The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 61
ছেলেটি ভিতরে ঢুকে পড়ে।রোয়েন ছেলেটির হাত থেকে বক্স নিয়ে বলল,
.
.
-”রুহী বাবাকে এখান থেকে দাও।”
-”এখন যা বানিয়েছি ওগুলো খেয়ে নিক।”
-”এগুলো ও দিতে বলেছি দাও।’
.
.
ভ্রু কুঁচকে বলে রোয়েন।রুহী কিছুটা রেগে বক্স থেকে একটু পায়েস নিয়ে রেজোয়ান মাহবুব আর রোয়েনকে বাটিতে দিলো।দুজনে খাচ্ছে।রুহী ও খেতে বসে।রেজোয়ান মাহবুব মেয়েকে পায়েস নিতে বললে রুহী খায়না।অনেক বার বললে ও রুহী নিতে রাজি হয়না।রোয়েন বেরিয়ে যায় কাজে।আর রুহী ঘরে থেকে যায় বাবার সাথে।সন্ধ্যায় রোয়েন ঘরে ফিরে আসে।রুহী নাস্তা বানাচ্ছিলো।এদিকে রোয়েন ঘরে ফিরে রুহীর জন্য অনেকক্ষন যাবৎ অপেক্ষা করছে।রুহী ওকে ওর ওয়েলকাম কিস করেনি।রুহী সমুচা আর রোল ভেজে বাবার কাছে আসে।রেজোয়ান মাহবুব রোল মুখে নিতে নিতে বললেন,
.
.
-”রোয়েন এসেছে রুহী!!!”
-”ওহ।বাবা তুমি খাও আমি দেখে আসি।”
.
.
রুহী বেরিয়ে ওদের রুমের কাছে এসে দাঁড়ায়।হঠাৎ কেউ ওকে পিছন থেকে ওর কোমড় দুহাতে পেঁচিয়ে ধরে কিছুটা আলগা করে রুমে নিয়ে আসে।রুহী হঠাৎ ভয় পেয়ে গেলে ও নিজেকে সামলে নেয় কারন ও জানে মানুষটা কে?রোয়েন ওকে নামিয়ে দেয়ালের সাথে চেঁপে ধরে।রুহী বড় বড় চোখে রোয়েনকে দেখছে।রোয়েন রাগে ফুঁসছে।
.
.
-”কি হলো অমন করছেন কেন?”
-”এমন করছি কেন তাইনা?আমি কখন এসেছি জানো?”
-”ক কখন?”
-”আধ ঘন্টা আগে।”
-”ওহ।”
-”ওহ!!”
-”তো কি হয়েছে?আমি তো আপনাকে দেখলাম যান ফ্রেশ হন।”
-”সিরিয়াসলি রুহী!!!!!”
-”কি হয়েছে?”
-”আমার ওয়েলকাম কিস ভুলে গেছো?”
-”বাবার নাস্তা বানাচ্ছিলাম সরি।”
-”সরি মানবো না।”
-”তো আমাকে কি করতে হবে?”
-”সেটা তুমি ডিসাইড করবে আমি না।”
-”বাবাকে ঔষধ দিবো।”
-”তাড়াতাড়ি ডিসাইড করে যা করার করে চলে যাও।”
.
.
রুহী তাড়াহুড়ো করে রোয়েনের গালে চুমু দিয়ে চলে যেতে নিলেই রোয়েন ওকে টেনে ধরে বলল,
.
.
-”আধ ঘন্টা অপেক্ষা করিয়েছো।সেটার শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে।”
-”ম মানে???”
.
.
রোয়েন রুহীর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।আধঘন্টা পরে রুহীকে ছেড়ে দেয় রোয়েন।রুহী চোখবুজে জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে।রোয়েন কাছে এগিয়ে এসে রুহীকে বুকে জড়িয়ে নেয়।কিছুসময় পর সরে আসে রুহী।রেজোয়ান মাহবুবের ডাক পড়ে হঠাৎ,
.
.
-”রুহী ঔষধ দিয়ে যারে মা!!!!”
.
.
রুহী সরে আসে রোয়েন থেকে।তারপর দৌড়ে রেজোয়ান মাহবুবের কাছে চলে যায়।বাবাকে ঔষধ দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসতেই বেশ রাগ হয় রুহীর।
আনিলা শোহরাব মুচকি হেসে বললেন,
.
.
-”ভালো আছো রুহী?”
