Psycho is Back ! Season- 2 ! Part- 23
বারিশ এবার উঠে আমার সামনে এসে দাড়ালো। আমি ভয়ে দু কদম পিছিয়ে যেতেই সে আমার বাহু চেঁপে ধরে বলে লাগে,,
—কোনো ভদ্র মেয়ে এত রাতে বাড়ি ফিরে?
আমি তার হাত ছাড়াতে ছাড়তে বললাম,
—শেষ হতে দেরি হয়েছে।রিয়ান ভাইয়াও ছিল।
বারিশ আমাকে ঠাসস করে চর মেরে দেয়।আমি গালে হাত দিয়ে তাকিয়ে আছি বারিশের দিক।চোখ দিয়ে দু ফোটা পানি পরতে লাগলো আমার।তখনি বারিশ আমাকে ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে বলতে লাগে,
—-এসব কত দিন ধরে চলছে বল..!
আমি অবাক হয়ে বললাম,,
—-কি সব?
বারিশ আবার ধাক্কা মারে। আমি দেয়ালের সাথে বাড়ি খাই। তখনি সে আমার কাছে এসে গাল চেপে ধরে বলতে লাগে,
—অভিনয়ত ভালই জানিস দেখছি? তুই কি ভাবিসরে আমাকে ধোকা দিবি? রাত বিরাতে রঙোলিলা করবি? আর আমি টের পাবো না??
আমি বারিশের হাত গাল থেকে ছাড়িয়ে চিল্লিয়ে বলতে লাগি,,
—-কি যাতা বলে যাচ্ছেন আপনি??
এবার বারিশ আমার চুলের মুঠি শক্ত করে ধরে বলতে লাগে,,
—-একদম চিল্লাবি না।কণ্ঠনালী ছিড়ে ফেলবো তোর?ছাড় দিয়েছি বলে যা ইচ্ছা করে বেড়াবি..!
আমি এবার ব্যথায় কান্না করে বললাম,
—আমি কী করেছি বারিশ? প্লীজ আমায় ছেড়ে দিন কষ্ট হচ্ছে আমার।
বারিশ এবার আরো জোড়ে টেনে ধরে বলল,
—-লাগুক ব্যথা। লাগার জন্যই ধরেছি তোরে। আরে তোরে কতটা ভালবসা দিয়েছি আমি।আর তুই অন্য পুরুশের সাথে ঢলাঢলি করবি আমি বুঝতে পারবো না ভেবেছিস?
—-আমি কিছু করি প্লীজ বারিশ আমায় ছাড়েন।
—-কিছু করিস নি না? তো টিনার পার্টিতে ওই ছেলের হাতে হাত ধরে বসেছিলিস কেন? সে তোকে কি বলছিল, আমাকে ছেড়ে দিতে, এত সাহস তোর? আমাকে ছেড়ে দিবি?
—-কি বলছেন আপনি? ও তো আমার ফ্রেন্ড ছিল। ও মাকে লাইক করতো ছোট থেকেই, আমি শুধু তাকে বুঝাচ্ছিলাম লাইফে মুভড ওন করতে..!
—-আচ্ছা তাই নাকি তুই বড় এডভাইস্যার হয়েগেছিস হুম।
বলে আরো জোরে টান দিল চুল।
ব্যথায় কুকিয়ে উঠছি বার বার।
তখন বারিশ আবার বলে,
—-আচ্ছা ঠিক আছে মানলাম তুই ধোয়া তুলশী পাতা। তো মাত্র নীচে কি হলো? ও তোকে জড়িয়ে ধরলো..!আর তুই কোনো চুপ করে ছিল কেন বল? কি হলো বল?
আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি আমি।শুধু নিরবে চোখের পানি ফেলছি..!
তখন বারিশ আবার বলল,
—-ওই এখন কেন চুপ কেন বল? কি হলো বলিস না কেন??
