বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 43

সত্যি মুহূর্ত টা অসাধারণ,,,বিকাল টাইম সাগর পাড়ে শীতল বাতাসে তিথির চুল গুলো এলো মেলো হচ্ছে,,,,আবিরের হাতটি ধরে তার ঘাড়ে মাথা রেখে চুপটি করে সাগরের ঢেউ দেখছে, আর আবির ও যে এই মুহূর্ত টা উপভোগ করছে মনের আনন্দে,,,,,
অনেক টা সময় দুইজন এইভাবে কাটায়,,,সন্ধ্যা হয়ে আসছে বীচ থেকে মানুষ ও অনেক চলে গেছে,,তিথি আবির এখনও বসে আছে বীচে,,,আবিরের ঘাড়ে এখনও তিথি মাথা রেখে এই সন্ধ্যা উপভোগ করে,,,,
তিথি আনমনে আবিরকে বলে
তিথিঃ যাবেন না?
আবিরঃ ইচ্ছে করছে না,,,
তিথিঃ কেন?
আবিরঃ জানি না কিন্তু এই মুহূর্তটা খুব ভালো লাগছে,,,
তিথিঃ আমার ও যে এই মুহূর্তটা অনেক ভালো লাগছে,,
আবির তিথি আর কিছু ক্ষন সময় বীচ পাড়েই কাটায়,,,ঘন্টা খানিক পর তারা ফিরে যায় বাড়িতে,,,
এইদিকে,,
মায়রা সোফায় বসে বসে ফোন টিপছে খুব বিরক্তি লাগছে এই ভেবে যে আবির এখনও আসে নাই,,,,
মায়রাঃ এই আবির এখনও কেন আসে না,,,
নেহাল সে কখন থেকে খাবার এর টেবিলের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মায়রার দিকে ড্যাবড্যাবিয়ে তাকিয়ে আছে,,,,আকাশ নেহালের পিঠে চড় দিয়ে বলে
আকাশঃ কি রে কি ভাবিস?
নেহালঃ কিভাবে ওর মনে যাবো ???

আকাশঃ আইডিয়া দেই?
নেহালঃ বল ভাই বল,,,
আকাশঃ অই মায়রাকে আমরা সুইমিংপুলে ধাক্কা মারি তুই হিরোর মত গিয়ে বাঁচিয়ে তুলবি,,,,,আহা কি না রোমান্টিক সিন তার পর বলবি মায়রায়ায়া আই লাভ ইউ,,,দেখবি চুটকি বাজিয়ে সে হ্যাঁ করে,,,
নেহাল রাগী লুক দিয়ে তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে,,৷
নেহালঃ হারামি যা এখান থেকে,,,,
আকাশঃ আরে ভালো তো বুদ্ধি দিলাম,,,
নেহালঃ যা ভালো বুদ্ধি দিচ্ছিস না ভাই এই বুদ্ধির জন্য আমার গালে না কয়েকটা চড় পড়ে হুম,,,
আকাশঃ যা আজকাল ভালোর নাম নাই হু,,,,,
আমান ও আসে যোগ দেয় নেহাল আকাশের সাথে তারা দুইজন আড্ডা দিতে থাকে,,,
এইদিকে আবির আর তিথি বাড়ি ফিরে,,আবিরকে দেখেই মায়রা আবিরের কাছে যায়,,আবির বাড়ি আসতে না আসতে মায়ারা প্রশ্ন শুরু,,,
মায়রাঃ কই গেছিলে তুমি হ্যাঁ??আমি সকালে বলেছি কথা আছে আর তুমি আমার কথা না শুনেই হুট করে এই মেয়েকে নিয়ে বেরিয়ে গেলে,,,
আবির কথা ঘুরিয়ে বলে,,,
আবিরঃ আসলে অফিসের অনেক ইম্পর্টেন্ট কাজ ছিলো তাই যেতে হইছে,,,
তিথি হা করে তাকিয়ে আছে আবিরের দিকে যে আবির আর মিথ্যা কথা বলছে যে আবির মিথ্যা একদম পছন্দ করে না সে আজ মিথ্যা বলছে তাও আবার তিথির জন্য,,,,,
মায়রাঃ তোমার অফিসের কাজে এই মেয়ে কি করতে গেছিলো?
