My Mafia Boss- Season- 1 !! Part- 27
রোয়েন কিছু না বলে বেরিয়ে গেল।রুহী রুমে এসে বিছানায় শুয়ে পড়লো।কি মনে করে উঠে আলমারির দিকে এগোলো রুহী আলমারি খুলে বিয়ের লেহেঙ্গা টা বের করে মুচকি হাসলো।এটাতে কেমন লাগবে আমাকে?পরে দেখবো কি?লেহেঙ্গা পরে আয়নার সামনে আসে রুহী।সুইট তিতা করলা বরটা একটু বেশিই রাগী তবে এতো খারাপ ও না।মাঝে মাঝে একটু রাগ দেখায় তবে খারাপ লাগেনা,বাবু হবার পর নিশ্চয়ই ভালো হয়ে যাবে। বিড়বিড় করে বলছিলো রুহী।তিতা করলাটা কে?রাগী গলায় বলে উঠে রোয়েন।রোয়েনের কন্ঠে রুহী আঁৎকে উঠে পিছনে ফিরে আ আ আপনি??রোয়েন রক্তচক্ষু দিয়ে রুহীর দিকে তাকালো এটা পড়লে কেন এখন?চিৎকার করে জিজ্ঞেস করলো রোয়েন।খুব আনন্দ হচ্ছে মনে?কেন পরেছিস এটা?
রুহীর চোখ ভরে আসে।আ আম আমি আসলে ……. কিছু বলার আগেই ধমক দিলো রোয়েন। চুপচাপ খুলে ফ্রেশ হয়ে নে।রুহী চোখের পানি মুছে রোয়েনের সামনে থেকে সরে গেল।জামা পাল্টে রুহী নিচে নেমে বাগানের দোলনা টায় এসে বসলো। ভেবেছিলো রোয়েন এসে ওকে জোর করে নিয়ে যাবে। অপেক্ষা করতে করতে রাত ৯টা বেজে যায় আরো কিছুক্ষন পর উঠে রোয়েনের রুমের দিকে উঁকি দেয় রুহী।রোয়েন ঘুমে বিভোর কোনো সাড়া শব্দ নেই।রুহী মন খারাপ করে পাশের রুমে এসে শুয়ে পড়ে।চোখের কোনা বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে।রোয়েন আজ কেন এমন করছে?ওকে ছাড়া ঘুমিয়ে ও পড়লো। তাহলে কি এতো দিন এগুলো ভালাবাসা ছিলোনা?ভাবতে থাকে রুহী।এক পর্যায়ে গভীর ঘুমে তলিয়ে যায় ও।
সকালে ঘুম ঘুম চোখে পাশে হাতায় রোয়েন।বিছানা খালি দেখে চোখ খুলে পাশে তাকায় ও।রুহী কই গেল?ঘড়ি চেক করে রোয়েন ৫টা বাজে। এতো সকালে রুহীর ঘুমভাঙ্গার কথা না।তাহলে কই গেল?বিছানা ছাড়ে রোয়েন।মাথাটা কেমন ঝিমঝিম করছে। কাল রাতের স্লিপিংপিলের নেশা এখনো কাঁটেনি ওর।ঘুমঘুম চোখে ফ্রেশ হতে চলে যায় রোয়েন।রুহী নাস্তা বানিয়ে রুমে এসে রেডি হয়ে নেয় স্কুলের জন্য।রোয়েন ফ্রেশ হয়ে নিচে যাওয়ার সময় পাশের রুমে চোখ পড়ে ওর।রুহী লম্বা চুল গুলো আঁচড়াচ্ছে। রুহীর রুমের দিকে এগোয় রোয়েন।কাল কই ঘুমিয়েছো?এ রুমে রুহী আস্তে করে বলল।কেন তোমার কি এ এ রুমে ঘুমানোর কথা?ভালো লাগছিলোনা তাই ঘুমিয়েছি এরুমে।রোয়েন কে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চুল ঝুঁটি করে রোয়েনের পাশ কেঁটে রুম থেকে বেরিয়ে যায় রুহী
।
