The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 84

→ঘরে ফিরে রুহীর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয় রোয়েন।ঠোঁটজোড়া প্রশস্ত করে হাসে রুহী।হাত দুটো দুদিকে ছড়িয়ে স্বামীকে জড়িয়ে ধরে ওয়েলকাম জানায় রুহী।রোয়েন আষ্টেপৃষ্ঠে রুহীকে জড়িয়ে ধরে ওর মাথার এক কোনায় চুমু খায়।রুহী সরে এসে বলল,
.
.
-”কেমন গেলো সারাদিন? ”
-”ভালো।তুমি কি করলে সারাদিন?”
.
.
ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বলতে থাকে রোয়েন।প্রিয়মানুষটির গলা জড়িয়ে রুহী বলতে শুরু করলো,
.
.
-”সকালে একটু ঘুমিয়েছিলাম তুমি যাওয়ার পর,তারপর উঠে নামাজ পড়লাম, একটু কুরআন শরীফ পড়লাম,আশফিনা কল করেছিলো ওর সাথে কথা বললাম,খেয়েছিলাম তবে বেশি খেতে পারিনি।আর বিকেলে টেলিভিশন দেখে আবার নামাজ পড়তে গেলাম।তারপর……
-”এখন কি করছিলে?”
-” বলা যাবেনা সিক্রেট।”
.
.
ওরা রুমে চলে এলো।রুহী এখন ও দুহাতে রোয়েনের গলা জড়িয়ে আছে।রোয়েন ঠোঁট এগিয়ে রুহীর দুগালে চুমু খেতে খেতে বলল,
.
.
-”তোমার আর আমার মাঝে সিক্রেট কি?”
-”আছে।আপনি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিন।আমি খাবার গরম করছি।”
.
.
রোয়েন থেকে একটু সরে এসে বলল রুহী।রোয়েন হেসে ওয়াশরুমে চলে গেলো।রুহী আলমারি থেকে রোয়েনের কাপড় চোপড় বের করে খাবার গরম করতে চলে যায়।আজ রুহী ঝালের পাশাপাশি মিষ্টি দই বানিয়েছে।রামীলা ও অবশ্য সাহায্য করেছে।মেয়েটা বেশ পছন্দ করে রুহীকে।রুহীর আশেপাশে থাকে রোয়েনের অনুপস্থিতিতে।রুহীর ও বেশ ভালোই লাগে রামীলা কে।বোনের মতো মেয়েটা।ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এসে কাপড় পাল্টে নেয় রোয়েন।রুহী আর রামীলা টেবিলে খাবার সাজালো।রোয়েন ডাইনিং রুমে এসে দেখলো ওর প্রিয় অনেক কিছু রান্না হয়েছে আর দই দেখে বেশ অবাক।রোয়েন একটু রেগে বলল,
.
.
-”বাহিরে গিয়েছিলে?দই খেতে ইচ্ছে হচ্ছে আমাকে বললে পারতে।এ অবস্থায় বাহিরে গেলে কেন?”
.
.
রামীলা কিছু বলতে গেলে রোয়েন বলল,
.
.
-”যা খেয়ে শুয়ে পড়।”
.
.
রামীলা রুমে চলে গেলো।রোয়েন আবার বলল,
.
.
-”বাহিরে গিয়েছিলে কেন?আমাকে বলতে পারতা।”
-”একটু বেশিই বুঝো।এতো এ্যাডভান্স ভাবো কেন?খেয়ে দেখো বাহিরের নাকি?”
-”ঘরে বানিয়েছো?”
-”হুহ!!”
.
.
রুহীর দিকে তাকাতে তাকাতে টেবিলে বসে পড়লো।খাবার খাওয়ার পর রুহী বাটিতে দই দিলো একটু।রোয়েন খেয়ে অবাক।রুহীর দিকে তাকায় ও।রুহী মাথা অন্যদিকে ঘুরিয়ে খেতে বসে।এবং অল্প একটু খেয়ে রুমে চলে যায়।রোয়েন খাবার শেষ করে রুমে এসে দেখলো রুহী নেই।রোয়েন খেয়াল করলো বারান্দার দরজা চাপানো।রোয়েন রুম থেকে বলল,
.
