তোকে চাই – Season 2 ! Part- 35
দুপুরের খাবার পর শুভ্র ভাইয়ার দরজায় উঁকিঝুঁকি দিচ্ছি।ভেতরে ঢুকবো কি না বুঝতে পারছি না। উনি নিশ্চয় ঘুমিয়ে গেছেন এতোক্ষণে… ভেতরে গিয়ে রুমটা কি দেখে আসবো?আগে কখনো দেখা হয় নি রুমটা।।তুমুল অস্বস্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছি ঠিক তখনই চায়ের ট্রে হাতে নিয়ে ছাদে যেতে যেতে মাধবী বলে উঠলো-
.
ছোট ভাবি আপনে ভেতরে যাইতে পারেন।।ছোট ভাইজান আপনারে কিছু কইতো না…আপনি ছাড়া কারো ঘরে ঢুকার পারমিশন নাই।
.
আমি ওর দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসেই দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে গেলাম।এই মেয়ের সামনে দাঁড়িয়ে এসব কথা শুনার চেয়ে ভেতরে ঢুকে যাওয়ায় উত্তম বলে মনে হয়েছে আমার।ভেতরে ঢুকেই অবাক হলাম আমি…. কি সুন্দর গোছানো চারপাশ!!ছেলেদের ঘর এতো গোছানো থাকে বুঝি??ঘরের দেওয়াল টা পিংক এন্ড ব্লু রঙে সাজানো।।বিশাল জানালায় সাদা পর্দা টানায় রুমের মধ্যে একটা শীতল শীতল ভাব।।ঘরের সোফা..আলামারি,,বিছানার চাঁদর -কুশন,, এমনকি বুক সেল্ফটাও সাদা রঙের।।বেড সাইড টেবিলে রাখা সাদা ফুলদানিতে শুধু টকটকে লাল ফুল!!ডানপাশের দেয়ালে উনার বিভিন্ন বয়সের ছবি।।তারমধ্যে থেকে ব্লু শার্ট পড়া ছবিটিতে চোখ আটকে গেলো আমার।।ইশশ!! মানুষ এতো সুন্দর হয় কি করে??দাঁতগুলোও কেমন ঝকঝকে…. বিছানার উপরের দেয়ালে চোখ যেতেই অবাক হলাম আমি….সেখানে টানানো আমার সেই ঘুমন্ত ছবিটি…. আরেকটু কাছে গিয়ে চোখদুটো ছোট ছোট করে অসীম কৌতূহল নিয়ে পর্যবেক্ষন করেই মুগ্ধ হলাম আমি….অসাধারণ একটা ছবি!!সাহেল ভাইয়ার ছবির হাত যে অসাধারণ তা মানতেই হবে!!ছবির নিচের ফ্রেমটাতে সোনালি রঙে গুটি গুটি অক্ষরে লেখা “ঘুমন্তপরী!!…From sahel❤” লেখাটা পড়েই বিস্মিত হলাম আমি।।ছবিটা সাহেল ভাইয়া দিয়েছে?ছবিটির আশেপাশে আরো কিছু ছবি লাগানো…সবকটায় আপুর এনগেজমেন্টের পার্টির বা লুকিয়ে তোলা।।সবগুলো ছবিতেই আমি শুভ্র পাশাপাশি!! সাজানোর স্টাইলটার জন্যই ছবিগুলো আরো প্রাণোবন্ত হয়ে উঠেছে যেনো।ইশশ!! আমার এতো ছবি টানিয়েছেন উনি??বাড়ির সবাই দেখেছে নিশ্চয় !! কি লজ্জা…হঠাৎ করেই হাতে খুব জোড়ে টান পড়ায় বিছানায় গিয়ে পড়লাম আমি….বিছানায় পড়তেই আমায় কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে নিজের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে নিলেন শুভ্র!!মুখে বললেন-” চলো ঘুমাই” ঘটনার আকস্মিকতায় আমি স্তব্ধ…আমার গলায় শুভ্র মুখ ঢুবিয়ে দিতেই ঘোর কাটলো আমার।।নিজেকে ছাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি কিন্তু ফলাফল শূন্য!!উনি আমায় আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে উঠলেন-
.
এতো নরম কেন তুমি…উফফ…মনে তো হচ্ছে…শরীরের মধ্যে ঢুকে যাবে।আচ্ছা তুলো টুলো খাও নাকি??তুমি তো দেখি তুলোর থেকেও নরম !!
.
