Psycho is Back

Psycho is Back ! Season- 2 ! Part- 24

সেদিনের পর বারিশ আর বাসায় ফিরেনি। অনেক ফোন করে তাকে পাচ্ছিল না। দাদু কল দিলেও বন্ধ পেত। তার নিউ পি এ এসে অবশ্য বলে গেছেন তিনি দেশের বাহিরে চলে গেছেন।শুনে বুক ফেটে যাচ্ছিল আমার। বারিশ কিভাবে ভুল বুঝতে পারে আমায়?আমি সত্যিই খারাপ…!তাইতো কারো ভালবাসা কপালে জোটে না আমার। এসব ভেবেই কান্না করছি হাটুতে মুখ গুজে।কিছু ভাল লাগচ্ছে না আমার।তখনি হুট করে জেনি আর ফুপি এসে ঢুকেন ঘরে।
আমি চোখ মুছে তাকাতেই জেনি বলল,
—আহারে! জামাই ছেড়ে চলে গেল?
আমি তার কথা বুঝতে না পেরে তাকালাম তার দিক..! সে হা হা করে হেসে বলল,
—-নাদান বাচ্চা এখনো বুঝে না..!
—-কি বলতে চাইছেন?
তখন ফুপি বললেন,
—-তুই এখনো এখানে পরে আছিস কি জন্য? আজই রুম খালি করবি..!
—-কি সব বলছেন? আমি কেন রুম খালি করবো এটা আমার স্বামীর রুম।
তখনি জেনি এসে আমার গাল চেপে দাঁত কিড়মিড় করে বলল,
—-এটা বারিশের ঘর..! তোর স্বামীর না।।
আমি ছাড়িয়ে তাকে বললাম,
—-এটা কি ধরনের অসভ্যতা?
ফুপি এসে আমার চুলে মুঠি ধরে বলল,
—এখনো সভ্যতা দেখাচ্ছি শুকুর কর..!
—-আপনারা এমন কেন করছেন?
জেনি বলল,
—-তুই আমার ভালবাসা করে নিবি আর আমি চুপ করে থাকবো ভেবেছিস??
—-কি বলতে চাইছেন?
ফুপি শয়তানী হাসি দিয়ে বলল,
—জেনি কি বলিস রহস্য খুলে দেই?
জেনি মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিতেই বলতে লাগেন ফুপি,,
—-শুন তাহলে।আশিক জেনির চাচাতো ভাই। সেদিন যা হয়েছে সব আমাদের প্লেন ছিল।
আমি তাদের কথায় হতবাক হয়ে গেলাম।আর চিল্লিয়ে বললাম,
—-এ সব কেন করলেন আপনারা?
জেনি তেড়ে এসে বলল,
—-কেন করবো না? তুই আমার ভালবাসা, আমার স্বপ্ন আমার রাজত্ব কেড়ে নিয়েছিস তোকে ছেড়ে দিব কিভাবে ভাবলি?
আমি অবাক হয়ে বললাম,
—-মানে…!
ফুপি ছল ছল চোখে বলল,
—-বারিশকে মেরে ফেলার পর ভেবেছি, এবার হয়তো আমার রিয়ান এই বিরাট অট্টালিকার রাজা হবে কিন্তু বাবা কই থেকে এ ছেলেকে নিয়ে আসলো বারিশ বানিয়ে। তখন সব স্বপ্নে ফাঁটল ধরলো। তখন আবার প্লেন করি জেনিকে দিয়ে বারিশকে প্রেমের ফাঁদে ফালতে চাই।তাও হলো না নিয়ে আসলো তোকে..!
আমি তাদের কথা শুনে কি বলবো বুঝতেই পারছি না। সম্পত্তির লোভে মানুষ কত খারাপ হতে পারে। আমার চোখ থেকে জল গড়িয়ে পরছে।যাদের বারিশ এতটা আপন ভাবছে, তারা শুধুই তাকে স্বার্থপরতার জন্য ব্যবহার করে চলেছে।
তখনি জেনি বলে উঠে,
—-কিছু দিন আগে আশিকের সাথে কথা হয়। ওই বাসায় তোর কথা বলে। ছবি দেখায়। দেন আমরা প্লেন করি।তোকে ফাঁদে ফেলি। আশিক তোকে পাওযার জন্য পাগল হয়েছে।তাই সেই পাগলামো কাজে লাগিয়ে তোকে বারিশের লাইফ থেকে বের করে দি..!
আমি এবার রাগে বলি,
—-সে তোমাদের বারিশ না আমার ইউসুফ। সে তোমাদের কাউকে ছাড়বে না।
জেনি আর ফুপি ঘর ফাটানো হাসি দিয়ে বলল,
—-তাই নাকি। তা কে বলবে?
