The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 81
★★★★
আরমান মাহবুব ঘরে ঢুকতেই আর্ভিন থামালো ওনাকে।ওর চেহারায় তীব্র রাগ দেখা যাচ্ছে।আরমান মাহবুব ছেলেকে জড়িয়ে ধরতে নিলে আর্ভিন ওনাকে সরালো।
.
.
-Don’t Touch me.
-আর্ভিন আমি তোর বাবা।
-বাবা!!!ছিঃ প্লিজ নিজেকে বাবা বলে।বাবা জাতিকে অপমান করবেননা।কেন এলেন এখানে?চিৎকার করে উঠে আর্ভিন।
-বাবা আর্ভিন আমাকে মাফ করে দে। আমার ভুল হয়ে গেছে বাবা।
-মিথ্যা মাফ চাওয়া বন্ধ করুন মিঃ আরমান মাহবুব।গলা ফাঁটিয়ে চিৎকার করে আর্ভিন।
-মিথ্যা না বাবা।আমি আমার ভুল বুঝতে পারছি।আমি আমার সন্তানকে ফিরে পেতে চাই আর্ভিন।
-কখনোনা।চলে যান এখান থেকে।
.
.
আরমান মাহবুব আরাবীর কাছে এসে দাঁড়িয়ে হাত জোড় করে।আরাবী অন্যদিকে তাকায়।এ লোক এভাবে পাল্টে গেলো কিভাবে? ভাবছে আরাবী।লোকটা কাঁদছে ও।মিথ্যা কাঁদতে পারে কেউ?আরাবীর খুব অস্বস্তি অনুভব হচ্ছে।এতো বয়স্ক লোক এভাবে ওর সামনে হাত জোড় করে আছে।
.
.
-বৌ মা তুই মাফ করে দে।তোর সাথে বড় অপরাধ করেছিলাম।মাফ পাওয়ার যোগ্য না আমি।
.
.
আরাবী আরমান মাহবুবের দিকে তাকিয়ে আর্ভিনের দিকে তাকায়।আর্ভিন রাগী চোখে বাবাকে দেখছে।
.
.
-আর্ভিন আমার সাথে একটু আসো তো।
-ওকে চলো।
.
.
আরমান মাহবুবের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আরাবীর সাথে যেতে শুরু করে আর্ভিন।আরাবী আর্ভিনকে স্টাডিরুমে নিয়ে এলো।
আর্ভিন রাগে গিজগিজ করছে।
.
.
-আর্ভিন ওনাকে মাফ করে দাও?
-তুমি পাগল আরাবী?বেশ জোরেই বলল আর্ভিন।
-শশশ আস্তে আর্ভিন।যতই হোক ওনি তোমার বাবা।ভুল হয়ে গেছে ওনার।
-আরাবী এতো সহজে ওনাকে বিলিভ করছো কিভাবে?এলোক দুনিয়ার লোভী।সে এতো সহজে নত হবার নয়।
-দেখো যাই করেছে ভুল করেছে।এখন ওনি ওনার অপরাধ বুঝতে পেরেছে।তুমি ওনার একমাত্র ছেলে।এই বয়সে বাবা মা তাদের সন্তানের যত্ন সেবা আশা করে।সে যতোই অপরাধ করুক সে বাবা।প্লিজ মাফ করে দাও।
-আরাবী বুঝতে পারছোনা তুমি।
-আর্ভিন তুমি বুঝতে পারছোনা। ওনি প্রায়শচিত্ত করছেন।প্লিজ মাফ করে দিন।
.
.
আর্ভিন ধপ করে চেয়ারে বসে পড়লো।আরাবী পাশের চেয়ারে বসলো।আর্ভিনের হাতের ওপর হাত রাখে।আর্ভিন আরাবীর দিকে তাকায়।
.
.
-ভেবে বলো আরাবী।আমার ভালো মনে হচ্ছেনা।
-আমরা কেয়ারফুল থাকবো আর্ভিন।ওনি বয়স্ক মানুষ এভাবে হাতজোড় করছে ভালো লাগছেনা আমার।তোমার বাবা সে।তোমার দায়িত্ব ওনাকে ঘরে ফিরিয়ে আনা।প্লিজ না করোনা।
-আমার সময় চাই।
-আচ্ছা ঠিক আছে।ওনাকে বসাই আমি।তুমি চিন্তা করো।
.
.
