The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 78
এরই মধ্যে রুহীর জন্য একটা মেয়ে ঠিক করে ফেলেছে রোয়েন।মেয়েটি গ্রাম থেকে এসেছে।বাড়ি কিশোরগঞ্জ শামীমের দূরসম্পর্কের বোন।মেয়েটির নাম রামীলা।মেয়েটা বেশ ভালো আর ভদ্র।রুহীর সার্বক্ষনিক খেয়াল রাখছে।রুহীর আশেপাশে থাকছে।রুহীর পরীক্ষাও ঘনিয়ে এসেছে।রোয়েনের অবুপস্থিতিতো রুহীর সময় কাঁটে নামাজ আদায় করে কুরআন শরীফ পড়ে আর পড়াশুনায়।কিন্তু শরীর বেশিক্ষন ভালো থাকেনা।বেশিক্ষন বসে থাকতে পারেনা।মাথা ঘুরাতে থাকে।কিন্তু রোয়েন ঘরে ফিরলে রুহীর বাচ্চামো শুরু হয়।যত বাচ্চামো রোয়েনের সাথে।ঘরে ফিরলেই রুহীর ছোট খাটো দুষ্টু মিষ্টি আবদার গুলো পূরন করতে হচ্ছে রোয়েনকে।আনিলা ও মাঝে মাঝে মেয়ের জন্য রান্না করে পাঠান।রুহীর পছন্দের অনেক খাবার রান্না করে পাঠিয়ে দেন।রোয়েন ঘরে ফিরে দেখলো খাটের মাঝে গুঁটিসুঁটি মেরে শুয়ে আছে রুহী আর রামীলা ওর চুলে তেল মালিশ করছে।রোয়েন এসে দাঁড়াতেই রুহী রামীলা কে পাঠিয়ে দিলো।রোয়েন এসে আগে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এসে রুহীর কপালে চুমু খেয়ে ওর পাশে বসে।রুহী দুহাত বাড়িয়ে গলা জড়িয়ে ধরে রোয়েনের। রোয়েন মুচকি হেসে রুহীর গালে চুমু খেয়ে বলল,
.
.
-”কেমন আছো জান?”
-”ভালো না।খুব মিস করছিলাম তোমাকে।”
-”আমি ও খুব মিস করেছি।বাট কি করবো বলো কাজ করতে হবে তো।”
-”জানি। চলল এখন কিছু খেয়ে এখন আমাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকবে।”
-”আচ্ছা ঠিক আছে।”
.
.
রুহী খাবার নিয়ে টেবিলে আসে।রোয়েন হাত ধুয়ে খেতো বসে যায়।
রোয়েন উঠে দাঁড়ায়।রুহী আবার বলল,
.
.
-”এখন আমাকে কোলে তুলে পাকঘরে নিয়ে যাও।খাবার গরম করবো।”
-”আচ্ছা চলো।”
.
.
রুহীকে কোলে তুলে নিয়ে পাকঘরে চলে আসে রোয়েন।রুহী নেমে খাবার গরম করতে থাকে ওভেনে।হঠাৎ রোয়েন রুহীর কোমড় পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।রুহী ওভেন থেকে তরকারির বাটি বের করে ভাতের বাটি ঢুকায়।
.
.
-”একটা মাছ ভেজে দিবো?”
-”আরে নাহ এগুলো হলেই চলবে।”
-”তোমার খাওয়া হবে না তো।”
.
.
মন খারাপ হয়ে যায় রুহীর।রোয়েন বলল,
.
.
-”আমার খাওয়া হয়ে যাবে।এতো চিন্তা করছো কেন?তরকারি তো আছেই।”
-”সরি কিছু রান্না করতে পারিনি।লোক দুটো ও অসুস্থ।”
-”ইটস ওকে রুহী।এতো মন খারাপ করছো কেন?সবসময় অনেক তরকারি থাকতে হবে এমন তো কোন কথা নেই।আমি খেয়ে নিবো এগুলো।”
-”আচ্ছা ঠিক আছে।তাহলে চলো খেয়ে নিবে।”
.
.
রুহী খাবার নিয়ে টেবিলে আসে। রোয়েন হাত ধুয়ে খেতে বসে।রুহী রোয়েনের পাশের চেয়ারে বসে খাওয়া দেখছে।রুহীর কেমন যেন খারাপ লাগছে।লোকটা চার পাঁচটা তরকারি হলে খুব খুশি হয় আর সেখানে মাত্র একটা তরকারি।খাওয়ার মাঝেই রোয়েন শুনতে পায় নাক টানার শব্দ।পাশে তাকিয়ে দেখলো বৌটা কাঁদছে।
.
.
-”কি হলো?কাঁদছো কেন?”