আমি কিছু বললাম না…এক্চুয়েলি কিছু বলতে পারছি না…উনার প্রতিটি নিশ্বাস পড়ছে আমার গলায়…আর সাথে সাথেই ফ্রিজড হয়ে যাচ্ছি আমি।।কথাগুলো যেনো গলার ভেতর আটকে যাচ্ছে কি নিষ্ঠুরভাবে।।আমাকে চুপ থাকতে দেখে বাম সাইডের গলায় ঠোঁট দিয়ে স্লাইড করতে করতে বলে উঠলেন-
.
তোমার এই তিলটা সবসময় ঢেকে রাখবে বুঝলে?এটা খুবই বিরক্ত করে আমায়।।খুইবব!!
.
কথাটা বলে নিয়েই গলার বাম সাইডটায় কামড়ে দিলেন উনি।আমি “আহ্” করে উঠতেই মুখ চেপে ধরলেন আমার।।ফিসফিস করে বলে উঠলেন-
.
এই এসব উহ আহ শব্দ করো না তো।।বাড়ি ভর্তি মানুষ…ছি ছি কি ভাববে আমায়!!
.
তো এভাবে কামড়াচ্ছেন কেন শুনি?ছাড়ুন আমায়…(কাঁদো কাঁদো কন্ঠে)
.
কি করবো বলো?তোমার শরীর এতো নরম যে মাঝে মাঝেই আমি কনফিউজড হয়ে পড়ি এক্চুয়েলি এটা শরীর নাকি কোনো সফ্ট কেক।।তাই মাঝে মাঝে কামড় দিয়ে চেইক করে নিই ইজ ইট ইউ অর নট!!..টেইক ইট ইজি রোদপাখি…বেশি ব্যাথা লেগেছে??দেখি!
.
উনার কথায় মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো আমার।ব্যাটায় বলে কি?আমি আর কেক??উফফ অসহ্য…এই খাটাসটাকে এই মুহূর্তে খুন করে ফেলতে ইচ্ছে করছে আমার…এই মুহূর্তে!!একরাশ রাগ নিয়ে আবারও নিজেকে ছাড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম আমি।কিন্তু তাতে বিপত্তি বাড়লো বয় কমলো না।। উনি আমায় আরো শক্ত করে নিজের সাথে চেপে ধরলেন।।আমার হারগুর ভেঙে যাওয়ার উপক্রম।এই এখনই বুঝি মট করে ভেঙে যাবে সব!!উনি গলায় মুখ ডুবিয়ে বিরক্ত কন্ঠে বলে উঠলেন-
.
ইশশ এতো নড়াচড়া করছো কেনো রোদপাখি?একটু ঘুমাতে দাও না প্লিজ।।ইউ নো রোদু?কাল রাত ১২ টা থেকে আজ দুপুর ১ টা পর্যন্ত কন্টিনিউয়াসলি পড়াশোনা করছি৷। মাথাটা একদম ধপধপ করছে বুঝলে?আই নিড আ সাউন্ড স্লিপ…সো নো নড়াচড়া.. লেট মি স্লিপ।
.
আপনি ঘুমোন না।। আমি কি ধরে রেখেছি আপনাকে??দরকার হলে ঘুমোতে ঘুমোতে শহীদ হয়ে যান বাট আমাকে যেতে দিন।।ছাঁড়ুন প্লিজ!!(করুণ কন্ঠে) মা নির্ঘাত খুঁজছে আমায়।
.
উহুম.. খুঁজলো খুঁজুক… খুঁজতে দাও…ছাড়ছি না এখন।আমি ঘুমিয়ে গেলে চলে যেও এর আগে নয়।
.
আপনি আসলেই একটা পাগল।ছাড়ুন তো! রাগ লাগছে আমার।উফফ!!(দাঁতে দাঁত চেপে)
.
পাগল?পাগল হতে কিন্তু দোষের কিছু নেই রোদপাখি।শেক্সপিয়ারের মতে পাগল,প্রেমিক আর কবি একসূত্রে গাঁথা।। তিনি বলেছেন কি জানো??তিনি বলেছেন- “The lunatic, the lover and the poet/ are the imagination all compact.”
সেই হিসেবে পাগল হতে আমার তেমন একটা আপত্তি নেই।।আমি তো তোমাকে দেখার সাথে সাথেই পাগল থেকে শুরু করে কবি পর্যন্ত সবই হয়ে গেছি রোদপাখি।(চোখ টিপে)
.