লাষ্ট কথা গুলো ধমকের সুরে বলতে লাগে বারিশ, কেঁপে উঠি আমি। আর কাঁদতে কাঁদতে বলি,
—-বিশ্বাস করেন বারিশ আপনি যা ভাবচ্ছেন সব ভুল আমি কিছু করেনি।
—-আমি যা দেখেছি সব ভুল হুম?
—-কখনো কখনো চোখের দেখা ভুল থাকে বারিশ!
—-ওহো তাই? তুই রঙ লিলা করবি রাত বিরাতে আর আমি দেখলেই দোষ। এই সত্যি করে বলতো? এই যে দিন রাত ইউসুফ ইউসুফ করতিস? এত ভালবাসার তবজি জবতিস গেল কই সব? আমার টা নাহ বাদ দিলাম। কই গেল সেই সতী, সাবিত্রী গিরি। হুম বল..! দাঁতে দাঁত চেপে বলল কথা গুলো বারিশ।
—-প্লিজ বারিশ বিলিভ মি?
—-তোকে বিলিভ করবো?আরো?
আমি এবার ফুফাতে ফুফাতে বললাম,
—-আমার কথা বিশ্বাস করছেন না তো। আপনি আমি আমি আশিকে কল করছি তাকে জিগ্যেস করে দেখুন।
বারিশ এবার আমায় ছেড়ে সোফায় গিয়ে বসে পরলো পা দুটো টেবিলের উপর দিয়ে, তখন বলল,
—-কর ফোন দেখি তোর ভাতার কি বলে?
বারিশের কথা, ব্যবহার শোনে বুক ফেঁটে যাচ্ছে আমার।কিভাবে তার ভালবাসাকে সে অবিশ্বাস করতে পারে।আরিশ আবার ধমক দিয়ে বলে,
—কি হলো দাড়িয়ে আছিস কেন? কল দে?
আমি কাঁপা কাঁপা হাতে কল দেই আশিক কে..!
কিছুক্ষণ কল হতেই আরিশ বলল,
—লোউডস্পিকার ওন কর?
আমি তাই করলাম।ওপাশ থেকে আশিক বলতে লাগে,,
—-জান কি হয়েছে? মিস করছিলে বুঝি? মাত্রই না আসলাম।
আমি আশিকের কথা অাকাশ থেকে পরলাম। কি বলছে এসব ওই। আমি ইউসুফের দিক তাকালাম সে চোখ মুখ শক্ত করে বসে আছে।আমি সাথে সাথে বললাম,,
—-কি বলছো এসব আশিক? মাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি?
—-ওহো সরি? তোমার ওই তার ছিড়া বড় টা বুঝি আশেপাশে আগে বলবা না।
—-আশিক মিথ্যা কেন বলছো??
—-আরে মিথ্যা কেন বলব?আর তুমি কাঁদছো কেন? ওই সাইকো কিছু বলেছে জান? কতবার বললাম চলে এসে আমার কাছে? কিন্তু তুমি..! যেহেতু কিছু দিন পর চলে আসবেই তো আজই এসে পর? জানো তোমার সাথে রাত কাঁটানোর পর আর একা থাকতে ইচ্ছে হয় না আমার..!!
—–কি বলছো তুমি আশিক এসব? তোমার মিথ্যা কথার জন্য আমার সংসার ভেঙ্গে যাবে?
—–শুন তুমি এত অভিনয় করতে পারো? কি বলবো? বুঝি না কখনো কোন চরিত্রে থাকো? তুমি নিজেই তো ওকে ডিভোর্স দিবে বলে ছিল। আর এখন..! যাই হোক আমি আর ওয়েট করতে পারছি না প্লীজ বেবী তাড়াতড়ি চলে আসোম কত দিন তোমার সাথে একান্ত সময় কাটাই না। উফ..! এখনো আমাদের সেই ফাস্ট নাইটের কথা মনে হলেই মরীরে আলাদা শিহরন দিয়ে উঠে, তোমার সেই পায়ের তিলটা উফ মাথা নষ্ট করে…!
