My Mafia Boss Season 2

My Mafia Boss- Season- 2 !! Part- 26

,,আশেপাশে তাকিয়ে পরিবেশটাকে বোঝার চেষ্টা করছে আনাম।বড় অচেনা লাগছে সব।মাথাটা কেমন যেন ঘুরছে।দুচোখ হাত দিয়ে কঁচলে ভালো করে তাকানোর চেষ্টা করলো আনাম।এটা তো ওর রুম নয়।কই চলে এলো ও?ও তো রুমুর বাসা থেকে আসছিলো কিন্তু পরে কি হয়েছিলো?কিছুই মনে পড়ছেনা আনামের।বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে ওয়াশরুমের দিকে চলে গেলো আনাম।ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এসে রুমটাকে ভালো করে পর্যবেক্ষন করে দরজা খুলে বেরিয়ে এলো আনাম।
,,,,,,,,,,,,,,আনিলা বেগমের পাশে বসে আছে রুহী।বাবা এমন করলো ভাবতেই প্রচন্ড রাগ লাগা কাজ করছে রুহীর।রুহীর দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে ওর হাতের ওপর হাত রাখলো রোয়েন।খাটে শোয়া আনিলা বেগমের দিকে চোখ পড়তেই আনিলা বেগমের কাছে এসে দাঁড়ালো আনাম।পাশে রুহী আর রোয়েনকে দেখতে পেয়ে বিস্ময়ের ঘোর যেন কাঁটছেইনা আনামের।রোয়েন রুহী থেকে চোখ সরিয়ে আনিলা বেগমের দিকে তাকালো আনাম।নিজের মাকে এভাবে দেখবে কখনো ভাবতেই পারেনি আনাম।রোয়েন বিছানা ছেড়ে আনামের সামনে এসে দাঁড়ালো। রোয়েনের দিকে তাকায় আনাম।আমি এখানে কেন?মা কি করছে এখানে?মায়ের এ অবস্থা কেন?চিৎকার করে বলতে থাকে আনাম।Calm down.Everything is alright.আনাম সোফায় বসে পড়লো।রোয়েন আনামের পাশে এসে বসলো।আপনি বলুন মায়ের এ অবস্থা কেন?কি হয়েছে আমার মায়ের।রোয়েনের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো আনাম।প্রথম থেকে সব কিছু খুলে বলল রোয়েন আনামকে।আনামের বিশ্বাস হচ্ছেনা ওর বাবা এ কাজ করলো সামান্য সম্পত্তির জন্য। আজ এ লোককে আমার হাত থেকে কেউ বাঁচাতে পারবেনা বলে আনাম উঠে দাঁড়িয়ে দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেলো।রুহী আনামের পিছু যেতে লাগলো।মেইন ডোরের দরজা খুলতেই আনামের হাত ধরে ফেলল রুহী।কোথা ও যাবিনা।রুহী বলে উঠলো।দেখছিস না মায়ের কি অবস্থা করেছে?রাগী গলায় বলে উঠলো আনাম।যা করার ওনি করবেন।দ্রুত কোন সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হবেনা।রুহী বলে উঠলো।আনাম কিছু বলতে পারলো না।রাস্তায় ড্রাংক অবস্থায় পড়েছিলি। আনামের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে রুহী।ঐদিনের বলা রুমুর প্রত্যেকটা কথা মনে করতে পারে আনাম।আনাম যদি ওর সামনে যায় নিজেকে শেষ করে দিবে বলেছিলো রুমু।বোনের সামনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে আনাম।কি হয়েছে কি?রুহী প্রশ্ন করে উঠলো।রুমুর সাথে ঘটা প্রত্যেকটা কাহিনী বলতে লাগলো আনাম।চিন্তা করিস না আমি কথা বলবো ওর সাথে।রুহী মাথা নিচু করে বলল।আনাম অশ্রুসিক্ত চোখে রুহীর দিকে তাকালো।আজ এই মানুষটাকেই বড় অাপন মনে হচ্ছে আনামের।
,,,,,,,,,,,,রোয়েনের বাসায় সাত আট দিন কেঁটে গেলো আনাম আর আনিলা বেগমের।রুহী রোয়েন দুজনে মিলে ওদের খেয়াল রেখেছে।আনিলা বেগম ও বেশ সুস্থ বোধ করছে।বিকেলে হঠাৎ ফল মিষ্টি নিয়ে হাজির আজমল খান।আপনি এখানে?রুহী বলে উঠলো।হ্যারে মা।বুড়ো বাবাকে আসতে দিবিনা?আজমল খান হাত জোড় করে বললেন। জানি মা অনেক অন্যায় করেছি তোর সাথে প্লিজ মাফ করে দে বাবাকে।রুহীর পিছনে এসে দাঁড়ালো রোয়েন।আপনি এখানে কি করছেন?দাঁতে দাঁত চাপলো রোয়েন।জামাই বাবাজি মাফ করে দাও আমাকে?রোয়েন রক্তচক্ষু দিয়ে আজমল খানের দিকে তাকিয়ে আছে রোয়েন।