The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 16
(Valentines day Special)
→আমি কি মারা গেছি?সব কিছু এমন কেন লাগছে?হাত পা নাড়াতে পারছিনা কেন?হয়ত ভাসছি বাতাসে।চোখজোড়া ও ঠিক মতো খুলতে পারছিনা।শরীরটা ও অবশ লাগছে।আর পারলাম না।শেষমেষ চোখজোড়া ও বুজে এলো।হয়ত পৃথিবীতে এটাই শেষ সময়।
রোয়েন রুহীর দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে।ওর চোখজোড়ায় অশ্রু জমা হয়ে আছে।শামীম রেজোয়ান মাহবুব আর রামীন রুহীর পাশে এসে বসলো।রেজোয়ান মাহবুব মেয়েকে দেখে চোখের পানি ছেড়ে দিলেন।রুহীর গালে কপালে হাতিয়ে ক্রন্দনজড়িত কন্ঠে বলতে লাগলেন,
.
.
-মা রুহী এ কি হয়ে গেলো তোর?শামীম আমার মেয়েটার কি হয়ে গেলো?
.
.
শামীম কাঁদছে বোনকে দেখে।মেয়েটা নিচে কি করে এলো ওরা বলতে পারেনা।রুহীকে দেখলে নিচে আসতে দিতোনা।
.
.
-স্যার আমাদের রুহী ঠিক হয়ে যাবে।এ্যাম্বুলেন্স ডাকছি আমি।
.
.
এদিকে রামীন রোয়েনকে দেখছে।সে তো বোবা হয়ে গেছে।পলকহীনভাবে নিজের মায়াবতীকে দেখছে।রামীনের চোখে ও পানি।শামীম কল করছে এ্যাম্বুলেন্স কে।রামীন কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা।শামীম এসে রোয়েনকে বলছে,
.
.
-স্যার এ্যাম্বুলেন্স আসছে।
-,,,,,,,,,,,
-স্যার শুনছেন?
-হাহ রুহী!!!রুহী!!!!রুহী!!!তুমি ঠিক হয়ে যাবে।কিছু হবে না তোমার।কিছু হতে দিবোনা।কিছুটা উন্মাদের মতো রুহীর মাথা উঠিয়ে কোলের ওপর রেখে বলছে রোয়েন।
.
.
এ্যাম্বুলেন্সের শব্দ শুনে রোয়েন আর বসে থাকেনি।রুহীকে কোলে তুলে দৌড়ে সামনে চলে গেলো।শামীম রামীন আর রেজোয়ান মাহবুব ও রোয়েনের পিছ নেয়।রুহীকে নিয়ে এ্যাম্বুলেন্সে উঠে যায় রোয়েন।রামীন শামীম আর রেজোয়ান মাহবুব ও এসে বসলো।রুহী কে কোলে শুইয়ে রেখেছে রোয়েন, ছাড়ছেনা।রোয়েনের হাসপাতালে নিয়ে আসা হলো রুহীকে।রুহীকে স্ট্রেচারে শুইয়ে দেয়া হয়েছে।রেজোয়ান মাহবুব আর রোয়েন রুহীর সাথে ওটি পর্যন্ত গেল তবে ভিতরে ঢুকতে পারেনি।এদিকে রফিক আর শ্রাবন রুহীর রুমের গার্ডদের কাছে এলো।রফিক বলতে লাগলো,
.
.
-কেমনে বেরিয়েছে রুহী?
-রুহী হাত টানাটানি করতেছিলো।আমরা মনে করছি ব্যাথা পাইতেছে।আমরা ওর কাছে যাই।ও বলে ভাইয়া হাত খুলে দেন।ব্যাথা লাগছে।আমরা হাত খুলার সাথে সাথে খাট থেকে নেমে দৌড়ায় বাহির হয়ে গেছে।আমরা আটকানোর চেষ্টা করছি পারি নাই।
.
.
রফিক আর শ্রাবনের মন খারাপ হয়ে যায়।বেরিয়ে আসে ওরা।রোয়েন দাঁড়িয়ে আছে দেয়ালের সাথে ঘেঁষে।রেজোয়ান মাহবুব চেয়ারে বসে কাঁদছেন।শামীম ওনাকে স্বান্তনা দিচ্ছে।রামীন রোয়েনের পাশে দাঁড়িয়ে আছে।ঘন্টা খানিক পর ডাক্তার বেরিয়ে আসে।রোয়েন ডাক্তারের কাছে এগিয়ে আসে,
.
.
-কেমন আছে ও?
-অবস্থা ভালো।তবে রিকোভার করতে সময় লাগবে।
-কতদিন?