কথাটা বলে উঠে দাঁড়ায় আরাবী।তারপর বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।এদিকে ইয়ারাবী যোগাযোগ বন্ধ করে রেখেছে আরাভের সাথে।আরাভ বারবার কল দিচ্ছিলো।এক পর্যায়ে ইয়ারাবী ফোন বন্ধ করে দিলো।আরাভ আর পারছেনা নিতে।ইয়ারাবী তো ওর অভ্যাসে পরিনত হয়ে গেছে।এই মেয়েটা বুঝেনা ওকে বুকে না নিলে আরাভের ঘুম হয়না?অফিসে যাওয়ার সময় ওর কপালে ছোট্ট চুমু না খেলে ওর সময় টা ভালো কাঁটেনা।ঘরে ফিরে ওকে দেখলে সকল ক্লান্তি দূর হয়ে যায়।কি করে থাকবে ও?ইয়ারাবীর পাগলামী মাখা ভালোবাসা গুলো ওকে কষ্ট দিচ্ছে বড্ড।আয়রানার কথা ও বড্ড মনে পড়ছে।বাচ্চাটা ওকে ছাড়া থাকবে কি করে?আরাভ পাগল হয়ে যাচ্ছে।কিছুই ভালো লাগছেনা।কি করে থাকবে ও এদের ছাড়া?চোখজোড়া ভরে আসে আরাভের।সারাটা রাত নির্ঘুম কাঁটিয়ে দিলো ও।প্রথম তিনচারদিন অফিসে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে আরাভ।
এদিকে ইয়ারাবী চাকরি খুঁজছে।কয়েকজায়গায় ইন্টারভিউ দিয়ে এসেছে ও।তবে এখনো এপয়েন্টমেন্ট লেটার পায়নি ও।তবে হাল ছাড়ছেনা ও।চাকরি খুঁজা জারি রেখেছে।ব্রাদার্স কোম্পানী লিমিটেডে ইন্টারভিউ আছে আজ।এ কয়েকদিন বাচ্চাটা খুব কান্না করেছে।খাওয়াতে চাইলে ও খায়না।পেট ব্যাথা এমনকি অন্য কোন সমস্যা ও নেই।তারপর ও শুধু কেঁদে উঠে।তবে একটা আশ্চর্যের ব্যাপার হলো কান্না করে যখন কলিংবেল বাজলে কিংবা আশেপাশে দাদার কথা না শুনলে।ইয়ারাবী ব্যাপারটা বুঝেই রোয়েন কে কল দিলো।পুরো কাহিনী বলার পর রোয়েন ভিডিও কল দিলো।বাবুর সামনে দাদাকে দেখাতেই কান্না বন্ধ হয়ে গেলো ওর হাত পা ছুড়ে কোলে উঠতে চাইছে ও।মুখে হাসি ওর।
.
.
-দাদুর কোলে আসবা?
.
.
বাবু অস্ফুট শব্দে কি যেন বুঝাতে চাইছে।
.
.
-ইয়ারাবী কবে আসবি তোরা?
-বাবা আরো কয়েকটা দিন থাকি?
-অবশ্যই কিন্তু ওকে খুব মনে পড়ছে রে।আরাভটা ও কেমন জানি হয়ে গেছে অফিসে ও যায়না।
.
.
ইয়ারাবী নিশ্চুপ।রোয়েন আবার ও জানায় ফ্রি হয়ে নাতনীকে দেখে যাবে ও।ইয়ারাবী হেসে সায় জানায়।রোয়েন নাতনীর সাথে অনেকসময় পর্যন্ত কথা বলে ফোন কাঁটলো।
এদিকে আরাভ ঠিক করে অফিসে যাবে ও।এভাবে বসে থাকতে পারেনা ও।ইয়ারাবীকে যে করেই হোক ফিরিয়ে আনবে ও।
,
,
,
,
,
,
অফিসে যাওয়ার সময় ফেন্সি আরাভ কে থামায়।মেয়েটার চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে।চোখজোড়ায় অশ্রু টলমল করছে।কাঁপা গলায় ফেন্সি বলল,
.
.
-আরাভ অর্পনকে বুঝাও প্লিজ।আমার সাথে যোগাযোগ করছেনা ও।বুঝতে চাইছেনা আমাকে।
-দেখবো আমি।
.
.