এ লোক কি বলছে এসব?এটা আজমল খান হতে পারেনা?কি চাল চলছে এই বুড়োর মাথায়? বুঝার চেষ্টা করছে রোয়েন।রুহী মামনি প্লিজ বাবাকে মাফ করে দে।রুহীর হাত ধরে বসলো আজমল খান।রুহী অবাক চোখে রোয়েনের দিকে তাকিয়ে আজমল খানের দিকে তাকালো। আপনি ভিতরে আসুন।বলে উঠলো রুহী।রুহীর মুখের দিকে তাকালো রোয়েন।কি বলছে এই মেয়ে?পাগল হয়ে গেলো নাকি? রুহীর দিকে তাকিয়ে ভাবছে রোয়েন।ততক্ষনে আজমল খান ভিতরে ঢুকে গেছে।আনিলা বেগমের কাছে চলে এলো আজমল খান।বাবাকে দেখে আনাম উঠে দাঁড়ালো। আপনি?রাগী গলায় বলে উঠলো আনাম।বাবা আমাকে মাফ করে দে।তোর বাবা আমি।ভুল হয়ে গেছে।বলতে থাকে আজমল খান।আনিলা বেগমের হাত ধরে বসলো আজমল খান।আনিলা ঐদিনের পর থেকে নিজেকে মাফ করতে পারছিনা।প্লিজ ফিরে এসো।তুমি আর আমাদের ছেলে ছাড়া আমি অপূর্ন।আজমল খানের এ রুপ সহ্য করতে না পেরে আনাম রুম ছেড়ে বেরিয়ে যায়।তুমি হঠাৎ এখানে এসে মাফ চাচ্ছো?কি চলছে তোমার মনে?বিরক্তিরছাপ মুখে এলো আনিলা বেগমের।জানি ঐদিন অনেক বাজে কাজ করেছিলাম।প্লিজ সব ভুলে চলে আসো আনিলা।কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলে উঠলো আজমল খান।এতো দিন যা করেছো। কি মনে করেছো সব ভুলে তোমাকে বিশ্বাস করবো?কখনোনা।বলে আনিলা বেগম দরজার দিকে পা বাড়ালো।
,,,,,,,,,,,,এক গ্লাস পানি এনে আজমল খানের সামনে রাখলো রুহী।রুহীর দিকে তাকিয়ে আছে আজমল খান।শত্রুর বাসায় তো পানি ও খাওয়া নিষেধ তাইনা? রাগী গলায় বলে উঠলো রুহী।রুহীর হাত থেকে গ্লাস নিয়ে এক ঢোকে পানি খেয়ে নিলো আজমল খান।কি বলছিস মা।এটা আমার মেয়ের বাসা আমার জামাইর বাসা।আজমল খান একনাগাড়ে বলে দিলেন।আজমল খানের পাশে বসলো রুহী।কিছু নাস্তা নিয়ে এলো কাজের লোকেরা।রুমের দিকে এগোতেই রোয়েনের হাত টেনে ধরলো আনাম।কিছু কথা আছে আপনার সাথে।আনাম বলে উঠলো।রোয়েন আনামের সাথে ড্রয়িং রুমে চলে এলো।জানি না এ লোক কি চায়?তবে বলছি সে ভালো মানুষ না।রুহীর সাথে অনেক অন্যায় করেছে।আমি ও করেছি।তবে ঐদিন এ লোক যা করলো তারপর থেকে বাবা বলে ডাকতে ও ঘেন্না লাগছে।রুহীর কোন ক্ষতি না করে বসে এই লোক।এক নাগাড়ে বলে উঠলো আনাম।রুহীর চিন্তা হচ্ছে তোমার ভাবচ্ছে আমাকে।রোয়েন বলে উঠলো। জানি বিশ্বাস করবেন না কিন্তু আমাকে যতোটা মায়া দরদ দিয়ে আগলে রেখেছিলো রুহী আমি এতোটাও পারতাম না।আনাম বলে উঠলো।আনিলা বেগম এসে দাঁড়ালো ওদের সাথে। রোয়েন বাবা ওনাকে বিশ্বাস করবানা।কোন ভরসা নেই এ লোকের।অভিমানী কন্ঠে বলে উঠলো আনিলা বেগম।রুহী আজমল খানের সাথে বসে আছে।শত হলে ও আজমল খান ওর বাবা।একটা মেয়ের জন্য তার বাবা অনেক কিছু।মাথা নিচু করে শাড়ীর আঁচলে চোখ মুচ্ছিলো রুহী।অনেক কথা জমানো আছে বাবার সাথে কিন্তু বলতে পারছেনা।বুক ফেঁটে আসতে চাইছে।চোখ জোড়া ভিজে আসছে রুহীর।
,,,,,,,,,,,,,আরে রুহী শ্বশুর বাবা এসেছে।কিছু খাওয়াবেনা?শত হলে ও বাবা তোমার।রুমে ঢুকে হাসি মুখে বলে উঠলো রোয়েন।আনিলা বেগম আনাম ও এসে দাঁড়ালো। কথা শুনে মাথা তুলে রোয়েনের দিকে তাকালো রুহী।রুহীর হাত টেনে রুম থেকে বেরিয়ে এলো রোয়েন।বাবার কি পছন্দ বলো,সব রান্নার ব্যাবস্থা করাচ্ছি।রুহীর চোখ জোড়া মুছে দিয়ে বলে উঠলো রোয়েন।রুহী কিছুই বুঝতে পারছেনা কি হচ্ছে এসব?রুহীর জবাবের অপেক্ষা না করে কাজের লোকদের রান্না শুরু করতে বলল রোয়েন।বেশ জাঁকজমকপূর্ণ খাওয়া হলো সবার।খাওয়া শেষে আনাম আর আনিলস বেগম আজমল খানের সাথে বেরিয়ে গেলেন।
চলবে