অন্ধপ্রেম

অন্ধপ্রেম !! Part- 15

শীতলের বিষয়টা অবাক লাগলো …
রাজ শুধু তাকিয়ে আছে …
ডক্টর বললো ….
_মিসেস রাজ আপনার কিছু টেষ্ট লিখে দিয়েছি …
মিঃ রাজ আপনি আপনার ওয়াইফের টেষ্ট করিয়ে নিবেন তাড়াতাড়ি …
ধারনা করছি আপনার ওয়াইফ প্রেগন্যান্ট …
ডক্টর চলে গেলো ফিস নিয়ে …
শীতল চমকে গেলো কথা শুনে ডক্টরের ..

.রাজও বেশ অবাক হয়ে আছে ..
রাজ ইজি চেয়ারে বসে বসে চিন্তা করছে …
রাজ্যের চিন্তা ভর করেছে তাকে ..
অন্যদিকে শীতল হঠাৎ বেশ খুশি খুশি অনুভব করলো …
সে ভাবছে যদি সে মা হয় তাহলে রাজ তাকে মেনে নিতে বাধ্য …
রাজও বাবা হবে ..প্রতিটা পারসন বাবা মা হতে চায় …
বাবা হওয়ার অনুভূতি রাজকে পাল্টে দিতে পারে ..
শীতলের ইচ্ছে করছে এখনি টেষ্ট করিয়ে নিশ্চিত হতে সে কি আধো মা হতে চলেছে নাকি ..
.
.
.
রাত 12 টা বাজে ..
শীতল খুশিতে ঘুমিয়ে আছে …
রাজ বেডে গিয়ে ঘুমন্ত শীতলকে দেখলো …
তারপর শীতলের পাশে ঘুমিয়ে পড়লো …
রাতে আর রাজ শীতলের কাছে গেলো না …শীতলকে বিরক্তও করলোনা …
শীতল ঘুমায়নি ..সে রাজের ওয়েট করছিলো …
রাজ ঘুমিয়েছে একটু নিশ্চিত হতেই শীতল তার দুষ্টামি শুরু করলো …
শীতল তার হা পা রাজের উপর ছূরে মারলো …
ইচ্ছে করে রাজ কে জরিয়ে ধরলো ….
রাজ সব বুঝতে পারছে সে কিছু বলছেনা ..
চুপচাপ শীতলের দুষ্টামি সহ্য করছে …
রাজ ভাবছে শীতল ঘুমের মধ্যে এমন করছে …

সকালে শীতলের ঘুম ভাঙতেই রাজকে পাশে দেখলোনা ..
রাজ আগেই উঠে পড়েছে …
শীতল খুশি মনে ওয়াশ রুমে গিয়ে শাওয়ার করে রুমে এসে দেখলো ব্রেকফাস্ট গুছিয়ে দিচ্ছে একটা সার্ভেন্ট …
.
.
.
সারভেন্ট চলে যাওয়ার সময় বললো …
_স্যার আপনার জন্য ব্রেকফাস্ট এখানে আনতে বলেছিলো ..আপনার কষ্ট করে নিচে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই …
.
.
.
শীতল ভাবছে প্রেগন্যান্সির জন্যই রাজ তার খেয়াল রাখতে শুরু করেছে ..
যাইহোক রাজ তাকে কিছু দিনের মধ্যে মেনেও নিবে …
.
.
.
শীতল নাশতা করতে বসলো …
সব খাবার গুলো বেশ স্বাস্থ্য সম্ময়…
কয়েক রকমের ফলও ছিলো …
.
.
.
রাজ রুমে এসে দেখলো শীতল নাশতা সেরে একেবারে শাড়ি পড়ে সেজেগুজে রেডি হয়ে বসে আছে …
.
.
.
_কি ব্যাপার তুমি এতো সকাল সকাল রেডি হয়েছো কেনো ?? কোথাও যাবে তুমি ??
_আমি তো আপনার জন্য বসে আছি ..
আজকেই টেষ্ট করাবো আমাদের …
রাজ চমকে গেলো ..
_আমাদের মানে ?? আমাকেও টেষ্ট করাতে হবে কি ..
বাবা হওয়ার জন্য আমাকেও টেষ্ট করতে হবে ??
_আরে না না ..
আমি সেটা বলিনি ..
আমি বলতে চেয়েছি আমার টেষ্ট করাতে হবে ..
আপনাকে তো আমার সাথে যেতে হবে …
.
.
.
শীতল ধরেই নিয়েছে সে মা হতে চলেছে যেটা রাজ তার চেহেরায় স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে …
.
.
_এখন টেষ্ট করাতে পারবোনা …
ঢাকা গিয়ে টেষ্ট করাবো ..
কাল সকালে রওনা হবে ..
প্ল্যানের টিকিট কেনা হয়ে গিয়েছে ..