আবিরঃ তিথি কিছু ইম্পর্টেন্ট ফাইল এর ব্যাপারে জানে তাই নিয়ে গেছি,,,
তিথি কিছু টা রেগে বলে উঠে
তিথিঃ মিস কায়রা থুক্কু ডাইরিয়া উফফ থুক্কু তো মিস মায়রা আমি উনার ওয়াইফ হই সো আমি উনার সাথে যেখানে ইচ্ছে সেখানে যেতে পারি এতে কারো কাছে জবাব দিতে হবে বলে মনে হয় না,,,আমরা স্বামী স্ত্রীর মন যেখানে চাইবে যাবো এতে তোমার এতো জ্বলে কেন?
মায়রাঃ আমি তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করি না ওকে,,,যাকে করেছি সে উত্তর দিবে সো চুপ,,,
তিথিঃ চুপ থাকতে আমি পারবো না কারণ আমার হাজবেন্ড কে করেছো তাই তো সো স্ত্রী হিসেবে সব উত্তর দেওয়ার আমার অধিকার,,উনার সব কিছুতে আমার অধিকার
মায়রাঃ এখানে অধিকার আসছে কত থেকেম
তিথি আর মায়রার এমন কথা কাটাকাটি দেখে আবির বলে উঠে
আবিরঃ আচ্ছা বাদ দাও তো দুইজন,,,তিথি রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও যাও,,,
তিথি যেতে চায় না কিন্তু আবিরের ধমক খাবে ভেবে সুন্দর করে রুমে চলে যায়,,,এইদিকে আবির যেতে লাগে মায়রা আবিরের হাত ধরে এক পাশে নিয়ে যায়,,তাদের পিছনে নেহাল ও যায় কি ব্যাপার দেখার জন্য,,,
মায়রাঃ সমস্যা কি তোমার আবির?
আবিরঃ আমার কিসের সমস্যা?
মায়রাঃ আবির তুমি আমাকে কথা দিয়েছিলে তুমি আমাকে বিয়ে করবে আর তুমি কিনা অই মেয়ের সাথে থাকছো ঘুরছো বুকে নিয়ে ঘুমাচ্ছো,,,সত্যি করে বলবে তোমাদের মধ্যে এমন কিছু হয় নাই তো?
আবিরঃ এমন কিছু মানে কি বুজাতে চাও মায়রা৷
মায়রাঃ যা বুজাতে চাই তাই ওকে,,,
আবির কিছু টা রেগে বলে
আবিরঃ তিথি আমার বিয়ে করা স্ত্রী,,,ওকে বুকে নিয়ে ঘুমাই বা অন্য কিছু সব কিছুর অধিকার ওর আছে,,এর জবাব আমি কাউকে দিতে বাধ্য নয় ওকে, আর হ্যাঁ আইন ইসলাম দুইটা অনুযায়ী তিথির পুরো অধিকার আমার উপর বুজলে,,,
মায়রাঃ মানে??
আবিরঃ মানে হলো অযথা নিজের সময় নষ্ট করছো,,,,
মায়রা কিছু বলতে যাবে আবির অইখান থেকে চলে যায়,,
মায়রা প্রচুর রেগে আছে পাশের টেবিলে ঘুষি মারে,,রাগে হনহন করছে আবিরের প্রতি টা শব্দ শুনে,,,,,হাত আগে কাটা থাকায় হাত বেয়ে রক্ত পড়ছে মায়রার চোখে ছিলো প্রচুর রাগ জিদ,,,, আজ সব জিদ রাগ তিথির প্রতি
মায়রাঃ এই সব কিছু অই তিথির জন্য হচ্ছে,,,আমার আর আবিরের মাঝে দেয়াল হয়ে আসছে অই মেয়ে,,ওকে আমি ছাড়ছি না,,
নেহাল সব কিছু শুনে আবির মায়রার কথা,মায়রার কথা গুলো শুনে সে ভাবে আসবে না মায়রার কাছে কিন্তু মায়রার হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে রক্ত পড়ছে আর না পেরে সে এগিয়ে আসে,,,,এগিয়ে এসে মায়রার হাতটি ধরতে যায় মায়রা রেগে যায়
মায়রাঃ সমস্যা কি?
