স্বপ্ন টা আজ সত্যি হলো,,,মা হওয়ার অনুভূতি যে কত মধুর,,,মা শব্দতা শুনতেই ভালো লাগে আর যখন নিজে সে অনুভূতির সাথে জড়িয়ে যায় তাহলে তো খুশির ঠিক এই নাই,,,,
চলবে,,,,,