The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 85

→আশফিনা বিছানার অপরপাশে ফিরে কাঁদছে।লোকটার দিকে তাকানোর সাহস নেই ওর।ও নিজে ও তো সুখের সাগরে ভেসে যাচ্ছিলো তাহলে কিভাবে বাঁধা দিলো তাকে?ভুল কিছুইতো করতে যাচ্ছিলো না সে।তাহলে???আশফিনা চায়না লোকটা নিজের জীবন নষ্ট করুক আশফিনাকে ভালবেসে।ও চায় ওকে ছেড়ে দিক অপছন্দ করুক।ঘন্টাখানেক আগে যখন রামীন আশফিনাকে ভালোবাসার সাগরে ডুবিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো।ওর শাড়ীর আঁচল টা সরিয়ে ওর কাঁধে চুমু খাচ্ছিলো।ও তো তার ভালবাসায় মগ্ন হয়ে যাচ্ছিলো।সাড়া দিতে যাচ্ছিলো তার ভালবাসায়।কিন্তু মাঝ পথে কি যেন হয়ে গিয়েছিলে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছিলো রামীনকে।ঘৃনার স্বরে বলছিলো,
.
.
-”আপনি কি বুঝেননা আপনাকে আমি চাইনা।কাছে থাকতে চাইনা আপনার?কেন কাছে আসলেন?কেন আমাকে শেষ করতে চাইলেন?আসলে আপনারা সবাই এমনই।শরীরটাই আপনার কাছে অনেক বেশি।মানুষের ইচ্ছা অনিচ্ছার ধার ধারেননা আপনারা।”
-”আশফিনা যা হতে যাচ্ছিলো তা অন্যায় নয়।তোমার স্বামী আমি।আর তোমার মতের বিরুদ্ধে হতে যাচ্ছিলো সে জন্য আমি দুঃখিত।কিন্তু তোমার কথা গুলো ও ন্যায়সঙ্গত নয়।তোমাকে আমি ভালবাসি।যদি তোমার শরীরটাই দরকার হতো তাহলে বিয়ের আগেই এমন অনেক পরিস্থিতি এসেছিলো।কিন্তু তোমাকে ভালবেসে ছিলাম বলেই নিজেকে সংযত রেখেছিলাম।তোমাকে আজো ভালবাসি যেমনই হও তুমি আর যাই করোনা কেন?”
-”আমি কিছু জানিনা।শুধু এটাই জানি আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেননা।”
.
.
কথা গুলো বলে আর অপেক্ষা করেনা আশফিনা শুয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে।ও অনূভব করতে থাকে রামীন খাটে শুয়ে পড়েছে তবে কিছুটা দুরত্ব রেখে।আশফিনা কথা গুলো মন থেকে বলেনি।ও তো ভালবাসে লোকটাকে।কিন্তু ও খুনি।ওর ভালোবাসার পাওয়ার ও যোগ্যতা নেই।এদিকে রামীনের চোখে ও ঘুম নেই।অপরপাশে একটু তাকিয়ে বৌকে দেখার চেষ্টা করে।হয়ত সে ঘুমিয়ে পড়েছে।কিন্তু রামীনের চোখে ও তো ঘুম নেই।ও তো কাছে চেয়েছিলো স্ত্রীকে। কিন্তু সব উল্টো হয়ে গেলো।বৌ তো ওকে পেতে চায়না।তবে ও অপেক্ষা করবে।কারন আশফিনা ওকে ভালবাসে।
আশফিনা অবশ্যই একদিন না একদিন ওর কাছে আসবেই।রুহী বিছানায় এপাশ ওপাশ করছে।অস্থির লাগছে ওর।মাথা ঘুরছে ওর।গা কাঁপছে।হাত পা অসাড় হয়ে আসছে।হঠাৎ খাট কেঁপে উঠায় রোয়েনের ঘুম ভেঙ্গে যায়।উঠে দেখে রুহীর কপাল ঘেমে একাকার।রোয়েন উঠে বসে রুহীর কপালে গালে হাত বুলাতে থাকে,
.