-একমাস।
-ওকে।দেখা করতে পারবো।
-জি তবে ওনাকে ডাকবেননা।
-আচ্ছা।
.
.
রোয়েন রুহীর কাছে এসে দাঁড়ায়।ওর নাকে পাইপ ঢুকানো।রোয়েন একটু উঁবু হয়ে রুহীর মুখে চুমু খেয়ে ওর হাতের ওপর হাত রাখে।আজ মায়াবতীর এ অবস্থা ওর কারনেই হয়েছে।শুট আগে ওকে করলে রুহী ভালো থাকতো।রুহীর কপালে আবার চুমু দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে রোয়েন।কিছুসময় পর বেরিয়ে আসে রোয়েন।রেজোয়ান মাহবুব শামীম রুহীকে দেখে আসে।পরদিন সকাল জ্ঞান ফেরে রুহীর।ও তাকিয়ে সবাইকে দেখতে পায় শুধু রোয়েনকে ছাড়া।সবাই এসে রুহীর খবর জানতে চায় কেমন লাগছে ওর।রুহী সবার দিকে আন্তরিকতার হাসি দেয় কিন্তু রোয়েনকে খুঁজতে থাকে ও।রোয়েন রুহীর কেবিনের বাহিরে দাঁড়িয়ে লুকিয়ে দেখছে ওকে।দিন চলে যেতে থাকে।রোয়েন রুহীর সামনে আসেনা দূর থেকে দেখে চলে যায়।খুব কষ্ট পাচ্ছে রুহী লোকটা এভাবে ওকে অবহেলা করতে পারেনা।কেন দেখতে আসছেনা?এদিকে শামীম, রেজোয়ান মাহবুব আর রামীন রোয়েনের কাছে এলো।রেজোয়ান মাহবুব বললেন,
.
.
-স্যার আমার মেয়ের কাছে যাচ্ছেননা কেন আপনি?
-কোন মুখে যাবো?আমার কারনে ও হসপিটালের বেডে পড়ে আছে।
.
.
রোয়েনের কথায় বেশ অবাক হয় তিনজনে।রামীন বলল,
.
.
-দোস্ত যা বলছিস সঠিক না।ও তোর জন্য এসেছিলো।
-রুহীকে আমি বাঁচাতে পারতাম।ওকে সরাতে পারতাম।
-দেখ যা হয়েছে এ্যাক্সিডেন্ট। আমাদের ও খারাপ লাগছে রোয়েন।এখন এভাবে বসে থাকলে মেয়েটা কষ্ট পাবে।ও তোকে আশা করছে ওর পাশে।
-আমার দোষ।পারিনি নিজের দায়িত্ব পালন করতে।ও নিজের ওপর আঘাত এনেছে আমাকে বাঁচাতে।কিন্তু ওকে রক্ষা করতে পারলাম না।আমার ভালোবাসায় হয়ত ঘাটতি আছে।
.
.
রোয়েনের কথায় সবাই কষ্ট পাচ্ছে।শামীম বলল,
.
.
-স্যার এভাবে বলবেননা।আমরা জানি আপনি ওকে খুব ভালবাসেন।আপনার এখানে দোষ ছিলো না স্যার।রুহীর সাথে হয়ত এমনটাই হওয়ার ছিলো।রুহীতো ভালো আছে।আর রুহী না আসলে হয়ত আরো খারাপ কিছু হতে পারতো।
-খারাপ আর কি হতো? আমার জান চলে যেত কিন্তু রুহী ভালো থাকতো।
-স্যার রুহী ভালো থাকতে পারতোনা।
-শামীম আমি কিছু জানিনা।চাই শুধু আমার রুহী নিরাপদে থাকুক।আমি ওর জন্য আনলাকি।এখানে থাকা ওর জন্য নিরাপদ নয়।
.
.
এতোক্ষন রোয়েনের কথা মন দিয়ে শুনছিলেন রেজোয়ান মাহবুব।এখন আর চুপ করে থাকতে পারলেননা।
.
.
-কি করবেন স্যার?
-অস্ট্রেলিয়া পাঠাবো। সেখানে স্টাডি কমপ্লিট করবে ও।
-তুই ভালো থাকতে পারবি?জিজ্ঞাস করে রামীন।
-আমার ভালো থাকার চেয়ে ইম্পরট্যান্ট রুহীর নিরাপত্তা।
.
.
ওরা কেউই কিছু বলতে পারেনা।সেদিন ওরা চলে আসে রোয়েনের কাছ থেকে।রুহীর খাবার নিয়ে যায় রামীন।রুহী সকল সংকোচ দূর করে বলল,
.
.
