The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 52

→সেলিনা হামিদ আর হাসান হামিদ সেই রাতেই পাশ্ববর্তি একটা ক্যাফেতে চলে আসে।দুজন দুকাপ কফি আর পানির অর্ডার করলেন।হাসান হামিদ বারবার পানি খেয়ে গলা ভিজাচ্ছেন।কিছুসময় পর একজন ওনাদের সামনে এসে বসলো।সে আর কেউ নয় স্বয়ং সামির।সামিরকে দেখে ওনারা একটু হাসলেন।সামির বলল,
.
.
-”রোয়েন আপনাদের যতো সম্পত্তি দেবে সেগুলোর হাফ শেয়ার আমার।”
-”কেন দিবো তোমাকে?রোয়েন ওগুলো আমাদের দিবে।”
.
.
কিছুটা বিরক্তি নিয়ে বললেন সেলিনা হামিদ।সেলিনা হামিদের কথায় রেগে যায় সামির।তারপর চিৎকার করে বলল,
.
.
-”আমি যদি আমার শেয়ার না পাই।তাহলে আপনারা যে রুহীকে আমার কাছে রুহীকে বেঁচে দিতে চেয়েছিলেন রুহীকে সবার কাছে অপমানিত করতে আমাকে সাহায্য করেছিলেন ওর ছবি দিয়ে।সে সব কিছু বলে দিবো রোয়েনকে।”
.
.
সামিরের কথায় ঘাবড়ে যান সেলিনা হামিদ আর হাসান হামিদ।তারপর সেলিনা হামজদ বললেন,
.
.
-”তুমি যাও চাও পেয়ে যাবে।তবে তোমার মুখ বন্ধ রাখতে হবে।কারন এই রোয়েন খুব চতুর।ওর হাতে ধরা পড়লে ধ্বংস করে দেবে।”
-”আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে বলবোনা।কিন্তু আপনারা ও নিজেদের কথা ঠিক রাখবেন।”
-”হ্যা রাখবো।আমাদের উঠতে হবে রোয়েন যদি কোন ভাবে আমাদের এখানে দেখে ফেলে কিংবা খবর পেয়ে যায় তাহলে খুব ঝামেলা হবে।”
-”আচ্ছা চলে যান।আমি ও বের হবো।”
.
.
কথাটা বলে সামির উঠে দাঁড়াতে তিনজন বোরকা ওয়ালি দেখতে পান।সেদিকে তোয়াক্কা না করে তিনজনে বেরিয়ে যান।এদিকে আশফিনা রামীনের বাসার সামনে এলো।আশফিনার কল পেয়ে তড়িঘড়ি করে কল রিসিভ করে রামীন।অপর পাশ থেকে আশফিনা বলল,
.
.
-”নিচে আসেন একটু।”
-”তুমি কোথায়?”
-”আপনার বাসার নিচে।”
-”ওহ।তুমি দাঁড়াও আমি আসছি।”
.
.
রামীন শার্ট গায়ে জড়াতে জড়াতে নিচে চলে আসে।আশফিনার চোখের অশ্রুগুলো চাঁদের হালকা আলোয়া জ্বলজ্বল করছে।রামীন এসে ওর কাছে দাঁড়ায়।তারপর বলল,
.
.
-”তুমি ঠিক আছো?আর এতোরাতে বাসার নিচে?কি হয়েছে?”
-”আপনি ভুলে গেছেন রামীন পরশু আমার ফ্লাইট।”
-”ফ্লাইট!!!!ওহ সরি আশফিনা। আসলে মাথা থেকে বেরিয়ে গেছে।আ’ম সরি।”
-”ইটস ওকে।আমার যেতে ইচ্ছে হচ্ছেনা আপনাকে ছেড়ে।”
.
.
বলে কেঁদে ফেলে আশফিনা। রামীনের মন টা বেশ খারাপ হয়ে যায়।ও বলল,
.
.
-”আশফিনা আমি ও চাইছিনা তুমি চলে যাও।কিন্তু তোমার বাবা মা আছেন।তোমার সেখানে যাওয়া উচিৎ।”
-”আমি চাইছি আপনি কাল সারাটাদিন আমার সাথে কাঁটাবেন।”
-”আচ্ছা কাঁটাবো তোমার সাথে।”
.
.