আর কিছু বলার আগে বারিশ ফোন নিয়ে আছার মারে। সাথে সাথে দু খন্ড হয়ে যায়। আমি ভয়ে ভয়ে বারিশের দিকে তাকাই। বারিশ আমার দিকে ভয়ঙ্কর ভাবে তাকিয়ে আছে চোখ গুলো লাল হয়ে আছে। ঘারের আর মাথার রগ ফোলে গেছে। সে এবার শীতল কন্ঠে বলে উঠে,
—-তো এই কারনে আমার কাছে আসি না তুই? বলে আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো। আমি পিছাতে পিছাতে বললাম,
—-বিশ্বাস করুন বারিশ আশক সব মিথ্যা বলছে।
—-তুই সত্যবাদী তাই না? তাহলে তোর তিলের খবর ওই কেমনে জানে?
আমি কি বলবো বুঝতে পারছিনা। আরিশের এই ভয়ানক রূপ দেখে ভয়ে হাত পা কাঁপছে। জানা হয়ে গেছে আজ আমার রক্ষে নেই। আমি তাই পিছনে ঘুরে দরজার দিকে দৌড় দেই।তখনি বারিশ হেচকা টান মেরে ফ্লোরে ফেলে বেল্ট খুলে নেয়।
আমটি কাঁদতে কাঁদতে বলি,
—-বারিশ আমাকে ছেড়ে দিন। বারিশ আহ্.!
বারিশ এবার বেল্ট দিয়ে মারতে লাগলো আমাকে।
আমি ব্যথা কুকিয়ে উঠতে লাগলাম। আর বলে যাচ্ছি,,
—-প্লীজ ছেড়ে দিন বারিশ। আমি কিছু করি নি..!
কিন্তু বারিশের কানে যেন যাচ্ছেই না।
সে মেরেই যাচ্ছে।
বারিশ মারছে আর বলছে,
—-তোকে মনের মাঝে জায়গা দিয়েছি আর তুই?
তুই আজ আমার সব বিশ্বাস ভেঙ্গে দিলে?আজকের পর থেকে আমার থেকে মুক্তি পাওয়া চিন্তা ছেরে দে।তুই আমার কলিজা টুকরা টুকরা করে দিলি।এই জন্য তুই কখনও আপন করে নিতিস না..! নাহহহহহ!
বারিশ এবার বেল্ট ফালিয়ে আমাকে টেনে তুলল। আর জড়িয়ে ধরে কাঁদে দিল। আর বলল,
—-বাবুইপাখি কেন ঠাকালি আমায়?? কেন??
আমি কিছু বলব সে ক্ষমতা আমার নেই। শরীরের শক্তি নেই..!আমি লেপ্টে আছি। আর বুলি আওড়াচ্ছি। আমি কিছু করিনি বারিশ।বারিশ আমাকে ধাক্কা দিয়ে বের হয়ে যায়। আমার সারা শরীর সহ্য যন্ত্রনা করছে। অনেক জায়গা কেঁটেও গেছে।ধীরে ধীরে চোখ বুঝে আসলো আমার।
এসব কিছু বাহির থেকে ফুপি দেখে মিটমিট করে হাসচ্ছে।যাক আজ তার শান্তি লাগচ্ছে।সম্পর্কের মাঝে যখন কোনো তৃতীয় ঢুকে যায়।তখনি সম্পর্কে ফাঁটল ধরতে শুরু করে।আর সন্দেহ যখন সম্পর্কে ঢুকে যায়, তখন সেই সম্পর্টা ভেঙ্গে গুড়ো করে দেয়।প্রতিটি মানুষের লাইফে একটি হলেও ভিলেন থাকেই। হোক গল্প, কাহিনীতে, বা রিয়াল লাইফে।
এই কাজ গুলোই বেশীর ভাগ সময় আপন মানুষ গুলোই করে থাকে।তারা যেন এ সকল কাজে পৈশাচিক আনন্দ পেয়ে থাকেন।
চলবে,