নেহালঃ হাত থেকে রক্ত পড়ছে তোমার,,
মায়রাঃ তো তোমার সমস্যা কই?
নেহালঃ আমার তো সমস্যা নাই কিন্তু তোমার হাত থেকে এইভাবে রক্ত পড়লে অসুস্থ হয়ে পড়বে,,,
মায়রাঃ আমার যা ইচ্ছে হবে এখানে দয়া দেখাতে আসতে হবে না ওকে,,,
নেহালঃদয়া দেখাচ্ছি না হাতে ব্যান্ডিস না করলে হয়তো সমস্যা হবে, নিজের ভালো বুজতে তো শিখো,,,
মায়রাঃ এতে তোমার সমস্যা কই??লুক আমার থেকে দূরে থাকবে ওকে
নেহাল এর একটা কথা ও মায়রা আর শুনে না উল্টো রেগে অইখান থেকে চলে যায়,,
নেহালের খুব খারাপ লাগে এই ভেবে যে মায়রার হাত থেকে রক্ত পড়ছে,,মায়রার কিছু হবে না তো ,,তাড়াতাড়ি গিয়ে কাকে বলবে খুজে কিন্তু কাউকে পায় না,,,সামনে পড়ে তিশা,,,সে গিয়ে তিশাকে বলে
নেহালঃ হে তিশা ভাবি,,,
তিশাঃ জ্বি নেহাল ভাইয়া বলুন,,,কিছু লাগবে কি?
নেহালঃ না আসলে মায়রার হাত থেকে প্রচুর রক্ত পড়ছে,,,কিন্তু সে ব্যান্ডিংস করছে না,, তুমি গিয়ে করে দাও
তিশাঃ সে কি,,,কোথাও সে
নেহাল; অইদিকে গেছে,,
তিশাঃ আচ্ছা আমি যাচ্ছি,,
নেহালঃ ওষুধ লাগিয়ে আমাকে বলিও যে কেমন আছে
তিশাঃ ওকে,,,,
তিশা তাড়াতাড়ি মায়রার রুমে যায়,,মায়রা প্রচুর কান্না করছে এইভাবে মায়রাকে দেখে তিশার খুব খারাপ লাগে,,,,ভাবে মেয়েটার তো দোষ নাই সে তো ভালোবেসেছে,,,তাড়াতাড়ি গিয়ে মায়রার সামনে বসে,
তিশাঃ মায়রা,,,,,
মায়রাঃ তুমি এখানে কি করছো?যাও এখান থেকে এখন
তিশাঃ হাতটা দাও প্লিজ
মায়রাঃযাও এখান থেকে বলছি না,,(একটু ধমক দিয়ে)
তিশাঃ তোমাকে এইভাবে একা ফেলে যাবো না,,
তিশার এমন কথাতে মায়রা কিছু টা অবাক হয়,,,একটু নরম সুরে বলে
মায়রাঃ অই তিথির পক্ষ না নিয়ে আমার পক্ষ কেন নিচ্ছো?
তিশাঃ আমি কারো পক্ষ নিচ্ছি না,,,,শুনো যা বলার পরে বলিও এখন চুপচাপ হাতটি দাও
তিশা মায়রার হাতটি টেনে নিয়ে ওষুধ লাগাতে থাকে আর বলে
তিথিঃহাত কাটলো কিভাবে?