-”তোমার খুব কষ্ট হচ্ছে তাইনা?আমি খুব খারাপ।”
-”কষ্ট হবে কেন?আর তুমি কেন খারাপ হতে যাবে?”
-”আমি তো কিছু রান্না করে ও রাখতে পারতাম।আমি খুব খারাপ।”
-”রুহী বোকাদের মতো কাঁদবেনা।আমি বলেছি আমার আরো তরকারি লাগবে?আমি তো খাচ্ছিই।আমি শুধু চাই তুমি আর আমার বাবাটা ভালো থাকো আর কিছু না।”
-”সত্যি?”
-”আরো একবার কান্না করলে একদম থাপড়ে দিবো।”
.
.
রুহী কান্না জড়িত মুখে হেসে রোয়েনকে জড়িয়ে ধরে।রোয়েন ও জড়িয়ে ধরে রুহীকে।রুহীর গালে মুখে চুমুতে ভরিয়ে দিতে থাকে।খাওয়া শেষে রুহীকে কোলে করে রুমে নিয়ে আসে।ওকে শুইয়ে দিয়ে ওর ঠোঁট শুষে নিতে শুরু করে।রুহীর গলায় মুখ নিয়ে আসে রোয়েন।ওর শাড়ীর আঁচল খুলে ওকে আদরে ভরিয়ে দিতে থাকে।জয় সেদিন ঘর থেকে বেরিয়ে আসে।বিজলি বেগম নাতিকে দেখে ভীষন খুশি হন।জয় সবার সাথে ডিনার করতে বসে।বিজলি বেগম নাতিকে এটা সেটা খাওয়াতে থাকে আদর করে।খাবার শেষে নাতিকে নিয়ে বসেন একসাথে।জয় দাদির কোলে মাথা রাখে।পনের দিনে ওর চেহারা একদম ভেঙ্গে গেছে।বিজলি বেগম জিজ্ঞেস করেন,
.
.
-”কি হয়েছে তোর দাদা?”
-”ও আমাকে ধোঁকা দিয়েছে।”
-”মানে?”
-”বিয়ে হয়েছে ওর।মা হতে যাচ্ছে ও।”
-”তাহলে সেটা ধোঁকা কিভাবে হলো জয়?তুই তো না জেনেই প্রেমে পড়ে গেছিলি।সেটা জাস্ট মিসআন্ডার্স্ট্যান্ডিং।”
-”না দাদি ধোঁকা দিয়েছে ও আর ওর হাসবেন্ড আমাকে।”
-”না দাদু ওসব কিছুনা।আরো অনেক মেয়ে আছে। তোর জন্য ও কেউ তো অবশ্যই আছে।”
.
.
”না দাদি না আমার সাথে ধোঁকা হয়েছে।ওদের ছাড়বোনা আমি।দেখে নিবো ওদের।”ভাবতে থাকে জয়।এদিকে রাত দুটো বাজছে।রুহীর ঘুম আসছেনা।রোয়েনের বুকে শুয়ে আছে ও।ওর ফুচকার কথা খুব মনে পড়ছে।রুহী আর সহ্য করতে পারেনা।রোয়েনকে ধাক্কা দিতে থাকে।রুহী বলল,
.
.
-”এই শুনো না!!!!শুনো প্লিজ।”
.
.
রুহীর ডাকে পুরো ঘুমটা ভেঙ্গে যায়।চোখ আধো খুলে রোয়েন।রুহী এখন ও ডেকেই চলছে।
.
.
-”এই শুনো না আমার ফুচকা খেতে ইচ্ছে হচ্ছে।”
.
.
রুহীর কথার পাত্তা না দিয়ে রোয়েন জোর করে ঘুমুতে চায় কিন্তু পারলোনা।রুহীকে ভালো মতো দেখার চেষ্টা করে রোয়েন।তারপর উঠে বসে ও।অবাক হওয়ার ভঙ্গিতে বলল,
.
.
-”কি বললা????”
-”ফুচকা!!ফুচকা খাবো।প্লিজ এনে দাও না।”
-”রুহী পাগল হয়ে গেলা?দুটো বাজে।এখন কোন ফুচকার দোকান খোলা থাকবে?”
-”প্লিজ রোয়েন এনে দাওনা।প্লিজ আমার খেতে ইচ্ছে করছে।”
-”পাগলামী করোনা।ফুচকা ভালো জিনিস না।শুয়ে পড়ো।”
-”আমি এক্ষুনি খাবো।তুমি যাই বলোনা কেন?আমি খাবোই খাবো।”
-”রুহী জেদ করোনা।কাল খাওয়াবো।”
-”না এক্ষুনি খাবো।বললাম না খাবো এক্ষুনি।তোমার টাকার অভাব আছে?সামান্য একটু ফুচকা খাওয়াতে পারবেনা?তোমার বাচ্চারা কি ভাববে?বাবা মাকে ফুচকা খাওয়াচ্ছেনা।ওরা কি শিখবে বলো তো?আমাকে এক্ষুনি ফুচকা এনে দিবা। কোথা থেকে আনবা জানিনা।”
.
