The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 32

→আসলে সেদিন রুহী ঘুম থেকে উঠে রোয়েনের দিকে অনেক সময় পর্যন্ত তাকিয়েছিলো।ওনাকে ঘুমে একদম বাচ্চাদের মতো লাগছিলো।রুহী শোয়া থেকে একটু উঠে রোয়েনের মাথায় চুমু দেয়।আবার তার দিকে তাকায়।
হঠাৎ রুহীর মাথায় দুষ্টু বু্দ্ধি চাপে।খাট থেকে নেমে রোয়েনের পাশে এসে বসে ওর শার্ট খুলে নিচে ফেলে দেয়।রুহী নিজের শার্টের তিনটে বোতাম খুলে শার্টের হাত দুটো কাঁধ থেকে নামিয়ে রোয়েনের বুকে মাথা রেখে শুয়ে থাকে।রুহী শুধু রোয়েনের উঠার অপেক্ষায় ছিলো।যখন রোয়েন উঠলে ও টের পেয়ে ও ঘুমের ভান করে।রোয়েন যা যা করছিলো ও সবই দেখতে পাচ্ছিলো আর মুখ লুকিয়ে হাসতে থাকে।আসলে সে রাতে কিছুই হয়নি।রোয়েন রুহীর পেটে চুমু খেয়ে ওর গলায় আসতেই জ্ঞান হারায়।রুহী রোয়েনকে ঠিকমতো শুইয়ে ওর বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে যায়।রুহীর দিকে কিছুসময় তাকিয়ে ধীরে ওর মুখ কঠিন হয়ে আসে।রুহীর থুতনি ডান হাতে চেঁপে গলা ফাঁটিয়ে রোয়েন বলল,
.
.
-এমন সিরিয়াস মেটার নিয়ে মজা করার সাহস হয় কি করে তোমার?রুহীর চিবুক ধরে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে।
-আমি জাস্ট ফান,,,,,,,,,,
-তুমি কি দেখতে চেয়েছো আমি কি বলি?নাকি এটা শুনতে চেয়েছিলা রুহী বাচ্চাটা ফেলে দাও নাহলে তোমাকে এক্সেপ্ট করবোনা আমি।
-না রোয়েন অমন কিছুনা।কথা শুনেন,,,,,,,
-এতো দুশ্চরিত্র ছেলে মনে হয় আমাকে তোমার?
-না না আমার ওরকম কখনো,,,,,,,,,,,,
-একদম কোন কথা বলবানা।আজ থেকে আমরা আলাদা না তোমাকে আমি কাছে টানবো না তুমি আমার কাছে আসবা।নিজের ইচ্ছেমতো চলো তুমি আর কখনো বাঁধা দিবোনা।
.
.
কথা গুলো বলে চলে যাচ্ছিলো রোয়েন।রুহী দৌড়ে এসে রোয়েনের সামনে দাঁড়ায়।রোয়েনের হাত ধরে কেঁদে কেঁদে বলছিলো,
.
.
-রোয়েন প্লিজ আমার কথাটা বুঝার চেষ্টা করেন।আমি সত্যি এমন আর করবোনা।
-রুহী সরে যাও সামনে থেকে।
-প্লিজ কথা শুনেন আমার।
.
.
রুহীর দুকাঁধ ধরে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বেরিয়ে যায় রোয়েন।রুহী কাঁদতে কাঁদতে ফ্লোরে বসে পড়ে।এ কি করে বসলো ও?সামান্য দুষ্টুমিতে এতো কষ্ট দিলো তাকে?রোয়েন রুমে এসে সিগারেট ধরিয়ে ব্যালকনিতে এসে দাঁড়ায়।সারাটা রাত ব্যালকনিতে কেঁটে যায় রোয়েনের।পরদিন সকালে রুহী নাস্তা বানিয়ে টেবিলে সাজিয়ে কফি বানিয়ে নেয়।রোয়েন শার্টের ওপর কালো কোট পরে চুল আঁচড়াচ্ছিলো তখনই রুহী রুমে ঢুকে।তারপর টেবিলের ওপর কফি মগটা রাখে।রোয়েন চুল আঁচড়ে রুহীর পাশ কাঁটিয়ে বেরিয়ে যায়।নাস্তা ও করেনি রোয়েন।রুহী দৌড়ে দরজা পর্যন্ত আসে কিন্তু ডাকতে পারেনা।রোয়েন খেয়াল করছে রামীন কিছু বলছেনা ওকে।রোয়েন যাই বলছে শুধু সেটার উত্তর দিচ্ছে। লাঞ্চটাইম হতেই রামীন বেরিয়ে গেলো।কিছুটা অবাক হয় রোয়েন।দ্রুত কল দেয় রামীনের ফোনে।
ক্যান্টিনে বসে আছে রামীন।কখনো একা লাঞ্চ করতে হবে রোয়েনকে ছাড়া ভাবতে পারেনি ও।হাতের পিঠ দিয়ে চোখ মুছতেই রামীনের ঘোর কাঁটে।দ্রুত গলা পরিষ্কার করে কল রিসিভ করে ও।অপরপাশ থেকে রোয়েন বলল,
.
