বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 23
আবির আর এক মিনিট অপেক্ষা না করে চলে যায়,,আমানকে জিজ্ঞেস করবে বলে,,এইদিকে তিথি নিচে বসে পড়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এই ভেবে যে আবির কত টা নিচু ভাবে ভেবেছে এইসব,,,এতো বড় ভুল সে কিভাবে বুজতে পারে,,সত্তিটা না জেনে কিভাবে সে এমন করেছে,,একটি বার জিজ্ঞেস তো করতে পারতো তাহলে হয়তো আজ অন্য রকম হতো তাদের জীবন,,,
আবির রুম থেকে বের হয়ে হাঁটছে আর ভাবছে
আবিরঃ তিথি যা বলছে আসলে কি সত্যি??সত্যি কি আমি ভুল করছি সত্তিটা না জেনে এইভাবে তাদের উপর সন্দেহ করা,,,,,না না তিথি নিজে বাঁচার জন্য হয়তো মিথ্যা বলছে,,,আমান থেকে জিজ্ঞেস করে জানবো আসল সত্যি টা আসলে কোথায়,,,,
আবির আমানকে খুজতে লাগে,,,ছাদে গিয়ে দেখে সবাই আড্ডা দিচ্ছে এখনও আবির কে দেখে রিয়াদ আর মেঘ আবিরের সামনে এসে বলে
রিয়াদঃ কিরে ভাই তুই তোর বাসর রাত ছেড়ে এতো সুন্দরী বউ রেখে আমাদের মাঝে কি?মিস করছিস বুজি?
আবিরঃ আমান কই জানিস???
মেঘঃ ভাই সুন্দরী বউ রেখে এখন আমানকে খুঁজিস ঘটনা কি??
আবিরঃ একটু কাজ ছিলো বলবি প্লিজ আমান কই?
রিয়াদঃ আবির আমান মেবি নিচে গেছে যে আর আসে নাই,৷ হয়তো নিচে আছে কোথাও কিন্তু কেন?
মেঘঃ হ্যাঁ আবির তুই হঠাৎ আমানকে খুঁজছিস এই সময়ে কিছু হয়েছে কি?
আবিরঃ না কিছু হয় নাই দরকার ছিলো একটু জাস্ট তাই,,,আচ্ছা তোরা আড্ডা দে আমি আসি কেমন,,,
আবির ছাদ থেকে নিচে নেমে যায়,,চারপাশে খুঁজে কোথাও আমানকে পায় নাই,,ড্রইংরুমে খাদিজা সাফা পরিষ্কার করছে,, আবিরকে দেখে এগিয়ে এসে বলে
খাদিজাঃ ভাইজান কিছু কি লাগবে??
আবিরঃ না কিছু লাগবে মা,,,,আচ্ছা আমানকে দেখেছিলে?
খাদিজাঃ হ্যাঁ আমান ভাইজান তো গার্ডেন এর দিকে গেছে,৷ আমি মাত্র কফি দিয়ে আইলাম,,,
আবিরঃ অহ আচ্ছা,,,
আবির তাড়াতাড়ি করে গার্ডেন এর দিকে যায়,,আমান দোলনায় বসে আছে,,,কফি খাচ্ছে আর ফোনে তিশার সাথে তার ছবি গুলো দেখছে,,,,পুরানো দিন গুলো আজ যে বড্ড মনে পড়ছে,,,
আমানঃ অনেক মিস করছি তোমায় তিশা,,,কোথায় আছো প্লিজ এসে যাও পারছি না আমি আর এইভাবে থাকতে খুব কষ্ট হচ্ছে তিশা খুব বেশি,,,
আবির আমানের কাছে এসে দেখে আমান ফোনে কি যেন দেখছে,,৷
আবিরঃ আমান,,,
আমান উঠে আবিরকে দেখে কিছু টা অবাক হয়,,
আমানঃ কিরে তুই এতো রাতে এখানে??
