Mafia Boss- Season- 3

Married To The Dark King-  Mafia Boss- Season 3 !! Part- 33

কি ভাইয়া আপনাদের কি বিয়ে করার ইচ্ছে নেই?জিজ্ঞেস করে উঠলো রেহান।নাহ তেমন কিছুনা বলে, রুহীর থেকে চোখ সরিয়ে অন্যদিকে তাকায় রোয়েন।কেমন একটা গভীর ভাবনায় পড়ে গেলো ও।রুহী রোয়েনের দিকে তাকিয়ে আছে।হঠাৎ রোয়েন এমন করছে কেন বুঝতে পারছেনা রুহী।এরপর থেকে রোয়েন বেশি কথা বললনা।চুপচাপ ওদের কথা শুনতে লাগলো।
মাঝরাতে যে যার রুমে ঘুমোতে চলে যায়।রোয়েনের বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে রুহী।রোয়েন রুহীর দিকে হাসলো তবে হাসিটা মলিন যা রুহীর মন জয় করার বদলে একরাশ আতঙ্ক ঢেলে দিলো।
ঠিক আছো তো তুমি?জিজ্ঞেস করলো রুহী।
হুম।গম্ভীর কন্ঠে বলে রুহীকে শক্ত করে নিজের সাথে জড়িয়ে রাখলো রোয়েন।
দুদিন থাকার পর রুহী রেহান রুপন্তী আজিজ রায়হানের বাসায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।রুহীর লাগেজ নিয়ে নিচে নেমে এলো রোয়েন।পিছু পিছু রুহী নেমে এলো।রেহান আর রুপন্তী বাহিরে গাড়িতে অপেক্ষা করছে।রুহীর চোখজোড়ায় পানি টলমল করছে।কিন্তু রোয়েন সামনে তাকিয়ে হেঁটে যাচ্ছে।
রুহী বারবার রোয়েনের দিকে তাকাচ্ছে।তার কি খারাপ লাগছেনা?
পড়াশুনা করবে,ঠিকমতো কলেজে যাবে।অনেক দিন কলেজ ফাঁকি দিয়েছো এটা লাস্ট ইয়ার তোমার।মাস্টার্স কোন ভার্সিটিতে করবে ঠিক করেছো কিছু?ঠিক করলে জানিয়ো।আমি হেল্প করবো।একাধারে বলে গেলো রোয়েন।আচমকা রোয়েন নিজের বুকে কারোর নিশ্বাস পাচ্ছে।শরীরটা বারবার কেঁপে উঠছে।
রুহী প্রত্যেক যাওয়ার সময় কাঁদার কি আছে।মনে হয় যে আমাদের একবছর পরপর দেখা হয়, বলে উঠলো রোয়েন।কেমন হয়ে গেছো তুমি।আগের ফিল কেন পাইনা রোয়েন?পাল্টে গেছো তুমি ভীষন পাল্টে গেছো।কাঁদতে কাঁদতে কথা গুলো বলছিলো রুহী।কথাগুলো
বলার সময় রোয়েনের কালো গেঞ্জী খামচে ধরছিলো বারবার।রুহীর মাথায় আলতো ভাবে হাত রাখলো রোয়েন।রুহী রোয়েনের হাত সরিয়ে বলল এত ঢং দেখাতে হবেনা।জ্বলজ্বলে চোখে রোয়েনের দিকে তাকিয়ে কথা গুলো বলে চলে আসছিলো রুহী।
রোয়েনরুহীর হাত টেনে বুকে জড়িয়ে নিলো।
রুহী সরে আসতে চাইতেই জোরে জাপটে ধরলো রোয়েন।কিছুক্ষন পর রুহীর দুগালে হাত রেখে সামনে আনলো রোয়েন।রুহীর কপালে চুমু দিলো রোয়েন।
I love you রুহী।বলে আবার ও বুকে জড়িয়ে ধরলো।
রুহীর কান্নার গতিবেগ বেড়ে গেলো।কোনমতে রুহীকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে বাহিরে নিয়ে এলো রোয়েন।
সবাই রোয়েনের কাছে বিদায় নিয়ে চলে গেলো।
রেহান কে দেখে ভীষন অবাক হলো সবাই।
রেহান বলিস নি আসবি।হঠাৎ কি করে?জিজ্ঞেস করে উঠলো রায়না রহমান।
মাম্মা আসলে যে কাজটা ছিলো সেটা কমপ্লিট হয়ে গেছে,তাই আর কি।বলে উঠলো রেহান।
লাঞ্চ সেড়ে সাইফ রহমানের সামনে এসে বসলো রেহান।ড্যাড কি যেন বলবা বলছিলা?জিজ্ঞেস করলো রেহান।
হুম ভাবছি এখানে সেটেল হয়ে যাবো।আর কতো পরের দেশে পড়ে থাকবো?বয়স তো কম হলোনা।শেষ নিশ্বাস এখানেই ত্যাগ করতে চাই।বলে উঠলেন সাইফ রহমান।
ড্যাড তুমি ও না?কি যে বলো।বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলল রেহান।দেখ রেহান মানুষ মাত্রই মরণশীল। একদিন না একদিন তো মরতেই হবে।বলে উঠলো সাইফ রহমান।রেহান সরে এলো বাবার কাছ থেকে।বলছিলাম তুই অস্ট্রিয়ায় থাক।সেখানকার বিজনেস সামলা।
ড্যাড কি বলছো এসব?তোমাদের ছেড়ে কি করে থাকবো আমি।একয়দিন যেন নিশ্বাস আটকে আসছিলো।
