Married To The Dark King- Mafia Boss- Season 3 !! Part- 59
জানিস রেহান ইদানীং ঘুমোতে পারিনা আমি।একটা কালো ছায়া বারবার আমার কাছে আসে আমাকে মারে।একটা বাচ্চার কান্নার শব্দ শুনতে পাই আমি।বাচ্চা টা মা মা করে চিৎকার করে কাঁদছে।আমি ওর কাছে যেতে চেয়ে ও পারছিনা।আমার শরীর ফেঁটে রক্ত বের হচ্ছে।আমি চিৎকার করছি আমার চিৎকার কেউ শুনছেনা।আমার সামনে একজন বয়স্ক লোককে ছুড়ি চালিয়ে হত্যা করা হলো।আমি কিছু করতে পারছিনা।একনাগাড়ে কথা গুলো বলে কেঁদে ফেলেছিলেন রায়না রহমান।মায়ের কথায় চিন্তায় পড়ে যায় রেহান।এমনটা কেন হচ্ছে মায়ের সাথে?মায়ের কি আগের স্মৃতি ফিরে আসছে নাকি?কথা গুলো ভাবতে ভাবতে ডান হাতের দুই আঙ্গুল দিয়ে কপালে রেখা টানলো রেহান। মায়ের ব্যাপারটা ভাইয়াকে জানাতে হবে।ভেবেই রোয়েনের নম্বরে কল দিলো রেহান।
ফোন বন্ধ আসছে কেন ভাইয়ার?রোয়েনের বডিগার্ডদের নম্বরে কল দিলো রেহান।সবার ফোন বন্ধ।
দারোয়ানকে কল দেই।ওনি বলতে পারবেন।দারোয়ান কে কল করতেই অপরপাশ থেকে কল রিসিভ হলো।।
হ্যালো করিম চাচা,ভালো আছেন??জিজ্ঞেস করে উঠলো রেহান।
জি বাবা ভালো আছি।আপনার কি খবর?অপরপাশ থেকে রোয়েনের বাসার দারোয়ান বলে উঠলেন।
এইতো ভালো।ভাইয়া কই?জিজ্ঞেস করে উঠলো রেহান।
স্যার কই জানি চইলা গেছে।কইছিলো ২মাস পর আইবো।বলে উঠলেন করমি চাচা।
ভাইয়ার আর কোন নম্বর আছে?জিজ্ঞেস করলো রেহান।
না বাবা নাই তো।বললেন করিম চাচা।আচ্ছা চাচা রাখি।আল্লাহ হাফেজ।উফ ভাইয়া কই আপনি?চিন্তায় রেহানের মুখ কালো হয়ে গেলো।আরো কিছুক্ষন চিন্তা করে ডাক্তার কে কল দিলো রেহান।
অপরপাশ থেকে ডাক্তার সাজ্জাদ ফোন রিসিভ করলো।
হ্যালো রেহান।ভালো আছো?জিজ্ঞেস করলো সাজ্জাদ।
জি ভাইয়া ভালো।আপনি?বলে উঠলো রেহান।
এই তো আলহামদুলিল্লাহ। কি হলো হঠাৎ কল দিলে?সব ঠিক আছে তো?জিজ্ঞেস করলো সাজ্জাদ।
হুম।রেহান রায়না রহমানের কথা বলল সাজ্জাদকে যা বলেছেন ওনি।
হুম। শুনো মাঝে মাঝে ওনার অতীত গুলো মনে করানোর চেষ্টা কইরো।আর আমার কাছে একবার এসো।কিছু মেডিসিন চেঞ্জ করে দিবো।বলে উঠলো সাজ্জাদ।
ভাইয়ার কই জানেন?জিজ্ঞেস করলো রেহান।
না রেহান।সেদিন একটা কথা কাঁটাকাটি হয়েছিলো।এরপর অনেক দিন কথা হয়নি।তারপর কিছু দিন আগে কল দিলাম ওর ফোন বন্ধ পাই।বলে উঠলো সাজ্জাদ।
,
,
,
,