.
-”রুহী বারান্দায় আছো?”
-”কথা বলবিনা আমার সাথে।”
-”রুহী তুই তোকারি করছো কেন?তোমার হাজবেন্ড আমি।”
-”শ্রদ্ধেয় হাজবেন্ড দয়া করে চুপ থাকুন।”
-”আচ্ছা রুমে চলে এসো জলদি।”
.
.
হালকা হেসে খাটে বসে ল্যাপটপে কাজ করতে থাকে রোয়েন।আজ বেশ ক্লান্ত লাগছে রোয়েনের।তাই কাজের এক পর্যায়ে ঘুম চলে আসে রোয়েনের।রাত বারোটা বেজে পাঁচ মিনিট।এলার্মের শব্দে ঘুম ভাঙ্গে রোয়েনের।চোখ খুলে তাকি দেখলো রুম একদম ঠান্ডা হয়ে আছে এয়ার কুলারের বাতাসে।রুম আবছা অন্ধকার।পাশে রুহীকে না পেয়ে অবাক হয় রোয়েন।বাথরুমের লাইট অফ।রুহীকে কল দিতে গিয়ে খেয়াল করলো পাশের ছোট্ট টি টেবিলে ফোন বাজছে রুহীর।রোয়েন আতঙ্ক অনুভব করে।রুম থেকে বেরিয়ে খুঁজতে থাকে রুহীকে।সারা বাড়িতে না পেয়ে শেষমেষ ছাদে আসতে হয় ওকে।ছাদের মাঝে চাঁদের আলো পড়ছে।আর রুহী হলুদ পরী সেজে রোয়েনের দিকে পিঠ দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।রোয়েন কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা।ছাদে ঢুকে রুহীর পাশে এসে দাঁড়ায়।মন ভরে দেখতে থাকে মায়াবতীকে।মাথায় হলুদ ফুলের মুকুট,দুহাতে হলুদ ফুলের চুড়ি,কানে হলুদ ফুলের কানের দুল,গলায় হলুদ ফুলের দুটো মালা।রুহীর হলুদ পরনের হলুদ শাড়ীর আঁচলটা। আঁচলের কোনে সাদা কোমড় দেখতে পায় রোয়েন।কোমড় টাকে আরো সৌন্দর্য করে তুলেছে হলুদ ফুলের বিছা।একদম ছাদের খসখসে মাটি স্পর্শ করছে।রুহীকে পুরো দেখে নেয় রোয়েন।মুখে কোন মেকআপ নেই একমাত্র কাজল ছাড়া।রোয়েন যেন নতুন করে রুহীর নেশায় আবদ্ধ হয়ে পড়ছে।রুহীর শরীর থেকে নেশা জড়ানো ফুলের ঘ্রান ভেসে আসছে।রোয়েন আর না পেরে রুহীর কাঁধে হাত রেখে এগিয়ে আসে ওর কাছে।তারপর রুহীর কপালের এক কোনায় চুমু খায়।কিন্তু রুহী কিছু বলছেনা।রোয়েন সরে না এসে বলল,
.
.
-”রুহী মাফ করে দাও প্লিজ।”
.
.
রুহী কিছু বলছেনা।রোয়েনের ভালো লাগছেনা।রোয়েন আবার বলল,
.
.
-”রুহী তোমার চুপ থাকাটা আমার জন্য কষ্ট দায়ক হয়ে দাঁড়াচ্ছে। প্লিজ কিছু বলো।তোমার জন্য চিন্তা হয় বলেই এমন করেছি।রাগ করে থেকোনা।”
.
.
রুহী এখনো চুপ।রোয়েন এবার রুহীকে নিজের দিকে ফিরিয়ে নেয়।তারপর ওর গাল ছুঁয়ে বলল,
.
.
