Married To The Dark King- Mafia Boss- Season 3 !! Part- 44
একসাথে অনেক গুলো হাততালি বেজে উঠলো।রোয়েনের চেহারায় পূর্নতার খুশি,ভালোবাসার ভালোলাগার মানুষটাকে আপন করে পাওয়ার খুশি, জীবনে অনেক কিছু হারিয়ে ও সব পেয়ে যাওয়ার খুশি,সব মিলিয়ে পুরো দুনিয়াটাই আজ ওর হাতে।আজ রোয়েনের খুশি যেন ধরাছোঁয়ার বাহিরে।রুহীকে নিজের করে পেয়ে গেছে ও।শারীরিক ভাবে না মন থেকেই রুহীকে পেয়ে গেছে রোয়েন।
রুহীর সারামুখে একরাশ লজ্জার মাঝে ও ভীষন ভালো লাগা কাজ করছে।কিছুদিন আগে ও মানুষটাকে হারিয়ে ফেলার ভয় ছিলো আর আজ জীবনের এত্তবড় একটা দিন এভাবে পেয়ে যাবে ভাবতেই বুকজুড়ে প্রশান্তির নিশ্বাস ভরে গেলো।
রোয়েনকে তো সেদিন থেকে স্বামী মেনে নিয়েছিলো যেদিন হাসপাতালে রুহীকে বাঁচানোর জন্য ছুটে চলে আসে।রোয়েনকে যেদিন ভালোভাবে বুঝতে শুরু করেছে সেদিন লোকটাকে হৃদয়ের সবটুকু দিয়ে ভালোবাসতে শুরু করেছে রুহী।
মামী এসে রুহীর পাশে বসলো।টুম্পি তোর জন্য আমি খুব খুশি আজ।বলেই রুহীর কপালের এক কোনে চুমু দিলেন মামী।রোয়েন আচমকাই মামীর পা ধরে সালাম করলেন।
বাবা তুমি তো আমারই ছেলে।অনেক সুখে থাকো দুজন।আর কখনো মায়ের অভাব অনুভব করবেনা।যখনই মাকে মনে করবে সেদিনই আমার কাছে ছুটে আসবে।বলতে লাগলেন রায়না রহমান।
জি মা।বলে উঠলো রোয়েন।
জানো বাবা তোমার মুখে মা শুনলে বুকের ভিতর লাগে।যেন বছর বছর এই ডাকটার জন্য অপেক্ষা করে আছি।
রোয়েন মাথা নিচু করে হাসলো।আমার ও আপনাকে মা বলতে ভালো লাগে।মনে হয় যেন নিজের মাকেই বলছি।বলেই আবার মলিন হাসলো রোয়েন।
থাক বাবা আজ এই খুশির দিনে মন খারাপ করোনা।আমার এই মেয়েটা (রুহীকে জড়িয়ে) খুব ভালো মেয়ে।ওকে সুখে রাখবা।বৌকে ভালো রাখলে দুনিয়ার সবচেয়ে সুখি তুমি হবা।বলে উঠলেন রায়না রহমান।
জি মা ওকে সুখে রাখবো।রুহীর হাত ছুঁয়ে বলল রোয়েন।
রুহী জ্বলজ্বলে চোখে রোয়েনের দিকে তাকালো।
হঠাৎ রুপন্তীর প্রবেশ।জিজু আপনার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আমার।কিছুটা অভিমানের ভান করে রুপন্তী।
কি করেছি আমি?ভ্রু কুঁচকালো রোয়েন।
আপু অনেক কষ্টে ছিলো।জানেন সারারাত কাঁদতো।কখনো কখনো আপনার নাম ধরে রাতে চিৎকার করে উঠতো(রুপন্তি)।
যতো কষ্ট পেয়েছে ভালোবাসা দিয়ে সব পুষিয়ে দিবো।বলে উঠলো রোয়েন।
রুপন্তী হাসছে।
আজিজ রায়হান সবাইকে খেতে ডাকলেন।রুহী রুপন্তীর সাথে পাকঘরে চলে গেলো।
খাবার সাজানো হলো টেবিলে।হরেক রকমের পদ।রুহীকে দায়িত্ব দেয়া হলো রোয়েনকে দেখার জন্য।ওর খাবারে যেন কোন সমস্যা না হয়।এমন বলল আজিজ রায়হান।
রুহী রোয়েনের পাশে দাঁড়িয়ে আছে।কিছু লাগবে কিনা সেটার জন্য রোয়েনকে কাছ থেকে দেখার জন্য।
রোয়েন খাওয়ার ফাঁকে রুহীকে দেখে নেয়ার সুযোগটা ছাড়ছেনা।
খাবার শেষে রোয়েনকে পাঠানো হলো রেহানের রুমে রেস্টের জন্য।রুহী আর রুপন্তী নিজেদের রুমে চলে গেলো।
সন্ধ্যায় ড্রয়িং রুমে একত্রিত হলো সবাই।