আবিরঃ কিছু কথা ছিলো তাই,৷
আমানঃ সকালে তো বলতে পারতি,,,এই সময় এখানে তিথিকে একা রেখে এখানে আসা উচিত হয় নাই,,,
আবিরঃ তোর কি একটু ও কষ্ট হচ্ছে না?কেন নরমাল হওয়ার নাটক করছিস আমার সামনে হ্যাঁ?
আমান মাথা নিচু করে ভাবে আবির হয়তো তিশার ব্যাপারে জানে তাই বলছে,,
আমানঃ আসলে আমি তোকে বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু সুযোগ হয় নাই,,,আমি ভাবতে পারি নাই এমন হবে,,খুব কষ্ট হচ্ছে আবির খুব সত্যি আমি আর নিতে পারছি না এই কষ্ট একা,,,
আমান আবিরকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়,,,আবির আমানের পিঠে হাত রাখে চুপ করে আছে,,,বুকে কেন জানি খুব ভয় করছে কেন জানি,,,
আমানঃ ভাই আমি ওকে অনেক ভালোবাসি অনেক,,,,ভাবতে পারি নাই এইভাবে দূরে চলে যাবে,,,,সত্যি বুকটা ফেটে যাচ্ছে নিজেকে অনেক শক্ত রাখার চেস্টা করছি কিন্তু পারছি না যে আর,,,আমি সত্যি অনেক ভালোবাসি ওকে,,,
আবিরের রাগ লাগে তিথির উপর ভাবে তিথি মিথ্যা বলেছে তাকে,,,আবির আমানকে সরিয়ে বলে
আবিরঃ তুই ওকে অনেক ভালোবাসিস??
আমানঃ হ্যাঁ অনেক ভালোবাসি ওকে,,,
আবিরঃ তুই যদি ওকে ভালোবাসতি তাহলে তাকে অন্যের বউ হতে দেখে এতো খুশি হতি না,,,,আর হ্যাঁ সে যদি তোকে ভালোবাসতো সত্যি তাহলে সে কখনো আমাকে বিয়ে করতে রাজি হতো না,,ওর মত মেয়ে টাকার জন্য নিজের ভালোবাসাকে পর্যন্ত বিক্রি করতে পারে দেখ,,
আমান আবিরের কথা গুলো শুনে অনেক টা অবাক হয় যে আবির আসলে কি বলছে,,,
আমানঃ তুই বিয়ে করেছিস মানে?আমি খুশি হলাম মানে ?কিসের কথা বলছিস ক্লিয়ার করে বল তো,,,
আবিরঃ তুই তিথিকে ভালোবাসি তাই না???তোদের মধ্যে সম্পর্ক আছে,,আর তিথি আমাকে বিয়ে করায় তুই এইভাবে ভেঙ্গে পড়েছিস???
আমানঃ আমি তিথিকে কেন ভালোবাসতে যাবো???তোদের বিয়েতে আমি কেন ভাঙ্গবো কি বলছিস তুই আবির???
আবিরঃ কেন ন্যাকামি করছিস আমান,,আমি সব জানি,,তুই আর তিথির মধ্যে রিলেশন চলছে,,,তোরা একে অপরকে ভালোবাসিস,,তিথির বিয়ে আমার সাথে হওয়ায় তুই এইভাবে এখানে কান্না করছিস তাই না?
আমানঃ হোয়াট রাবিশ,,,,,,,পাগল হয়েছিস কি সব বলছিস আবির? শুন তিথি শুধু আমার ভালো বন্ধু ব্যস এইটুকু এর চেয়ে বেশি কিছু না,,,
আবিরঃ মানে?তুই আর তিথির মধ্যে কিছু নাই??
আমানঃ না নেই.,,এক মিনিট তুই ভাবছিস আমি আর তিথি,,,,,,
আমান একটু পিছনে গিয়ে দাঁড়ায় আবিরের দিকে কিছু টা রাগী ভাবে তাকিয়ে বলে
আমানঃ তুই মনে করেছিস আমি আর তিথি একটা সম্পর্কে আছি?আমাদের মধ্যে কিছু চলছে তাই তো,,, এক মিনিট তুই তিথিকে হুট করে বিয়ে করলি এই ভেবে যে আমি তিথিকে ভালোবাসি ওহ আল্লাহ
আবিরঃ তুই কাকে ভালোবাসি আমান??