রোয়েন অবাক হয়ে রুহীর যাওয়ার দিকে তাকায়।রোয়েন নিচে নেমে আসে।রুহী নাস্তা নিয়ে টেবিলে বসে আছে।রোয়েন রুহীর পাশের চেয়ারে বসে নাস্তার প্লেট হাতে নিলো।রুহী পানি দাও তো।পানির গ্লাস কাছে থাকা সত্ত্বেও রুহীকে বলল রোয়েন।রুহী গ্লাস রোয়েনের হাতে ধরিয়ে দিলো।ছুটির অ্যাপলিকেশন দিয়ে দিও স্কুলে। নেক্সট মাস অস্ট্রিয়া যাচ্ছি আমরা রুহীর দিকে একনজর তাকিয়ে বলল রোয়েন।বলবো বলে উঠে পড়লো রুহী।নাস্তা সেড়ে দুজনে বেরিয়ে আসে।রোয়েন দরজা খুলে দিলে রুহী গাড়িতে চেঁপে বসে রোয়েন ও পাশে বসে রুহীর হাত গিয়ারের ওপর রাখতেই হাত সরিয়ে নেয় রুহী।কি হলো সকাল থেকে এমন করছো কেন ধমক দিয়ে বলে উঠে রোয়েন।আমার হাতে ব্যাথা করছে দুহাত কঁচলাতে কঁচলাতে বলল রুহী। রোয়েন চুপচাপ গাড়ি চালিয়ে স্কুলের দিয়ে যেতে লাগলো।রুহী জানালার দিকে ফিরে চোখের কোনে জমে উঠা পানি মুছে নেয়। হাত ব্যাথার কথাটা পুরো মিথ্যা ছিলো।রোয়েনের কাছ থেকে বিয়ের এমন জবাব আশা করেনি রুহী। রোয়েন রুহীকে স্কুলে দিয়ে চলে গেল।
রুহীকে স্কুল থেকে নিয়ে আসে রোয়েন। আজ পুরোদিন রুহী কোণ কথা বলেনি ওর সাথে। রোয়েনের বিষয়টা বেশ অদ্ভুত লাগছে।দুপুরে লাঞ্চ সেরে রুহীকে কোলে করে রুমে নিয়ে এলো রোয়েন। বিছানায় শুয়ে রুহীকে বুকে টেনে নিতে গেলে সরে যায় রুহী।আমার এভাবে ঘুম হয়না অপরপাশে ফিরে বলতে থাকে রুহী।এতো দিন বলো নি কেন তাহলে রাগী গলায় বলল রোয়েন।রুহী কিছু না বলে চোখ বন্ধ করে নিলো।রুহী কিছু বলছি আমি ধমকের সুরে বলল রোয়েন।রুহীর জবাব না পেয়ে জোর করে টেনে বুকে নিয়ে জোরে জড়িয়ে শুয়ে পড়ে রোয়েন। রুহী কিছু করতে চেয়ে ও পারলোনা।কারন রোয়েন কে চেনে সে।কখন রাগ করে বলা যায়না।
এভাবে বেশ কিছুদিন চলে গেল রুহী কোন কথাই বলেনা আগের মতো।চুপচাপ হয়ে গেছে মেয়েটা। রোয়েন ভালবেসে কাছে টানতে চাইলে ও বাঁধা দেয় রুহী।রোয়েনের বিষয় টা স্বাভাবিক মনে হচ্ছেনা।কি চলছে রুহীর মনে?ভাবতে ভাবতেই বিছানায় শুয়ে থাকা রুহীর দিকে তাকায় রোয়েন।অন্যদিকে ফিরে শুয়ে আছে রুহী।চুলগুলো বালিশের ওপর এলোমেলো ভাবে পড়ে আছে ওর।রুহীর ফর্সা পিঠটুকু দৃশ্যমান।রোয়েন রুহীর কাছে এসে বসে পিঠে আলতো করে হাত বুলায়।রুহী কিছুটা নড়ে উঠে। রোয়েন রুহীকে সামনে ঘুরিয়ে ওর গালে কপালে চুমো দিতে থাকে।রুহী রোয়েনকে সরাতে চেয়ে ও পারছেনা। রোয়েন রুহীর ঠোঁটের দিকে এগিয়ে আসতেই রুহী বলে উঠলো আজ যা করার করে নিন কাল আমি অনাথ আশ্রুমে চলে যাবো। রোয়েন রক্তচক্ষু দিয়ে তাকায় রুহীর দিকে।