-ভাইয়া ওনি কই?আসেননা কেন আমাকে দেখতে?
-রুহী রোয়েন তোমাকে দেখতে আসবেনা।রামীন সব খুলে বলে রুহীকে।এমনকি ওকে অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর কথা ও বলল।
.
.
রুহীর চোখে পানি চলে আসে।কিছু বলতে পারেনা ও।সেদিন রাতে রুহী পালিয়ে যায় রেজোয়ান মাহবুবের বাসার উদ্দেশ্যে।রেজোয়ান মাহবুব বাসায় আসার পথে রুহীকে দেখতে পান।দৌড়ে মেয়ের কাছে এলেন ওনি।রুহী বাবাকে দেখে কাঁদতে কাঁদতে ওনার কোলে ঢলে পড়ে জ্ঞান হারায়।রেজোয়ান মাহবুব রুহীকে ধরতে গিয়ে অনূভব করলেন মেয়ের পিঠ থেকে ব্লিডিং হচ্ছে।রেজোয়ান মাহবুব মেয়েকে নিয়ে আসেন।
,
,
,
,
,
রুহীকে বাসায় এনে রেজোয়ান মাহবুব রোয়েন আর ডাক্তার কল দিলেন।রুহীর কথা শুনে আর অপেক্ষা করতে পারেনা।চলে আসে রেজোয়ান মাহবুবের বাসায়।রোয়েন রুহীর মাথার কাছে বসে আছে।কিছুক্ষন পর ডাক্তার আসতেই রোয়েন গিয়ে ওনার কলার চেঁপে ধরেন,
.
.
-তোমরা থাকতে বের হলো কেমনে রুহী?
-স্যার আমার চোখ লেগে আসছিলো।
-তোমাকে তো জব থেকে বের করে দিবো।শুধু আমার রুহীকে সুস্থ হতে দাও তারপর দেখে নিবো তোমাকে।চিৎকার করে বলল রোয়েন।
-স্যার মাফ করেন।
-এ কথা পরে হবে।আগে রুহীকে সুস্থ করুন।
-জ জ জ জি স্যার।
.
.
ডাক্তার ভয় পেয়ে রুহীকে চেক করে ড্রেসিং করিয়ে বেরিয়ে গেলেন।রুহী এখন ও অঞ্জান রত অবস্থায় পড়ে আছে।রোয়েন রেজোয়ান মাহবুবকে বললো,
.
.
-ওকে নিয়ে যাচ্ছি আমার বাসায়।
-জি স্যার।
.
.
রোয়েন বেরিয়ে গেলো রুহীকে কোলে তুলে।পরদিন সকালে জ্ঞান ফিরে রুহীর।চোখ খুলে রোয়েনকে দেখতে পায় রুহী।রোয়েন এবার রেগে চিৎকার করে বলতে লাগলো,
.
.
-এই মেয়ে সেদিন বেরিয়ে ছিলে কেন বলো?নিজের ক্ষতি ডেকে এনেছো না?কেন কথা শুনো না তুমি?বাচ্চা এখনো?বুঝতে পারো নি বাহিরে গোলাগুলি হচ্ছে?হাসপাতাল থেকে পালালে কোন সাহসে?
.
.
রুহী কিছু বলছেনা।মাথা ঘুরিয়ে রেখেছে ও।রোয়েন খাটে বসে রুহীর মাথা সামনে ফিরায়।
.
.
-জবাব দাওনা কেন?