মায়রাঃ আমার প্রিয় জিনিস কেউ কেড়ে নিচ্ছে,,তাকে আমি ছাড়বো না,,
তিশা বুজতে পারে কি নিয়ে কথা বলছে,,কিছু টা সাভাবিক ভাবে বলে
তিশাঃ কিছু কথা কি বলতে পারি??যদি তুমি মাইন্ড না করো,,,
মায়রাঃ হ্যাঁ বলো,,,
তিশাঃ জোর করে সব করা গেলে ও জোর করে ভালোবাসা আদায় করা যায় না,,,ভালোবাসাকে মুক্ত করে দেওয়া উচিত ,,,জোর করে একটা সম্পর্ক ধরে রেখে কি লাভ যদি সেখানে ভালোবাসাটাই না থাকে,,,,
মায়রাঃ মানে?
তিশাঃ মিষ্টি শব্দ এই ভালোবাসা কিন্তু এই ভালোবাসার পিছনে অনেক কিছু লুকিয়ে থাকে,,সম্মান বিশ্বাস ভালো লাগা অনুভূতি অনেক কিছু,,, এইসব কিছু আবির ভাই তোমার জন্য করে না,,,তাহলে তো তুমি জোর করে আদায় করতে চাচ্ছো যা উচিত নয়,,আর তুমি ও এতে সুখী হবে না মায়রা,,,
মায়রা তিশার কথা রেগে তো গেচ্ছিলো কিন্তু তিশার প্রতি টা কথা যে সত্যি ছিলো,,,চুপ করে তাকিয়ে আছে তিশার দিকে,,,
তিশাঃ এই মনে রাখিও সব সময় যে তোমার হাজার বাঁধার পর ও সে তোমার হবে,,,কিন্তু যে তোমার নয় সে হাজার কিছু করলে ও তোমার হবে না,,যত চেস্টা করো না কেন,,,
মায়রার হাতে সেভলন দিয়ে রক্ত পরিষ্কার করে দেয়,,হাতে ব্যান্ডিস লাগাতে লাগাতে বলে,,
তিশাঃমনে রাখিও মায়রা আল্লাহ কিন্তু উপর থেকেই সবাই কে জোড়া করে পাঠায়,,,হয়তো তোমার জন্য অন্য কেউ আছে হয়তো আল্লাহ তোমার জন্য অনেক ভালো কিছু রেখেছে শুধু সময় এর অপেক্ষা করো দেখবে সব কিছু ঠিক হবে উল্টো আরো সুন্দর হবে,,,,অযথা অই জিনিস এর পিছনে ছুটিও না যা তোমার কখনো ছিলো না,,
মায়রা এইবার কিছু টা রেগে গিয়ে বলে
মায়রাঃ কি বলতে চাও তুমি হ্যাঁ? আবির আমার পুরো ৮ টি বছর ধরে ওকে ভালোবাসি, সে কথা দিয়েছে আমাকে বিয়ে করবে,,,
তিশাঃ এক তরফা ভালোবাসা তোমার,,,এক তরফা ভালোবাসা সুখ দেয় না দেয় শুধু কষ্ট,,,,তুমি তাকে পাবে না যেনে ও ভালোবাসলে,,,আবির ভাই কখনো তোমাকে বলেছে ভালোবাসি,,,
মায়রাঃ না(অনেক টা শান্ত গলায়)
তিশাঃ তাহলে? যে তোমাকে ভালোবাসে না চায় না তার পিছনে তুমি ঘুরছো,,,,মায়রা আবির ভাই তিথিকে ভালোবাসে কিন্তু উনি নিজে ও এখনও বুজে উঠতে পারছে না কিন্তু বুজবে কারণ তিথিবতার স্ত্রী তার সাথেই থাকে,,,
মায়রার চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে তিশার খুব মায়া হয়,,,মায়রার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে
তিশাঃ জন্ম মৃত্যু বিয়ে এই তিনটি আল্লাহর হাতে,, আল্লাহ কখন কার জন্ম মৃত্যু বিয়ে লেখে রেখেছে তা একমাত্র উনি জানে,,মায়রা আমার সব কথা ভেবে দেখিও একটু ঠান্ডা মাথায়,,,আজ তুমি যদি আবির ভাইকে নিজের করে ও নাও কখনো হেপ্পি থাকবে না উল্টো তিনটি জীবন নষ্ট করবে,,,,সময় থাকতে বুজে নাও যে তোমার জন্য ভালো কি,,,,
মায়রাঃ তিথির জন্য করছো তাই না এইসব?

