The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 53

রুহীকে ড্রেসিং করিয়ে একটু খাইয়ে দেয় রোয়েন।খাওয়ার পর উঠে চলে যাচ্ছিলো রোয়েন রুহী ওর হাত টেনে ধরে।রোয়েন মাথা ঘুরিয়ে তাকায়।
.
.
-”কি হলো?”
-”এখানে ঘুমান প্লিজ।”
-”রুহী সকালে আমাকে নিচে নামতে দেখলে সন্দেহ হতে পারে কারোর।কিন্তু এখন এই মুহূর্তে কারোর ওপর বিশ্বাস আনতে পারছিনা।”
-”ঘুমোতে কষ্ট হয় আমার।”
.
.
রুহীর কথায় বেশ মায়া হয় রোয়েনের।ওর পাশে বসে রুহীর দুগালে দুটো চুমু দিয়ে বলল,
.
.
-”আরো কটা দিন অপেক্ষা করো রুহী।এরপর আমরা একসাথে থাকবো।যতোটা কষ্ট দিয়েছি এ কদিন ভালবাসা দিয়ে পুশিয়ে দিবো।”
.
.
রুহী নিচে তাকিয়ে লজ্জা মাখা হাসি দেয়।রোয়েন ওর মুখটা টেনে কপালে চুমু দিয়ে উঠে চলে আসে।এদিকে যেদিন নানা নানু রোয়েনের সাথে দেখা করতে আসে রুহী সবই দেখেছিলো।সিসিটিভি ক্যামেরায় স্পীকার লাগানো ছিলো বলে সব শুনতে পায় ও।রুহী বিশ্বাস করাতে পারছেনা নিজের কানকে।এ মানুষগুলোকে কতোটা ভালবাসতো ও।কিন্তু তারা কখনো ওকে ভালবাসেনি।বরং ওর অর্থ কে ভালবেসেছে।রুহীর চোখজোড়া ভরে যায় কথা গুলো শোনার সময়।রোয়েনের কথা ও না শুনে কতোটা ভুল করেছে সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে রুহী।লোকটা ওকে ভালবাসে ওর ভাল চায় বলেই ওনাদের আনতে মানা করছিলো কিন্তু রুহী কি করলো?সব শেষ করে দিতে যাচ্ছিলো।ওনারা না আসলে সব স্বাভাবিক থাকতো।আজ রোয়েনের প্রতি রুহীর শ্রদ্ধা অনেকাংশে বেড়ে গেলো।নানা নানু চলে যাওয়ার পর রুহী দেখতে পায় রোয়েন উপরে আসছে।রুহী চটকরে চোখ মুছে নেয়।রোয়েন এসে দরজা ঠাস করে লাগায়।কিছুটা কেঁপে উঠে রুহী।রোয়েন এবার রেগে বলল,
.
.
-”ওনাদের আনতে জেদ করছিলে রুহী?দেখলে কেমন এনারা?তোমার ভালোর জন্য বলেছিলাম।কিন্তু তুমি ওনাদেরকেই চাও।এখন লাগবে ওনাদের?”
.
.
রোয়েনের ধমকে রুহী আর থাকতে পারেনা দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে।রোয়েন আলগাভাবে জড়িয়ে ধরে রুহীকে।
রুহী কেঁদে কেঁদে বলল,
.
.
-”মাফ করবেন রোয়েন আমি চিনতে পারিনি ওনাদের।জন্মের পর ওনাদেরই দেখে এসেছি রোয়েন।তাই ওনাদের ওপর আমার বিশ্বাস ছিলো।আমি অাপনাকে না জেনে বুঝে খুব কষ্ট দিয়েছি।রোয়েন বিশ্বাস করেন এমনটা জানলে ওনাদের কখনো আনতে বলতাম না।”
-”আমি খুশি কারন তুমি বুঝেছো।এরপর থেকে আমার কথা মেনে চললে আর এমন হবেনা।”
-”আপনার কথা মেনে চলবো আমি।”
-”গুড গার্ল।”
.
.
