The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 26

★★★★
আর্ভিন আর ইয়ারাবীর সময় গুলো ভালোই কাঁটতে থাকে।আর্ভিন কাজে বিরতি পেলে আরাবীর সাথে দেখা করতে চলে যায়।আরাবী অফিস শেষে আর্ভিনের সাথে ঘুরতে চলে যায়।কখনো রেস্টুরেন্ট কখনো ক্যাফেটেরিয়া অথবা কখনো আরাবীর অফিসের ক্যান্টিনে দেখা মিলতো ওদের।
আরাভের সাথে পুল খেলছে আর্ভিন।আরাভ বলে স্টিক লাগিয়ে বলছিলো আপনাকে আজকাল বেশ ফ্রেশ লাগছে।কাহিনী কি?আর্ভিন মুচকি হাসলো কেন আগে কেমন লাগতো?
ভালোই বাট এখন আপনার চেহারাটাকে উজ্জ্বল লাগছে।প্রেমে পড়েছেন নাকি?শয়তানি হেসে বলল আরাভ।আর্ভিন বল একটা কে শুট করে ভারি নিশ্বাস ফেলে বলল তার সাথে থাকতে কথা বলতে এক কাপ কফি খেতে পাশাপাশি চলতে খুব ভালো লাগে।এখন আপনি সেটাকে কি নাম দিবেন?হেসে বলল আর্ভিন।আরাভ হালকা হাসলো।ওর নিজের অবস্থা যে আজ এ বন্ধুটির মতো।দুজনে খেলায় মন দিলো।
আর্ভিন খেলার মাঝে বারবার টাইম চেক করছিলো।
আরাভ কিছুটা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো কোথাও যাবেন কি?
জি।হুম যেতাম আসলে ওকে অফিস থেকে পিক করতে হবে।অনেক রাত করে বের হয় তাই একা যেতে দেইনা।কখন বের হবেন ওনি?জিজ্ঞেস করলো আরাভ।
বারোটায় বের হবে।আজ ওর মিটিং আছে।সেটা শেষ করে বের হবে।একনাগাড়ে বলল আর্ভিন।রাত এগারোটা ত্রিশ মিনিট বাজতে চলেছে।আরাভ আর আর্ভিন একে অপর থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
ফোনটাকে বিছানায় রেখে পাশে বসে পড়ছিলো ইয়ারাবী।হঠাৎ দেয়াল ঘড়ির দিকে চোখ পড়তেই মনটা খুব খারাপ হয়ে যায় ইয়ারাবীর।১২ টা বাজে কিন্তু আজ কল দিলোনা লোকটা।ভীষন অস্থিরতা কাজ করছে ইয়ারাবীর।পড়াতে মন বসাতে পারছেনা ও।উফ কি অসহ্য!!!মুখের ওপর বালিশ চেঁপে ধরে শুয়ে পড়লো ইয়ারাবী।
কিরে মা কি হয়েছে?এভাবে শুয়ে আছিস কেন?ইয়ারাবীর রুমের পাশ দিয়েই নিজের রুমে যাচ্ছিলো রুপন্তী।হঠাৎ মেয়েকে এভাবে শুতে দেখে চিন্তিত হয় রুপন্তী।তাই মেয়ের রুমেই চলে এলো কি হয়েছে জানার জন্য।
মায়ের ডাকে মুখের ওপর থেকে বালিশ সরায় ইয়ারাবী।তারপর উঠে বসলো।না মাম্মা কিছুনা।এমনি শুয়ে ছিলাম।আমতাআমতা করে বলল ইয়ারাবী।হুম। তা পড়াশুনা কেমন চলছে তোর?জিজ্ঞেস করলো রুপন্তী।
এই তো মাম্মা ভালোই চলছে।সামনের মাসে একটা পরীক্ষা আছে ২৫ নম্বরের।সেটার প্রস্তুতি নিচ্ছি।বলে উঠে ইয়ারাবী।হুম ভালো মতো পড়াশুনা কর।এমন অনেক কথা চলতে থাকে ইয়ারাবী আর রুপন্তীর।হঠাৎ ফোন বেজে উঠায় সেদিকে একবার তাকায় ইয়ারাবী।লোকটা কল দিচ্ছে।ফোনটা খপ করে হাতে নিয়ে নিলো ও।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-কি হলো কে কল করছে?জিজ্ঞেস করলো রুপন্তী।
-ইয়ারাবী এখন মায়ের সাথে ঠিক মতো কথা বলতে পারছেনা।না মাম্মা তেমন কেউ না তুমি বলো।