আমানঃ তুই এইটা ভাবলি কিভাবে আবির???আমি যাকে ভালোবাসি তার নাম তিশা,,,,তিথি আর আমার মধ্যে কখনো বন্ধুত্ব ছাড়া আর কিছু ছিলো না কখনো না,,,,
আমানের কথা গুলো শুনে আবির অনেকটা অবাক হয়,,,আমান গিলটি ফিল করে৷ আমান তার ফোন টা বের করে আবিরকে আমান আর তিশার কিছু ছবি দেখায়,,
আমানঃ ওর নাম তিশা,,,যে দিন আরিশা আত্নহত্যা করার চেস্টা করে অইদিন থেকে তাকে খুঁজে পাচ্ছি না আমি,,,অনেক খুঁজার চেস্টা করেছি পাচ্ছি না,,আর তুই কিনা তিথি আর আমাকে নিয়ে এতো টা নিচ ভাবলি,,,
আবিরঃ তাহলে যে রেস্টুরেন্টে তুই তিথি এক সাথে ছিলি,,আর যেদিন আরু মেডিকেল ছিলো তার পরের দিন তুই অফিসে তিথিকে জড়িয়ে ধরে ছিলি তা কি?
আমানঃ রেস্টুরেন্টে আমি তিশাকে নিয়ে যাই,,আর তিথি তার ছোট ভাইয়ের জন্মদিন পালন করতে যায় তার ফ্যামিলি এর সাথে আমাদের অইখানে দেখা হয় তারপর আমরা বসে গল্প করি,,আর অফিসে তিথিকে জড়িয়ে ধরা তা ছিলো একটা বন্ধুত্ব অই সময় একটা বন্ধুর খুব প্রয়োজন ছিলো আমার তোকে কল দিয়েছিলাম তুই ব্যস্ত ছিলি,,,
আমানের কথা গুলো আবির যেন আকাশ থেকে পড়লো অনেক গিলটি ফিল করছে,,,,
আবিরঃ আমি এতো বড় ভুল কিভাবে করলাম,,,
আমানঃ এক মিনিট যদি তুই জানতি আমি তিশার সাথে রিলেশন করি তাহলে তুই তিশাকে জোর করে বিয়ে করতি???
আবিরঃ কি বলছিস তুই আমান??
আবির আমানকে ধরতে আসে আমান পিছনে চলে যায়,,হাত দিয়ে ইশারা করে না ধরতে তাকে,,,
আমানঃ তুই এইসব কেন করেছিস যাতে আমি তোর বোনকে বিয়ে করি তাই তো???? আবির ছোট থেকে তোর বোনকে নিজের বোন ভেবেছি,,,আমার বোন নাই তাই সব সময় তোর বোনকে নিজের ছোট বোনের মত আদর করেছি,,কিন্তু অইটা ছিলো আমার জীবনে বড় ভুল,,,,তুই আমার কারনে অই বেচারি মেয়ের জীবনটা এইভাবে নষ্ট করলি,,,তিথির সাথে হয়তো তোর বনে না সব সময় তোরা ঝগড়া করিস কিন্তু তোর রাগ এতো টা বাড়বে যে তাকে জোর করে বিয়ে করেছিস,,,,আর ভুল গুলো একা ভেবে নিলি সত্তিটা আমাকে জিজ্ঞেস করতি একবার তাহলে আজ এমন হতো না,,,
আবিরঃ আমান আমি আসলে বুজতে পারি নাই যে এমন হবে,,আমি ভেবেছি যে তোরা,,
আমানঃ সেটায় তুই যা ভাবিস তাই সঠিক আর আমরা তো ভুল,, একবার আমাদের জিজ্ঞেস করতি সত্তিটা জেনে নিতি তাহলে হয়তো এমন হতো না,,,আজ একটা কথা বলে রাখি শুনে রাখ আমি কখনো তোর বোনকে বিয়ে করবো না কখনো না,,যদি বিয়ে করি তিশাকে না হলে না,,ভালোবাসা কি তুই জীবনে বুজবি না কারণ ভালোবাসার জন্য মন লাগে যা তোর কাছে নাই,,,