রুহীকে বুকে নিয়ে সেই রুমের খাটে কিছুক্ষন শুয়ে থাকে রোয়েন।দুপুরে কাজের লোকগুলো কাজ সেড়ে নিজেদের ঘরে চলে যায়।আজ ও চলে গেছে তাই রোয়েন এরুমে থাকবে কিছুক্ষন।বিকেলে রোয়েন রুমে চলে যেতে নিলে ওর ফোনে রেজোয়ান মাহবুবের কল আসে।রোয়েন কল রিসিভ করে খাটে বসে।
.
.
-”রোয়েন রাতে ওনারা আপনার ক্যাফেতে যাবে সামিরের সাথে দেখা করতে।”
-”ওহ।গ্রেট জব বাবা।এবার রুহী ওর কাজ করবে।”
-”ঠিক আছে রোয়েন।রাখছি আমি।”
-”জি বাবা।”
.
.
রুহীর দিকে তাকায় রোয়েন।রুহী বলল,
.
.
-”কি করতে হবে আমাকে?”
-”তোমাকে বোরকা পরে আমার ক্যাফেতে যেতে হবে।তোমার সাথে থাকবে ফাহিম আর শামীম।তোমার নানা নানু সেখানে যাবে একজনের সাথে দেখা করতে।তুমি তাদের ভিডিও করবে।তবে খুব সতর্কতার সাথে।এই ভিডিও জলজ্যান্ত প্রমান হবে তোমার নানা নানুর বিরুদ্ধে।”
-”জি আমি করবো।”
.
.
প্ল্যান মোতাবেক রুহী চলে যায় সেখানে।কিন্তু সামির কে দেখে রুহী উঠে দাঁড়াতে নিলে শামীম আর ফাহিম ওকে থামায়।রুহীর সেই সময়টায় প্রচুর রাগ লাগছিলো সামিরকে দেখে।হয়ত ও যেয়ে জুতা খুলে মারতো সামিরকে সবার সামনে।বর্তমানে ফিরে আসে রোায়েন।নীরা হামিদ আর আরমান হামিদ হা হয়ে গেছে।এত বড় প্ল্যান আর ওনারা কেউই বুঝলোনা।আরমান হামিদ বলল,
.
.
-”জামাই বাবু তুমি শুধু পেশাতেই না বুদ্ধিমত্তায় ও কোব্রা কিং।”
.
.
মামার কথায় একটু হাসলো রোয়েন।এদিকে আশফিনা ঘরে ফিরে রুহীকে দেখে চমকে যায় ভূত দেখার মতো।রুহী দৌড়ে এসে আশফিনাকে জড়িয়ে ধরে।আশফিনা এবার যেন বাস্তবে ফিরে এলো।কম্পন ধরা কন্ঠে বলল,
.
.
-”রুহী তুই?”
-”হ্যারে আমি।বেঁচে আছি আমি।”
-”তাহলে ভাইয়া ঐদিন কি বলল?”
-”সেটা পরিকল্পনা ছিলো নানা নানুর মুখোশ তুলে ধরার।”
-”বুঝতে পারছিনা।বুঝিয়ে বল।”
.
.
এরকর রুহী সবটা খুলে বলে আশফিনাকে।আশফিনা চমকে গেছে।নানা নানু এমন হতে পারে ওর জানা ছিলোনা।আশফিনা তো রোয়েনকে খারাপ ভাবছিলো।এবার কেমন লজ্জা বোধ হয় আশফিনার।তবে রাগ হচ্ছে ওর রামীন জেনে ও ব্যাপারটা লুকিয়েছে।সে রাত সবাই ডিনার করে একসাথে।বেশ জাঁকজমক পূর্ন খাওয়া হলো।তারপর ও রেজোয়ান মাহবুবের চিন্তার অন্ত নেই।রোয়েনের ভালো লেগেছে তো?পেট ভরেছে তো?রোয়েন আর রুহী বিদায় নেয় সবার থেকে।ওরা নিজেদের বাসায় চলে আসে।রুহী ড্রেস চেঞ্জ করে একটা নাইট গাউন পরে নিয়ে ড্রেসিংটেবিলের সামনে বসে।রুমে নেই রোয়েন।রুহী চুল আঁচড়ে চোখে কাজল আর ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক দিয়ে গায়ে সুগন্ধি মেখে নেয়।রোয়েন কিছুক্ষন পর রুমে এসে রুহীর পিছে দাঁড়ায়।রোয়েনকে দেখে বেশ লজ্জা পেয়ে মাথা নুইয়ে উঠতে যাবে তখনই রোয়েন ওকে কোলে তুলে নেয়।তারপর ওকে নিয়ে ছাদে আসে।
.