-”জি। বাবা ঘুমাবে এখন।”
-”রুহী কে এসেছে?”
.
.
পাশের রুম থেকে ডেকে উঠে রোয়েন।রুম থেকে বেরিয়ে আসে ও।রোয়েন এবার বলল,
.
.
-”ওহ আপনি!!দাঁড়িয়ে কেন? বসুন।”
-”জি স্যার।রেজোয়ান কে দেখতে এসেছিলাম।ওনি সম্ভবত ঘুৃমাবেন।”
-”ওনি জেগেই আছেন।দেখা করে আসুন।”
.
.
রুহী এখনো দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।রোয়েন রেগে বলল,
.
.
-”রুহী ওনাকে যেতে দাও।আর কিছু নাস্তা বানিয়ে দাও ওনার জন্য।”
.
.
রুহী রেগে পাকঘরে চলে যায়।আনিলা শোহরাব রেজোয়ান মাহবুবের কাছে এসে বসেন।রেজোয়ান বললেন,
.
.
-”এখানে?”
-”দেখতে এসেছি তোমাকে।”
-”ওহ।ভালো।তা তোমার বাসার সবাই কেমন আছে?”
-এই তো ভালো।তোমার শরীর ভালো আছে?”
-”রুহী দেখা শুনা করছে।ভালোই আছি।”
-”হুম।আমার না…….”
.
.
রেজোয়ান মাহবুবকে কথাটা শেষ করতে দিলেননা আনিলা শোহরাব।বললেন,
.
.
-”ভালো না লাগলে ও তোমাকে এখানে থাকতে হবে।তাহলে তোমার দেখা শুনা হবে।”
-”হুম।”
.
.
আনিলা শোহরাব হেসে রেজোয়ান মাহবুবের হাতে হাত রাখলেন।রোয়েন সবই খেয়াল করেছে।এদিকে রুহী পাকঘরে ফল কাঁটছে।ওর আনিলাকে সহ্য হয়না।আর সেদিন রিসিপশনে নিজেকে বাবার ওয়াইফ বানিয়ে দিলেন।রুহী কিভাবে সহ্য করবে নিজের মায়ের জায়গায় আনিলাকে।রুহী কোনরকমে ফল কেঁটে নেয়।তারপর নাস্তা নিয়ে রেজোয়ান মাহবুবের রুমে এসে দেখেন রেজোয়ান মাহবুবের হাতে আনিলা শোহরাবের হাত।রুহী নাস্তা রেখে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো খুব দ্রুত।রোয়েন রুমে বসে কাজ করছে ল্যাপটপে।রুহী বারান্দায় চলে গেলো।রুহীঅনেকক্ষন যাবৎ বারান্দা থেকে না আসায় রোয়েন ল্যাপটপ অফ করে বারান্দায় এসে দেখে রুহী আকাশের দিকে চেয়ে আছে।ওর চোখজোড়া বেয়ে অঝোর ধারায় পানি পড়ছে।রোয়েন রুহীর দুকাঁধ ধরে ওকে নিজের দিকে ফিরিয়ে নেয়।রুহী দুহাতে চোখ মুছে নেয়।রোয়েন বলল,
.
.
-”কি হলো তোমার?”
-”মাকে মিস করছিলাম অনেক।”
-”হুম।”
.
.
রুহীকে বুকে টেনে নেয় রোয়েন।দুজনে অনেকটা সময় এভাবে কাঁটিয়ে দেয়।রোয়েন বলল,
.
.
-”রুহী তোমার কলেজ কি বন্ধ করে দিয়েছো?”
-”না বাবা অসুস্থ।সুস্থ হলেই যাবো।”
-”ভবিষ্যৎ এ কি করবে ভেবেছো?”
-”আমাদের দুটো কিউট বাবু হবে।ওদের সুশিক্ষা দিয়ে বড় করবো।”
-”আর নিজের জন্য কি করবে?”
-”আপনাদের জন্য যা করবো সব তো আমারই।!”
-”তোমার নিজের জন্য ও কিছু করা উচিৎ তোমার।”
-”ওসব পরে ভাববো।”
-”দেখো যা ভাবার এখনই ভাবতে হবে।আর দুটো বছর বাকি তোমার গ্র্যাজুয়েশনের।”
-”দেখুন এখন ওসব পরে হবে।আমাকে জড়িয়ে ধরুন আদর দিন।”
-”আদর লাগবে?”