আবির চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে,,,সে কত বড় ভুল করেছে সে এখন বুজতে পারছে,,,,
আমানঃ যা করেছিস এর পর থেকে আজকের পর আমান নামে বন্ধু ওহ সরি আমি তো তোর বন্ধু ছিলাম না কখনো তাহলে এমন করি না,,যাই হোক আজকের পর এই আমানকে তোর জীবনে আর কখনো পাবি না,,,তুই যা করেছিস এর জন্য আমি তোকে কখনো ক্ষমা করবো না আবির,,,আমাদের বন্ধুত্ব সব কিছু আজ শেষ,,,,ধন্যবাদ আবির আমাকে এতো বড় একটা উপহার দেওয়ার জন্য আঘাত টা খুব দরকার ছিলো আমার,,,,
আবিরঃ আমান আমার কথা শুন প্লিজ,, আমি যা করেছিস রাগের মাথায়,, আমি ভাবতে পারি নাই এমন হবে,,
আমানঃকিছু না আবির,,,,,
আমান অইখান থেকে চলে যায়,,,,আবির নিচে বসে পড়ে,,,,আজ আমান আর আবিরের বন্ধুত্ব শেষ হয়ে যায়,,,আরিশা আবির আর আমানের সব কথা শুনে,,,,আরিশা কান্না করতে থাকে এইভাবে যে তার জন্য এইসব হয়েছে তার জিদের জন্য আজ আবির আমান তিথি সবাই কষ্ট পেয়েছে৷ আবির আমানের এতো বছরের বন্ধুত্ব আজ এইভাবে ভেঙ্গে গিয়েছে শুধু মাত্র তার জন্য নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে তার কাছে,,,
আবির আমানের পিছনে পিছনে যায় কিন্তু আমান ততক্ষণে চলে যায়,,,খুব রাগ লাগছে আবিরের নিজের কাছে নিজের,,,গাড়ি নিয়ে বের হয়ে যায় অনেক দ্রুত গাড়ি চালাতে লাগে,,,সব কিছু যেন চোখে ভাসছে,,তিথির উপর কত না অত্যাচার করেছে,,,কত অপমান করেছে কিন্তু অই বেচারি তো জানতোই না যে তাকে এতো অপমান আসলে কেন করা হচ্ছে,,,,
রাতটা অনেক গভীর হয়,, চারপাশে অন্ধকার নিঝুম রাস্তা আবির গাড়ি থামিয়ে বের হয় গাড়ি থেকে রাস্তার উপর বসে পড়ে,,চিৎকার করে বলে
আবিরঃ কেন এমন কেন করলাম আমি????এতো টা খারাপ মাইন্ড কবে থেকে হলো আমার কবে থেকে আমি এইভাবে য়ে হলাম এতোটা চিপ মাইন্ডের হলাম আমি,,,
আবিরের চোখে পানি এসে যায়,,,রাস্তায় চিৎকার করে বলে সে,,,,
আবিরঃ কিভাবে আমি এতো বড় ভুল করলাম, আমার বেস্ট ফ্রেন্ড কে আমি এইভাবে সন্দেহ করলাম,,,আর তিথি যার কিনা কোনো দোষ এই ছিলো না কিন্তু আমি তাকে এইভাবে কষ্ট দিলাম,, আমি এতো টা খারাপ কিভাবে হলাম,,
আবির চিৎকার করে উঠে,,,,গাড়ির কাছে এসে গ্লাসে অনেক জোরে ঘুষি দেয়,,সাথে সাথে হাতে কাচের টুকরো ঢুকে রক্ত পড়া শুরু হয়ে যায়,,আবির আজ নিজের কাছে নিজে ছোট হয়ে যায়,
এইদিকে তিথি হাঁটু ভাজ করে কাঁদতে থাকে,,,সব সময় আবির তাকে অপমান করতো সব সময় বলতো তার মত মেয়ে,,,এই সেই,,
তিথিঃ আমার কি দোষ ছিলো আল্লাহ যার জন্য এমন হয়েছে আমার সাথে??? কিসের শাস্তি পাচ্ছি আমি?