-”রুহী তুমি জানো তোমাকে আমি এক নজর না দেখে থাকতে পারিনা।ইচ্ছে হয় সবসময় তোমাকে সামনে নিয়ে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা দেখি।তোমাকে এক মুহূর্তের জন্য ও হারাতে চাইনা।আমি চাই দুজনে একসাথে বৃদ্ধ হবো।এবং আগামী ষাট বছরে একসাথে জোছনা বিলাস করবো।আমি তুমি আর আমাদের ভালবাসা।আমি চাই তুমি সবসময় ভালো থাকো সুস্থ থাকো।কারন তোমার হাসি আমাকে প্রতিনিয়ত নতুন জীবন দেয়।আমি হাসতে শিখি তোমার হাসিতে।এই হাসিটা সারাজীবন চাই তোমার চেহারায়।একটা প্রমিজ করি আজ।বেস্ট স্বামী আর বেস্ট বাবা হয়ে দেখাবো।যেন কখনো কম্পলেইন করার সুযোগ না পাও।”
.
.
রুহী কান্না করে দেয়।রোয়েন বলল,
.
.
-”কি হলো?কাঁদছো কেন?”
-”আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি রোয়েন।আপনার পছন্দের জন্য সব করতে খুব ভালো লাগে আমার।কারন তুমি খুশি থাকলে আমি খুশি আর আমার খুশির কারনে আমাদের বাবুটা ও খুশি হয়।আমি জানি এখন বের হলে রাগ করবে তুমি।তাই বানিয়েছিলাম দইটা।”
-”আমি খুব বোকা রুহী।অকারনেই বকে দিয়েছি।”
-”হুম।”
.
.
দুজনেই চুপ।হঠাৎ রোয়েন বলল,
.
.
-”হলুদ পরী লাগছো।”
-”থ্যাংক ইউ।”
-”কই পেলে এই ড্রেস আর গয়না?”
-”অনলাইন থেকে অর্ডার করলাম।”
-”তা এই গেট আপ কি আমার জন্য?”
-”তো কার জন্য হবে?”
.
.
রোয়েন রুহীর কোমড় ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসে।আর বলতে থাকে,
.
.
-”কিন্তু এখন যে নিজেকে সংযত রাখতে হবে আমার।কি করি বলো তো?”
-”জানি না।লজ্জা মাখা হাসি দেয়।”
-”আমি বলছি।”
.
.
রুহীকে কোলে তুলে নেয় রোয়েন।তারপর ছাদ থেকে নেমে রুমে চলে আসে।রুহীকে খাটে শুইয়ে দিয়ে ওর গয়না গুলো খুলতে শুরু করে।রুহী উঠে বসে রোয়েনের দুগালে চুমু খেয়ে আবার শুয়ে পড়ে।রুহীর কোমড়ের বিছাটা সব শেষে খুলে রোয়েন।রুহীর চোখ বন্ধ হয়ে আসে রোয়েনের ছোঁয়ায়।
রুহীর ওপর শুয়ে ওর ঠোঁট জোড়া শুষে নিতে নিজের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রোয়েন। রুহীর গলায় পেটে চুমু খেয়ে রুহীকে বুকে টেনে নেয় রোয়েন।এদিকে রামীন আর আশফিনার বিয়ের একমাস দশদিন পূরন হলো।কিন্তু বৌয়ের মন এখনো ঠিক হচ্ছেনা।আর কতো এই বিচ্ছেদ সহ্য করবে রামীন? আর কতো আশফিনার কাছ থেকে দূরে থাকবে ও?কথা গুলো ভাবতে ভাবতে ডাইনিং টেবিলে বসে থাকা আশফিনার দিকে তাকায় রামীন।আশফিনা একমনে নাস্তা খেয়ে যাচ্ছে।রামীন তাচ্ছিল্যেট হাসি হেসে অল্প একটু খেয়ে চলে যায়।রামীন উঠে যেতেই আশফিনা ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।হঠাৎ বড় ভাবি বলল,
.
.
-”আশু বাবু কে টিকা দিতে যাবো।যাবে তুমি?”
-”হ্যা ভাবি যাবো।”
-”আর আসার সময় শপিং ও করে আনবো।”
-”ওকে।”
.
.