-”হুম।অনেক আদর চাই।”
.
.
রোয়েন কোলে তুলে নেয় রুহীকে তারপর এগিয়ে যায় বিছানার পানে।এদিকে আশফিনা আর ওর মা দুজনেই কালো বোরকা পরে রেডি হয়ে নেয়।আজকের দিনটা অনেকটা গোপনে পালন করেন এই মা মেয়ে।আজ হলো আশফিনার ভাইয়ের মৃত্যু বার্ষিকী।তাই ওরা যাচ্ছিলো ভাইয়ের কবর জিয়ারত করতে।দুজনে মেইন ডোরের কাছে চলে আসে।দরজা খুলে বের হয়ে যায়।দুজনে দাঁড়িয়ে আছে গনকবরস্থানটির সামনে।ভাই নাকি বাবার কথা না মেনে অবাধ্য সন্তানের মতো মরে গেছিলো তাই তার জায়গা পারিবারিক কবরস্থানে হয়নি।আশফিনা আর ওর মা দোঁয়া পড়তে শুরু করে।দোয়া পড়ার মাঝেই কাঁদতে থাকে দুজনে।আইজান স্বাস্থমন্ত্রনালয়ের একজন বড় অফিসার ছিলো।সেখানে বেশ নামডাক ছিল ওর।তবে ওর হবি ছিলো গান গাওয়া।তারপরও বাবার জোরে রাজনীতিতে চলে আসে ও।ইমানদারীর কারনেই আইজানের শত্রুর অভাব ছিলোনা।বিপক্ষ দলকে দেশ বিরোধী কাজ করতে ধরে ফেলেছিলো আইজান।তারা ওকে অনেক হুমকি দেয়।কিন্তু ভয় পায়নি আইজান।সেদিন লাইভে এসে সব বলে দেয়।যার কারনে পরদিন বাবার হাতে প্রথম থাপড় খায়।তারমতে দূর্নীতি ছাড়া রাজনীতি হয়না।কিন্তু আইজান দূর্নীতির বিপক্ষে ছিলো।ওর বিপদ জেনে ও বাবা আসেনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে।যেখানে আইজানকে বাঁচানো তার জন্য অসম্ভব কিছু ছিলো না।কিন্তগ তারমতে আইজান তার কথা মতো কাজ করলেই এমন বিপদে পড়তোনা।শেষ পর্যন্ত আইজানের লাশ পাওয়া যায় ম্যানহোলের ভিতর।ওর মাথা গলা থেকে আলাদা ছিলো।ডান হাতের
একটা আঙ্গুল ছিলো আকাশের দিকে তাঁক করানো।কারন আইজান সেদিন বলছিলো,
.
.
-”তোমরা আমাকে মেরে ফেলবে।হয়ত এ দুনিয়ায় তোমাদের শাস্তি হবেনা।কিন্তু ঐ দুনিয়াতে মহান আল্লাহ ঠিকই তোমাদের পাপের শাস্তি দিবে।”
.
.
আশফিনা ভাইকে মনে করে কাঁদতে থাকে।ও জানতো ভাই নিজের কাজে কখনোই অসত ছিলোনা।সে জীবনে কিছুই পায়নি।শুধু পেয়েছিলো শাস্তি আর অবহেলা।এমনকি ভালবাসার মানুষটাকে ও বলতে পারেনি মনের কথা।আশফিনা জানতো তার ভাই রুহী কে পছন্দ করতো।কিন্তু রুহী তখন একটু বেশিই বোকা ছিলো।আর যখন আইজান বলতে চেয়েছিলো তখন সামিরের সাথে জড়িয়ে যায় রুহী।তবে আশফিনা রুহীর জন্য খুব খুশি কারন খুব বেশি ভালবাসতে পারবে মানুষটাকে পেয়েছে রুহী।এদিকে রুহী নিজের মাঝে স্বামী নামক পুরুষটার প্রকট ভালবাসার অস্তিত্ব উপলব্ধি করছে।এক পর্যায়ে রুহীকে উপুড় করে দেয় সে।তারপর ওর পিঠে চুমুর বন্যা বয়ে দিতে থাকে।রুহী যেন আর নিজের মাঝেই নেই।রুহীকে আবার সোজা করে শুইয়ে দেয় রোয়েন।