The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 39
বিকেলে রুহী আর রামীন রোয়েন কে নিয়ে আসে রোয়েনের নিজের হাসপাতালে।ডাক্তার সিদ্দিক রোয়েনকে দেখে হেসে বলল,
.
.
-”স্যার ভালো আছেন?”
-”হ্যা আছি।”গম্ভীর ভাবে বলল রোয়েন।
-”স্যারকে লম্বা বেডটায় শুইয়ে দিন।”আগে পায়ের টা খুলবো।
.
.
রামীন রোয়েনকে শুইয়ে দিলো।পায়ের ব্যান্ডেজ খোলার পর রোয়েন বসানো হয়।তারপর একে একে বুক আর হাতের ব্যান্ডেজ খুলে ফেলা হয়।এবার যেন একটু ফ্রী হলো।কেমন ভার লেগেছে এতোদিন।এবার ডাক্তার সিদ্দীক বলল,
.
.
-”আপনার হাতটা দেন।”
-হাত কেন?ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে রোয়েন।
-”স্যার ক্যালসিয়াম পুশ করবো।”
-”টেবলেট দিন।”
-স্যার পুশ করতে হবে।তাহলে জলদি সুস্থ হয়ে উঠবেন।আর এখানে ক্যালসিয়ামের সাথে ভিটামিন ও আছে।
.
.
রোয়েন আবার কিছু বলতে গিয়ে চুপ হয়ে যায়।এখানে রুহী আছে।ওকে শান্ত থাকতে হবে।ডাক্তার ইন্জেকশনে মেডিসিন ঢুকিয়ে রোয়েনের হাতটা চেঁপে ধরে।রোয়েন বলল,
.
.
-”ওয়ান সেকেন্ড।রুহী!!!”
.
.
রোয়েনের ডাকে রুহী এসে দাঁড়ায়।
.
.
-”জি বলুন।”
-”একটু বাহিরে গিয়ে বসো প্লিজ।”
-”কিন্তু!!!!”
-”রুহী যা বলছি করো।”
-”ঠিক আছে।”
.
.
রুহী বাহিরে গিয়ে বসে।সাথে রামীন ও বেরিয়ে আসে।ডাক্তার রোয়েনের হাতে ইন্জেকশন পুশ করার সময় রোয়েন নিশ্বাস বন্ধ করে রাখে।চোখ জোড়াও বুজে নেয়।ইন্জেকশন দেয়ার পর রামীন আর রুহী ভিতরে এলো।ডাক্তার নিজের সিটে এসে বসলো।তারপর একটা কাগজে কিছু লিখতে লিখতে বলল,
.
.
-”এখন হাঁটাহাঁটি না করা ভালো।সপ্তাহখানিক বেড রেস্টে থাকেন।”
-”জি।”বলে উঠে রোয়েন।
.
.
বাকি কাজ গুলো সেড়ে বেরিয়ে আসে ওরা।রোয়েনকে গাড়িতে বসিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে রামীন।রুহী রোয়েনের পাশে বসে পড়ে।রোয়েন চুপচাপ জানালার বাহিরে তাকিয়ে আছে।রুহী একবার ডাকে রোয়েনকে।চুপচাপ রোয়েন কিছু বলেনা।রুহী এবার রোয়েনের হাতে হাত রাখতেই কেঁপে উঠে পাশে তাকায় যেন ভয় পেয়েছে।
.
.
-”কি হলো?”
-”কিছুনা আপনি চুপচাপ।ঠিক আছেন?”
-হুম ঠিক আছি।
.
.
রোয়েন খেয়াল করে রামীন লুকিং গ্লাসে কিটকিটিয়ে হাসছে।রোয়েন চোখ গরম করে তাকাতেই রামীন সামনে তাকিয়ে বলল,
.
.
-”রুহী পারলে গরম চা কফি করে দিও বাসায় গিয়ে ঠান্ডা পানি দিও।নাহলে জনাবের ঘুম আসবেনা সারারাত।”
.
.
রামীনের কথায় রেগে সেদিকে তাকায় রোয়েন।তারপর রাগী গলায় বলল,
.
.
-”তুই এতো কথা বলছিস কেন?”
-”তোর হেল্প করতে চাচ্ছিলাম।”
-”তোর হেল্প নিজের কাছে রাখ।”রেগে বলল রোয়েন।
.
.
এমন করতে দেখে রুহী চুপ করে রইলো।কিছু বলার সাহস নেই।বাসায় এসে রোয়েন রুহীর সাহায্যে রুমে চলে আসে।রোয়েনের পা জোড়া খাটে উঠিয়ে দিয়ে ওকে শুয়ে পড়তে সাহায্য করে রুহী।তারপর চলে যেতে নিবে রোয়েন টেনে ওকে কাছে নিয়ে আসে।রুহী রোয়েনের ওপর পড়তে নিয়ে নিজেকে সামলায়।লম্বা চুল গুলো রোয়েনের মুখের ওপর এলিয়ে পড়ে।রোয়েন রুহীকে দেখার মাঝে এক হাত দিয়ে চুলগুলো পিছনে নিয়ে রুহীকে নিজের সাথে জাপটে ধরে ওর গলায় মুখ ডুবায়।ঠোঁট চেঁপে রুহীর গলায় শব্দ করে চুমু খেতে থাকে।রুহীর নিজেকে সামলাতে ইচ্ছে হচ্ছেনা।উন্মাদ হয়ে যাচ্ছে ও।এদিকে রোয়েন আর রুহীকে বাসায় দিয়ে রামীন রেজোয়ান মাহবুবের ঘরের সামনে এসে আশফিনা কে দেখতে পায়।কালো শাড়ী পরে আছে মেয়েটা।চমৎকার লাগছে দেখতে।রামীন আশফিনার কাছে এসে দাঁড়ায়।তারপর আশফিনার গালে হাত রেখে মুচকি হেসে বলল,
.