তিথি অনেক কান্না করছে আজ যেন ভেঙ্গে পড়ে সে,,চোখের পানি মুছে বলে
তিথিঃ থাকবো না আমি উনার সাথে কখনো না,,যার চিন্তা ভাবনা এতো টা নিচু তার সাথে আমি কখনো থাকবো না,,,,,,,উনি ভাবে কি নিজেকে হ্যাঁ উনার সাথে না থাকলে আমার দিন যাবে না অনেক ভালো যাবে,,,
তিথি নিজেকে নিজে সামলাতে থাকে,,,
এইদিকে আরিশা অনেক কান্না করছে নিজের রুমে এসে,,ফোনের রিং বারবার বেজে উঠে,,,অনেক ক্ষন পর কল রিসিভ করে
আরিশাঃ সমস্যা কি তোর আহাদ কেন এতো ডিস্টার্ব করছিস হ্যাঁ??
আহাদঃ সরি আরু,,আসলে কেন জানি মন বলছে তুই ভালো নেই,,,মনটা চটপট করছে তোর আওয়াজ শুনতে তাই কল দিলাম সরি,,,
আরিশাঃ আমাকে কল দিস না আমি ভালো না,,আমার জন্য সবার জীবন নষ্ট হয় প্লিজ চলে যা,,
আহাদঃ তোকে ভালোবেসেছি চলে যাওয়ার জন্য না,,,জানিস আমার আপু বলে সত্যিকারের ভালোবাসায় নাকি অনেক শক্তি,,,মন থেকে কাউকে ভালোবাসলে সত্যি পায়,,,আপু সব সময় বলে ভালোবাসার মানুষের পাশে শুধু সুখের সময় নয় দুঃখের সময় ও থাকা উচিত,, সুখের সময় সবাই থাকে দুঃখের সময় না তাই অই সময় থাকতে বলে,,,আর মেয়েদের চোখে পানি নয় কাজল মানায়,,,
আরিশাঃ তোর আপু কে পেয়েছিস???
আহাদঃ না জানি না আপু কই আছে,,,আম্মু আব্বু অনেক টেনশনে আছে,,আমরা ছাড়া আপুর যে কেউ নাই,,জানিস আপু পড়ালেখায় অনেক ভালো ডাক্তারি পড়ছে,,আমার আপু অনেক ভালো কিন্তু জানি না কেমন আছে কই আছে এখন কিছু জানি না,,,
আরিশাঃএতো টেনশন এর মধ্যে ও তুই আমাকে কল দিচ্ছিস?আমার খুঁজ নিচ্ছিস?
