Mafia Boss- Season- 3

Married To The Dark King-  Mafia Boss- Season 3 !! Part- 85

রুহী বেশিক্ষন দাঁড়াতে না পেরে দোলনায় বসে পড়ে।ভোর পর্যন্ত কথা বলার পর ফোন ডিসকানেক্ট করায় রোয়েন।রুহী ফোন রাখতে চাইছিলোনা।
কিন্তু রোয়েন বুঝিয়ে সুঝিয়ে সকাল সাড়ে পাঁচটায় ফোন রাখে।
রুহীর চোখ যেন লেগে আসছে।পা জোড়া যেন অসাড় হয়ে আসছে।পা গুলো ও কেমন যেন ফোলা ফোলা ভাব।
পা দুটি উঠিয়ে দোলানায় হ্যালান দিয়ে চোখ জোড়া বুজে নেয় রুহী।
রুহী পৌছে নিদ্রা পরীর রুপকথার দেশে।সকাল আটটায় রুপন্তীর ঘুম ভাঙ্গতেই চোখ ভালোমতো ডলে উঠে বসে।মাঝে রুহীকে না পেয়ে মুখ শুকিয়ে যায় রুপন্তীর।
পাশে নিদ্রাচ্ছন্ন এলিজা কে ডাকতে শুরু করে রুপন্তী।
কারোর ডাক শুনতে পেয়ে চোখ খুলে এলিজা।
-রুপন্তী ইংরেজিতে বলতে শুরু করে,আপিকে দেখেছেন?
-না তো।মাত্রই ঘুম ভাঙ্গলো।বলে উঠে এলিজা।
-আমি ও দেখিনি আপনি ও দেখেননি তাহলে আপি কই?আতংকিত গলায় বলতে থাকে রুপন্তী।
-চলো রুহী কে খুঁজে বের করি।বলে উঠে এলিজা।
-চলুন।বলে বেরিয়ে যায় রুপন্তী আর এলিজা।সারাঘর রুহীকে খুঁজতে থাকে ওরা।হঠাৎ ওদের চোখ পড়ে ছাদ থেকে ধীরপায়ে নেমে আসা রুহীর দিকে।
রুপন্তী দৌড়ে বোনের কাছে চলে যায়।
-আপি কই ছিলি তুই?রুহীর হাত ধরে বলতে থাকে রুপন্তী।
-ছাদে ছিলাম।বলে উঠে রুহী।
-ছাদে!!!অবাক হয় এলিজা।
-কখন গিয়েছিলি আপি?জিজ্ঞেস করে উঠে রুপন্তী।
-রাত ১২ টায় তোর জিজুর কল এসেছিলো তাই ছাদে চলে যাই।
-রুপন্তী ঠোঁট টিপে হাসতে শুরু করে।
নাস্তা সেড়ে রুহীকে নিয়ে রেহান রুপন্তী এলিজা হাঁটতে বের হয়।পাশ্ববর্তী একটা পার্কে চলে যায় ওরা।রুহীর ক্লান্তি লাগার কারনে একটা বেঞ্চে বসে পড়ে ও।
রেহান রুপন্তী সবার জন্য কফি আনতে চলে যায়।রুহীর সাথে থেকে যায় এলিজা।
রুপন্তী রুপন্তী যাওয়ার সময় একে অপরকে খোঁচানো,রেহানের রুপন্তীকে জড়িয়ে ধরা,রুপন্তীর ছোট বাচ্চার মতো রেহানের সাথে ঘেঁষে হাঁটা দেখছিলো রুহী।
রুহীর চোখের কোনা বেয়ে নোনা জল গড়িয়ে পড়ে।
-Do you missing Royen right?জিজ্ঞেস করে উঠে এলিজা।
এলিজার কথায় পাশ ফিরে তাকায় রুহী।
-Every single moments i miss him.But i can feel him every time.বলে উঠে রুহী।
এলিজা রুহীর কাঁধ জড়িয়ে ধরলো।
-Don’t be upset Ruhi.
রুহী এলিজার দিকে তাকায়।
-I am not upset,but i want him by my side.বলে উঠে রুহী।
রেহান রুপন্তী কিছুক্ষন পর কফি নিয়ে ফিরে আসে।কথা বার্তার একপর্যায়ে ওরা জানতে পারে চব্বিশ তারিখ রোয়েনের ফ্লাইট।তারমানে ২৬ তারিখ এসে পৌছাবে প্লেন।
রাতে রুপন্তীকে নিয়ে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে রেহান।বিদায়ের সময় দুই বোন একে অপরকে জড়িয়ে খুব কেঁদেছিলো।
এয়ারপোর্টে পৌছে রুপন্তীকে শেষবারের মতো বাহুডোরে আবদ্ধ করে রেহান।রুপন্তীর চোখে পানি।বেশি কষ্ট পাচ্ছে বোনের জন্য।
এভাবে এ অবস্থায় বোনকে ফেলে যেতে মন সায় দিচ্ছে না ওর।আর খারাপ লাগছে ভালোবাসার মানুষটাকে ছেড়ে চলে যেতে।
রেহানের বাহুডোরে বন্দী থাকা অবস্থায় রুপন্তী বলে উঠে,
-একটা প্রমিজ করবেন?
