Mafia Boss- Season- 3

Married To The Dark King-  Mafia Boss- Season 3 !! Part- 91

সকালে ঘুম ভাঙ্গতেই খুব তাড়াহুড়ো করে উঠে যায় রুপন্তী।ফ্রেশ হয়ে টেবিলে বসে পড়া রিভাইস করতে
শুরু করলো আজ এক্সাম ওর।
কিছুক্ষন পর রুমে প্রবেশ করলেন আজিজ রায়হান।মেয়ের জন্য হাতে এক গ্লাস গরম দুধ রেখেছেন ওনি।
রুপন্তীর মাথায় হাত রাখলেন আজিজ রায়হান।
-কিরে মা প্রিপারেশন কেমন?
-মাথা ঝাঁকায় রুপন্তী।এইতো বাবা ভালোই।
-এই যে আমার মেয়ের জন্য দুধ আর ওর পছন্দের পছন্দের চকলেট বিস্কিট।রুপন্তীর সামনে গ্লাস বিস্কিটের প্যাকেটটি রেখে বললেন আজিজ।
-থ্যাংকস বাবা।তুৃমি খেয়েছো?জিজ্ঞেস করে উঠে রুপন্তী।
-হুম খেয়েছি।তুই খেয়ে ভালো মতো পড়।আমি অফিস যাচ্ছি।বলে মেয়ের মাথায় ছোট্ট করে চুমু খেয়ে বেরিয়ে পড়লেন আজিজ।
-অফিসে গিয়ে সবার সাথে হালকা কথা বার্তা বলে নিজের কেবিনে এসে বসলেন।হাত ঘড়ি চেক করেন আজিজ।
আজ একবার ও রাসেল কে দেখলেননা উনি।এতক্ষনে তো রাসেলের চলে আসারই কথা।
হয়ত জ্যামে আটকা পড়েছে।বাংলাদেশের জ্যামের ওপর আস্থা নেই।এক কাপ লাল চায়ের অর্ডার দিয়ে কাজ শুরু করলেন আজিজ।
Independence চ্যানেল এর সিনিয়র রিপোর্টার ওনি।খুব সম্মান শ্রদ্ধার পাত্র।প্রায় ২৩বছর যাবৎ এই কাজে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন ওনি।
হঠাৎ খেয়াল করলেন ওনার কেবিনের সামনেই যে বড় টিভিটা আছে।সকল কর্মচারীরা সেখানে ভিড় জমিয়েছে।
টিভিতে রাসেলের মতো কাউকে দেখছেন ওনি।
চোখে চশমা লাগিয়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে সোজা হাঁটা শুরু করলেন।
রাসেল কথা বলছে Independence চ্যানেলে।
আজিজ রায়হান হালকা হেসে কথা শুনায় মনযোগ দিলেন।
রাসেল বলছে
-আমার স্যার এই চ্যানেলের সিনিয়র মিঃ আজিজ রায়হান চৌধুরী ভীষন ভালো মানুষ যেটা সবাই কে দেখান ওনি।আসলে ওনার ভালো মানুষিকতার পিছনে লুকিয়ে আছে ওনার আসল রুপ।
-সবাই কে দেখান ওনি নিষ্ঠার সাথে কাজ করছেন।ওনি কাজ খুবই ভালো করেন কিন্তু আরেকটা কাজ সবচেয়ে বেশি ভালো করেন।
-সেটা হলো অন্যের মেয়েদের স্করপিয়নদের কাছে সেল করে দেয়া।নিজের বড় মেয়ে ও কিডন্যাপ হয়ে যায়। আর হবেনা কেন অন্যের মেয়েদের সাথে যা করেছেন ওনি তাতো ওনার নিজের সাথে ও হবে তাইনা?