.
-”আজ ঘুমুবেননা?এখানে এলেন যে?”
-”আজ আমার চাঁদটার সাথে আকাশের চাঁদটার তুলনা করবো।তবে আমি জানি আমার চাঁদটা অনন্যা।”
-”ধুর।আপনার চোখজোড়া বড় সুন্দর।সেজন্য সব কিছু সুন্দর ভাবে দেখেন।”
-”শুধু তোমাকে।”
.
.
রুহী রোয়েনের বুকে মাথা রাখে।রাত গভীর হচ্ছে এদিকে ঘন ঘন শ্বাস প্রশ্বাস বাড়ছে।কারন রোয়েন তার মায়াবতীকে নিয়ে ভালবাসার সাগরে পাড়ি দিয়েছে।রুহীর ঠোঁটজোড়া শুষে নিতে নিতে ওর নাইট গাউনের ফিতা খুলতে থাকে।রুহী কু্ঁকড়ে গিয়ে রোয়েনের বুকে ডুবে যায়।রোয়েন আজ মায়াবতীর নেশায় আসক্ত অনেকটা বেশি।তাইতো ছাদ থেকে নিয়ে এসেছে।রুহীর গলায় চুমু দিতে থাকে রোয়েন।ওর গলা ঘাড় ভরিয়ে দিচ্ছে ভারি ভারি চুমুতে।আজ আর কোন দূরত্ব নেই।সব দূরত্ব যেন ভালবাসা দিয়ে ঘুঁচে গেছে।রুহীকে আপন করে নেয়ায় মত্ত রোয়েন।আর রুহীর শ্বাসপ্রশ্বাস ঘন থেকে আরো বেশি ঘন হচ্ছে।আর সেই সাথে পরিবেশটা ও নেশাময় হয়ে উঠেছে।রাত গড়িয়ে সকাল হয়।রুহী উঠে নিজেকে কালো চাদরে দেখতে পায়।ফর্সা কাঁধ বেরিয়ে আছে।
রুহী উঠে বসে চাদরটা ভালমতো গায়ে জড়াতেই রোয়েন রুমে আসে।রোয়েনের থেকে লজ্জায় চোখ সরিয়ে নেয় রুহী।আজ ওর ভাল লাগছে কারন ও পুরোপুরিভাবে রোয়েনকে পেয়েছে।তবে খুব বেশি লজ্জা ও হচ্ছে।রোয়েন রুহীর সামনে এসে একটু ঝুঁকে বলল,
.
.
-”I love you my Queen.”
-”I love you too Royen.”
.
.
রুহীর কপালে চুমু দিয়ে রোয়েন বলল,
.
.
-”ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নাও।”
-”কোথাও যাবেন?”
-”কোব্রা আর কিংকে ভোজ করাবো।আজ পেট পুরে খাবে।”
.
.
রোয়েনের কথা কিছুটা আঁচ করতে পেরে রুহী হেসে ওয়াশরুমে চলে যায়।কিছুক্ষন লর রুহী বেরিয়ে আসে।আজ ওর পোশাক একদমই আলাদা।অবশ্য রোয়েনই ঠিক করে দিয়েছে।সে বলেছে ওদের মাফিয়ার কোন কাজে গেলে রুহী যেন এভাবেই যায়।কারন রুহী এখন শুধু রোয়েনের স্ত্রীই না কোব্রা পুরির রানী।রুহীর পোশকটা কিছুটা রোয়েনের মতো।তবে ওর ভিতরের শার্টটা সাদা আর ওপরের কালো কোটটা অনেকটা লম্বা। রুহী আয়নায় নিজেকে দেখে।অন্যরকম লাগছে ওর।রুহীকে নিয়ে বেরিয়ে আসে রোয়েন।কোব্রা আর কিং এর সুইৃমিংপুলের সামনে ওরা এসে থামে।সেখানে সামিরকে বেঁধে রাখা হয়েছে।রুহীর পাশে এসে দাঁড়ায় রেজোয়ান মাহবুব।রোয়েনের বাকি লোকেরাও আছে।রোয়েন সামিরকে কাঁটার জন্য নির্দেশ দিলে রুহস বলল,
.