.
-”রুহী কি হয়েছে তোমার?শরীর খারাপ লাগছে?”
.
.
রুহী আধো চোখ নির্মিলিত অবস্থায় রোয়েনের দিকে তাকিয়ে বলে,
.
.
-”খুব খারাপ লাগছে রোয়েন।ঘুমোতে পারছিনা।শরীর বন্ধ হয়ে আসছে।”
.
.
রুহীর কথায় চিন্তিত হয়ে পড়ে রোয়েন।তারপর ও রুহীকে সাহস দেবার জন্যই বলল,
.
.
-”কিছু হবেনা।হয়ত সারাদিনের ক্লান্তির কারনে খারাপ লাগছে।
.
.
রুহী আর কিছু বলতে পারেনা।চোখ বুজে ঘুমানোর চেষ্টা করতে থাকে।রোয়েন উঠে ফাহমিনের নম্বরে কল দেয়।রোয়েন জানে শালা এখনো জেগে আছে।ফাহমিন কল রিসিভ করেই হেসে বলল,
.
.
-”কিরে এত রাতে কল দিলি।সব ঠিক আছে?”
-”রুহীর নাকি খুব খারাপ লাগছে।শরীর অসাড় হয়ে আসছে।ঘুমোতে পারছেনা।পুরো ঘেমে গেছে ও।”
-”এসব কিছু না রোয়েন।এসময়ে প্রায়ই এমন হয়।আর ওনি হয়ত ক্লান্ত ছিলেন।ঘুমায়নি সারাদিন তাই এমন হয়েছে।”
-”এখন কি করবো সেটা বল।”
-”শরীরটা পানি দিয়ে মুছে দেয়।এসি একটু বাড়ায় দেয়।মাথায় হাত বোলা।আর যতোটুকু সম্ভব ওনাকে সময় দে।”
-”ওকে।পরে কথা হবে তোর সাথে।”
.
.
রোয়েন ফোন কেঁটে রুহীর মাথার কাছে এসে বসে।এসি টা বাড়িয়ে দিয়ে পানি নিয়ে হাত পা রুমাল দিয়ে মুছে দেয় আর মাথায় পানি ঢালে।এখন যেন একটু শান্ত হয়ে এসেছে রুহী।রুহীর চুল মুছে দিয়ে রোয়েন এবার ওর পাশে শুয়ে চুল হাতিয়ে দিতে থাকে।রুহী এবার দূর্বল গলায় বলল,
.
.
-”শুয়ে পড়ো তুমি।”
-”ঘুমাবো আমি।আগে তুমি ঘুমাও।”
.
.
রুহী আর কিছু বলতে পারেনা।ঘুমিয়ে যায় ও।রোয়েন অনেকরাত পর্যন্ত রুহীর মাথার কাছে বসে থাকে।ভোরে ঘুমিয়ে যায়।টেস্ট পরীক্ষার পর লম্বা ছুটির শেষে ক্লাশ শুরু হয় রুহীর।টেস্ট পরীক্ষার রেজাল্ট ও বেরিয়েছে।রুহী ফাস্ট হয়েছে পুরো ডিপার্টমেন্টে।রুহী রেজাল্ট নিয়ে বেরিয়ে এসে দেখলো রোয়েন কলেজ প্রাঙ্গনে দাঁড়িয়ে আছে।রুহী অবাক।দুইঘন্টা যাবৎ লোকটা এখানে?রুহী রোয়েনের কাছে এসে দাঁড়ায়।
.
.
-”তুমি এখানে?কাজে যাওনি?”
-”যাবো তোমাকে বাসায় দিয়ে।তুমি কেমন আছো?”
-”ভালো।কিন্তু এতক্ষন এখানে দাঁড়িয়েছিলে যে?”