আজ আপনাদের কিছু জানাতে চাই।বলে উঠলো রোয়েন।
কি জানাতে চান স্যার?জিজ্ঞেস করে উঠলেন আজিজ রায়হান।
সেটা হলো রেহান আর রুপন্তী একে অপরকে পছন্দ করে।বলে উঠলো রোয়েন।
কথাটা শুনে রুপন্তী আর রেহানের চেহারার ১৪টা বেজে গেলো।
(ভাইয়া কি বললি এটা?আজ খুশির দিনে এতো বড় ধরা?চাইছিলাম তোর বিয়ের দিনে বর সাজানোর কাজটা আমিই করবো কিন্তু সেটা তো হবেনা মনে হচ্ছে)মনে মনে ভয় পেতে লাগলো রেহান।
(আরে আব্বু কে এমন দেখাচ্ছে কেন?কিছু বলছেনা কেন বাবা?বাবা কি এসে থাপড় লাগাবে?নাকি ঘর থেকে বের করে দিবে?হায় আল্লাহ রুপন্তী কি করবি এখন?কার বাসায় যাবি?নিথির বাসায় যাওয়া যায়,নাহ দুদিন পর খোটা দিবে ও,তাহলে পিয়ার বাসায় হ্যা ঐটাই ঠিক হবে)মনে মনে ঠিক করছে রুপন্তী বাবা তাড়িয়ে দিলে কই যাবে ও।
রুপন্তী!!!!ডেকে উঠলেন আজিজ রায়হান।
জি জ জি ব ব বাব বাবা???তোঁতলাতে লাগলো রুপন্তী।
এটা কি সত্যি?কিছুটা রাগী গলায় বললেন আজিজ রায়হান।
ক ক কোন টা ব ব বাব বাবা?(রুপন্তী)
ওনি(রোয়েন)যেটা বলল।আজিজ রায়হান বললেন।
মাথা নিচু করে ঝাঁকালো রুপন্তী।
সাইফ রহমান আজিজ রায়হানের মুখে হাসি।
স্যার আপনি না বললে জানতামই না আমরা।আজিজ রায়হান হেসে বললেন।
বাবার কথায় মাথা তুলল রুপন্তী।সাইফ রহমান বললেন সত্যি আজ খুব খুশি আমি।রুপন্তী খুব ভালো মেয়ে।আমাদের মেয়ে আমাদের কাছেই থাকবে।বলে উঠলেন সাইফ রহমান।
রুপন্তি অবাক চোখে রেহানের দিকে তাকালো।
রেহান হাস্সোজ্বল মুখে রুপন্তীকে দেখছে।
সন্ধ্যার হালকা চা নাস্তা সেড়ে উঠে দাঁড়ালো রোয়েন।বাসায় প্রচুর গেস্ট।এতো গেস্টের মাঝে রুহীকে পাওয়া যাবেনা সেটা ভালোমতোই বুঝে গেছে রোয়েন।
কি বাবা রোয়েন চলে যাচ্ছো?জিজ্ঞেস করে উঠলেন সাইফ রহমান।
জি বাবা যেতে হবে।কাজ আছে আমার।বলে উঠলো রোয়েন।
মামা মামী আজিজ রায়হান আনিলা বেগম রুপন্তী রেহান রুহী সবাই মেইন গেট পর্যন্ত এলো রোয়েনকে বিদায় দিতে।রুহী আজিজ রায়হানের পিছে দাঁড়িয়ে রোয়েন কে চুপিচুপি দেখছে।রোয়েন ও সবার সাথে কথা বলার ফাঁকে রুহীর দিকে তাকিয়ে সবার চোখ আড়াল করে বিভিন্ন ইশারা করেছে।
গাড়িতে উঠে বসতেই কল এলো রোয়েনের।রফিক কল করছে।রোয়েন দ্রুত ওর কাজের জায়গায় চলে এলো।
ওর দলের লোকেরা একত্রিত হয়ে আছে।
রোয়েন সবার মাঝ দিয়ে হেঁটে নিজের আসনে পায়ের ওপর কা তুলে বসলো।
কই থাকে সে?সে কে?জিজ্ঞেস করে উঠলো রোয়েন।
স্যার ওনি সাজিদ রায়হান চৌধুরী,গুলসান ১ এ ওনার নিজস্ব বাড়ি।ওনার বাড়ির ত্রিসীমানায় ও কেউ ঘেষতে পারেনা।
১১২ জন গার্ড রেখেছেন বাড়ি পাহাড়া দেয়ার জন্য।যারা এ পর্যন্ত ওনার বাড়ির গেটে ঢুকার চেষ্টা করেছে কেউ ফিরে আসতে পারেনি।গক নাগাড়ে কথা গুলো বলল সজল।
রোয়েন ঠোঁটে আঙ্গুল রেখে বসে আছে।পাঁচ মিনিট পর সোজা হলো রোয়েন।
শত্রু হিসেবে নয় সন্তান হিসেবে ওনার ঘরে যেতেই পারি।জন্মগত অধিকার আছে আমার ইয়ার।কথা গুলো বলেই বাঁকা হাসলো রোয়েন।
চলবে