তিশাঃ মানে?
মায়রাঃ যাতে আমি সরে যাই আর সে সুখে সংসার করুক আবিরের সাথে,, আমাকে সরাতে চাও তাই তো
তিশাঃ আমি এইসব বলেছি শুধু তিথির ভালো হবে এই জন্য না,,, আমি এইসব বলেছি কারণ এইসব কিছুর মধ্যে ভালো তোমার হবে,,এক তরফা ভালোবাসায় আজীবন কষ্ট পাবে,,,আমার কথা ভেবে দেখিও যে আমি কার ভালোর জন্য বলেছি,,,,
তিশা ভাবে এখন মায়রাকে একা থাকতে দেওয়া উচিত,, তাই সে উঠে চলে যায় আর মায়রা তিশার কথা গুলো ভাবতে থাকে,,,
এইদিকে
তিথি ফ্রেশ হয়ে নেয়,,,ফ্রেশ হয়েই বিছানায় বসে বসে ভাবে মায়রার কি করা যায়,,,
তিথিঃ এই কায়রাকে একটা উচিত শিক্ষা তো দিতেই হবে বজ্জাত মাইয়া বহুত উড়া উড়ে,,,,আমার জামাই এর কাছে জবাব চায় কত বড় সাহস তার,,তাকে আমি যদি শিক্ষা না দেই না আমিও তিথি না,,,
তিথি এইসব ভাবতে থাকে,,,
আবির অনেক ক্ষন পর রুমে আসে এসেই দেখে তিথি চুপচাপ বসে আছে আর মন দিয়ে কি ভাবছে,,,
আবিরঃ কি ভাবছো?
তিথিঃ অই ডাইনিকে কিভাবে মজা বুজাবো,,,(আন মনে)
আবিরঃ কি?ডাইনি কে আবার?
আবিরের দিকে তাকিয়ে বেক্কল হয়ে যায় যে আবির কখন রুমে আসছে,,মুচকি হেসে বলে
তিথিঃকই কেউ না আরে একটা ফিল্ম এর কথা মনে পড়ছে তাই,,,
আবিরঃ অহ,,,আচ্ছা শুনো ছাদে আয়োজন করেছে সবাই অইখানে তুমি কি যাবে নাকি ঘুমাবা
তিথিঃ আপনি যাবেন না?
আবিরঃ হ্যাঁ যাবো আমি চেঞ্চ করে যাবো,,,সবাই ছোট খাটো আয়োজন করেছে আজকে ছাদে কিছু টা সময় কাটাবে,,,
তিথিঃ তাহলে আমাকে ঘুমাতে বলেন যে?
আবিরঃ তুমি ক্লান্ত ভেবেছি তাই,,,
তিথিঃ আমি ক্লান্ত আপনাকে বলেছি,,,
আবিরঃ ওকে সরি,,,যাও তুমি তাহলে
তিথিঃ কিন্তু আপনি যাবেন না এখন
আবিরঃ তুমি যাও আমি কিছু ক্ষনে আসছি,,,,ফ্রেশ হয়ে আসবো যাও তুমি
তিথিঃ হু,,,
তিথি রুম থেকে বের হয়ে যায়,,,আবির ফ্রেশ হতে লাগে,,,
তিথি ছাদে গিয়ে দেখে চারপাশে সুন্দর করে হালকা সাজায়,,ছাদে বড় বড় বিছানা করে যাতে সবাই বসতে পারে,,খাওয়ার আয়োজন ও করে,,,চিকেন দেখে তিথির খুব খেতে ইচ্ছে করে,,,আশেপাশে কেউ নাই তাই সে এক পিছ নিয়ে খাচ্ছে,,,
ছাদের এক কোণায় আমান তিশাকে জড়িয়ে ধরে আছে,,,
আমানঃ আর দুইদিন পর তুমি মিসেস আমান হবে,,,
তিশাঃ তো?