আশফিনা এসে রামীনকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে।ওর বাবাকে ভালো করেই চিনে আশফিনা।বাবা কখনোই ওর পছন্দের দাম দেননা।সবসময় নিজের পছন্দ ওর ওপর জোর করে চাঁপিয়ে দেন।রামীনকে ও খুব ভালবাসে।বাবা ওর কথা জানলে কখনোই ওরা একহতে পারবেনা।এখান থেকে চলে গেলে কখনো রামীনের দেখা পাবে কিনা তাও অনিশ্চিত।
কিছুক্ষন পর সরে আসে ওরা।রামীন ওকে বাসায় নিয়ে আসে তারপর দুজনে অনেকটা সময় একসাথে কাঁটায়।এদিকে রেজোয়ান মাহবুবের ঘরে আসে সেলিনা হামিদ আর হাসান হামিদ।এসেই চিৎকার শুরু করেছেন ডিনারের জন্য।এমনিতেই ওনারা আসার পর থেকে কাজের লোকগুলো তটস্থ থাকে।তারওপর প্রত্যেকদিন চিৎকার করেন ওনারা।আজ ও এর ব্যাতিক্রম নয়।কাজের লোকেরা চটজলদি ডিনার এনে টেবিলে সাজায়।ওনারা খেতে বসবেন তখনই বাসার কলিংবেল বেজে উঠে।কাজের লোক একজন গিয়ে দরজা খুলে পুলিশ দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে যায়।পুলিশের সাথো রোয়েনকে দেখে আরো বেশি চমকে যায় সবাই।পুলিশ বলল,
.
.
-”আমাদের কাছে এ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট আছে হাসান হামিদ আর সেলিনা হামিদের বিরুদ্ধে।”
.
.
পুলিশের কথায় দুজনে ভয় পেয়ে যায়।তারপর উঠে চিৎকার করে বললেন,
.
.
-”এসব কি?আমাদের কেন এ্যারেস্ট করবেন?”
-”মিঃ রোয়েন চৌধুরী আপনাদের নামে কেস করেছেন আপনি তার ওয়াইফ রুহীকে টাকার জন্য বিক্রি করে দিতে চেয়েছেন।”
-”এ্যা এসব মিথ্যা কথা। রোয়েন চৌধুরী আমাদের নাতনী রুহীকে মেরে ফেলেছে।তাহলে ওকে বিক্রী করবো কিভাবে বলেন?”
-”আমাদের কাছে কমপ্লেইন এসেছে আর এটা আমাদের দায়িত্ব।”
-”আগে প্রমান বের করেন তারপর আসেন।”
.
.
হঠাৎ সবাইকে অবাক করে দিয়ে পিছন থেকে কেউ বলল,
.
.
-”প্রমান আমার কাছে আছে।”
.
.
সবাই খেয়াল করলো রোয়েনের পিছন থেকে রুহী এসেছে।সবাই অবাক।নীরা হামিদ আর আরমান হামিদ খুশিতে কেঁদে দিয়েছেন।রেজোয়ান মাহবুব অবাক হলেননা তবে খুশিই হলেন তার মেয়ে সুস্থ আছে।কারন সবই তাদের পরিকল্পনা ছিলো।রুহী এসে দাঁড়ায়।তারপর ফোনটায় একটা ভিডিও অন করে নানা নানুর সামনে ধরে।সেখানে সামির আর ওনাদের কথা স্পষ্ট ভাবে শোনা যাচ্ছে।রুহী বলতে শুরু করলো,
.
.
-”আগে জানতাম নানা নানুরা সবসময় ভালবাসে।কিন্তু আজ আমার হুঁশ ফিরেছে আপনারা কখনোই ভালবাসেননি আমাকে।আমি ছিলাম আপনাদের টাকার উৎস।আমাকে ব্যাবহার করেই আমার বাবার অনেক টাকা হাতিয়েছেন।যখন বাংলাদেশে চলে এলাম একবার ও খবর নেন নাই আপনারা।আসলে মানুষ হলে খবর নিতো জানোয়াররা খবর নিতে পারেনা।আমার মামা মামী আমার বাবা আমার স্বামী এরাই আমার সব।অফিসার ওনাদের নিয়ে যান।”
-”গ্রেফতার করেন এদের।”
.
.
একজন অফিসার বলে উঠলো।ওনাদের হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।আর সামিরকে রোয়েনের লোকেরা ধরে নিয়ে গেছে।এদিকে নীরা হামিদ আর আরমান হামিদ এসে রুহীকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন।রেজোয়ান মাহবুব রোয়েনের কাছে এসে বললেন,
.