—-আমি বলবো?
—-ও মা..! আন্টি আমার তো ভয় করছে খুব ভয়..! বারিশ যদি আমায় মেরে দেয়?? বলে আমার হাসতে লাগলো।
আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না। ভাষা যেন হারিয়ে ফেলছি।তখনি দাদু এসে বলল,
—-তোমরা তোমরা আমার দাদু ভাইয়াকে মেরে ছিলে। আমি তোমাদের কাউকে ছাড়বো না বলে বের হযে গেলেন দাদু।তখনি ফুপি বলল,
—-জেনি বাবাকে থামা নয়তো সব খেলা শেষ করে দিবে।
তখনি জেনি দৌড়ে যেতে নেয় আমি পথ আটকাই।তখনি ফুপি এসে চুল টেনে হিচরে খাটে ফেলে দেয়। আমি খাটের কিনারায় গিয়ে বারি খাই।আর জেনি দৌড়ে গিয়ে দাদুকে ধরে বলল,
—-উফ। বুড়ো হয়েছিস কিন্তু পা দুটোর শক্তি কমে নি হুম?
বলে ধাক্কা মেরে সিড়ি থেকে ফেলে দেয়। আর বলতে লাগে,
—-নে এবার সারা জীবনের জন্য শক্তি হারিয়ে যাবে।
আমি রুম থেকে দাদুর চিৎকার শুনে দৌড়ে বের হয়ে আসি। দেখি দাদু নিচে পরে ছটফট করছে।
—-দাদু..!বলে চিৎকার করে আমি কাছে যাতেই তার আগেই ফুপি আমাকে টেনে হিচড়ে তার কাছে নিয়ে আসেন।আমি কাঁদতে কাঁদতে বললাম,
—-ফুপি দাদুকে হাসপাতালে নিতে হবে প্লীজ ফুপি উনি তো আপনার বাবা। উনাকে বাচ্চান।
ফুপি হেচকি দিয়ে হাসতে হাসতে বললেন,
—-উনি আমার সৎ বাবা। মরলেও আমার কিছু যায় আসে না।
আমি অবাক হলাম।
—-প্লীজ ফুপি দাদুকে বাঁচান। এতটা নিষ্ঠুর হোয়েন না।মানবাতা বলে কিছু তো আছে?
—-এক শর্তে?
আমি চোখ মুছে বললাম,
—-কি?
—-এখাাে সাইন কর..! একটি কাগজ এগিয়ে দিয়ে।
আমি কাগজ দেখে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলি,
—-এটাতো ডিভোর্স পেপার?
জেনি বলল,
—-হে। এখন সাইন কর। আর বিদেয় হয়। যদি এই বুড়োকে বাঁচাতে চাস।
দাদু মৃদু আওয়াজে অনেক কষ্টে বলল,
—দাদু ভাই সাইন করিস না।
আমি দাদুর দিকে তাকালাম,
দাদুর মাথা ফেটে রক্ত ফ্লোর ভরে যাচ্ছে। কষ্ট লাগছে অনেক।তখন ফুপি বলল,
—-উনার হাতে বেশি সময় নেই। সাইন কর নয়তো জেনি রান্না ঘর থেকে শিল নিয়ে আয়। মাথা এক কেঁচা মারলেই শেষ।
এমন কথায় আমি আত্মকে উঠলাম।
জেনি সাথে সাথে শিল নিয়ে এলো।
ফুপি বলল,
—তিন পর্যন্ত কাউন্ট করব…! তার মাঝে সাইন না করলে তোর দাদু ইদুর, চিকার খাবার হবে।
আমি কি করবো বুঝতে পারছি না। এক দিক আমার ভালবাসা অন্য দিকে একটি প্রাণ। আমি দাদুর দিকে অসহায়ের মতো চেয়ে রইলাম। দাদু ব্যথায় কাতরাচ্ছে। তখনি ফুপি কাউন্ট করতে লাগে।তিন বলার সাথে সাথে জেনি শিল দিয়ে কেঁচা দিতে নেয়।
তখনি আমি চিৎকার করি..!
—নাহহহহ। আমি সাইন করবো। সাইন করবো।
ফুপি মুচকি হেসে বলল,
—-নেও আমার আদরের বউ মা সাইন কর..!
আমি সাইন করে দিলাম।দাদু আমাকে মাথা নাড়িয়ে বার বার না করে যাচ্ছিল।আমি কান্না করতে করতে সাইন করে দিলাম। তখন জেনি আমাকে বাসা থেকে বের করে দেয়।
চলবে,