.
-”ওকে আমার সামনে আনেন।”
-”কেন?”
-”আপনি আমাকে কিছু বললে আমি প্রশ্ন করি?”
-”নাহ।আচ্ছা তোমার কাজ করে নাও।”
.
.
রোয়েন ওর লোককে নির্দেশ দেয় সামিরকে রুহীর সামনে দেয়ার জন্য।লোকটা কথা মতো সামিরকে রুহীর সামনে আনে।সামির বলল,
.
.
-”রুহী প্লিজ মাফ করে দাও।আমি কখনো তোমার সামনে আসবো না।
-”আজ ভেবেই এসেছিলাম তোমাকে মাফ করবো।বাট একটা শর্ত আছে।”
.
.
রুহীর কথায় বেশ অবাক হয় রোয়েন।সামির বলল
.
.
-”কি শর্ত?”
-তুমি আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছো।তোমার জন্য আমি সবাইকে কষ্ট দিয়েছি। সবসময় বলো নিজেকে বাঁচাতে যেকোন কিছু করতে পারো রাইট?”
-”ইয়েস।”
-”Then Fight with my cobra and king and save yourself.”
.
.
রুহী সামিরকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে দেয়।সাথে সাথে পুরো পানিতে ঝড় বয়ে গেলো।অনেক হিংস্র শব্দ শুনতে পায় ওরা।কিছুক্ষনের মাঝে পুরো পানি লাল হয়ে গেলো।রুহীর চোখে পানি কিন্তু মুখে তৃপ্ততার হাসি।রোয়েন হেসে রুহীর দিকে তাকায়।রুহী ও খুশি হয়ে রোয়েনকে দেখে।
রোয়েন এবার বলল,
.
.
-”গাড়ি নিয়ে বাসায় যাও।আমার কাজ আছে।গাড়ি পাঠিয়ে দিও।”
-”ওকে।”
.
.
এবার বড় বেশরমের মতো কাজ করে বসলো রোয়েন।প্রায় সবার সামনেই রুহীর গালে চুমু খেয়ে অফিসে ঢুকে যায়।রামীন হেসে দিয়ে আবার হাসিটাকে লুকিয়ে অফিসে চলে যায়।রুহী লজ্জা পেয়ে আর কারোর দিকে না তাকিয়ে গাড়িতে ঢুকে পড়ে।
রোয়েনের পিছু পিছু রুমে আসে রামীন।তারপর বলল,
.
.
-”ভাই তোর লজ্জা শরমের ঘাটতি আছে মানলাম তাই বলে রুহীকে সবার সামনে এমনকি ওর বাবার সামনে ও,,,,,হাউ ম্যান হাউ??”
-”সে আমার বৌ।কিস করতেই পারি।”
-”তাই বলে সবার সামনে?”
-”সো হোয়াট?”
-”বিয়ের পর আমি ও এমন বেশরম হবো ভাবতেই লজ্জা পাচ্ছে আমার।”
-”হোয়াটএভার।”
.
.
কাজে মন দেয় রোয়েন।এবার রামীন বলল,
.
.
-”আজ একটু বের হতাম।”
-”কই যাবি?”
-”আশফিনা বলেছিলো ওর সাথে আজ পুরোটাদিন কাঁটাতে কাল রাত একটায় ফ্লাইট ওর।”
-”শিওর চলে যা।আর শোন কাল আমাদের রিসিপশন পার্টি।সোএকটু জলদি আসলে ভালো হবে।”
-”ওকে দোস্ত।আসি তাহলে।”
-”হুম।”
চলবে