.
-আজ আমার বাসায় আমার মেয়ে আর মেয়ের জামাই এসেছে প্রথমবার।হয়ত অনুষ্ঠান করে আনতে পারিনি।কিন্তু এসেছেন।আমি সবার জন্য ডিনারের ব্যাবস্থা করি।না করবেননা প্লিজ।”
-”বাবা এভাবে বললে ছেলে কিভাবে মানা করবে।আপনি করুন ব্যাবস্থা।”
.
.
রুহী আর রোয়েনকে মামা মামী রুমে নিয়ে আসেন।ওনাদের বিশ্বাস হচ্ছেনা রুহী ওনাদের সামনে।আসলে যেদিন ছাদে রোয়েনের কাছে ভিডিও পাঠানো হয়।সেদিন রোয়েন নিচে নেমে রুহীকে রুমে না পেয়ে খু্ঁজতে ছাদে গেলে দেখতে পায় রুহীকে একজন বেশ জোর জবরদস্তি করে জড়িয়ে ধরেছে।সেদিন ব্যাচেলর পার্টির পর রোয়েন ঘরে এসে রুহীর ফোন চেক করে।কারন একজন মানুষের সব গোপন তথ্য তার ফোনেই থাকে।রোয়েন সেখানে দেখতে পায় রুহীর ছবি পাঠাচ্ছে কেউ।রুহী তাকে বলছে ওকে বিরক্ত না করতে কিন্তু সে রুহীকে বারবার ব্ল্যাকমেইল করছে আজেবাজে মেসেজ পাঠাচ্ছে।পরদিন সকালে রুহীর ঘুম ভাঙ্গলে সামনে রোয়েন কে দেখতে পায়।ও রকিং চেয়ারে বসে আছে।রুহী রোয়েন এসময়ে দেখে ভয় পেয়ে সময় চেক করে।কারন ওর উঠতে দেরি হয়ে গেছে কিনা।রুহী খেয়াল করলো ও ঠিক সময়ে উঠেছে।রুহী এবার রোয়েনের দিকে তাকায়।তারপর জিজ্ঞেস করে,
.
.
-”কিছু লাগবে আপনার?”
.
.
রুহীর প্রশ্নের জবাব না দিয়ে রোয়েন রুহীর ফোন ওর গায়ের মধ্যে মারলো,
.
.
-”এসব কি?কবে থেকে হচ্ছে এসব?”
-”ছয় সাতদিন ধরে।”
.
.
রোয়েন এবার ওর ফোনের ভিডিও রুহীর দিকে ধরলো।সেটা দেখে কেঁদে দেয় রুহীতারপর রেগে চিৎকার করে বলল,
.
.
-”এতো দূর এগুলো আমাকে জানানোর প্রয়োজন মনে করোনি।”
-”কথাই বলছিলেননা আপনি।কিভাবে বলতাম?”
-”সেদিন এজন্যই রুম থেকে দৌড়ে বেরিয়ে ছিলে?”
-”হুম।”
-”তোমার রুমে সবসময় কে আসা যাওয়া করে?”
-”নানা নানু।”
-”ঠিক আছে।এখন থেকে সে যা যা পাঠাবে আমাকে জানাবা।”
-”ওকে।”
.
.
এরপর রোয়েন খবর লাগাতে শুরু করে এবং জানতে পারে সব করছে সামির।তাই বিয়ের আগের দিন রোয়েন শামীম রামীন রেজোয়ান মাহবুব আর রুহী মিলে একসাথে বসে।রোয়েন বলল,
.
.
-কালকের দিনটা আমাদের সবার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
.
.
রোয়েনের কথায় সবাই জিজ্ঞেস করলো,
.
.
-”কেন স্যার?”
-”কারন কাল রুহীকে মেরে ফেলবো আমি।”
.
.
রোয়েনের কথায় সবাই বিস্মিত কি বলছে রোয়েন।তখন রোয়েন বলল,
.
.