-”দুদিন আগে তুমি অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলে।তাই রিস্ক নিতে চাইনি।”
-”তুমি ও না।পা ব্যাথা করছেনা?”
-”বেঞ্চে কিছুক্ষন বসেছিলাম।খিদে পেয়েছে?”
-”খুব।”
-”চলো কিছু খাই।
.
.
রুহীকে নিয়ে পাশের রেস্তরায় চলে আসে রোয়েন।দুজনে পাস্তা আর কফি নিয়ে বসলো।রুহী আচমকা বলল,
.
.
-”রেজাল্ট এসেছে।”
-”তাই নাকি?আগে বলোনি যে?”
-”খেয়ালই ছিলোনা।পুরো ডিপার্টমেন্টে ফাস্ট হয়েছি।”
.
.
রোয়েন কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা।খেতে ও ভুলে গেলো।তারপর হঠাৎ উঠে এসে রুহীকে জড়িয়ে নিলো বুকে।রুহী ফিসফিসিয়ে বলতে শুরু করলো,
.
.
-”কি করছো কি ছাড়ো।আমরা বাহিরে।”
-”চুপ।এভাবে বসে থাকো।”
-”সবাই দেখছে।”
-”তো?”
-”তো আবার কি?কি ভাববে বলো তো?”
.
.
রুহীর কথায় সরে এলো রোয়েন।তারপর দুজন খেয়ে বেরিয়ে এলো।এদিকে সে রাতের পর থেকে রামীনের সাথে চোখ মেলাতে পারেনি আশফিনা।রামীন ও প্রয়োজন ছাড়া তেমন কথা বলেনি।রামীন ও আগের মতো দুষ্টুমি করে জোর করে ভালো ও বাসেনা।এখন অনেক কষ্ট হয় আশফিনার কান্না পায় ওর।কি করবে ও?কই যাবে?
এরই মাঝে নীরা হামিদ আরমান হামিদ আর সামায়রা বাংলাদেশে শিফট হয়ে গেলো।রোয়েন যখন জানতে পারে ওরা এসে হোটেলে খাবে।রোয়েন সরাসরি নাকোচ করে দিয়ে জোর গলায়,
.
.
-”আমরা থাকতে বাহিরে কেন খাবেন?”
-”কিন্তু রুহী অসুস্থ।তোমাদের ঝামেলায় ফেলতে চাইছিনা।”
-”ঝামেলায় ফেলবেন কে বলল?এখানে এসেই খাবেন।এটাই শেষ কথা।”
-”আচ্ছা বাবা ঠিক আছে আসবো।”
.
.
কথা অনুযায়ী আরমান হামিদ পরিবার সহ রোয়েনের ঘরে চলে আসে।নীরা হামিদ এসেই রুহীকে জড়িয়ে ধরেন।ঘরে নতুন সদস্য আসার খুশিতে ওনারা ও খুব খুশি।সামায়রা তো বেশ খুশি।খালা হবার খুশিতে লাফাচ্ছে ও।সতের বছর বয়সী হওয়া সত্ত্বে ও বাচ্চামো ভাব রয়েই গেছে।
খাবার শেষে রুহী জিজ্ঞেস করছিলো,
.
.
-”সামায়রাকে ইন্টারে ভর্তি করাতে হবে মামী।”
-”হ্যারে। ও তো খুব কান্না করছিলো কলেজ ছেড়ে আসার সময়।তা তোর ভার্সিটিতে ইন্টার আছে।”
-”না মামী শুধু অনার্স আর মাস্টার্স।”
-”ওহ।ভালো একটা কলেজে ভর্তি করবো।ও মেডিকেলে ভর্তি হবে জেদ করছে।”
-”চাচী মামাকে বলেন খোঁজ নিতে।আর আপনাদের জামাইকে ও বলবো খোঁজ নিতে।ওনার অনেক লোক আছে।”
-”আচ্ছা বলিস।আমি ও তোর মামাকে বলবো খোঁজ নিতে।”
.
.