ভাইয়া আচমকা এভাবে গায়েব হয়ে গেলো।বুঝতে পারছিনা।কান থেকে ফোন সরিয়ে বলল রেহান।
রোয়েন বারবার রুহীর কাছে এসেছে। কখনো ফুল চকোলেট পুতুল আরো অনেক কিছু নিয়ে।কিন্তু প্রত্যেক বার রুহী অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছে ওকে।মনে সন্দেহের কাঁটা খচখচ করছে রোয়েনের।রুহী এতো টা শক্ত মনের মেয়েনা সেটা রোয়েন ভালো মতো জানে।দেড়মাস হতে চলল কিন্তু রুহীর মনের বরফ গলেনি এখনো।কি চলছে রুহীর মনে?কি লুকাচ্ছে রুহী?ভাবতে থাকে রোয়েন।
ব্যাগটা টেবিলের ওপর রেখে গ্লাসে পানি ঢেলে নিলো রুহী।পানি মুখে নিতেই কলিং বেল বেজে উঠলো।রুহী গ্লাসটা টেবিলে রেখে দরজার সামনে এসে দাঁড়ালো।
প্লিজ আজ এসোনা।আমি আর পারবোনা তোমাকে অপমান করে তাড়াতে।কথাগুলো বিড়বিড় করে বলতে থাকে রুহী।
চোখ বন্ধ করে দরজা খুলতেই রোয়েনের একজন লোককে দেখতে পেলো রুহী।
লোকটা রুহীর হাতে একটা ব্যাগ ধরিয়ে বলল স্যার বলছেন এটা পরে রেডি থাকতে। বিকেলে বাহিরে যাবে আপনারে নিয়ে।
রুহী লোকটার হাত থেকে প্যাকেটটি নিয়ে ভিতরের কালো গাউনটি হাতে নিয়ে পাকঘরে চলে এলো। সেটাকে কাঁচি দিয়ে কেঁটে কুটিকুটি করলো।সেই টুকরো গুলো প্যাকেটে ভরে দরজার সামনে এলো।প্যাকেটটি লোকটিকে দিয়ে বলল স্যার কে বলবেন আমি বিজি আছি।
বলে দরজা লাগিয়ে দিলো রুহী।এরপর দৌড়ে রুমে চলে গেলো চোখ মুছতে মুছতে।
রোয়েনের হাতে ব্যাগটি ধরিয়ে লোকটি বলল ভাবি বিজি আছে।বলে চলে গেলো লোকটা।
রোয়েন প্যাকেটে হাত ঢুকাতেই মেজাজ সাত আসমান ওপরে উঠে গেলো।
ব্যাগটা ছুড়ে ফেলে দিয়ে দ্রুত পদে বেরিয়ে গেলো রোয়েন রুহীর বাসায়।
রুহী খাটে বসে চোখের পানি ফেলছে।হঠাৎ ওর কোমড় জড়িয়ে কেউ কোলে তুলে নিলো ওকে।আরেহ!!চিৎকার দিলো রুহী।পাশে তাকিয়ে দেখলো রোয়েন।
ওর চোখজোড়া লাল হয়ে আছে।
আমাকে নামান।কই নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে?চিৎকার করলো রুহী।
জাস্ট সাট আপ!!!বলে নিজের রুমে চলে এলো রোয়েন।রুহীকে নিচে নামিয়ে ওর বাহুজোড়া চেঁপে ধরলো।আর কতো চলবে এসব?রুহী চিনোনা আমাকে।আমি কি করতে পারি।অনেক বলে ফেলেছো আমি ও শুনেছি।আর না।তোমার সাহস কি করে হয় জামা এভাবে ফিরিয়ে দেয়ার?তাও এভাবে ছিড়ে কু্টিকুটি করে?রুহী অনেক করেছো আর না।তুমি আমার রাগ সম্বন্ধে এখন ও অবগত না।সো জলদি বলে দাও কি চলছে তোমার মনে?কি লুকাচ্ছো তুমি?