-আরে দেখনা।কেউ দরকারেও কল করতে পারে।বলে উঠে রুপন্তী।
-আরে মাম্মা এটা মিম্মান।শুধু শুধু কল করছে।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
এর মধ্যে আরাভ অনেক বার কল দিয়ে ফেলেছে।এখন ও দিচ্ছে।ইয়ারাবী না পেরে খাট থেকে নেমে বলল মাম্মা পাপা বাসায় আসছে তুমি পাপার কাছে যাও।আরে না তোর পাপা রেস্ট করছে করুক না।বলে উঠে রুপন্তী।না মাম্মা তুমি গেলে পাপার ভালো লাগবে।হি লাভস ইউ মাম্মা।রুপন্তী মেয়ের কথায় হকচকিয়ে গেলো।মেয়েটাকে ওরা এখনো প্রেম ভালোবাসা বুঝতে দেয়নি।কখনো রেহান বা ও একে অপরকে ভালোবাসি কিংবা তেমন কিছু বলেনি মেয়ের বুঝ হওয়া পর থেকে। কিন্তু আজ মেয়ে বলল ওর বাবা রুপন্তীকে ভালোবাসে।
মেয়ের মাথায় প্রেম ধারনা কি করে এলো?
ইয়ারাবী বোকা বনে গেলো।কি বলল ও?রুপন্তী মেয়ের দিকে অবাক চোখে চেয়ে আছে।না মানে মাম্মা আমি আসলে বলছিলাম পাপা তো মানে আমাকে ভালোবাসে তো তোমাকে ও ভালবাসে তাইনা?সেটাই বলছিলাম।ইতস্তত করে বলল ইয়ারাবী।হুম বুঝলাম।বলে দাঁড়িয়ে আছে রুপন্তী।মাম্মা জলদি যাও পাপার কাছে যাও যাও।প্লিজ যাওনা।ঠেলতে ঠেলতে রুপন্তীকে রুম থেকে বের করলো ইয়ারাবী।তারপর দ্রুত খাটের কাছে এগিয়ে এসে দেখলো আরাভ কল করেই যাচ্ছে।আর দেরি না করে ঝটপট আরাভের কল রিসিভ করলো ইয়ারাবী।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
– এতো দেরি হয় কেন কল রিডিভ করতে?চিৎকার করে বলল আরাভ।
-ইয়ারাবী থমকে গেছে।এতো রাগ দেখায় কেন এ লোক ওর ওপর?
-কি হলো কথা বলছো না কেন?কতো বার কল করেছি সেই খেয়াল আছে?রাগি গলায় বলল আরাভ।
-মাম্মা রুমে ছিলো।বলে উঠে ইয়ারাবী।
-সো হোয়াট?ধমক দিলো আরাভ।
-মানে কি মাম্মার সামনে আপনার সাথে কেন কথা বলবো?কিছু টা রেগে বলল ইয়ারাবী।
– Whatever. কাল তোমার ব্লাক স্যালোয়ার কামিজটা পরে তোমার কলেজের সামনে অপেক্ষা করবে আমার।ঠিক দশটায়।এর দেরি যেন না হয়।কিছুটা হুকুম করে বলল আরাভ।
-আমার ক্লাশ আছে।বলে উঠে ইয়ারাবী।
-করবেনা।স্নিগ্ধা থেকে পড়া তুলে নিবে।বলে উঠে আরাভ।
-না।আমি ক্লাশ করবো।জোর গলায় বলল ইয়ারাবী।
– ক্লাশে গিয়ে তোমায় জোর করে আনবো।সেটা অবশ্যই ভালো দেখাবেনা।বলে কল কেঁটে দেয় আরাভ।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
হাসপাতালে ইমার্জেন্সির সামনে বসে আছে আরাবী।ওর সারা শরীর মেখে আছে তাজা রক্তে।চুল গুলো রক্তে ভিজে গেছে।চোখজোড়া বেয়ে অনবরত অরু গড়িয়েই যাচ্ছে।বুকটা থেকে থেকে কেঁপে উঠছে ওর।ইমার্জেন্সিতে কেউ জীবন মরনের সাথে খেলছে।কিছুক্ষন আগে ও যার সাথে ফোনে কথা হয়েছিলো।
কিছুক্ষন আগে
আর্ভিনের কল আসে আরাবীর নম্বরে।ফাইল চেক করার মাঝেই আর্ভিনের কল রিসিভ করলো।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-কাজ শেষ হলো কি?জিজ্ঞেস করলো আর্ভিন।