আমানঃ তো কি ট্রিট দাও,,,
তিশাঃ কিসের ট্রিট হুম,,বিয়ে একা আমার হচ্ছে না আপনার ও হচ্ছে ওকে জনাব,,,,,
আমানঃ আমার তো ট্রিট চাই ব্যস,,,
তিশাঃ আচ্ছা কি ট্রিট বলো,,,,
আমানঃ কিস করো,,,
তিশাঃ কিইই?পাগল নাকি কি সব বলছো আমান এখন সবাই এসে যাবে আর তুমি কি না,,,
আমানঃ কিছু হবে না সবাই আসতে দেরি আছে এখন করবে কিনা বলো,,না হলে সবার সামনে করতে হবে ,
তিশাঃ পরে,,,
আমানঃ তাহলে ছাড়ছি না,,,এইভাবে আকড়ে ধরে রাখবো হুম,,,আমার ট্রিট চাই এখন ব্যস
তিশা কি আর করবে তাই হুট করে আমানের গালে চুমু দিয়ে বলে
তিশাঃ সরো এইবার,,,
তিথি একটু কাশি দেয়,,
তিথিঃ এহেম এহেম আমি কিছু দেখি নাই,,,
তিথির আওয়াজ পেয়ে দুইজন তাড়াতাড়ি সরে যায়,,,মাথায় চুলকাতে চুলকাতে আমান বলে উঠে
আমানঃ তিথি কখন আসলে?
তিথিঃ যখন থেকে রোমাঞ্চ করলে,,,,
তিশা কিছু টা লজ্জা পেয়ে যেতে লাগে তিথি হাত ধরে বলে
তিথিঃ হায় হায় ডাক্তার সাহেবা তো দেখি লজ্জা পাচ্ছে,,,,
আমানঃ আবির আর তুমি যখন রোমাঞ্চ করবে না সত্যি ডির্সাব করবো হুম,,,আমাকে ডির্সাব করলে তো দেখিও,,,
তিথিঃ হু আমার বজ্জাত টা রোমান্টিক হলে তো,,,
তিশাঃ সময় হলে হবে বুজলে তিথি,,,
তিথিঃ কি বুজবো সময় হলে হুম,,,
তারা তিন জন কথা বলতে না বলতেই বাকিরা এসে যায়,,,

সবাই এসে বসে,,,,
আকাশঃ এই আবির কই?
আবির এসেই বলে
আবিরঃ এই তো এসে গেছি,,,,,
নেহালঃ ভাই থাকিস কই তুই হ্যাঁ?
আবিরঃ সরি রে কিছু কাজ ছিলো,, তো বল কি অবস্থা তোর,,,,
নেহালঃ কি আর অবস্থা সিঙ্গেল লাইফ,,,তোরা বিয়ে করেছিস কেউ করছিস, বউ আছে তোদের আহা শান্তি লাইফ আর আমার তো সিঙ্গেল বোরিং লাইফ,,,
আকাশঃ কেন হবে আর কি,,,নিজে তো একটা দেখে রেখেছিস,,,
আবিরঃ ওহ তাই নাকি কে সে?