আহাদঃ কি করবো বল খুব কষ্ট হচ্ছে তাই,,শুন আরু তোর পাশে সত্যি আমি আছি,,সব সময় পাবি বিরক্তি হলে ও হও এতে কি,, কিন্তু আমি বিরক্তি করা ছাড়বো না ওকে
আরিশাঃ পরে কথা বলবো
আরিশা ফোন রেখে দেয়,,,ভাবতে থাকে এক আমান যাকে সে ভালোবাসে কিন্তু সে তাকে কখনো ভালোবাসে নাই, আর এক আহাদ যাকে কখনো ভালোবাসে নাই কিন্তু আহাদ তাকে এতো ভালোবাসে,,,
রাত অনেক হয়ে যায়,,,সকাল হয়ে আসবে আবির এখনও রাস্তায় হাতের রক্ত গুলো শুকাতে থাকে এইভাবে,,,গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে ভাবে কত বড় অন্যায় সে করেছে না জেনে,,
আবিরঃ ভুল যখন আমি করেছি ঠিক আমি করবো,,,,জানি তিথির সাথে অনেক অন্যায় করেছি আমি ক্ষমা চেয়ে নিবো,,,,সব কিছু ঠিক করার চেস্টা করবো
কিছু ক্ষন পর আবির বাড়ি ফিরে যায়,,,
রুমে গিয়ে দেখে তিথি ফ্লোরে ঘুমিয়ে আছে,,বুজা যাচ্ছে কান্না করতে করতে এখানে ঘুমিয়ে গেছে,,,,তিথির পাশে বসে নীল বেনারসি শাড়ি পড়ে যে তিথিকে অনেক মায়াবী লাগছে,,তিথির মুখের দিকে তাকিয়ে আছে সত্যি যে মেয়েটা অনেক মায়াবী,,,ফ্লোরে এইভাবে শুয়ে থাকাতে ঠান্ডা লাগবে তাই তাড়াতাড়ি তিথিকে বিছানায় নিয়ে যায় কোলে করে,,,
তিথির খোলা চুলে আবিরের শার্টের বুতামে লাগে ছুটাতে কষ্ট হচ্ছে এক হাতে,,,,ডান হাতটা যে কেটে আছে তবুও কেয়ার না করে তিথির পাশেই শুয়ে পড়ে,,,,
সকালে তিথির কাছে ক্ষমা চেয়ে নিবে তার সব ভুলের এই ভেবে আবির তিথির পাশেই ঘুমিয়ে পড়ে,,,,
সকালে,,,
তিথির ঘুম ভাঙ্গে,,চোখ খুলেই নিজেকে আবিরের বুকে পায়,,,একটু খুশি হয় আবিরের বুকে পেয়ে নিজেকে হঠাৎ মনে পড়ে রাতের ঘটনা গুলো,,,,রাতের কথা গুলো মনে পড়ায় রাগ হয় খুব উঠে যেতে লাগে কিন্তু পারে না চুল আটকে আছে আবিরের বুতামে,,তবুও চেস্টা করে উঠার,,
তিথিঃ আউচ,,,,
তিথির আওয়াজ শুনে ঘুম ভাঙ্গে আবিরের,,,চোখ খুলেই দেখে তিথি চুল ছুটানোর চেস্টা করছে তার বুতাম থেকে,,,,
আবিরঃ এক মিনিট আমি দিচ্ছি
তিথি কিছু বলে না চুপচাপ করে আছে,,,আবির তার হাত দিয়ে খুলার চেস্টা করে,,দুইহাত দিয়ে যখন চেস্টা করে তখন তিথির চোখে পড়ে আবিরের রক্তাক্ত হাত,,হাতের মধ্যে ছোট ছোট কাচের টুকরো রক্ত গুলো ও শুকিয়ে গেছে৷৷
তিথি রাগে চুল গুলো ধরে টান দেয় যে নিজে তো ব্যাথা পায় আবিরের বুতাম পর্যন্ত ছিড়ে দেয়,,, আবির কিছু বলে না চুপ করে আছে,,তিথি উঠে দাঁড়ায় আবিরের দিকে তাকিয়ে দেখে আবির চুপচাপ কেয়ার না করেই ওষুধ এর বক্স নিয়ে আসে,,চুল গুলো খোপা করেই মাথায় কাপড় দেয়,,,সেভলন নেয় একটু তুলায় বেশি করে,,,
আবিরের পাশে বসে হাতটা জোরে টান দেয় আস্তে আস্তে কাচের টুকরো গুলো খুলে,,আবির ব্যাথা পাচ্ছে ঠিক কিন্তু তিথির দিকে তাকিয়ে আছে ব্যাথা অনুভব যেন হচ্ছে না,,