-এইতো হয়ে এসেছে। কেন?জিজ্ঞেস করলো আরাবী।
-আমি গাড়িতে।বলে উঠে আর্ভিন।
-ঘর থেকে বের করে দিয়েছে বুঝি?তাই আজ গাড়িতে রাত কাঁটাচ্ছেন?বেচারা।মজার স্বরে বলল আর্ভিন।
-বেচারা লোকটাকে আপনার ঘরে আশ্রয় দিন না?বলে উঠে আর্ভিন।
-হুহ বয়েই গেছে।পারবোনা। আরাবী বলে মিটমিট করে হাসছে।
-অতো হাসবেননা।হার্টটা যে বড্ড বেহায়া হয়ে গেছে।আপনার কাছে আসতে চায় বারবার।
-কস্টিপ দিয়ে লাগিয়ে রাখেন।বলে হেসে দিলো আরাবী।
-হুম।ভালোই বললেন মিস আরাবী।তো আপনি নিচে আসুন।আমি আসছি।বলে উঠে আর্ভিন।
-কি দরকার মিঃ মাহবুব।শুধু শুধু কষ্ট করছেন আপনি।মায়াবী কন্ঠে বলল আরাবী।
-মিস চৌধুরী যেটাকে আপনি কষ্ট ভাবছেন সেটা আমার জন্য ভীষন আনন্দের।কি বুঝলেন?বলে উঠে আর্ভিন।
-আরাবীর ঠোঁটের কোনে লজ্জা মাখা এক চিলতে হাসি।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
আধঘন্টা পর আরাবীর নম্বরে আর্ভিনের নম্বর থেকে কল আসে।কিছুটা অবাক হয় আরাবী।এতো কল দেয়ার কি হলো?নেমেছিই তো আমি।ফোন ধরে যা না তা শুনতে হলো আরাবীকে।এটা কি শুনার ছিলো ওর?কিছুক্ষন আগে ও তো কথা বলেছিলো।আরাবী দলরি না করে দ্রুত ধানমন্ডির ল্যাবেইড হাসপাতালে চলে এলো।
কলেজের সামনে লোকটার বলা ড্রেস পরে অপেক্ষারত ইয়ারাবী।আজ একদমই সাজেনি ও।কারন পাপা মাম্মা কি না কি ভাবতো।দাঁড়িয়ে ফোন চাঁপছে ইয়ারাবী।ঠিক কিছুসময়ের মধ্যেই ওকে অবাক করে দিয়ে একটা ডার্ক ব্ল্যাক কার ওর সামনে এসে থামলো।গাড়ির সামনের বাম সাইডের দরজা খুলে গেলো।ইয়ারাবী কিছুক্ষন চিন্তা করে ঢুকে বসলো।আরাভ হোয়াইট কালারের শার্ট পরে আছে।শার্টের বোতাম গুলো বেশ কয়েকটা খোলা যার কারনে খোলা সাদা ধবধবে বুক দৃশ্যমান।চুল গুলো সবসময় যেমন গোছানো থাকে আজ তেমন নেই কিছুটা আউলানো।তবে বেশ লাগছে ওনাকে।সাথে কালো ডেনিম প্যান্ট আর ব্লাক গুচি স্নিকার্স।হাতে কালো মোটা বেল্টের দামি ঘড়ি।আরাভ ঠোঁট চোখা করে স্টিয়ারিং এর ওপর হাত রেখে সামনে চেয়ে আছে।আরাবী গাড়ির দরজা লাগালো।আরাভ এবার ওর দিকে তাকায়।তারপর কিছুটা এগিয়ে এসে হালকা ফুঁ দিয়ে ইয়ারাবীর কপালের ওপর থাকা চুল সরিয়ে দিলো।চোখ বুজে নেয় ইয়ারাবী।আরাভ এবার সোজা হয়ে বসে গাড়ি ড্রাইভিংয়ে মন দিলো।ইয়ারাবী খুটেখুটে আরাভ কে দেখছে।ঘন্টা খানিক ড্রাইভিংয়ের পর ওরা থামলো।কালো কাঁচের একটা গেটের সামনে।আরাভ ইয়ারাবীকে বের করলো।তারপর ওর হাত ধরে গেটের সামনে পা রাখতেই গেটটা গরগর করে খুলে গেলো।ওরা ভিতরে ঢুকা মাত্রই গেট আটকে গেলো।ইয়ারাবী চারপাশে মাথা ঘুরিয়ে দেখছে।ওরা হাঁটতে হাঁটতে বড় একটা বাড়ির ভিতরে চলে এলো।বাড়িটা খুব সুন্দর সাজানো।এই প্রথম ইয়ারাবী কথা বলল,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-এটা কার বাড়ি?
