অন্ধপ্রেম !! Part- 05
শীতল শাওয়ারের নিচে বসে কাদছেঁ.
এই কান্না কেউ শুনতে পারছেনা .
শুধু শীতল আর আল্লাহ তায়ালা শুনছে .
শাওয়ার শেষে শীতল নামাজ পড়লো তারপর জায়নামাজে বসে মোনাজাত ধরে কান্নাকাটি করলো কতক্ষন .
.
.
.
শীতল কাদতেঁ কাদতেঁ জায়নামাজেই ঘুমিয়ে পড়লো .
যখন ঘুম ভাঙলো তখন সামনে সেই রান্নার মহিলাকে দেখতে পেলো .
_বউরানি ঘুম ভাঙলো আপনার ??
রাজ বাবা মনে হয় আপনাকে সারা রাত অনেক জ্বালিয়েছে তাইতো জায়নামাজে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তাইনা ???
.
.
.
_আসলে,,,,
_থাক থাক আর লজ্জা পেতে হবেনা .
এখন নিচে চলুন আপনার সংসার আপনি বুঝে নিন .
_আমার সংসার ??
কথাটা বলতে শীতলের গলায় বেধে গেলো ,,,
যার স্বামি এরকম হয় তার আবার সংসার ,,,
যে তাকে স্ত্রির সম্মান দেয়না তার সাথে তো আর যায়হোক সংসার করা যায়না ,,
_কি হলো বউরানি ??
শীতল নিজে অজান্তে কেদে দিলো ,,,
_আপনার বাড়ির কথা মনে পড়ছে নিশ্চয় ??
তাই কাদছেন ???
শীতল মাথা নাড়ালো .
_কাদবেন না বউরানি .
রাজ বাবা ভালো মানুষ .
তিনি আপনাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছে .
আপনাকে তিনি অনেক সুখে রাখবে দেখবেন ।
.
.
.
শীতল বললো ,,,
আমাকে আপনি তুমি করে বলবেন .
আমি আপনার মেয়ের বয়সি ,,
_আমিতো এই বাড়ির কাজের লোক ,,আমি করে ,
_যা বলেছি তাই করবেন প্লিজজজ .
আমার ভালো লাগবে ।
_ঠিক আছে বউরানি ,,
এখন চলো আমার সাথে ।
তোমার সংসার বুঝে নাও .
রাজ বাবা বাহিরে গিয়েছে .
_আর রাজের চাচা কোথায় গিয়েছে ??
_বাজারে গিয়েছে বাজার করতে আপনার থুরি থুরি তোমার জন্য ।
শীতল মহিলার কথা শুনে হেসে দিলো ,,,
মহিলাটা বেশ রসিক তা বেশ বুঝতে পারলো শীতল .
.
.
শীতল নিচে গিয়ে পুরো বাড়িটা দেখলো ,,
খুব সুন্দর করে বাড়িটা সাজানো .
রাজদের চয়েজ আছে বলতে হবে .
বাড়িটস জমিদার বাড়ির মতো .
আজকাল যুগে এমন বাড়ি পাওয়া বিরল .
_কি দেখছো বউরানি ??
শীতল তাকিয়ে দেখলো রাজের চাচা হাসি মুখে দাড়িয়ে আছে .
_বাড়িটা দেখছিলাম .
_রাজের দাদা এই বাড়িটা কিনে ছিলেন .
অনেকে বলেন বাড়ির মালিককে নাকি পুরো টাকা দেওয়া হয়নি .
অনেক দিন পর্যন্ত বাড়ির মালিক টাকার জন্য ঘুরেছে তবুও টাকা শোধ করা হয়নি .
সেই অবিষাপেই বোধয় রাজের দাদা আর বাবা অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন .
অনেকে এগুলো বলে ,,
.
.
.
শীতল মনে মনে ভাবলো রাজের জঘন্য লোক হওয়ার পেছনে নিশ্চয় বংশগত কারণ আছে .
যার গোড়া থেকে এমন তার তো এরকমই হওয়ার কথা .