.
-রুমে আয় কথা আছে।
-ওকে।
.
.
রামীন উঠে কেবিনে এসে দেখে রোয়েন টেবিলে খাবার সাজিয়ে বসে আছে।রামীন বলল,
.
.
-বল।
-খেতে ডাকলাম।বস।
-আমি ক্যান্টিনে খাবো।
-বসতে বলছি বসে যা।
-আমি যাচ্ছি।
.
.
পিছন ফিরে চলে যেতে নেয় রামীন।হঠাৎ পিছন থেকে কেউ ওর হাত টেনে বুকে জড়িয়ে নেয়।রামীন ও প্রানের বন্ধুকে জড়িয়ে ধরে।
.
.
-তুই আমাকে জানিস আমি কেমন?তারপর ও কেন রাগ করিস?আমি খারাপ ব্যাবহার করলে দুটো দিবি আমাকে।
-তুই অনেক কিছু লুকাস আমার কাছে।
-কি করবো বল?পরিস্থিতিটাই এমন ছিলো।
-কি হয়েছে?
-সেদিন রুহীর সাথে একটু বেশি ক্লোজ হয়ে গেছিলাম।আমি যথেষ্ঠ কনসার্ন ওর সেফ্টি নিয়ে।নিজেকে সব সময় কন্ট্রোল করার ট্রাই করি।কিন্তু ও বলল আমাদের মাঝে নাকি সব হয়ে গেছিলো।আবার বলছে প্রেগন্যন্ট।এগুলো কেমন কথা বল?এমন সিরিয়াস মেটার নিয়ে মিথ্যা বলে কেউ?
.
.
রোয়েনের কথায় হঠাৎ হো হো করে হাসতে শুরু করে রামিন।রোয়েন ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে থাকে ওরদিকে।
তারপর সামলে নিয়ে বলল,
.
.
-মেয়েটাকে খুব বকেছিস তাইনা?
-হুম।
-কথা বলিস না?
-না।
-কতদিন হলো?
-একদিন।
-দেখ রোয়েন মেয়েটা মজা করেছে তোর সাথে।ও বাচ্চা মানুষ।মজা করতেই পারে।তুই ম্যাচিওরড।বুঝিয়ে দিলে পারতি।
-না আমি ওর সাথে কথা বলবোনা।এমন মজা করার মানে কি? ও বুঝেনা ওকে আমি ভালোবাসি?
-কখনো বলেছিস?
-না তবে ও বুঝে নিতে পারেনা?
-দেখ ভাই এই দুনিয়াতে ভালোবাসি কথাটা মুখে বলতে হয় নাহলে মেয়েরা বুঝেনা।আর যেখানে রুহীর কথা।ছোট মানুষ বুঝে কম।এ বয়সে বাবাকে কাছে পাচ্ছেনা।তোর কাছে এনে রেখেছিস।এখন তুই ওর সব।তুই না বুঝালে কে বুঝাবে বল।দেখ মেয়েটাকে ভালোবাসিস জানি অনেক ভালোবাসিস।কিন্তু সবসময় মাথা গরম করে কোন কাজ ঠিক হয়না।মেয়েটাকে বুঝায়ে বল বুঝবে।
-ওকে দেখছি আমি।চল খেয়ে নেই।
.
.
এদিকে রুহী সারাদিন ভর রোয়েনের প্রিয় খাবার রান্না করেছে।বিকেলে ফ্রেশ হয়ে লালশাড়ী পরে ড্রেসিং টেবিলের সামনে এসে দাঁড়ায়।চোখে একটু কাজল আর ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক লাগিয়ে নেয় রুহী।এদিকে রোয়েন আর রামীন খেয়ে উঠে দাঁড়ায়।রামীন বলল,
.
.
-একটু আসছি।কাজ আছে বাহিরে।
-ইদানীং এতো কাজ কেন থাকে বাহিরে?
-আছে আছে। আসছি আমি।
.
.
রামীন বেরিয়ে রেজোয়ান মাহবুবের বাসার সামনে এসে দাঁড়ায়।কলিংবেলে চাপ দিতেই ভিতর থেকে আশফিনা চিৎকার করে বলল,
.
.
-আসছি আংকেল।
.
.
আশফিনার মুখে আংকেল শুনে কিছুটা বিরক্ত হয় রামীন।আশফিনা দৌড়ে এসে দরজা খুলে বলল,
.