বিজনেসটা এখানে ট্রান্সফার করি।এখানেই থেকে যাই সবাই।
ভালো বুদ্ধি।আচ্ছা শুন তোর মা কি বলতে চায় তোকে।কয় দিন ধরে খুব ডিস্টার্বড ফিল করছে রায়না।সাইফ রহমান বলে উঠলেন।
তোমাকে বলেনি কিছু?ভ্রু কুঁচকালো রেহান।
মাথা নাড়লো সাইফ রহমান।জানতে চেয়েছি কিন্তু কিছু শেয়ার করেনি।বলেই থামলেন সাইফ রহমান।
রেহান উঠে দাঁড়ালো।ড্যাড তুমি ঘুমাও,মাম্মার সাথে কথা বলে আসি, বলেই বেরিয়ে গেলো রেহান।
রায়না রহমানের কাছে যেতেই দেখলো রুহী আর রুপন্তী রায়না রহমানকে মাঝখানে রেখে ওনাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে।
তারের জানিস টুম্পা চিৎকার করে উঠলো,সাথে সাথে ছায়া টা সরে গেলো বিদ্যুত গতিতে”কথাটা শেষ করতে পারলেননা রায়না রহমান।রেহানের ডাকে ওনার কথা ছেদ পড়লো।মাম্মা!!!ডেকে উঠলো রেহান।
কিরে রেহান?পিছু ফিরলেন রায়না।
একটু কথা ছিলো তোমার সাথে বলে উঠলো রেহান।
ওকে আমি আসছি।শুন টুম্পা টুম্পিরা গল্পটা পরে বলছি।রুহী আর রুপন্তীর গালে চুমু খেয়ে উঠে রেহানের সাথে বেরিয়ে এলেন রায়না।বারান্দায় এসে দাঁড়ালো দুজন।
ড্যাড বলছিলো কি যেন বলতে চাও আমাকে?জিজ্ঞেস করলো রেহান।
এখানে আসার পর কিছু একটা খুব বিরক্ত করছে আমায়।
খুব খারাপ ফিল হয় রেহান।দম আটকে আসে আমার।বলে উঠলো রায়না রহমান।
মাম্মা কি হয়েছে বলো।মাকে ধরে বলল রেহান।
এখানে আসার পর থেকে একটা স্বপ্ন প্রতিদিন দেখছি।একটা বাচ্চা সম্ভবত পাঁচ বছরের,কান্না করছে চিৎকার করে মা মা করে ডাকছে।
ওর পিছনে অনেক বড় একটা দানব আছে যে ওকে আমার কাছে আসতে বাঁধা দেয়।ছেলেটা আমায় ডাকে।আমি ও ওর কাছে যেতে চাই কিন্তু পারিনা।খুব কষ্ট হয়।বলেই কেঁদে দিলেন রায়না রহমান।
মায়ের কথায় বেশ অবাক হলো রেহান।বেশ চিন্তায় পড়ে গেলো ও।তবু ও মাকে সামলাতেই বলল তুমি ট্র্যাজিক ড্রামা গুলো এখনো দেখো তাইনা মা?
না বাবা বেশ কিছুদিন টাইম পাচ্ছিনা ওসব দেখার।বলে উঠলেন রায়না রহমান।আরে মা ওসব নিয়ে আর ভেবোনা।
রেহান মাকে শোবার ঘরে পাঠিয়ে রুমে চলে এলো।
নীলক্ষেতের সামনে দাঁড়িয়ে আছে রোয়েন।কিছু চিন্তা করে সামনে হাঁটা ধরলো।
এমবিবিএস বই এর দোকান গুলোয় তেমন ভীড় নেই।রোয়েন সামনে থাকা বইগুলো ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখছে।চোখের কোনা ভরে এলো ওর।
কি স্যার প্রফেসর নাকি?কোন মেডিকেল কলেজের?
দোকানদার জিজ্ঞেস করে উঠলো।
দাঁতে দাঁত চেপে লোকটির দিকে তাকালো রোয়েন,মাইন্ড ইউর উন বিজনেস।
ওকে সরি স্যার।লোকটি চুপ হয়ে গেলো।বেছে বেছে দরকারি কিছু বই নিয়ে বেরিয়ে পড়লো রোয়েন।কিছু কলম আর খাতা ও কিনে নিলো।নিজের কাছে কেমন জানি লাগছে ওর।হঠাৎ রফিকের সামনে এসে পড়লো রোয়েন।স্যার আপনি এখানে?জিজ্ঞেস করলো রফিক।
আরে রুহীর কিছু বই কিনতে হলো।বলে অন্যদিকে তাকালো রোয়েন।
ওহ।স্যার আমার মেয়ে এবার পিএইচসি দিবে।দোয়া কইরেন।বলে উথলো রফিক।
ওকে।বলে চলে এলো রোয়েন।
ঘরে ফিরে বইগুলো নিয়ে বসে পড়লো।
রুহী নিয়মিত ক্লাশ করছে পড়াশুনা ঠিক রাখছে।তবে মাথায় অন্য কিছু কাজ করছে ওর।রোয়েন যখনই বাসায় আসে রায়না রহমানের রুমে ঢুকে যায়।বেশখানিক্ষন গল্প করে চলে যায়।রুহীর সাথে ও খুব একটা কথা হয়না।রুহী রোয়েনকে বেশ কিছুদিন ধরে অবজার্ভ করছে।ভিডিও কলেও খুব কম কথা বলে।কেমন যেন ছাড়া ছাড়া ভাব ওর মাঝে।রুহী দুএকবার বিয়ের কথা বলেছিলো কিন্তু রোয়েন চুপ হয়ে গিয়েছিলো। কিছুই বলেনি।
চলবে?