সকালে শীতল খাবার খেলো না .
সে রুমে গিয়ে কয়েকবার নিজের ফোন থেকে বাড়িতে কল করলো বাট কেউ ফোন ধরলো না .
শীতলের কান্না করাতে ভিষন মাথা ব্যাথা করছে তাই সে বেডে বিশ্রাম নিচ্ছিলো .
.
.
.
কাজের খালা একটস প্লেটে করে নাশ্তা দিয়ে গিয়েছেন রুমে টেবিলের উপর .
শীতল না খেয়ে উপর হয়ে শুয়ে রইলো ,
রাজ না থাকাতে তার একটু শান্তি লাগছে .
রাজ থাকলেই ঝগড়া ঝাটি লেগেই থাকতো .
চোখটা যেই লেগেছে তখনি কারো ঠান্ডা হাতের স্পর্শ পেলো ..
এটা যে রাজের তা শীতলের বুঝতে বাকি রইলোনা .
_কি ব্যাপার অসময়ে ঘুমিয়ে আছো যে ??
_শীতল হাত সড়িয়ে বললো ,,
আমার ইচ্ছে তাতে আপনার বাবার কি ??
_জিনিস যখন আমার তাতে তো আমারই সব .
_জিনিস ?? কে জিনিস ??
_কেনো তুমি । আমার সামনে এতো সু্ন্দর একটা জিনিস দাড়িয়ে আছে আর তুমি বলছো কে জিনিস How funny
_What’s nonsense .How dare you call me things .
.
.
_উফফফ রাগলে তোমায় যা লাগে ডিয়ার .
তোমার রাগি ফেসের প্রেমে পড়ে গিয়েছি আমি .
আমি পুরো ফিদা তোমার উপর .
.
.
.
শীতল বড় বড় চোখ করে রাজের দিকে তাকালো .
_আরে বাবা তোমার বড় বড় চোখ দেখে তো আমি ভয় পেয়ে গেলাম .
শীতল কিছু বললো না .
সে রুমের বারান্দায় চলে গেলো .
.
অনেকক্ষন শীতল সেখানে দাড়িয়ে রইলো .
পুরো বাড়িটাকে দেখলো সে .
বিশাল প্লট নিয়ে বাড়িটা তৈরি হয়েছে .
দেয়াল গুলো বিশাল বড় .
এখনে দেয়াল টপকিয়ে বাহিরে যাওয়া যাবেনা .
_কি দেখছো ডিয়ার ??
দেয়াল টপকিয়ে বাহিরে বের হয়ে পালানোর কথা ভাবছো নাতো .
.
.
.
_আচমকা শীতলের মনের কথা বলাতে শীতল চমকে গেলো ।
আমি কি চোর যে পালাবো ??
_তাও তো ঠিক ।
ওখন থেকে পালতে গেলে তোমার এতো সু্ন্দর ফিগার থাকবেনা ডিয়ার ।
গায়ের হাড়গোড় সব ভেঙে গুরো হবে .
.
.
শীতল রাগে রুমে চলে এলো .
রাজের সাথে কথা বলতে তার ঘৃনা লাগে .
রমে এসে দেখে প্লেট খালি .
এদিকে শীতলের ক্ষিদে পেয়েছে খুব .
রাজের জন্য রাতে ঠিকমতো খাওয়া হয়নি তার .
_কি ভাবছো ??
প্লেটের খাবার গুলো আমি খেয়েছি ।
তুমি তো আমার টাকায় খাবার খাবেনা তাই আমিই খেলাম ।
টাকা রোজগার করতে কষ্ট হয় তাই নষ্ট করলাম না .
কথা গুলো বলেই রাজ হেসে দিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে সোফায় বসে পড়লো ।
.
.
.
শীতল আবার বারান্দায় গেলো .
সেখানে দাড়িয়ে থাকলো দুপুর পর্যন্ত ।
রাজের মুখ দেখার থেকে রোদে দাড়িয়ে থাকবে তবুও সেটা শান্তির হবে .