আরো কয়েকটা দিন পেরিয়ে যায়।রোয়েন সামায়রা খুব ভালো একটা কলেজে ভর্তি করিয়ে দিয়েছে।
রোয়েন ভাবছে সবাই যখন চলে এসেছে তাহলে পার্টির ব্যাবস্থা করা উচিৎ।তাই অফিসের কয়েকজন কে নিয়ে বসলো।রামীন কে কয়েকদিন যাবৎ রোয়েন খেয়াল করছে বেশ চুপচাপ থাকে।কিছু বলেনি ও।রেজোয়ান মাহবুব বলল,
.
.
-”পার্টি কবে করতে চাইছেন?”
-”দেরি করতে চাইছিনা।পরশু হলেই ভালো হয়।”
-”আচ্ছা তাহলে সবাই কাজ শুরু করে দিক।গেস্টদের লিস্ট তৈরি করতে হবে।”
-”হুম।যা করার জলদি করতে হবে।”
.
.
সবাই চলে যাওয়ার পর রামীনকে রোয়েন বলল,
.
.
-”কি হয়েছে?ঠিক হয়নি কিছু?”
-”সেদিন ঘোর থেকেই ওর সাথে ইন্টিমেট হতে চেয়েছিলাম।বুঝতেই পারিনি ওর মত ছিলোনা সেখানে।কিন্তু ও রাগ করেছে।সেদিন কথা কমিয়প দিয়েছি।”
-”সব কিছুতে এতো তাড়া করলে হয়না।ধীরে সুস্থে করতে হয় সব।বলেছিলাম সময় দিতে।কিন্তু তুই ওর মন ঠিক না করেই ওকে পেতে চাইলি।”
-”কি করবো বল।আমি তো নিজের মাঝেই ছিলাম না।”
-”ওকে সময় দে।দেখবি ঠিক হয়ে যাবে সব।”
.
.
রামীন সেদিন মার্কেট থেকে আশফিনার জন্য একটা শাড়ী কিনে নেয়।ঘরে ফিরে দেখলো আশফিনা বসে মোবাইলে গেম খেলছে।রামীন প্যাকেটটা খাটে রেখে বলল,
.
.
-”পরশু পার্টি আছে।এই ব্যাগে একটা কাপড় আছে সেটা পরে পার্টিতে এ্যাটেন্ড করবে।”
-”হুহ।”
.
.
রামীন আর কিছু না বলে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে ফ্রেশ হতে।এদিকে রোয়েন ঘরে ফিরে ফ্রেশ হয়ে কফি নিয়ে বসে।রুহী এসে কোন কথা বার্তা ছাড়া রোয়েনের কোলে বসে পড়ে।রুহীর মুখ রোয়েনের দিকে ফিরানো।রোয়েন রুহীর দিকে তাকায়।রুহী কিছু না বলে রোয়েনের ঘাড়ে চুমু খেতে থাকে। বেশ ভালো লাগছে রোয়েনের।তবে বেশিক্ষন থাকতে পারলোনা ও।রুহীর মুখ ধরে সামনে নিয়প এসে ওর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।রুহীর টজোড়া শুষে নিয়প নিজের তেষ্টা মিটিয়ে সরে এলো রোয়েন।তারপর বলল
.
.
-”পরশু পার্টি আছে একটা।আলমারিতে তোমার জন্য একটা ড্রেস রেখেছি ওটা পরবে।”
-”আচ্ছা ঠিক আছে।”
.
.
ফাহমিন হাসপাতাল থেকে গাড়ির অপেক্ষা করছিলো।তখনই পাশের কলেজ থেকে ঘন্টার শব্দ শুনতে পায়।সেদিকে মন না দিয়ে গাড়ির অপেক্ষা করতে থাকে।হঠাৎ ওর মনকে পুলকিত করে কেউ বলে উঠলো,
.
.
-”আরেহ ফাহমিন ভাইয়া ভালো আছেন?”
চলবে