.
-”চোখ ফেরাতে পারছিনা।ইচ্ছে করছে এখনই বিয়ে করে খুব আদর দেই।”
-”যাহ কি সব বলেন?”
-”কি করবো?আল্লাহ তা’আলার এ যে এক অপরুপ সৃষ্টি।”
-”নজর লেগে যাবে।”লজ্জা মাখা হাসে আশফিনা।
-”কাঁটিয়ে দিচ্ছি।”
.
.
কথা টা বলে আশফিনার কপালে চুমু খায় রামীন।লজ্জায় যায় যায় হাল আশফিনার।রামীনকে সরিয়ে বলল,
.
.
-”প্লিজ এসব করবেননা।”
-”ওকে।তাহলে চলো।”
-”জি চলুন।”
.
.
আশফিনা আর রামীন বেরিয়ে যায়।আজ ওরা ঘুরবে।আর রাতে ডিনার করে ঘরে ফিরবে।রোয়েন খেয়াল করে রুহী একটু বেশি খেয়াল রাখছে ওর।রোয়েনের কোন কিছুতেই কমতি রাখেনা।বরং ভালোবাসাটা যেন অনেকটাই বেড়ে গেছে।সবসময় রোয়েনের আশেপাশে থাকা।কোলে নিয়ে ঘুমানো।ঘুমালে চুল হাতিয়ে দেয়া সবই করছে রুহী।লোকটাকে খুব বেশি ভালোবাসে ও।লোকটার মাঝেই তো ওর জান আটকে আছে।সেদিন সকালে রোয়েনের মুখ ধুইয়ে দেয়ার পর কিছু বলতে যাবে তখনই রুহী বলল,
.
.
-”এক্ষুনি আনছি।”
.
.
কিছুসময় পর কফি আর নিউজপেপার নিয়ে আসে রুহী।লোকটার সব অভ্যাস ওর জানা আছে।রোয়েন বেশ অবাক হয়।তবে ভালো লাগাটা দ্বিগুন বেশি। অনেকটা দিন কেঁটে যায়।এরই মাঝে রোয়েন ও বেশ সুস্থ হয়ে উঠে।আজ অফিসে যাবে রোয়েন।অন্যরকম লাগছে ওর।২০ জনের চাকরির ব্যাবস্থা করেছে ও এ কয়েকদিনে।রুহী কফি নিয়ে এসে রোয়েনের শার্টের বোতাম লাগিয়ে দেয়।তারপর রোয়েন তার আগের স্টাইলে কফি খেয়ে বেরিয়ে পড়ে।সেদিন অফিসে যেতেই দেখে সবাই ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।নিজেদের লিডারকে দেখে সবাই খুব খুশি।তবে রোয়েনের বুকটা মোঁচড় দিয়ে উঠে অনেক পরিচিত মুখ নেই।সবাই একে একে রোয়েন কে ফুল দেয়।রেজোয়ান মাহবুব এসে জড়িয়ে ধরেন রোয়েনকে।
.
.
-”ওয়েলকাম!!!”
-”থ্যাংক ইউ।”
.
.
রোয়েন কেবিনে ঢুকে যায়।জীবনটা যেন আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়।সব আগের মতো চলতে থাকে রোয়েনের।এরই মাঝে রামীন আর আশফিনা ও একে অপরের খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে যায়।যখন তখন দেখা করা।আশফিনার হাতের পাগল করা চা।রামীনের দুষ্টু মিষ্টি কথা আর আশফিনার লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া।এরই মাঝে একদিন রেজোয়ান মাহবুব কে বাসায় নিয়ে আসে রোয়েন।রুহী হঠাৎ বাবাকে দেখে চমকে যায়।
.
.
-”বাবা তুমি?”
-”হুম।রোয়েনের সাথে কাজ আছে।”
-”আমরা তোমার জন্য কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি রুহী।
.
.
বলে উঠে রোয়েন।সিদ্ধান্তের কথায় কেমন যেন লাগে রুহীর।কৌতুহলী হয়ে জিজ্ঞেস করে,
.
.
-কি সিদ্ধান্ত?
-কালকে একটা পার্টি আছে সেখানেই জানবে।গম্ভীর ভাবে বলল রোয়েন।
-এখন বলেননা।
.
.
মেয়েকে জেদ করতে দেখে রেজোয়ান মাহবুব ধমকে উঠে,
.
.
-”রোয়েন কি বলল বুঝিস নি?যা রুমে।”
.
.
বাবার ধমকে রুহীর চোখ ভরে আসে।দৌড়ে রুমে চলে যায়।সেদিন রোয়েনের রুমে টেবলেট আর পানি দিয়ে আর দাঁড়ায় না রুহী বেরিয়ে আসে।রোয়েন ও কোন কথা বলেনি।পরদিন সকালে ও রুহীর সাথে কথা বলেনি রোয়েন।নাস্তা না করে বেরিয়ে যায় ও।রুহীর ভীষন কষ্ট হতে থাকে।লোকটা কেন এমন করছে?কি এমন জিজ্ঞেস করলো ও?ওকে ছেড়ে দেবে না তো?না না রুহী কেমন করে থাকবে ভালোবসসার মানুষটাকে ছাড়া?
চলবে