একটা কাচের টুকরো খুলছে আবার ফুঁ দিচ্ছে আবার আবিরের দিকে তাকাচ্ছে কিন্তু আবির এক নজরে তাকিয়ে আছে তিথির দিকে,,,কাচের টুকরো গুলো সব খুলে সেভলন দেওয়া তুলা টা নিয়ে লাগাতে থাকে,,,
তিথির চোখে আসা জমা পানি আবিরের নজরে ঠিক পড়ে,,,
আবিরঃ আমি ঠিক আছি তিথি অই সামান্য লেগেছে
তিথি চুপচাপ সেভলন লাগাতে থাকে,,,,চোখে পানি গুলো এক হাতে মুছতে লাগে আর এক হাতে আবিরের হাতে সেভলন লাগাতে থাকে,,,
আবিরঃআমি ভেবেছিলাম রেগে আছো তুমি,,,কিন্তু তুমি তো কাঁদছো আমার ব্যাথা দেখে,,,,
তিথি আবিরের হাতে জোরে চাপ দেয়,,,হাতের মধ্যে আরো জোরে সেভলন দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে থাকে,,,,আবির ব্যাথা পায় কিন্তু তবুও চুপ করে আছে,,,তিথি আবিরের হাতটা একটু বেশি জোরে চাপ দেওয়ায় রক্ত পড়তে থাকে,,আবিরের সে দিকে খেয়াল নাই সে শুধু তাকিয়ে আছে তিথির দিকে,,,
তিথির রাগ আছে কিন্তু সে কখনো আবিরকে এইভাবে কষ্ট দিতে চায় নাই,,,তবুও রাগের কাছে তিথি আজ আবিরের কষ্ট গুলো দেখছে না,,ইচ্ছে করে সব সেভলন আবিরের হাতে ঢেলে দেয়,,,উঠে দাঁড়িয়ে যেতে লাগে আবির তিথিকে বলে
আবিরঃ তিথি শুনো,,,আসলে কিভাবে লেগেছে আমি খেয়াল করি নাই,,,
তিথিঃদেখুন আপনার যা ইচ্ছে হোক এতে আমার কিছু যায় আসে না,,,
আবিরঃ আমি জানি আমি যা করেছি তা ঠিক ছিলো না,,,,আসলে আমি,,,
তিথিঃ আপনি কি করতে চেয়েছেন তা জেনে আমার কি,,আপনার যা করার করেছেন এখন প্লিজ আমাকে মুক্তি দেন,,,
আবিরঃ সরি তিথি,,,
তিথিঃ আপনার সাথে আমার কোনো কথা নাই,,,আর হ্যাঁ আপনার যা ইচ্ছে হোক এতে আমার কিছু না,,,,আপনার প্রতি আমার যা সম্মান বিশ্বাস ছিলো সব ভেঙ্গে গেছে এর পর আপনি আমার কাছে কিছু আশা করেন তাহলে তা আপনার বোকামি হবে এর বেশি কিছু না,,
আবিরঃ আমার ভুল গুলো আমি ঠিক করতে চাই,,
তিথি আবিরের দিকে রাগী লুক দিয়ে বলে
তিথিঃ অনেক ঘৃনা করি আমি আপনাকে,,,কখনো ক্ষমা করবো না,,,,আপনি আমার ফ্যামিলি এর কাছে আমাকে ছোট করেছেন,,যা না তা বলেছেন,,কথায় কথায় অপমান করছেন,,,অত্যাচার করেছেন, আমার সাথে যা যা করার করেছেন কিন্তু আমান আপনি সত্তিটা আমান থেকে পর্যন্ত জানার চেস্টা করেন নাই,,,আমার বাবার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে আমাকে জোর করে বিয়ে করেছেন ভাবলেন কিভাবে আপনাকে আমি মাফ করে দিবো,,,,কখনো না বুজলেন আপনি
তিথি রেগে রুম থেকে বের হয়ে যায়,,,আবির বুজতে পারে সে যা করেছে তিথির রাগ ঠিক আছে এতে,,, আবির নিজে নিজের হাতে মলম লাগাতে থাকে,,ধীরে ধীরে ব্যান্ডিস করতে থাকে কষ্ট হচ্ছে এক হাতে করতে তবুও করছে,,,
চলবে,,,,,,,,,