আকাশঃ পরে জানিস কে সে,,,এখন আয় সবাই এক সাথে হইছি অনেক দিন পর,,,
নেহালঃ কাফেল রা এক সাথে বস আমি আর আকাশ এক সাথে বসি,,,
আকাশঃ ছি কি সব বলিস আমি তোর কাফেল নাকি যে এক সাথে বসবো,,,জেন্ডার চেঞ্চ করে দিচ্ছিস হারামি,,
নেহালঃলাথি খাবি তুই হারামি,,,এতো যখন আমার পাশে বসতে লজ্জা করে তোর জিএফকে আনতি,,,আনিস নাই কেন এখন এখানে আমিও একা তুই ও আর ওরা সবাই ডাবল ওদের মাঝে হাড্ডি না হয়ে আমার পাশেই বস,,,
তিথি আরিশা তিশা হেসে উঠে,,,নেহাল আকাশ যেন অনুষ্ঠান টা আর একটু আনন্দ বাড়িয়ে দিচ্ছে,,
আহাদঃ যাই করেন না কেন আপনারা রাতের ১২ টার আগে কিন্তু সব শেষ করে যেতে হবে হুম,,,
নেহালঃ কেন?
আহাদঃ কাল হলুদ সবাই কে তাড়াতাড়ি উঠতে হবে,, আর আন্টি, মা ওদের হকুম বেশি রাত করে যাতে না থাকি,,,
আকাশঃ আরে দূর,,,কিছু হবে না,,
আবিরঃ চুপচাপ শুরু কর না হলে এইসব বলতে বলতে সময় শেষ হবে,,,
আবির তিথির পাশে এসে বসে,,,আর তিশা আমান এক সাথে,,আরিশা আহাদের পাশেই বসা,,,আর নেহাল আকাশ এক সাথে বসে ফাজলামি করছে একে অপরের সাথে,,,

সবাই গল্প করছে তখন মায়রা আসে মায়রাকে দেখে তিথির যে কি পরিমাণ রাগ উঠে বলার বাহিরে,,কিন্তু অবাক হয় মায়রা গিয়ে নেহালের পাশে খালি জায়গায় বসে,,আহা নেহালের তো হার্ট বিট পুরো বেড়ে যায় মায়রা পাশে বসাতে,,,আকাশ বেশ মজা নেয় নেহাল থেকে
আমানঃ আবির গান হয়ে যাক সে কলেজ লাইফের মত ,,,
আকাশঃহ্যাঁ আবির হয়ে যাক,,এক সাথে সে গান
আবিরঃ গিটার তো আনি নাই,,,,
আমানঃ আরে ব্যান্ডের যে লোক গুলো আসছে না মেহেদী অনুষ্ঠানে তারা তো এখানেই তাদের থেকে নিয়ে আসলে মন্দ কি?
আবিরঃ আচ্ছা যা নিয়ে আয়,,,
আমান নিচে যায় গিটার আনতে,,কিছু ক্ষন এর মধ্যে গিটার নিয়ে আসে,,,আবির গিটার টা নিয়ে বাজানো শুরু করে আমান নেহাল আকাশ আবির এক সাথে তাদের সে পুরানো দিন গুলো মনে করছে আর গাইছে গান,,,,
আজ তাদের সে পুরাতন দিন গুলো মনে পড়ে যায় এইসবে বেশ মজা নেয় তিথি আরিশা তিশা আর মায়রা ও,,,মায়রা কিছু টা সাভাবিক হয়তো তিশার বলা কথা গুলো কাজ করেছে কিছু টা তাই তো এতো শান্ত,,,,
সবাই গান এক সাথে গান গায় মজা করে সব কিছু করতে করতে ১ টা বাজিয়ে দেয়,,রাত অনেক হওয়াতে তারা চলে যায় যার যার রুমে,,,,
সকালে,,,,
আজ হলুদ তাই বাড়ির বড়রা মিলে হলুদ বাটছে,,,যারা বিবাহিত তারা নাকি হলুদ বাটতে হয় এই নিয়ম,,,তিথিকে ও দেওয়া হয় হলুদ বাটতে চারপাশে গ্রামের সে পুরানো গান গুলো হচ্ছে যা বড় মহিলা যারা গাইছে,,,
আবির একটা সাদা পাঞ্জাবি পড়ে,,সকাল থেকেই তিথিকে খুজে কিন্তু দেখে নাই,,তিথিকে আজ কেমন লাগছে সে জানে ও না,,,,
বাড়িতে ঢোল বাজানো হচ্ছে এর তালে তালে নাচছে ছোটটা নেহাল আকাশ আহাদ আমান ওরা ও নাচছে,,,আবির ভিড়ের মাঝে ও খুজছে তার তিথিকে,,,,
এইদিকে,,,
হলুদ বাটতে বাটতে তিথির কোমড় যেন ভেঙ্গে যাচ্ছে,,,কিছু টা বিরক্তি ভাব নিয়ে বলে
তিথিঃ এইসব নিয়ম কোন আবাল করছে,,,উফফ বিয়ে যাদের তারা তো নাচছে আর আমি বেচারি কিনা দূর,,,আমার বিয়েতে তো এমন কিছু হয় নাই উল্টো বিদায় দিচ্ছে তাড়াতাড়ি,,,,
তিথি নিজের সাথেই বকবক করছে
আবিরের মাঃ তিথি হয়েছে কি?