বেরিয়ে গেলো আরাভ।ব্রাদার্স কোম্পানীতে ইয়ারাবীর জব হয়ে গেছে।ব্যাপারটা বেশ অবাক লাগছে ওর কারন ইন্টারভিউ দিতে হয়নি ওকে।চাকরিটা দিয়েছে ওকে এমডির পি এ হিসেবে।ব্যাপারটা খটকা লাগলে ও ভালো লাগছে ইয়ারাবীর।তারা জানিয়েছে ও পরদিন থেকেই অফিসে জয়েন করতে পারে।অফিসে জয়েন করলো ইয়ারাবী।ওর বস লন্ডন গেছে কয়েকদিন পর ফিরে আসবে।তাই ওকেই বর্তামানে বসপর কিছু কাজ সামলাতে হচ্ছে।একদিন আয়রানা খুব কাঁদছিলো। শেষমেষ ইয়ারাবী শ্বশুর কে কল দিলো।রোয়েন জানায় ও আসছে।বাবু খাচ্ছে ও না।রোয়েন আসার পর ও কান্না বন্ধ হচ্ছেনা ওর।ইয়ারাবী মেয়েকে ঘুম পাড়াতে চেষ্টা করছে।মেয়েটা ঘুমাচ্ছে ও না।রুপণ্তী ও অনেক চেষ্টা করলো নাতনীকে শান্ত করতে।কিন্তু কান্না করেই যাচ্ছে আয়রানা।এখন আর কাঁদতে ও পাচ্ছেনা।ডুকরে উঠছে ও।ক্লান্ত দেখাচ্ছে ওকে।ইয়ারাবী বুঝতে পারছে বাবাকে মিস করছে মেয়েটা।না পেরে ইয়ারাবী রোয়েন কে বলল,
.
.
-বাবা একটু আরাভকে ভিডিও কল দিন।
-আচ্ছা মা ঠিক আছে।
.
.
রোয়েন আরাভ কে ভিডিও কল দিলো।ইয়ারাবী সরে গেলো।তবে একটা কোনায় বসলো যেন আরাভ কে একটু হলে ও দেখতে পারে।আরাভ কল রিসিভ করলো।বাবুকে কাঁদতে দেখে খুব খারাপ লাগতে শুরু করে ওর।
.
.
-বাবাই ও কাঁদছে কেন?
-তোর মেয়েকে জিজ্ঞেস কর।নে ওর সাথে কথা বল।
.
.
বাবুর সামনে আরাভকে দেখাতেই কান্না থেমে গেলো ওর।বাবার দিকে টলমল চোখে তাকিয়ে আছে ও।পুরা নিস্তব্ধ হয়ে গেছে বাচ্চাটা।হাঁপাচ্ছে আয়রানা।আরাভ মেয়েকে পলকহীন ভাবে দেখে বলল,
.
.
-আয়রানা আম্মু!!!আমার মা!!
.
.
সাথে সাথে আয়রানা কোলে উঠতে চেষ্টা করতে থাকে।না পেরে আবার কাঁদতে লাগলো।
.
.
-আম্মু কাঁদেনা।বাবা তোমাকে নিয়ে যাবো ঠিক আছে।কোলে নিবো অনেক গুলো আদর দিবো।আয়রানা কি বুঝে শব্দ করে হাসতে শুরু করে।
-ওরে আমার মা টা কতো সুন্দর করে হাসছে।খেয়েছো মা?
.
.
আয়রানা কি সব শব্দ করে বাবার সাথে কথা বলতে শুরু করে।হঠাৎ আরাভের নজর পড়ে সামনে খাটের ওপর লাল উড়নার ওপর।এর মালিক বারবার লুকিয়ে ওকে দেখছে।আরাভ বাঁকা হেসে বলল,
.
.
-বাবা জলদি আমার আম্মুটার কাছে চলে আসবো ঠিক আছে?
.
.
আয়রানার চেহারা দেখে বুঝাই যাচ্ছে বাবাকে দেখে কতোটা খুশি ও।কিছুদিন পর অর্পন অফিসে বসে কাজ করছিলো।হঠাৎ আরাভ ওর সামনে এসে বসে।
.
.
-ভাই কেমন আছো?
-ভালো।তুই?
-এইতো আছি।কফি নিবে তুমি।
-না ভালো লাগছেনা।
-কেন ভাই?
-এমনি।
-ওহ।
-অর্পন!!!
-জি ভাই!!!!
-যা হয়েছে এসবে ফেন্সির দোষ নেই।মাফ করে দে ওকে।
-ভাই!!!!!!
চলবে