আমি রাগ কন্ট্রোল করে চুপচাপ শুয়ে আছি।।ইচ্ছে করছে এটাকে এক লাথি দিয়ে খাট থেকে ফেলে দিই।।যে শয়তানের বদবুদ্ধিতে এই রুমে ঢুকেছিলাম আমি…আই সয়ার তাকে পেলে ঢাকার নিকৃষ্টতম ড্রেনটাতে গুণে গুণে ২০ বার চুবাবো।।শয়তানের শয়তানীগিরি ছুটিয়ে ছাড়বো আমি…. তার জন্যই তো ফেঁসে গেলাম ।।ও মোর খোদা!!প্লিজ এবারের মতো রক্ষা করো আমায়…এই খচ্চরটার আশেপাশেই আসবো না আমি আর…প্লিজ!!””
.
🍁
.
ড্রয়িংরুমে এসে হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।সবাই ছাদে তারমানে এখনো খুঁজ পড়ে নি আমার।।একটা ছোট শ্বাস নিয়ে সোফার দিকে তাকাতেই দেখি সাহেল ভাইয়া গালে হাত দিয়ে বসে আছেন।।আমাকে দেখেই মিষ্টি হেসে…সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে বলে উঠলেন-
.
কেমন আছো সানশাইন??
.
উনাকে দেখে কিছুটা অস্বস্তি হলেও মুখে হাসি টেনে উনার পাশের সোফায় বসতে বসতে বললাম-
.
আলহামদুলিল্লাহ ভালো ভাইয়া আপনি??
.
ভালো নেই গো।।খুবই করুণ অবস্থা আমার!!
.
কেনো কি হয়েছে ভাইয়া?
.
সারারাত পড়াশোনা করার পর দুপুরে এই বাড়ির সোফায় বসে ঝিমুতে হলে কিভাবে ভালো থাকি বলো??বুঝলা সানশাইন?? এরা না অলওয়েজ আমায় ফাঁসিয়ে দেয়।।এই দেখো,, শালা হারামি শুভ্রটা আমাকে ফোন দিয়ে জোর করে ঢেকে এনে এখন নিজেই নাক ডেকে ঘুমুচ্ছে।। ইচ্ছে করছে শালাকে এক ঘুষিতে নাক ফাটিয়ে দিই।
.
ফাটিয়ে দিন না মানা করেছে কে?উনার নাক ফাটানোই উচিত।।কিন্তু আপনাকে ডেকে পাঠানোর কারন?
.
তোমাদের বাসায় যাওয়ার জন্য।নতুন জামাইয়ের সাথে নাকি যেতে হয়??সেই নিয়ম রক্ষার্থে আমি আর শুভ্র যাচ্ছি অভ্র ভাইয়ের পিছু পিছু।।এই শোন না?বউয়ের বাড়ি যাওয়ার পর নাকি….বরের সঙ্গীদের উদ্ভট আর ভয়ঙ্কর সব জিনিস খেতে দেওয়া হয়??লাইক.. মরিচের জোস??(ভয়ার্ত দৃষ্টিতে)
.
উনার এমন ভয় পাওয়া দৃষ্টিতে অবাক হলাম আমি।।একটু সিরিয়াস ফেইস নিয়ে বলে উঠলাম-
.
হ্যা তা তো খেতে দেওয়া হয়ই….
.
ও মাই গড!! সানশাইন?? লুক আমায় এসব খেতে দিও না…শুনেছি ভাইয়ের শালীরাই এমন করে…সেই হিসেবে তুমিই তো হবে তার লিডার…তাই তোমাকেই বলছি যা খাওয়ানোর তোমার জামাইকেই খাইয়েও আমাকে নয়…আমি কিন্তু সম্পর্কে তোমার ভাসুর হই…শুভ্র থেকে ১ দিনের বড় আমি।।(বাচ্চাদের মতো মুখ করে)
.
উনার কথায় হুহা করে হেসে উঠলাম আমি।উনি কয়েক সেকেন্ড আমার দিকে তাকিয়ে থেকেই হুট করে উঠে দাঁড়িয়েই হাঁটা দিলেন সিঁড়ির দিকে।।আমি উনার যাওয়ার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে আবারও হেসে উঠলাম-“এরা সবাই ই পাগল নাকি??”
.
🍁
.
সন্ধ্যা ৭ টা।।আমি,শুভ্র ভাইয়া আর সাহেল ভাইয়া বসে আছি আমাদের ছাদে।।উনাদের দুজনের গায়েই বেগুনি রঙের পাঞ্জাবী।দুজন ক্রমাগত বাদাম চিবোচ্ছেন আর আমি খুব মনোযোগ দিয়ে উনাদের কথা শুনছি।শুভ্র ভাইয়ার ব্যাপক আফসেস হচ্ছে।উনাকে দেখে মনে হচ্ছে উনি রীতিমতো আফসোসের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছেন –
.