-যাই হোক রুহী বেঁচে গেছে শুধু মাত্র কোব্রা লর্ড রোয়েন চৌধুরী যিনি আজিজ রায়হান স্যারের ভাইয়ের ছেলে হন।
-সরি স্যার কথা গুলো বেশি দিন আটকা থাকলো না বলে।মাফ করে দিবেন।বলতেই শো টা শেষ হয়ে যায়।
আজিজ রায়হানের পুরো শরীর কাঁপছে।মাথা ঘোরাচ্ছে।হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে।সবাই ওনার দিকে ভ্রু কুঁচকে চেয়ে আছে।
কেউ কেউ কানাকানি করছে।
রাসেল তো খুব ভালো ছেলে।এ কাজটা ও কেন করবে?ভাবতে থাকেন আজিজ রায়হান।
হঠাৎ চেয়ারম্যান মিঃ বদরুল আলম তড়িঘড়ি করে ভিতরে ঢুকলেন।
তারপর আজিজ রায়হানের কাছে এসে দাঁড়ালেন ওনি।
-আপনার কাছে এসব আশা করিনি আমি আজিজ।কি করে পারলেন এতো গুলো মেয়ের সাথে এমন করতে?
-আপনার ও তো দুটো মেয়ে আছে।ওদের কথা কখনো কি ভাবেননি?সেম অন ইউ ম্যান।গেট আউট!!!আপনাকে এখানে যেন আর কখনো না দেখি।চিৎকার করে উঠলেন চেয়ারম্যান।
-স্যার!!!!অবাক সুরে বলেন আজিজ রায়হান।
-কোন কথা বলবেননা মিঃ আজিজ রায়হান।চলে যান।বলে উঠেন।
-ওকে।আমার রেসিগনেশন লেটার পেয়ে যাবেন স্যার।বলে আর এক মিনিট ও অপেক্ষা করলেননা আজিজ রায়হান।বেরিয়ে পড়লেন ফোন নিয়ে।
পরীক্ষা দিয়ে ঘরে ফিরে এসেছে রুপন্তী।বাবাকে ঘরে দেখে খানিকটা অবাক হয় ও।
দৌড়ে বাবার কাছে এসে বসে পড়ে।
-বাবা তুমি এখন বাসায় কেন বাবা?জিজ্ঞেস করে উঠে রুপন্তী।
-নাহ মা এমনি।ভালো লাগছিলো না শরীরটা।এক্সাম কেমন হলো?জিজ্ঞেস করে উঠেন আজিজ।
-এই তো ভালো বাবা।স্যালাইন দিবো?জিজ্ঞেস করে উঠে রুপন্তী।
-দিলে ভালো হয় মা।বলে উঠেন আজিজ।
রুপন্তী খেয়াল করলো বাবা বড় নিশ্বাস নিচ্ছে।ওনার চেহারা বলছে বাবা ভালো নেই।
রুপন্তী স্যালাইন বানিয়ে আজিজ রায়হানের দিকে ধরলো।
-আজিজ রায়হান এক ঢোকে খেয়ে নিলেন পুরোটা স্যালাইন।
-রুপন্তী রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে ফোন নিয়ে খাটে বসলো।
-ফেসবুকে ঘাঁটাঘাটি করতে গিয়ে একটা জায়গায় চোখ আটকে যায় ওর।
রেহান কে বিদায় দিয়ে রুহীকে কোলে নিয়ে রুমে আসে রোয়েন।
চারদিন পর রুহীর পাঁচমাস হবে।
রুহীকে খাটে বসিয়ে ওর চুলে অয়েল ম্যাসেজ করছে রোয়েন।
রুহীর চোখে ঘুম এসে যাচ্ছে আরামে।হঠাৎ চোখ খুলে রুহী।
-আচ্ছা কাল রাতে ও কি নিচে চলে গিয়েছিলাম?জিজ্ঞেস করে উঠে রুহী।
-কেমনে যেতে? দরজা বন্ধ করে রেখেছিলাম।বলে উঠে রোয়েন।
-একবার ও কি উঠিনি?জিজ্ঞেস করে রুহী।
-উঠেছিলে।ঘুমের ঘোরে হেঁটে দরজার কাছে গিয়ে হাতল ধরে টানছিলে।পরে আমি উঠে তোমাকে ধরে শুইয় দিলাম।গান করছিলে তুমি।বলে উঠে রোয়েন।
-লজ্জায় রুহীর মুখখানি ছোট হয়ে আসে।
রোয়েন আয়নায় রুহীকে দেখছে।রুহীর পিঠের ওপর এলোমেলো চুল সরিয়ে সেখানে ঠোঁট ছোঁয়ায় রোয়েন।।