রুহী কফি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রোয়েনের সামনে।চুল আঁচড়ে রুহীকে কাছে টেনে নেয়। তারপর নিচে বসে পেটে অনবরত চুমু খেতে থাকে।রুহীর ঠোঁটে ফুঁটে উঠে সন্তুষ্টির হাসি।রোয়েন বলল,
.
.
-”বাবা যাচ্ছি।মায়ের খেয়াল রাখিস।”
-”হুম।তুমি ও তোমার খেয়াল রাখবে আর ঠিক মতো খাবার খাবে।”
.
.
রোয়েনকে উঠাতে উঠাতে বলল রুহী।তারপর নিজেদের স্টাইলে কফি খেয়ে বেরিয়ে যায় অফিসের পানে।রামীন চুপচাপ মন খারাপ করে বসে আছে দেখে রোয়েন ভ্রু কুঁচকায়।
.
.
-”হলো কি তোর?”
-”একমাস দশদিন হলো আমাদের বিয়ের।আশফিনা ঠিক মতো কথা বলছেনা।”
-”কিন্তু কেন?কি হয়েছে?এখন তো সব ঠিক হয়েছে রাইট?”
-”ঠিক হয়ে ও হয়নি রোয়েন।আশফিনা নিজের বাবাকে মেরেছে বলে আমাকে বিয়ে করতে চায়নি।ও নাকি আমার যোগ্য না।”
-”আর এগুলো আজ বলছিস?”
-”ভেবেছিলাম সময়ের সাথে সাথে সব ঠিক হবে।কিন্তু হয়নাই।”
-”একটু সময় দে।বুঝানোর চেষ্টা কর।বুঝে যাবে।ও বুদ্ধিমতি।”
-”হুম।আচ্ছা। ”
.
.
কাজ শেষে রামীন ঘরে ফিরে আসে।আশফিনা রুমে বসে ম্যাগাজিন পড়ছে।পরনে লাল একটি শাড়ী।রামীন ঘরে ঢুকে আশফিনাকে দেখে বলল,
.
.
-”খেয়েছো?”
-”হুম।”
-”আচ্ছা।ফ্রেশ হচ্ছি আমি।”
.
.
রামীন কাপড় নিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায়।আশফিনা শুনতে পায় ঝড়নার শব্দ।হঠাৎ রামীন ডেকে উঠে,
.
.
-”তোয়ালেটা দাও তো।”
-”নিয়ে যান নাই কেন?”
-”ভুলে গেছি।তুমি দিলে কি মহাভারত অশুদ্ধ হবে।”
.
.
আশফিনা গাল বেঁকিয়ে তোয়ালে নিয়ে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বলল,
.
.
-”তোয়ালে নিন।”
-”ওকে দরজা খুলছি।ভিতরে তাকাবেনা কিন্তু।”
-”হুহ। আপনার মতো নাকি?”
-”আমার মতো কি?যথেষ্ঠ লজ্জা আছে আমার।”
-”আপনার আবার লজ্জা। দরজা খুলবেন নাকি চলে যাবো?”
-”এই না খুলছি।”
.
.
রামীন দরজা খুললে আশফিনা তোয়ালে এগিয়ে দেয়।রামীন তোয়ালে না ধরে আশফিনার হাত চেঁপে ধরে একটানে ভিতরে ঢুকিয়ে নেয়।আশফিনা ও রামীনের সাথে ভিজছে।দুজনেই কাক ভেজা।আশফিনা এতক্ষন ঘোরে থাকলে ও হুঁশ আসে ওর।
.
.
-”কি করলেন কি?”
-”কি করলাম?”
-”আমি ভিজালেন কেন?”
-”দুজনে একসাথে গোসল করবো বলে।”
-”ফালতু কথা রাখেন।বের হতে দিন আমাকে।”
-”একসাথে গোসল করবো তো করবোই।তুমি না করলে ও শুনবোনা।”
-”আপনার সাথে গোসল করবোনা।”(পিছিয়ে যেতে যেতে)
-”আমি করাবো।(আশফিনার দিকে আগাচ্ছে)
.
.
একপর্যায়ে আশফিনা আটকে যায় দেয়ালে আর রামীনের দিকে ভয়ে তাকায়।
চলবে