কি বললি?ধমক দিয়ে বলে উঠে রোয়েন।আমি এখানে আর থাকতে চাইনা মাথা নিচু করে কাঁপা কাঁপা গলায় বলল রুহী।রোয়েন রুহীর গালে খুব জোরে জোরে দুটি চড় বসিয়ে দিলো।কেন এসব বলিস বারবার?কিসের অভাব আছে এখানে?চিৎকারে বলল রোয়েন।
ভালোবাসার ভালো ব্যাবহারের অভাব কান্না করতে করতে বলল রুহী।রোয়েন সামলাতে না পেরে রুহীর গালে খুব জোরে আরেকটি চড় বসাতেই নিচে পড়ে ঠোঁট ফেঁটে যায় রুহীর।আমি এখানে আর থাকবোনা চলে যাবো আমি চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে পাশের রুমে চলে এলো রুহী।রোয়েন রাগে ফুঁসছে।কিভাবে মারতে পারলো ও রুহীকে? ঘর থেকে বেরিয়ে যায় রোয়েন। গাড়িতে বসে সিগারেট ধরালো ও।চোখের পানি আর সিগারেটের ধোয়া মিলিয়ে যাচ্ছে।এতোদিন কার অবহেলা গুলো সহ্য হচ্ছিলো না রোয়েনের।ল্যাপটপ খুলে গতকয়েক দিনের সিসিটিভি ফুটেজ চেক করতে থাকে রোয়েন। হঠাৎ ওর সামনে চলে আসে রুহীর ওর মামার সাথে কথা বলার ফুটেজটা।রুহীকে বেশ চিন্তিত মনে হচ্ছিলো কথা বলার সময়।ভলিউম বাড়িয়ে রুহীর কথা গুলো শোনার চেষ্টা করলো রোয়েন।বুঝতে দেরি হলো রুহী ওর মামীর সাথো কথা বলেছে ঐদিন। আনিলা বেগম নিশ্চয়ই ওর মাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছিলো তাই রুহী সেদিন বিয়ের কথা বলেছিলো। রোয়েন রাগের মাথায় যাতা শুনিয়েছিলো রুহীকে।
আফজাল সাহেবের বাসার দিকে গাড়ি ঘোরায় রোয়েন।ঐদিন আনিলা বেগম রুহীকে কি বলেছিলো জানতে হবে।কলিংবেল শুনতেই আনিলা বেগম দরজা খুলে দেয়।।
রোয়েন বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে।
আরে বাবা তুমি???
আসতে পারি? গম্ভীর গলায় প্রশ্ন করলো রোয়েন।
আসো না ভিতরে আসো।।।
রোয়েন ভিতরে ঢুকে সোফায় বসলো।রুহীকে কি বলেছিলেন ঐদিন?রাগী গলায় প্রশ্ন করলো রোয়েন।
আমি আবার কি বললাম?কিছু বলিনি।
মিথ্যা বলছেন কেন?
সত্যি বাবা কিছু বলিনি।
আপনি এভাবে মানবেন না।আনিলা বেগমের মাথার সামনে বন্দুক ধরলো রোয়েন।সত্যি সত্যি বলুন নাহলে বুঝতেই কি করতে পারি আপনার সাথে দাঁতে দাঁত চেপে বলল রোয়েন।
ব ব বলছি।ঐদিন কার সব কথা খুলে বলল আনিলা বেগম।
রুহীকে এসব বলার অধিকার মেই আপনার।সাহস কি করে হয় আমার বৌকে এসব বলার?আবার যদি এমন কিছু শুনেছি তাহলে দেখেন কি করি আমি।উঠে দরজা জোরে খুলে বেরিয়ে পড়লো রোয়েন।
চলবে