-আরাভ থেমে গেলো।তোমার কি মনে হয় আরেকজনের বাড়িতে তোমাকে আনবো।
-না।কিন্তু,,,,,,, আরাভ থামিয়ে দেয় ইয়ারাবী।
-বেশি কথা বলো।চুপচাপ চলো আমার সাথে।তারপর সব উত্তর পাবে।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
ইয়ারাবী চুপচাপ আরাভের সাথে হাঁটতে লাগলো।বাড়িটির পিছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে ইয়ারাবী বলে উঠে ওয়াও।একটা বাগান টাইপের জায়গা।জায়গায় জায়গায় পানির ফোয়ারা।সেখান থেকে অঝোর ধারায় পানি ঝড়ছে।ওরা সেখানের মাঝ বরাবার হেঁটে যাচ্ছে।মাটির কিছু পশুর মুর্তি বানানো আছে।ইয়ারাবী সেগুলো দেখছে। আরাভ ইয়ারাবীকে নিয়ে সুইমিংপুলের সামনে এলো।সেখানে দুটি পাশাপাশি চেয়ারে বসলো ওরা।ইয়ারাবীর ডান হাতের আঙ্গুল গুলো নিজের বাহাতের আঙ্গুল গুলোর ভাজে ঢুকিয়ে শক্ত করে ধরলো।এ বাড়িটা আমার।বাংলাদেশে আসার আগেই কিনে নিয়েছি।আজ এটায় প্রথম এলাম আমি।আর তোমাকেই আনলাম কেন জানো?জিজ্ঞেস করে আরাভ।
ইয়ারাবীর বুক ধুকপুক করছে।কি বলবে ও?আর সে কি উত্তর দেবে?অজানা ভয় হচ্ছে ইয়ারাবীর।কি হলো জিজ্ঞেস করো কেন আনলাম রেগে গেলো আরাভ।
কেন আনলেন?ভয় পেয়ে জিজ্ঞেস করলো ইয়ারাবী।জানিনা আমি।তুমি জানো এর উত্তর? ইয়ারাবী জানো এর উত্তর?কিছুটা ব্যাকুল কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো আরাভ।না উত্তর জানিনা আমি।বলে উঠে ইয়ারাবী।আরাভের চোখ জোড়ায় এতো মায়া কখনো দেখেইনি ইয়ারাবী।ও ডুবে যাচ্ছে আরাভের চোখজোড়ার মায়ায়।মনের অজান্তেই ইয়ারাবী আরাভের খুব কাছে চলে এলো।আরাভ ইয়ারাবীর দিকে অবাক চোখে তাকাচ্ছে।ওর ঠোঁট ওর চোখ চোখের পাপড়ি গোলাপি গাল।আরাভ ঠোঁটের কাছে।এগিয়ে গিয়ে একটু সরে এসে ওর নাকের সাথে নিজের নাক ঘষে দিলো।তারপর ইয়ারাবীর গালে আলতো করে চুমু খেতে থাকলো।ইয়ারাবীর মন যেন আজ আরাভের ঠোঁটজোড়ার ছোঁয়া পেতে চাচ্ছে ওর ঠোঁটজোড়ার গভীরে।আরাভ এবার ইয়ারাবীর গলায় নেমে এলো।ঘন ঘন চুমুতে ভরিয়ে দিতে থাকলো ইয়ারাবীর গলা, ঘাড়, কাঁধ।ইয়ারাবী আরাভের শার্ট খামচে ধরে আছে শক্ত করে।আরাভ এবার ইয়ারাবীকে ওর দিকে ফিরিয়ে ওর অপর গালে চুমু খেতে লাগলো।ইয়ারাবীর আরাভের গালে হাত রাখে।ওর হাতজোড়া বড্ড দূর্বল লাগছে।
চলবে