গলা ফাঁটিয়ে চিৎকার করে বলল রোয়েন।
রুহী এবার খাট থেকে উঠে দাঁড়ালো।আপনার সাহস কি করে হয় আমাকে তুলে আনার?বললাম না আপনার কিছু না আমি।কিছুই নাই আমাদের মাঝে।গলা ফাঁটিয়ে চিৎকার করে বলল রুহী।
স্বর নিচে।তুমি এতোদিন এসব করে আমাকে কষ্ট দিয়ে ফেলেছো খুব।
যাই করো তোমাকে আর আমার থেকে দূরে যেতে দিবোনা।তোমাকে বিয়ে করবো আমি।কালই আমাদের বিয়ে।চিৎকার করে বলল রোয়েন।
,
,
,
,
কে আপনাকে বিয়ে করবে হ্যা?আপনাকে আমি বিয়ে করবোনা কখনো না।আপনার আংটি পান নাই?তাহলে কেন বারবার একই কথা বলেন?বুঝেননা আমি আপনার সাথে থাকতে চাইনা আর?আমাকে যেতে দিন।চিৎকার করে বলল রুহী।ওর চোখ জোড়া ভিজে গেছে।
রোয়েনের পাশ ঘেষে যেতে নিবে তখনই রোয়ে রুহীর হাত টেনে ওকে সামনে এনে কষিয়ে চড় বসালো রুহীর গালে।চড়টা এতো জোরে ছিলো যে রুহী পড়েই যেতো।ওর ঠোঁটের কোনা বেয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।রুহীকে ধাক্কা দিয়ে খাটে বসালো রোয়েন।
রুহীর পাশে বসে ওর কেঁটে যাওয়া ঠোঁটের কোনায় ঠোঁট বসালো রোয়েন।রুহী রোয়েনের কোটের হাতা খামচে ধরলো।রুহীর ঠোঁটের কোনা থেকে সরে এসে ওর ঠোঁটে শব্দ করে চুমু খেলো রোয়েন।রোয়েন এবার সরে এলো।রুহীর ঠোঁটের কোনে ঔষধ লাগিয়ে দিলো রোয়েন।রুহী বাচ্চাদের মতো কাঁদছে রোয়েনের কোট খামচে ধরে।রোয়েন রুহীর মুখের সামনের চুলগুলো দুহাতে সরিয়ে বলল রুহী বলো কি লুকাচ্ছো তুমি?তুমি জানো আমি তোমাকে ভালবাসি।তোমার এসব নিতে পারছিলাম না। তাই এমন করলাম আজ।বলো রুহী কি হয়েছে।
কাঁদতে কাঁদতে হিচকি উঠে গেছে রুহীর।রোয়েন দুহাতে রুহীর চোখ মুছে দিলো।বলো রুহী।প্লিজ চুপ থেকোনা আর।জলদি বলো কি হয়েছে?রাগী গলায় বলল রোয়েন।কিছু হয়নি বলে উঠলো রুহী।ওকে ফাইন কিছু হয়নি মানলাম।কাল আমাদের বিয়ে মনে থাকে যেনো।রুহীর হাতে একটা ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে বলল এটা পরে সকালে রেডি থাকবে।ওকে? রুহীকে ঘরে রেখে দিলো রোয়েন।রুহী ভীষন চিন্তিত হয়ে পড়লো।কি করবে এখন ও?রোয়েন নাকি কালই বিয়ে করবে।কিন্তু ও পারবে না রোয়েনকে বিয়ে করতে।লোকটাকে ধোঁকা দেয়া হবে।কিন্তু যাকে ভালোবাসি কি করে ধোঁকা দিবো তাকে?
পরদিন সকাল ভোরে ঘুম ভেঙ্গে যায় রুহীর।লোকটা পাশে নেই ওর।কাল সারারাত ওকে বুকে নিয়ে ঘুমিয়েছে রোয়েন।রুহী কোনমতে নিচে নেমে এলো।সারাবাড়ির কোথাও নেই রোয়েন।রুহী চুপিচুপি মেইন ডোর খুলতে লাগলো।দরজা খুলতেই সামনে রোয়েন কে দেখতে পেলো রুহী।
আ আ আপন আপনি?কাঁপা কাঁপা গলায় বলল রুহী।
রোয়েনের চোখজোড়া রক্তবর্ন হয়ে আছে।রুহীর কবজি চেপে ধরলো রোয়েন।
রুহী নিজের হাত ছাড়াতে চেষ্টা করছে।রোয়েন টেনে হিচড়ে রুমে নিয়ে এলো রুহীকে।তারপর দরজা বন্ধ করে দিলো।কই যাচ্ছিলি বল?কই যাচ্ছিলি?চিৎকার করতে করতে হাতের কাছে যা পাচ্ছিলো ভাঙ্গতে লাগলো রোয়েন।
রুহী কানে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।বলিস না কেন কই যাচ্ছিলি?গলা ফাঁটিয়ে চিৎকার করলো রোয়েন।
আমি চ চ চলে যা যাচ যাচ্ছিলাম।কাঁপা গলায় বলল রুহী।রোয়েন এবার সবচেয়ে বড় ফুলদানিটা আছড় দিলো।রুহী নিচে বসে পড়লো ভয় পেয়ে।রোয়েন রুহীর হাত টেনে দাঁড় করিয়ে ওর ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরলো।
|
|
|
|
চলবে