রুহী কেমন যেন কেঁপে উঠে।রুহীর কানের লতিতে কামড় দিয়ে চুমু দেয় রোয়েন।তারপর রুহীর গালে চুমু দিয়ে রোয়েন বলে উঠে,
-আই লাভ ইউ।
রুহী হেসে রোয়েনের বুকে মুখ লুকায়।
ঐদিন রাত থেকে রোয়েনকে ভীষন চিন্তিত দেখাচ্ছিলো।কারোর সাথে অনেক সময় নিয়ে কথা বলছিলো ও।
তারপর চিন্তিত হয়ে পড়ে।রুহী অনেকবার জিজ্ঞেস করলে ও তেমন কিছুই বলে নি রোয়েন।
রুপন্তী দৌড়ে বাবার কাছে আসে।
-বাবা এসব কি?চোখে পানি এসে ভরে গেছে ওর।
ফেসবুকে রাসেলের ভিডিও শেয়ার করেছে কে যেন।
আর কমেন্টে সবাই যা তা বলে গালি দিচ্ছে আজিজ রায়হানকে।
-জানি না রে মা।কেন হলো এসব?রাসেল কেন করলো এসব?বলেই কাঁদতে আরম্ভ করলেন আজিজ রায়হান।
-রুপন্তীর মনে অনেক প্রশ্ন।তবে এখন বাবাকে সামলানো উচিৎ।বাবার পাশে গিয়ে বসলো ও।
-বাবা চিন্তা করোনা সব ঠিক হয়ে যাবে।বলে উঠে রুপন্তী।
-মারে খুব ভয় হচ্ছে আমার।বলে উঠেন আজিজ রায়হান।
রুপন্তী বাবাকে জড়িয়ে ধরলো।
এভাবে দুতিনদিন কেঁটে গেলো।
রুপন্তী রুম থেকে বেরিয়ে আসতেই মায়ের কথা শুনতে পায়।
-প্রনয় জানো আজিজকে অফিস থেকে বের করে দিয়েছে।বলে উঠেন আনিলা বেগম।
-আরে জানিহ ডার্লিং। এসব কে করিয়েছে জানোই তো।বলে উঠেন প্রনয় খান।
-হুম।প্রাউড অফ ইউ ম্যান।বলে উঠেন আনিলা বেগম।
রুপন্তীর কিছুটা সন্দেহ হয়।
রুমে চলে আসে ও।আধ ঘন্টা পর প্রনয় খানকে কল দেয় ও।
মেয়ের কল পেয়ে অবাক হয় প্রনয় খান।
তারপর রিসিভ করে কানের সামনে ফোন ধরেন প্রনয় খান।
-হ্যালো রুপন্তী। ভালো আছিস মা?জিজ্ঞেস করে উঠেন প্রনয় খান।
-ভালো নেই।বলে উঠে রুপন্তী।
-কেন মামনি।বলে উঠেন প্রনয় খান।
-আপনি কি চান?কেন করছেন এসব?রাগী গলায় বলে উঠে রুপন্তী।
-হেসে উঠেন প্রনয়।বাবার জন্য কষ্ট লাগছে রুপন্তী?আমার কথা শুনলে আর এমন হতোনা রে সোনা।
-ডিসগাস্টিং ইউ আর।কি চান আপনি?চিৎকার করে উঠে রুপন্তী।
-আমার মেয়েকে।তুই যদি আমার কথা শুনতিস তাহলে এমন হতো না।ঝটপট বাবার কাছে আয়।তাহলে আজিজের সব সমস্যা সমাধান হবে।তার চাকরী ও বাঁচবে সাথে হারানো সম্মান ও ফিরে আসবে।বলে উঠেন প্রনয় খান।
রুপন্তীর চোখের পানি গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে।
-ভেবে দেখ মামনি।রাখছি!!বলে উঠেন প্রনয় খান।
-আমি আসছি।আপনি সব ঠিক করে দিবেন আগে প্রমিজ করেন।বলে উঠে রুপন্তী।
-প্রমিজ করতে হবেনা। আজিজের সাথে আমার কোন শত্রুতামি নেই।তুই চলে আয় শুধু।
-আগে সব ঠিক করবেন তারপর আমি আসবো।বলে উঠে রুপন্তী।
-কাল সকালেই সব ঠিক হবে।আর তুই যদি না আসিস তাহলে,,,,,,
-আমি আসবো প্রনয় খানকে থামিয়ে বলল রুপন্তি।
চলবে