অন্ধপ্রেম

অন্ধপ্রেম !! Part- 16

মেয়েটাকে এখন অচেনা লাগছে ..সম্ভবত স্কার্ফ পড়েছে মাথায় আর পরনে গ্রাউন পড়েছে হাটুর নিচ পর্রযন্ত প্রায় পায়ের গোড়ালির কিছুটা উপর পর্যন্ত ..
ঠোটেঁ হালকা সুগার লিপস্টিক দিয়েছে ,চোখে গাড় কাজল মেখেছে মেয়েটা ‌..
এগুলোর জন্য মেয়েটাকে চেনা যাচ্ছেনা …
.
.
মেয়েটার মুখে হাসি লেগে থাকে সব সময়…
মেয়েটা হাসি মুখ নিয়ে দরজায় লক করে বললো ..
_বউরানি ভেতরে আসতে পারি …
_হ্যাঁ অবশ্যই …
আপনাদের বাড়ি আর আপনি আসবেন তার জন্য আবার জিজ্ঞাস করতে হয় ..
_কারো ঘরে ঢুকতে নিলে লক করে বলে ঢুকতে হয় ..
ফিস ফিস করে কথাটা বলে হেসে দিলো হো হো করে ..
_আপনার নাম কি কাজল ??? কাজল ভ্রকুচকে বললো ..
_জি হ্যাঁ … আপনি আমাকে এতোদিন ধরে দেখেন নি তো তাই বলছেন আমার নাম কাজল কিনা ..
আমি সপ্ষ্টভাষি তাই আপনাকে বলি কেনো আপনার সাথে দেখা করতে আসিনি …
আসলে আমার ফ্রেন্ডস সার্কেলের সবাই বলতো আমি নাকি এশিয়ার সবচেয়ে সুন্দুরি নারী ..এতোদিন আমি এটাই ভাবতাম আমার মতো সুন্দরি কেউ নেই পুরো এশিয়াতে ..
বাট দাদা ভাইয়ের কাছে আপনার ছবি দেখে আমি চমকে গিয়েছিলাম বাবা বিকোজ আপনি আমার মতো একজন এশিয়া সুন্দরি …
আমার আপনাকে হিংসে হচ্ছিলো তাই আমি দেখা করিনি ..
আমার মতো সুন্দুরিকে আমি সহ্য করতে পারিনা এটা আমার এলার্জি …
বাট আপনাকে আমার ভালো লেগেছে খুব খুব বললো বিকোজ আপনি আমাদের রাজ দাদা ভাইয়ের মতো একটা চিতা বাঘের সাথে সংসার করছেন …
আপনাদের দেখে মনে হয় হেপি কাপল ..
এজন্যই তো আপনাকে একবারও বাবার বাড়ি যেতে দেয়নি দাদাভাই …
কথা গুলো মেয়েটা একধমে বলে হেসে দিলো আবারও হো হো করে ….
.
.
.
শীতলের মেয়েটাকে বেশ ভালো লাগলো ..
মেয়েটা এতো কথা বলতে পারে যে কথা শুনেই কেউ ওর প্রেমে পড়ে যাবে …
_আচ্ছা কাজল আপনি আমাকে আপনি করে বলছেন কেনো ?? আমি আপনার দাদা ভাইয়ের বউ বলে আপনার থেকে বেশি বয়স্ক নয় ..
_আপনিও তো আমায় আপনি করে বলছেন ..আমি আপনার সমবয়সি হবো ..
_ঠিক আছে এখন থেকে আমারা তুমি করে বলবো একে অপরকে …
_ঠিক আছে বউরানি …
আচ্ছা আমি এখন আসি ..
তুমি বরং দাদা ভাইয়ের জন্য ওয়েট করো …
_কেনো ?? তুমি কোথাও বের হবে ???
_ জি হ্যাঁ বের হবো ..
কথাটা বলেই কাজল মাথার স্কার্ফটা খুলে ফেললো …
রোদের আলোতে কাজলের চুল গুলো সোনালি রং ধারন করেছে …আর কাজলের মুখের হাসি যেনো মুক্তোর মতো ঝিলিক দিচ্ছে …
.
.
.
শীতলের কাজলকে খুব পছন্দ হলো …
শীতলের এখন আর একা এতো বাড়িতে থাকতে হবেনা …একজন সাথি হলো তার ..
যেমন তেমন সাথি না ..একেবারে তার প্রতিদন্দি …
.
.
.
রাত হয়েছে রাজ এখনো বাসায় আসেনি ..
সেই দুপুরে বাড়িতে দিয়ে শীতলকে না বলেই কোথায় যেন চলে গিয়েছে রাজ ..
শীতল ইজি চেয়ারে বসে পেটে হাত বুলাচ্ছে ..
সে ধরেই নিচ্ছে তার গর্ভে রাজের সন্তান এসেছে …
.
.
হঠাৎ রাজ রুমে এলো ..
দরজায় জোরে লক করে দিয়ে ওয়াস রুমে চলে গেলো রাজ ..
যাবার সময় শীতলকে একবার দেখলো রাজ ..
শীতল ইজি চেয়ার থেকে উঠে দাড়িয়ে রইলো রাজের আসার শব্দ শুনে ..
.
.
.
রাজ ওয়াস রুমে গিয়ে বুঝতে পারলো সে কোনো ড্রেস আনেনি …
এদিকে রাজ নিজের ভেজা কাপরও খুলে ফেলেছে …
রুমে শীতল আছে বলে ওয়াস রুম থেকে বেরুতে পারছেনা রাজ ..
শীতল না থাকলে রাজ এভাবেই বেরিয়ে পড়তো ..
.
.
_শীতল ডেস্ক থেকে আমার পোশাক দাও ..
আমি নিতে ভুলে গিয়েছি ..
প্রথম বার রাজ শীতলকে কোমল ভাবে তার কোনো কাজ করার কথা বললো শীতলকে ..
.
.
শীতল খুশি মনে ডেস্ক থেকর রাজের পোশাক বের করে কিছুক্ষন ঘ্রান নিলো ..
কারন এই পোশাক গুলোতে রাজের গায়ের অমায়িক গন্ধ লেগে আছে …
শীতল রাজের সাথে থাকতে থাকতে রাজের সব কিছুকেই ভালোবেসে ফেলেছে ..
রাজের সবকিছুই তার ভিষন রকম ভালো লাগে ..