তিথিঃ হ্যাঁ মা শেষ,,,
আমানের মাঃ এখন মেয়েদের লাগাতে হবে,,আবার তো ছেলেদের ও,,,
আবিরের মাঃ আগে তো ছেলেদের লাগাতে হবে তারপর মেয়েদের,,,,
তিথিঃ আগে কাউকে না লাগিয়ে আমাকে লাগিয়ে দেন এই বেটার হবে,,,
তিথির এমন কথা শুনে আবিরের মা আর আমানের মা হেসে দেয়,,আমানের মা ফাজলামি করে তিথির গালে অল্প একটু হলুদ লাগিয়ে বলে
আমানের মাঃ হেপ্পি???
তিথিঃ আপনি তো সত্যি সত্যি লাগিয়ে দিলেন,,এখন আমাকে মুখ ধুতে হবে দূর,,,
আবিরের মাঃ লাগবে না কারণ অনেক সুন্দর লাগছে আমার তিথিকে,,,
তিথিঃ কিন্তু সবাই তো দেয় নাই এখনও
আবিরের মা; একটু পরে দেখবা পানি মারামারি হলুদ লাগানোর পরেই,,সবাই একে অপরকে পানিতে চুবাবে,,,
তিথিঃ কেন?

আবিরের মাঃ এইটা বাচ্চাদের মজা,,হলুদ অনুষ্ঠানে এমন ফাজলামি করে সবাই
তিথিঃ আমি তো জানি না,,আজ নতুন শুনলাম,,
আবিরের মাঃ আচ্ছা যাও অইখানে সবাই মজা করছে তুমি ও যাও ঢোল বাজছে সাথে নাচো গিয়ে,,,
তিথি হাফ ছেড়ে তাড়াতাড়ি সব বিবাহিত মহিলাদের ভিড় থেকে আসে,,,
গালে আঙ্গুল দিয়ে হলুদ লাগাতে বেশ সুন্দর এই লাগছে তিথিকে,,তাড়াতাড়ি আসে ঢোল যেখানে বাজে,,,
তিথিকে দেখে আবির যেন আজ তিথির প্রেমেই পড়ে যায়,,,
সবুজ পাড় হলুদ শাড়ি গ্রামের বউদের মত পড়ে,,চুল গুলো খোপা করা,,,খোপায় গাঁধা ফুল দিয়ে বেড়ানো,,,গালে হলুদ মাখা অল্প লাল লিপস্টিক ঠোঁটে চোখে ঘাড়ো কাজল সব মিলিয়ে তিথি যে আজ অসাধারণ থেকে ও অসাধারণ লাগছে আবিরের কাছে,,,চোখের পলক যে আজ সরাতে পারছে না,,
তিথির রুপ যেন দিনের পর দিন সুন্দর এই হচ্ছে,,,বিয়ের পর নাকি মেয়েরা অনেক সুন্দর হয় আসলে কি তাই?তিথিকে দিনের পর দিন আবিরের কাছে বেশ সুন্দর লাগে,,,মন যেন কেড়ে নিচ্ছে তিথি তার মায়াবী এই রুপ দিয়ে,,,
চলবে,,,,,