হঠাৎ রুহী বুঝতে পারছে রোয়েন ওর পায়ে চলে এসেছে।রুহীর ঘোর কাঁটতে চায়না।তারপর ও নিজেকে আটকাতে পারেনা ও।অনিচ্ছাস্বত্তেও চোখ খুলে দেখে রোয়েন ওর পায়ের আঙ্গুল গুলোয় চুমু খাচ্ছে।পা টেনে সরাতে চাইছে রুহী কিন্তু পারছেনা।এমনিতেই কথা ও বলতে পারছেনা কারন ভীষন আরাম হচ্ছে ওর।দীর্ঘ ভালবাসাসির মাঝে রাতটা পেরিয়ে সকালের আলো জ্বলে উঠে।রুহী নিজেকে রোয়েনের বাহুডোরে আবদ্ধ পায়।লোকটাকে ঘুমে খুব মায়াবী লাগে।রোয়েনকে বেশ কিছু সময় দেখে তার হাত ছাড়িয়ে উঠে পড়ে রুহী।তারপর ফ্রেশ হতে চলে যায়।কিছুসময়ের মাঝে রোয়েনের ঘুম ও ভেঙ্গে যায়।আড়মোড় ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে উঠে বসে ও।রুহী বেরিয়ে আসে।রোয়েন ফোনে কি যেন করছিলো।হঠাৎ ওর চোখ পড়ে রুহীর দিকে।রুহীর গায়ে হলুদ একটা শাড়ী।শাড়ী ভেদ করে পেট বেরিয়ে আছে একটু।ভিজা চুলগুলো থেকে ফোঁটা ফোঁটা পানি রুহীর পিঠে কোমড়ে পড়ছে।ব্যাপারটায় প্রচুর নেশা ধরানো ভাব আছে।রোয়েন উঠে রুহীর দিকে এগিয়ে আসে।তারপর ওর খালি পেটে হাত স্পর্শ করে অপর হাত দিয়ে রুহীকে কাছে টেনে নিয়ে ওর চুলের গভীরে হাত ঢুকিয়ে রুহীর ঘাড় স্পর্শ করে।রুহী চোখবুজে গভীর নিশ্বাস নেয়।রোয়েন মাথা নামিয়ে ওর ঘাড়ে চুমু দেয়।রুহী হাত দিয়ে রোয়েনের গাল স্পর্শ করে ওকে থামায়।রোয়েন মাথা উঠালে রুহী বলল,
.
.
-”যান ফ্রেশ হয়ে নিন।কাজে যাবেন তো।”
-”আমার টাইম হলেই যাবো।তুৃমি জানো এভাবে বিরক্ত করলে আমার ভালো লাগেনা।”
-”কি করবো বলেন আপনার সময় কময় সম্পর্কে কোন ধারনাই থাকেনা।যান ফ্রেশ হন।আমি নাস্তা বানাই গিয়ে।”
.
.
কয়েকটা দিন পেরিয়ে যায়।মেয়ের জামাইয়ের ঘরে রেজোয়ান মাহবুবের থাকতে ভালো লাগছেনা আর।ওনার লজ্জা হচ্ছে।আর ওনার শরীর ও এখন একটু ভালো তাই সিদ্ধান্ত নিলেন চলে যাবেন।তাই রুহী আর রোয়েনকে একসাথে করে বললেন,
.
.
-”দেখো অনেকদিন তো হয়ে গেলো।আমার শরীর ও ভালোই আছে এখন।আর রুহীর কলেজ ও অনেকদিন হলো কামাই যাচ্ছে।সামনে ওর পরীক্ষাও আছে।আর তোমরা মাঝে মধ্যে যেও আমি ও আসবো।আমাকে প্লিজ আর থাকতে বলোনা।”
.
.
বাবার কথার শেষে রুহী বলল,
.
.
-”বাবা তোমার খেয়াল কে রাখবে?তুমি অসুস্থ।ওসব যাওয়ার কথা বলোনা।”
-”রুহী আমি এখন ভাল আছি মা।”
.
.
রোয়েন বলল,
.
.
-”আপনার এখন আরো অনেক বিশ্রাম প্রয়োজন।”
-”ঘরে কাজের লোকরা আছে।রুহী মাঝে মাঝে কলেজ থেকে গিয়ে আমাকে দেখে আসলো।”
.
.
রেজেয়ান মাহবুব রুহী আর রোয়েনকে অনেক বুঝিয়ে মানিয়ে নিজ ঘরে ফিরে আসেন রেজোয়ান মাহবুব।
চলবে