দুপুরে খাবার টেবিলে শীতল খাচ্ছে ,,
রাজও খাচ্ছে ,
শীতলের চিংড়ি খুব পছন্দ যেই চিংড়ির প্লেট টাচ করলো ঠিক তখনই রাজ প্লেটটা ছো মেরে নিয়ে গেলো নিজের কাছে .
তারপর গপগপ করে একাই সব চিংড়ি খেয়ে নিলো রাজ .
একবার শীতলের দিকে তাকালোনা পর্যন্ত .
.
.
.
শীতল রাগে ডাইনিং থেকে উঠে রুমে চলে এলো .
তার খব অপমান ফিল হলো .
সামান্য চিংড়ি সে খেতে পাড়লোনা জানোয়ারটার জন্য .
_কি হয়েছে ? এভাবে চলে এলে যে ??
_আমার ইচ্ছে ,,রাগে বললো কথাটা শীতল .
_তুমিই তো বললে আমার টাকায় খাবেনা তাইতো আমিই খেয়ে ফেললাম .
শীতল কিছু না বলেই চলে যেতে লাগলো ,,,
রাজ শীতলের হাত ধরে নিজে কাছে এনে কানে কানে বললো ,,,
তোমার গায়ের পারফিউম টা এখনো আমার নাকে লেগে আছে ডিয়ার .
শীতল চিমটি কেটে নিজেকে ছাড়াতে লাগলো বাট লাভ হলোনা .
_বৃথা চেষ্টা করোনা .
এই প্যাকেট টা নাও আর ওয়াসরুম থেকে পড়ে এসো .
তোমাকে এখনো মন ভরে দেখনি তাই আজ দেখবো .
শীতল প্যাকেটটা দূরে ছুরে মাড়লো ..
আপনার দেওয়া জিনস আমি নেবো না .
রাজ শীতলকে হঠাৎ কোলে তুলে নিয়ে ওয়াস রুমে গেলো .
তারপর শাওয়ার ছেড়ে দিয়ে শীতলকে ধরে রাখলো নিচে .
শীতল নিজেকে ছাড়াতে পারলোনা .
ভিজে পুরো কাক হয়ে গিয়েছে শীতল .
_এখন তোমার এই আমার দেওয়া ড্রেস পড়তেই হবে .
এটা ছাড়া তোমার কোনো অপশন নেই .
বাট আরেকটা অপশন আছে ,,কাপড় ছাড়াই বের হয়ে আসতে পারো .
আমরা আমারাই তো তাইনা .
কথা গুলো বলেই রাজ একটু হেসে শীতলকে ছেড়ে চলে এলো .
.
.
.
শীতলের ঠান্ডা লাগছে তাই সে প্যাকেট টা ওপেন করলো ..
ড্রেস টা দেখে সে অবাক হয়ে গেলো ,
একটা নাইট গ্রাউন সাদা ,,পুরোটাই সফ্ট জর্জেট ..
এটা পড়া আর না পড়া একই কথা .
শীতল এটা কোনো ভাবেই পড়বেনা ঠিক করলো .
নেক্ষন পর রাজ ডোর নক করলো ,,,
_কোথায় ডিয়ার তুমি ??
আমার হেল্প লাগবে ??
আমি কিন্ত দুইপায়ে দাড়িয়ে আছি হেল্পের জন্য ।
রাজ বারে বারে জোরে জোরে ধাক্কা দিচ্ছে ,,,
_শীতল ডোর ওপেন করো ??
না হলে তোমাকে আস্তো রাখবোনা ।
আমি ডোর ওপেন করলে তোমার কি অবস্থা করবো সেটা ভাবতেও পারবেনা .
ভালোই ভালোই চলে এসো .
রাজ জোরে চিৎকার করছে ,,
শীতল এবার প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেলো ,,
ডোর ওপেন করলেই রাজ তাকে জবাই করবে এতে সন্দেহ নেই .
শীতল আল্লাহর নাম নিচ্ছে আর কান্না করছে ,,,
.
.
.
চলবে,,,,💔💔💔💔💔