….
….
শীতল পোশাক গুলো নিয়ে নক করলো ..
রাজ ডোর ওপেন করে ড্রেসের বদলে শীতলের হাত ধরে টান দিলো …
শীতল টাল সামলাতে না পেরে রাজের উপর পড়ে গেলো …
রাজ আর শীতল শাওয়ারের নিচে পড়ে আছে আর টপ টপ করে ঝর্নার পানি পড়ছে উপর থেকে …
শীতল পুরো কাক ভেজা হয়ে আছে …
রাজের গায়ের ছোয়ায় শীতলের শরীরির যেনো শিহরীত হচ্ছে বার বার ..
রাজ শীতলের একটু কাছে আসতেই শীতল রাজকে ধাক্কা মেরে দূরে ঠেলে দিয়ে উঠে পড়লো …
রাজ কিছুটা অপমান বোধ করলো ..
রাজ শীতলকে হেচকা টান দিয়ে কাছে এনে গলায় একটা কামড় মাড়লো ..
শীতল জোরে চিৎকার করতেই রাজ নিচের ঠোটঁ দিয়ে শীতলের ঠোটঁ আকড়ে ধরে চিৎকার থামালো …
শীতলের চোখ গুলো বড় বড় হয়ে গেলো …

শীতল এবার রাজের তোয়ালে ধরে টান দিলো ..
রাজ নিজেকে একবার অবজার্ভ করলো ..
রাজের গায়ে কিছুই ছিলোনা ..
শীতল কিছু সময় চুপ করে রাজকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত স্ক্যান করলো তারপর চোখ বন্ধ করে একটা চিৎকার দিয়ে বেরিয়ে এলো ওয়াস রুম থেকে …
শীতল রাজের ভয়ে একেবারে রুমের বাহিরে এসে পড়লো ডেস্ক থেকে একটা শাড়ি নিয়ে …
.
.
.
রাজ ভিষন রকম অপমান ফিল করলো শীতলের এমন ভিহেবে ..
শীতলকে উচিৎ শিক্ষা দিয়েই ছাড়বে রাজ …
যেনো এরকম মজা করতে না পারে রাজের সাথে …
শীতল দৌরে একটা রুমে ঢুকে ভেজা কাপড় পাল্টে ফেললো ..
শীতল কাপড় পাল্টে পেছনে তাকিয়ে চমকে গেলো …
কাজল ভ্র কুচকে শীতলের দিকে তাকিয়ে আছে ..
শীতল ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো …
.
.
.
_তুমি এভাবে কাপড় পাল্টালে কেনো ?? এতো রাতে গোসল ?? তোমার রুমের বাথরুমে কি আরশোলা আছে যে তুমি আমার রুমে চেন্জ করলে ..
_আসলে….আমি …
কাজল শীতলের এমন ভিহেবে হেসে বললো …
_তোমার মুখ দেখে মনে হচ্ছে তুমি আমার 11 নং প্রোপোজার …
আমার সেই প্রোপোজার ছেলেটা আমাকে দেখলেই কথা বলতে কেপে কেপে উঠে ভয়ে …
আর আমি সেই সুযোগে কথার জালে আটকে ফেলি তাকে …
যেমনটা এখন তোমাকে বললাম …
_ও কাজল ঢ্যাড়সের মতো হাসা বন্ধ করো তো …
আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম তোমার কথা শুনে ….
.
.
.
।কাজল শীতলের হাত ধরে টেনে ছাদে নিয়ে গেলো …
_তোমাকে একটা কথা বলি বউরানি ..
আগে বলো তোমার কোনো ছেলে ফ্রেন্ডস আছে …?? যে খুব ক্লোজজজজ ..
_না..তেমন ক্লোজজ না বাট মোটামোটো ..
কেনো বলোতো ???
_তুমি তো জানো না ..
আমার একটা ছেলে ফ্রেন্ড আমাকে আবেগে প্রোপজ করে ফেলে ছিলো ..
একটা চিঠিও লিখে ফেলে ছিলো …
চিঠিতে একটা খুব অসভ্য কথা লিখে ছিলো ।
আমি তো রেগে আগুন ..
_তুমি রেগে যাও কখনো ..
কত মিষ্টি তুমি ..
_উফফ ..বউরানি মাঝখানে কথা বলবেনা ..
আগে শোনো ..
_ঠিক আছে মুখে আঙুল দিলাম ..