.
বেশ রেগে কথা গুলো বলল রুহী।রোয়েন চমকে গেলো।একি বলল রুহী?ফুচকার জন্য ওকে এতো গুলো কথা শুনালো?রোয়েন কিছু না বলে রুম থেকে বেরিয়ে আসে।কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা।ও নিজে ও বানাতে পারেনা।এখন কাউকে কল করাও ঠিক হবেনা।কি করবে ও?ইউটিউবে একটা ফুচকার রেসিপি দেখলো।কিন্তু কিছুক্ষনের মাঝেই ওর মাথায় গোলমাল লেগে গেলো।নাহ এ সম্ভব না।কি করা যায় এখন।রোয়েন অনেক ভেবে আনিলাকে কল করে।আনিলা কল রিসিভ করতেই রোয়েন বলল,
.
.
-”রুহী ফুচকা খেতে জেদ করছে কি করবো বলুন তো?”
-আমি নিয়ে এসেছি। দরজা খুলুন স্যার।”
.
.
রোয়েন ফোন কেঁটে নিচে নেমে এসে মেইন ডোর খুলে দেখলো আনিলা দাঁড়িয়ে আছে।ওনার হাতে ব্যাগ।আনিলা রোয়েনের ব্যাগ দিয়ে বলল,
.
.
-”আপনি নিয়ে যান।ভিতরে যাবোনা আমি।”
-”আপনি কি করে জানলেন রুহী ফুচকা খাবে?”
-”আজ ওকে ওর বাবাকে বলতে শুনেছিলাম।তাই জানলাম।আসি তাহলে। ”
-”ওকে।ধন্যবাদ এতো কষ্ট করার জন্য।”
-”কষ্টের কি হলো?আমার ভালো লাগে।আর ও তো আমারই মেয়ে তাইনা?আমি আমার মেয়ের জন্য এতো টুকু করতেই পারি।”
.
.
রোয়েন কিছু বলার ভাষা পেলো না।আনিলা বেরিয়ে গেলেন।রোয়েন প্যাকেটটা হাতে নিয়ে রুহীর কাছে চলে আসে।খাটে এসে বসে পড়ে রোয়েন।তারপর প্যাকেটের ভিতর থেকে দুটো বক্স বের করে আনে।রুহীর মুখে হাসি ফুঁটে উঠে।নড়ে চড়ে বসে ও।রোয়েন বক্সের ঢাকনা খুলে দেয় রুহীর সামনে।রুহী মন ভরে ফুচকা খেয়ে মুখ দিয়ে সন্তুষ্টির শব্দ করে।রোয়েন এতক্ষন রুহীর খাওয়া দেখছিলো।রুহী বলল,
.
.
-”আই লাভ ইউ রোয়েন। এতগুলো ভালো তুমি।”
-”হুম।জানো এগুলো কে এনেছিলো?”
-”কে? নিশ্চয় শামীম ভাইয়াকে দিয়ে আনিয়েছো?”
-”না। আনিলা মা এনেছে।”
.
.
রুহী ভ্রু কু্ঁচকে নেয়।তারপর বলল,
.
.
-”আগে বলোনি কেন?”
-”বললে খেতে না?”
-”জানি না।”
.
.
মুখ ঘুরিয়ে নেয় রুহী।রোয়েন আবার বলল,
.
.
-”কতো টা খেয়াল রাখে তোমার দেখলে?”
.
.
রুহী কিছু না বলে বক্স দুটো রেখে আসতে গেলো।রোয়েন বসেই রইলো বিছানায়।কিছুক্ষনের মাঝে ফিরে এসে শুয়ে পড়ে রুহী।রোয়েন ওকে টেনে বুকে নিয়ে নেয়।রুহী ঘুমিয়ে পড়ে রোয়েনের বুকে।পরদিন সকালে অফিসে আসে রোয়েন।রুহীর সাথে প্রত্যেকদিন ওর লড়াই চলে নাস্তা খাওয়া নিয়ে।ওর মনে হচ্ছে বাবু ওর কোলে আসবার আগেই বাচ্চা পালনের প্র্যাক্টিস হচ্ছে।অফিসে এসে নিজের কেবিনে ঢুকে রামীনকে দেখতে পায় না রোয়েন।বেশ অবাক হয় রোয়েন।
চলবে