.
-ওহ আপনি?
-হুম।
-আসুন।
-জি।
-আমি ভাবছিলাম আংকেল এসেছেন।
-আমাকে আশা করেননি?
-আপনি তো চারটার পরে আসেন।আজ জলদি এসেছেন।
-হুম।একচুয়ালি সব ঠিক হয়ে গেছে রোয়েন আর আমার মাঝে।তাই মনটা বেশ ফুরফুরা লাগছে।তাই এককাপ চা খেতে ইচ্ছে হলো আপনার হাতের।
-এক্ষুনি আনছি বসুন।
-আমি একটু হেল্প করি?
-আরে নাহ কি দরকার?
-আমার ভালো লাগবে।
-তাহলে আসুন।
.
.
আশফিনা চা আনতে চলে যায়।রামীন আশফিনার পিছু নিতে নিতে কিচেনে আসে।রামীন এটা ওটা এগিয়ে দিচ্ছে।আশফিনা হেসে বলল,
.
.
-খুব ভালো হাসবেন্ড হবেন।
-কেমন করে বুঝলেন?
-এই যে এতো হেল্প করছেন।আমার সাথে বসে চা খাচ্ছেন।আমাকে সময় দিচ্ছেন।
-এর বদলে আমি ও তো মজার চা খেতে পারছি।এমন চা খেতে সারাজীবন যদি আপনার কাছে থাকতে হয় থাকবো।
-জি!!!লজ্জা পেয়ে।
-না বলছিলাম যে পানিতে বলগ এসেছে চুলা কমান।
-কথা ঘুরাচ্ছেন।এইতো চা হয়ে এসেছে।এখন শুধু কাপে ঢালবো।
.
.
আশফিনা কাপে চা ঢালছিলো রামীন ওকে দেখছে এ দিকে সন্ধ্যায় রোয়েন ঘরে ফিরে দেখে সারা বাড়ি অন্ধকার।মোমবাতি জ্বলছে নানান রং এর।রুহীকে আবছা দেখতে পায় রোয়েন।তবে সেদিকে তোয়াক্কা না করে ওয়াশরুমে চলে যায় ও।ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং রুমে এসে দেখে লাল শাড়ীতে আচ্ছাদিত রুহীকে।ভীষন মায়াবী লাগছে।
কিছুটা রেগে যায় রোয়েন,
.
.
-এসব কি?
.
.
রোয়েন খেয়াল করে মনটা খারাপ হয়ে গেছে রুহীর।এবার বাঁকা হেসে ওর হাত ধরে নিজের সাথে রুহীকে লাগিয়ে নেয় রোয়েন।তারপর বলল,
.
.
-আই লাভ ইউ।
.
.
রুহীর কপালে গালে চুমু দিয়ে ওর ঠোঁটজোড়ায় ঠোঁট ডুবায় রোয়েন।রুহীর শরীর কাঁপছে।ওর ঠোঁজোড়ায় রোয়েনের ঠোঁটজোড়া আবেশে প্রবেশ করছে।রুহী এবার রোয়েন কে চুমু খেতে থাকে।অনেকসময় পর সরে আসে ওরা।রোয়েন এবার রুহীর হাত নিজের হাতের পাতায় নিয়ে বলল,
.
.
-তুমি আমার রুহী।সবসময় তোমাকে চাই আমার পুরোটা জুড়ে।আমার সব সময় তোমাকে চাই আমার মায়াবতী।বড় ভালোবাসি তোমাকে।সবসময় ভালোবাসতে চাই।অনেক বেশি ভালোবাসি তোমাকে।
.
.
রোয়েনের কথায় চোখজোড়া ভিজে আসে রুহীর।তারপর ভাঙ্গা কন্ঠে বলল,
.
.
-আমি ও সবসময় আপনার সাথে থাকতে চাই রোয়েন।আপনাকে চাই।আপনি দূরে সরে গেলে খুব কষ্ট হয় আমার।দম আটকে আসে।আপনাকে খুব ভালবাসতে চাই।আপনার আবেগ মাখা ছোঁয়াগুলো যে পাগল।করে আমায়।
.
.
রোয়েন রুহীর কথায় আজ বড্ড খুশি রোয়েন।পকেট থেকে একটা বক্স বের করে সেখান থেকে বড় সাদা পাথরের একটা আংটি বের করে রুহীর হাতে পরিয়ে দেয় রোয়েন।রোয়েন বলল,
.
.
-এ আঙ্গুলের রগটা জানো সোজা হৃদয় পর্যন্ত যায়।
-আপনার অবস্থান ঠিক সেই জায়গাটাতেই রোয়েন।
.
.
আর কিছু বলতে পারেনা রোয়েন।জড়িয়ে ধরে রুহীকে বুকের মাঝে।
চলবে