.
শীতলের মন একটু খারাপ হলো …
ভেবেছিলো আজকেই টেষ্ট করিয়ে বসে থেকে রেজাল্ট আনবে …
.
রাজ হোটেলের বাহিরে ক্লাইন্টের সাথে ডিল করে সব কাজ গুছিয়ে নিচ্ছে ..
শীতল বারান্দায় বসে বসে পেটে হাত দিয়ে অনাগত বেবিকে ফিল করার চেষ্টা করছে ..
_ জানিস তোর বাবা তোর মাকে একটুও সহ্য করতে পারেনা ..
একটুও ভালোবাসেনা ..
কখনো ভালোবেসে শীতল বলে ডাকেনা ..কখনো ভালোবেসে কাছে টেনে আদর করেনা ..
তুই এলে তোর বাবা পাল্টে যাবে ..তোর মায়ের সব দুঃখ চলে যাবে ..
তুই তাড়াতাড়ি চলে আয় বাবা …
.
.
.
দুপুরে রাজ রুমে এসে শীতলের জন্য রুমেই খাবার অর্ডার করলো ..
শীতলের পছন্দের সব খাবার অর্ডার করেছে রাজ ..
চিংড়ির মালাইকারি ..
চিতল মাছের পেটি ..
এন্ড বিখ্যাত কাকড়া ভাজা ..
রাজ খোসা ছাড়িয়ে শীতলকে খাইয়ে দিচ্ছে ..
শীতল চেটে পুটে খাবারের থেকেই রাজের হাত খেলো ..
.
.
বিকালে রাজ শীতলকে নিয়ে শপিংয়ে গেলো ..
শীতলের পিরাপিরিতে রাজ যেতে বাধ্য হয়েছে ..
শীতল কালো শাড়ি পড়লো ..
কালো টিপ ..লাল চুরি আর কড়া লাল লিপস্টিক মাখলো ঠোটেঁ ..
চুল গুলো এলো মেলো করে ছড়িয়ে রাখলো শ্যাম্পু করে …
.
.
রাজও আজ ফরমাল ড্রেসআপ পড়েছে কোর্ট বাদ দিয়ে ..
কালো শার্ট ,প্যান্ট ..
কালো হ্যান্ড ওয়াচ ,কালো সুজ,, আর চুল গুলো জেল দিয়ে স্পাইক করেছে …
রাজের গায়ের রং বেশ ফর্সা ..সব মিলিয়ে রাজকে জাস্ট সেই লেভেলের হ্যান্ডসাম লাগছে …
রাজ ড্রাইভ করছে ..
শীতল বাহিরের দৃশ্য দেখছে আর রাজকে দেখছে ..
রাজকে আজ বেশি সুন্দর লাগছে …
রাজ একবারো শীতলকে লক্ষ্য করেনি ..
শীতল আর রাজ অবেক শপিং করলো …
শীতল সবার জন্য শপিং করলো ..
কাজলের জন্য করলো …
শীতল ঠিক করেছে ফিরে গিয়ে কাজলের রহস্য জানবে ..
.
.
.
শপিং মলের সব মেয়েরা রাজকে দেখে তাকিয়ে রইলো ..
সবাই সেলফির জন্য রাজকে কাকুতি মিনতি করলো ..
রাজ বেশ বিরক্ত হলো আর রেগেও গেলো …
রাজ রাগে ড্রাইভ করছে …
শীতল চুপচাপ বসে আছে ..
_আচ্ছা ঐ মেয়ে গুলোর সাথে একটু সেলফি তুললে কি হতো ..
আল্লাহ আপনাকে এতো হ্যান্ডসাম বানিয়েছে বলে এরকম দেমাগ দেখাবেন ..
শীতলের কথা শেষ হতেই রাজ ড্রাইভ থামালো রোডেত একপাশে ..
বেশ রাত হয়েছে ..
তবুও চাদেঁর আলোয় রাজের রাগী চেহেরা দেখতে পেলো শীতল ..
শীতল কিছু বলার আগেই রাজ তার ঠোটে নিজের ঠোট ডুবিয়ে দিলো …
বেশ জোরে জোরে রাজ শীতলকে ..
ঐ মেয়েগুলোর রাগ শীতলের উপর মেটালো রাজ …
.
.
.
রুমে এসে শীতল আয়নায় নিজের লাল মুখ দেখে অনেক রেগে গেলো ..
রাজের ফেসও লাল হয়ে আছে লিপস্টিকের দাগে …
.
.
.
সকালে ফ্লাইটে রাজ আর শীতল ঢাকায় চলে গেলো ..
.
.
.
শীতল বাহির থেকে কলিং বেল বাজাতেই একটা মেয়ে এসে দরজা খুলে দিলো ..
মেয়ে টাকে দেখে শীতল চমকে গেলো ..
তার ধারনা ছিলো সেই হচ্ছে বাংলাদেশের সব থেকে সুন্দরি …
বান্ধবিরা তাই বলতো অবশ্য ..
শীতল এই মেয়েকে দেখে মনে হলো বিশ্বের চারজন সুন্দরির মধ্যে এই মেয়েও আছে ..
হেলেন অব ট্রয় ,কুইন অব সেবা,,ক্লিয়োপ্লেট্রা আর এই মেয়ে ….
মুখে এক গাল হাসি নিয়ে মেয়েটা বললো ….
_বউরানি ভেতরে আসুন …
মেয়েটার কন্ঠে রুন রুন রুন আওয়াজ ভেসে উঠলো মধুর মতো ..
.
.
.
চলবে …….