_আমি চিঠি পড়ে ভিষন রেগে গেলাম আর লজ্জ্বাও পেলাম ..
আমি অনেক দিন ভার্সিটি যায়নি আর ওর সাথে কথাও বলিনি ..
তারপর ও আমাকে বার বার ফোন করে তবুও আমি রেগে রিসিভ করিনি ..
একদিন রিসিভ করে বসি আর ও আমার কাছে মাফ চায় ..
আমার মন বিশাল বড় তো তাই মাফ করে দিলাম …
বাট অনেক ঘুরিয়ে মাফ করেছি তাকে ..
_বুঝতে পারলাম বাট কি অসভ্য কথা বললো …
_ধ্যাত ..এই কথা তোমাকে বলা যাবেনা ..
তোমাকে তো দাদা ভাই এমন কথা বলেই সব সময় তাইনা …
কাজল আবার তার মোক্তোর হাসি হাসলো …
.
.
.
রাজ কফি খেয়ে রুমে চলে আসে …
রাজের কফির মগে একটু কফি পড়ে আছে যেটা বিড়াল শীতলের নজরে পড়লো ..
চাচা সোফায় বসে পেপার পড়ছে ..
খালা নিচে বসে তারকারি কুটছে ..
কাজল হাতে কালো নেলপলিশ দিচ্ছে ..
শীতল কিচেনে গিয়ে রাজের এটো কফি খেয়ে নিলো …
ইশশ রাজের মুখের কফি খেয়ে শীতলের সে কি আনন্দ ..
শীতলের কাজলের চোখে চোখ পড়তেই কাজল ভ্র কুচকালো …. ..
শীতল একটু চমকে গেলো ..
কাজল হেসে দিলো ..
শীতল ও হেসে রুমে গেলো ..
রুমে ঢুকতেই কেউ তাকে বেডের মধ্যে ফেলে দিয়ে তার উপর উঠে গেলো ..
_আমার তোয়ালে ধরেছিলে কেনো ?? তোমার কাছে আসলে আমাকে ইগনোর করো কেনো ???
এতো বড় সাহস তোমার আমায় ইগনোর করো ..
শীতলের ভয়ে প্রান শুকিয়ে গেলো …
_আসলে আমি ,,,,,
শীতল কিছু বলার আগেই রাজ বললো ..
_হুশশশ…
আমি বলবো তুমি শুনবে …
_জি হ্যাঁ …
_কাল ডক্টরের কাছে টেষ্ট করাতে নিয়ে যাবো ..
টেষ্ট যায় হোক তোমাকে সে অনুযায়ি কষ্ট দেবো ..
আমার সন্তান তোমার গর্ভে আছে বলে ভেবোনা সে তোমার হয়ে যাবে ..
আমার সন্তান তার বাবার মতোই হবে …
.
.
.
মাঝরাত রাজ ঘুমাচ্ছে …
শীতল জেগে আছে ..
টেষ্টের কথা ভাবছে সে ..
না জানি কি রেজাল্ট বের হবে ..
শীতল নিশ্চিত সে প্রেগন্যান্ট …
রাজের অংশ সে ধারন করেছে …
এটা ভেবেই শীতল ভিষন খুশি ফিল করছে …
.

শীতলের মনে একটাই গান বাজছে ….
.
Norani chehere yale due char mahibe Yale tu mere hone Yale ..
Dill yali Ke dill Ber Yale tu mere hone Yale ..
Are oh dewyane oh dewyane oii oii oii
Allha allha mere dil dorke allha allha baba tere nokhre to a toba toba shole borkhe ….
Norani chehere Yale ….
💔💔💔💔💔.
.
.
.
সকালে শীতলের ঘুম ভাঙতেই শীতল রাজকে দেখতে পেলোনা ..
শীতল একদিনও রাজকে ঘুম থেকে উঠে নিজের পাশে দেখতে পারেনা ..
রাজের ঘুমন্ত চেহেরা এখনো ভালোভাবে দেখেনি শীতল ….
শীতল শাড়ি পড়ে অভস্থ্য নয় তাই তার শাড়ি ঠিক থাকেনা কখনোই …
ইশশশ রাজ তাকে সকালের আলোয় এভাবে দেখে প্রতিদিন ..
রাজ ভাবে নিশ্চয় শীতল কত ব্যাহায়া …
.
.
.
চলবে………….💓💓💓💓