-”কাল আমাদের বিয়ের পর রুহীকে বনানী নিয়ে যাবো।সেখানে আমার মায়ের বাড়ির কাছে উঁচু টিলা আছে সেখান থেকে ওকে ফেলে দেব।এর নিচে থাকবে শামীম রামীন ফাহিম।ওরা একটা জাল বিছিয়ে রাখবে।রুহী সেখানে পড়বে।ওরা রুহীকে আমার বাসায় নিয়ে আসবে।আমার দোতলার কোনার রুমটা সবচেয়ে সেফ।কেউ জানবে না ওর কথা।রুহী বেঁচে আছে সেটা আমরা জানবো।রুহী মারা গেছে শুনলে সামির নিশ্চয় রেগে যাবে কারন ওর পরিকল্পনা নষ্ট হয়ে যাবে।আর আমার মতে সামিরের সাথে আরো কেউ জড়িত আছেন।তাদের কে ও ধরা যাবে।রুহীকে মারবো কারন ওকে তখন সামির বিরক্ত করবেনা আর আমাদের কাজ সহজ হয়ে যাবে।”
.
.
রোয়েনের কথায় সবাই রাজি হয়ে যায়।সবাই চলে গেলে রুহী রুমে চলে আসে।ওর ভয় লাগছেনা আর বেশ খুশি ও কারন রোয়েন সব ঠিক করে দেবে ও জানে।এদিকে রোয়েন রুহীর রুমে আসে।রুহীর পাশে এসে দাঁড়িয়ে বলল,
.
.
-”তুমি ঘুমিয়ে পড়ো।এসব নিয়ে চিন্তা করবেনা।”
.
.
রোয়েন খেয়াল করলো রুহীর চোখে পানি। রোয়েন ওকে টেনে নিজের দিকে ফিরায়।দুহাতে রুহীর চোখ মুছে বলল,
.
.
-”তোমার ভয় লাগছে?বিশ্বাস করতে পারছোনা আমাকে?”
-”বিশ্বাস করি রোয়েন।আপনাকে বিশ্বাস করি।তাইতো আপনাকে চাই আমি।আপনার কাছে সিকিউর ফিল করি।”
.
.
রোয়েন রুহীকে এবার জড়িয়ে নেয় বুকে।তারপর দিন ওরা নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজটা সেড়ে ফেলে।কিন্তু রুহীকে ধাক্কা দেয়ার পর রুহীর হাত গাছের সাথে বাড়ি লেগে অনেকটা কেঁটে যায়।সেটা দেখে ভীষন খারাপ লাগে রোয়েনের।রুহীকে ফেলার পর রোয়েন নিচে দেখছিলো রুহী ঠিক আছে কিনা তখনই ওর নানা নানু চলে আসে।আর ওনারা রোয়েনের কাছে আসলে জেনে যেতো রুহী বেঁচে আছে তাই তাদের দিকে গুলি তাঁক করে যেন কাছে না আসেন তারা।সেদিন রুহী কে ওর দোতলার রুমে আনা হয়।রুহী শুয়ে আছে।ওর হাত ব্যান্ডেজ করা।রোয়েন ওর সামনে এসে বসে।তারপর রুহীর আঘাতপ্রাপ্ত হাত ধরে বলল,
.
.
-”এখান থেকে বের হবেনা।তোমাকে একটা ল্যাপটপ দিবো সেখানে তুমি সব দেখবে নিচে।যা লাগবে আমাকে কল দিয়ে জানাবে।আর যেদিন লাগবে তোমাকে আমি বের করবো।”
-”আই লাভ ইউ রোয়েন।”
.
.
রোয়েন আর কিছু বলতে পারেনা।রুহীর কাঁটা হাতে চুমু দিয়ে ওর ঠোঁটজোড়া শুষে নিতে শুরু করে।রুহী রোয়েনকে জড়িয়ে ধরে ঠোঁটের স্বাদ গ্রহন করছে।কিছুক্ষন পর রোয়েন নেমে আসে রুহীর গলায়।সেখানে ভারি ভারি চুমুতে ভরিয়ে দিচ্ছে।অনেকসময় পর সরে আসে রোয়েন।রুহী লজ্জা মাখা মুখ নিয়ে তাকায় রোয়েনের দিকে।রোয়েন বলল,
.
.
-”আমার বিয়ে করা বৌ।কাছে আসতে মানা নেই।”
-”আগে কতো ছিলো মনে হয়?”
-”তা ছিলো না কিন্তু তখন অনেক সীমার মাঝেই ছিলাম।”
-”তাহলে আজ কিসের অপেক্ষা?”
-”এতো হুটহাট করে তোমাকে পেতে চাইনা রুহী।খুব অনুভূতি নিয়ে তোমাকে আপন করে নিবো।অনেক কথা হলো চলো চেঞ্জ করিয়ে দেই।”
-”আচ্ছা।”
চলবে