দেখলি তো সাহেল??ভাই জাতি এমনই হয়…আমদের এক্সামের পড়া বাদ দিয়ে আমাদের সাথে এনে এখন হাওয়া!!বউ নিয়ে দরজা লাগিয়ে খোলার নামই নেই।।বলি আমাদেরও তো কিছু হক আছে নাকি??এতো তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা হচ্ছে আমাদের??
.
এতো ঢং মাইরো না মামা!!আজকে তোমার বিয়ে মেনে নিলে তুমিও আমায় একা ফেলে ওই দরজায় লাগাইতা।
.
ছিহ সাহেল!!তুই আমাকে এমন ভাবিস?দেখ…আমার বউ যে আমার সামনে বসে আছে আমি কি একবারও তাকিয়েছি??সেই কখন থেকে তো তোকেই দেখে যাচ্ছি!!(কাঁধে হাত রেখে)
.
আগলা পিরিত চুরের লক্ষ্মণ। শালা হাত সরা…..
.
এমন করিস কেন দোস্ত….
.
শুভ্র ভাইয়ার কথার মাঝপথেই চিত্রা ছাদে এসে মুখ ফুলিয়ে বলে উঠলো –
.
আমি মেয়ে হিসেবে কেমন??
.
চিত্রার হঠাৎ এমন কথায় আমরা তিনজনই অবাক।।হঠাৎ ও কোথা থেকে টপকালো তাও বুঝতে পারছি না আমি।।ব্যাপারটা বুঝে নিয়ে কিছু একটা বলতে যাবো ঠিক তখনই শুভ্র আর সাহেল ভাইয়া একসাথেই বলে উঠলেন-
.
গোলাপের মতো….
.
কথাটা বলে দুজন একসাথেই হুহা করে হেসে উঠলেন। আমি ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই নিজেদের সামলে নিয়ে মুখ চেপে হাসতে লাগলেন।।চিত্রা এবার আমার পাশের চেয়ারটাতে বসে চোখ থেকে চশমা খুলে নিয়ে মুখ ফুলিয়ে বলে উঠলো-
.
দেখ তো…আমার চোখ কি ট্যারা??
.
চিত্রার কথায় আবারও অবাক হলাম আমি এমন একটা টপিক কোথা থেকে এলো বুঝতে পারছি না।ভ্রু কুচঁকে কিছু একটা বলতে যাবো ঠিক তখনই আবারও দু’জনে একসাথে বলে উঠলেন-
.
না বইন! তোমার চোখ দুটি অতিব স্বচ্ছ!!
.
কথাটা বলে খিলখিল করে হেসে উঠলেন দু’জনে।একদম প্রাণবন্ত হাসি।।চাঁদের আলোই দু’জনকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে,,,এরা যেন কোন স্বর্গীয়দূত!!ওদের হাসিতে রেগেমেগে উঠে দাঁড়ালো চিত্রা।।কান্না কান্না ভাব নিয়ে বলে উঠলো-
.
দেখেছিস রোদ?উনারা কেমন মজা করছে আমায় নিয়ে….থাকবো না আমি,,এক্ষনি চলে যাবো।।
.
কথাটা বলেই চিত্রা হাঁটা দিলো সিড়ি ঘরের দিকে।আমি উঠে দাঁড়িয়ে বার কয়েক চিত্রাকে ডেকেই কোমরে হাত রেখে রাগী চোখে উনাদের দিকে তাকালাম। দুজনেই হাসি চেপে চুপ করে বসলেন।।শুভ্র ভাইয়া ভ্রু নাচিয়ে বলে উঠলেন-
.
কি??
.
চিত্রাকে ওভাবে বললেন কেন??
.
কি বললাম??(অবাক হয়ে)সাহেল??আমরা কি খারাপ কিছু বলেছি??
.
নাহ,,একদম না(মাথা নেড়ে)
.
দেখলে তো,, সাহেলও বলছে,,খারাপ কিছু বলি নি।।
.
আমি রাগী চোখে তাকাতেই সাহেল ভাইয়া বলে উঠলেন-
.
বুঝলি শুভ্র?আজকালকার জেনারেশনে ভালোর কোনো খাওয়া নেই।।এইযে সাধু ভাষায় কতো সুন্দর একটা প্রসংশা করলাম… বুঝলো?বুঝলো না…উল্টো দেখ কেমন রেগে রেগে তাকায়…
.
বোথ অফ ইউ আর জাস্ট ইম্পসিবল!!
.