-কি?রেহান বলে উঠে।
-আপুর খুব যত্ন নিবেন জিজু আসার আগপর্যন্ত। বলে উঠে রুপন্তী।
-হুম অবশ্যই রাখবো।বলে উঠে রেহান।
-আরেকটা প্রমিজ রাখতে হবে।বলে উঠে রুপন্তী।
-বলো।বলে উঠে রেহান।
-সবসময় আমাকে ভালোবাসবেন।আর অন্য মেয়েদের সাথে ফ্লার্ট করবেননা।বলে উঠে রুপন্তী।
রুপন্তীর কথায় হাসি পেলে ও হাসতে পারেনা রেহান।মেয়েটা কাঁদছে।এ মুহূর্তে হাসাটা বড্ড বেমানান লাগবে।
-আচ্ছা কারোর সাথে ফ্লার্ট করবোনা।তোমাকেই ভালবাসবো।
রুপন্তী চোখ মুছে সরে আসে।রেহান রুপন্তীর দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে ওর কপালে ঠোঁট ছোঁয়ায়।
-আসি।বলে উঠে রুপন্তী।
-মাথা ঝাঁকায় রেহান।পৌছে ফোন দিও।
-সম্মতি জানায় রুপন্তী।তারপর কিছু না বলে পিছনে ফিরে হাঁটতে শুরু করে।
-রেহান কিছুক্ষন পর বাসায় ফিরে আসে।এভাবে দুদিন পার হয়ে যায়।
রোয়েনের ফিরার সময় হয়ে আসে।২৪ তারিখ রাত এগারোটায় ফ্লাইট।সন্ধ্যা ৭ টায় রোয়েন বেরিয়ে পড়ে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে।
এয়ারপোর্টের ভিতরে যেতে নিবে তখনই রোয়েনের ফোন বেজে উঠে। একটু সরে এসে ফোন বের করে রোয়েন।
রফিক কল দিচ্ছে দেখে খানিকটা বিরক্ত হয়।তারপর ও ফোন রিসিভ করে কানের সামনে ধরে।
-হঠাৎ একজন গার্ড টাইপের লোক রোয়েনের কাছে দৌড়ে আসে।
-প্যাসেঞ্জার?? জিজ্ঞেস করে উঠে লোকটা
কান থেকে ফোন সরায় রোয়েন।
-জি।
-ভিতরে যান।নাহলে দেরি হয়ে যাবে।
-শুনেন টাইম টেবিল সম্পর্কে আমার যথেষ্ঠ ধারনা আছে।সো আমার টাইম মতো আমি আসবো।বলে উঠে রোয়েন।
-আরে স্যার বড় মানুষ আপনারা।আমরা গরীব মুর্খ মানুষ।আপনাদের থেকে কমই বুঝি।কিন্তু স্যার ভিতরে প্রচুর গ্যাদারিং। দেরি হইবো।বলে উঠে লোকটা।
-রোয়েন ভাবে লোকটার কথা গুলো একেবারেই ফেলে দেয়ার মতো না।কানে ফোন ধরে রোয়েন।ফ্রী হয়ে কল দিচ্ছি।
-কিন্তু স্যার!!!!বলে উঠে রফিক।
-জাস্ট সাট আপ রফিক।আ’ম গেটিং লেট।বলে কল কেঁটে বেরিয়ে পড়ে রোয়েন।
-চেকিং করতে যাবে ঠিক তখনই কি মনে করে যেন পিছনে তাকায় রোয়েন।কাকে যেন দেখলো ও।কিন্তু কাউকে পায় না।তারপর মাথা ঘুরিয়ে দেখার চেষ্টা করে।
-কাউকে না দেখে সামনে ফিরে ভিতরে যেতে নিবে ঠিক তখনই খুব জোরে একটা শব্দ হয়।সারা এয়ারপোর্টে কোলাহল লেগে যায়।প্যাসেঞ্জার দের দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়ে যায়।সেই সুযোগে কালো পোশাক পরিহিতা পালিয়ে যায়।
-কিছু প্যাসেঞ্জার শুটের সাউন্ড পেয়ে চেকিং এর দিকে আসতেই চিৎকার করে উঠে।
মাটিতে বসে পড়া ব্লাক শার্ট আর ডেনিম প্যান্ট পরিহিতা লোকটির দিকে চোখ পড়ে।তার পুরো শরীর ঘেমে ভিজে গেছে।তিনজন লোক তার সামনে বসে পড়ে।
তার কাঁধ বেয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।
-ওহ মাই গড।ওনার কাঁধে গুলি লেগেছে।ডাক্তার আছেন কেউ। চিৎকার করে বলে উঠে লোকটা।কেউ সাড়া দেয়না।
-লোকটা তারপর আঘাত পাওয়া লোকটির দিকে তাকায়।আপনার সাথে কেউ আসেনি?
-আঘাত পাওয়া লোকটি মাথা নাড়ায়।
-গাড়ি ঠিক করে দিই।বাড়ি ফিরে যান।বলে উঠে লোকটা।
-মাথা নাড়ায় আঘাত পাওয়া লোকটি।
-নাম কি আপনার?জিজ্ঞেস করে উঠে লোকটা।
-রোয়েন চৌধুরী।
চলবে