কথাটা বলেই ঘুরে দাঁড়িয়ে হাঁটা দিলাম সিঁড়ির দিকে।।চিত্রাকে আটকাতে তো হবে!!আমি ঘুরে দাঁড়াতেই দু’জন আবারও খিলখিল করে হেসে উঠলেন।। আমি ভ্রু কুঁচকে ফিরে তাকাতেই ঠোঁটে আঙ্গুল চেপে চুপ হয়ে গেলেন দুজনই।।একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবারও হাঁটা দিলাম আমি।।সিঁড়ির দু’ধাপ পেড়োতেই আবারও কানে এলো তাদের প্রাণ খোলা হাসি।।দুটো আলাদা মানুষের মধ্যে এতো মিল কি করে হয় কে জানে??দুজনেই আস্ত শয়তান….একজন একটু চুপচাপ হলেও আরেকজন পুরাই রাক্ষস।। নিজের কষ্টকে এতো সহজে ভুলে গিয়ে কি বন্ধুর সাথে এভাবে গলা মিলিয়ে হাসা যায়??এই বন্ধুত্বটা যেনো অটুট থাকে সারাটা জীবন।।
.
#চলবে🍁
.
(❤
এই… এই টাকলা,,,আপনি আপনার এই হিরো মহোদয়কে বলে দিন।আমাকে যেনো যেতে দেওয়া হয়…নয়তো ভালো হবে না বলে দিচ্ছি!(আঙ্গুল উচিয়ে)
.
রোদেলার কথায় মুচকি হাসলো শুভ্র।।কোটটা খুলে পাশের সোফায় রেখে…শার্টের উপরের দুটো বাটন খুলে সোফায় বসতে বসতে বলে উঠলো সে-
.
সজিব?মিস রোদেলা কে বলুন ওমন একটা বাজে নিউজ কেন ছাপিয়েছেন উনি??কি চায় উনি?পুপালিরিটি?অর মানি??
.
ইয়েস স্যার!! ম্যাম স্যার বল..
.
শাট আপ…আমি বয়রা না কানে শুনি…(রাগী গলায়) এই যে মিস্টার পি.এ নায়ক সাহেবকে বলুন আমি এসব খবর টবর ছাপাই নি…আর ছাপালেই বা কি??সসত্যই তো ছিলো…
.
হোয়াট??সত্য??সজীব?
.
ইয়েস স্যার!
উনাকে বলুন… কি প্রোভ আছে উনার কাছে??আজাইরা!!
.
হোয়াট আজাইরা??আমার কাছে প্রোফ আছে…আপনি যে আপনার নিউ জিএফের সাথে প্রাইভেট টাইম কাটাচ্ছেন সেটা আমি জানি… আই উইল মেইক আ নিউজ অন ইট…
.
ইটস আ মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং মিস রোদেলা…উই ক্যান মেইক আ ডিল…আই উইল গিভ ইউ মানি ফর দেট…কতো টাকা চায় আপনার??(সানগ্লাস খুলতে খুলতে)
.
শুভ্রর কথায় ভ্রু কুঁচকে তাকালো রোদেলা।।চোখ-মুখ গরম করে বলে উঠলো সে-
.
আমাকে ঘোষ দেওয়া হচ্চে??ওহ মাই গড!! এতো বড় সাহস??একজন জার্নালিস্টের মেয়েকে ঘোষ দেওয়া হচ্ছে??লিসেন… আই ডোন্ট ওয়ান্ট ইউর মানি…ডাফার!!
.
এবার উঠে দাঁড়ালো শুভ্র…শার্টটা ঠিক করে পাশের টেবিল থেকে পানির গ্লাসটা তুলে নিয়ে বলে উঠলো-
.
দেন? হোয়াট ডু ইউ ওয়ান্ট??ডু ইউ ওয়ান্ট টু ম্যারি মি??
.
হোয়াট??বিয়ে আর আপনাকে??আস্তাগফিরুল্লাহ…এসব নায়ক টায়ক কে বিয়ে করার চেয়ে সুইসাইড করা বেটার।।অলওয়েজ হিরোয়িনদের সাথে জড়াজড়ি…চুম্মাচুম্মি ছিহ..ইয়াককক…
.
কথাটা বলেই চোখ মুখ কুঁচকে ফেললো রোদেলা যেনো কেউ করলার জুস খাইয়ে দিয়েছে তাকে।শুভ্র ভ্রু কুঁচকে তাকালো…তাকে নিয়ে কেউ এমন কিছু ভাবে চিন্তারও বাইরে ছিলো তার!!
.
#এক টুকরো মেঘ ও সে❤(খন্ডাংশ)