-আমার কাছে আসবেননা আপনি।আপনি আমাকে দূরে সরাতে চান কারন আপনি নাকি আমার জন্য আনলাকি।আমার থেকে দূরে থাকুন।
-রোয়েন বুকে জড়িয়ে নেয় রুহীকে।আ’ম সরি রুহী।মাফ করে দাও।আর বলবো না এমন।
,
,
আরো বিশদিন পার হয়ে যায়।এর মাঝে রোয়েন খুব খেয়াল রেখেছে রুহীর।নিজে হাতে নাস্তা করাতো ওকে।বেশির ভাগ সময় রুহীর সাথে কাঁটাতো।রুহী কে নিয়ে ঘুরতে ও যাওয়া হতো।
১৪.২.২০২০
রুহী রুমে শুয়ে আছে।হঠাৎ ওর ফোনে মেসেজ আসে রোয়েনের নম্বর থেকে।সেখানে লিখা,
আমার আলমারি তে একটা শপিং ব্যাগ আছে।সেখানে যা পাবে পরে নিচে নেমে আসো।ওয়েট করবো।রুহী উঠে রোয়েনের রুমে আসে।সময় এগারোটা।রুহী আলমারি খুলে খুব সুন্দর ব্যাগ দেখতে পায়।সেটা নিয়ে রুমে আসে রুহী।ব্যাগে লাল একটি শাড়ী পেলো রুহী।সে সাথে ম্যাচিং কানের দুল আর চুড়ী।রুহী শাড়ীটা গায়ে জড়িয়ে নেয়।তারপর সেজে নিচে নেমে আসে রোয়েনের ফোন কল পেয়ে।বাহিরে আসতেই রুহী রোয়েনকে দেখতে পায়।লোকটা সবসময়কার মতো কালো স্যুট পরেছে।তবে আজ যেন বেশি হ্যান্ডসাম লাগছে।রুহী মুচকি হেসে রোয়েনের কাছে এসে দাঁড়ায়।মায়াবতীকে দেখে রোয়েন।শাড়ীটা যেন ওর জন্যই বানানো।রুহীর পেটের কোনা দেখা যাচ্ছে শাড়ীর ফাঁকে।রোয়েন বাঁকা হাসে।রুহী লজ্জা পায় রোয়েনের তাকানোয়।রুহীকে গাড়িতে বসিয়ে রোয়েন নিজে ও বসে পড়ে।একটা কটেজে এসেছে ওরা।একদম কাঠ আর বাঁশের তৈরি সব।ভিতরে মোমবাতির আলো আছে শুধু।তবে খুব সুন্দর সাজানো।রুহীর বেশ ভালো লাগছে।রুহীকে নিয়ে একজায়গায় এসে দাঁড়ায় রোয়েন।তারপর রুহীর হাত নিজের ঠোঁটের কাছে সেখানে চুমু খেয়ে বলল,
.
.
-Happy Valentines day Ruhi.I love you.
.
.
রুহী কিছু বলেনা।তবে ওর চোখের কোনে জমে থাকা পানি বলে দিলো অনেক কিছু।রোয়েন রুহীকে নিয়ে খেতে বসে।দুজনে খেয়ে নেয়।রোয়েন এবার রুহীকে দাঁড় করিয়ে ওর হাত ধরে কাছে টেনে আনে।রুহী রোয়েনের দিকে চেয়ে আছে।
রোয়েন রুহীর কোমড় জড়িয়ে হালকা দুলিয়ে নাচাচ্ছে।পাশে গান হচ্ছে রুহীর বেশ পছন্দ গানটি।
Kabhi Jo Badal Barse
Main Dekhoon Tujhe Aankhein Bharke..
Tu Lage Mujhe Pahli Baarish Ki Duaa..
Tere Pahloo Mein Rah Loon..
Main Khud Ko Paagal Kah Loon..
Tu Gam De Ya Khushiyaan
Sah Loon Saathiyaa..
Koi Nahi, Tere Siva Mera Yahaan..
Manzilein, Hain Meri To Sabh Yahaan..
Mita De Sabhi Aaja Faansle..
Main Chahoon Mujhe Mujhse Baant Le..
Zara Sa Mujhmein Tu Jhaank Le..
Main Hoon Kya..
রুহীর কোমড় ছাড়িয়ে ওর পিঠে হাত ছোঁয়ায় রোয়েন।রুহী কেঁপে উঠে চোখজোড়া বুজে নেয়।রোয়েন রুহীর দুগালে চোখে চুমু দেয়।রুহী শিউরে উঠে রোয়েনের কোট দুহাতে খাঁমচে ধরে।রোয়েন এবার রুহীর ঠোঁটে আলতো করে চুমু খেয়ে সরে আসতেই রুহী নিজের ঠোঁটজোড়াকে রোয়েনের কাছে নিয়ে এসে চুমু খেতে চায়।রোয়েন রুহীকে কোলে তুলে ওর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে রুমে নিয়ে আসে।রুহীকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে ওর ওপর নিজের ভর ছেড়ে দেয় রোয়েন।রুহীর পেটের ওপর থেকে কাপড় সরিয়ে সেখানে হাত স্লাইড করতে থাকে রোয়েন।রুহীর গলায় মুখ ডুবিয়ে ভারি ভারি চুমু খেয়ে রুহীর পেটে নেমে আসে।রুহীর জান যাওয়ার জোগাড়।রোয়েন রুহীর পেটে চুমু দিয়ে ওকে বুকে টেনে ঘুমিয়ে যায়।রুহী রোয়েনের বাহুডোরে বন্দী। চোখে পানি ওর।লোকটাকে চেয়েও সরাতে পারছেনা।লোকটাকে বিশ্বাস করতে চেয়ে ও পারছেনা ভালবাসতে ও পারছেনা।বড্ড ভালবাসতে মন চায় তাকে তার মতো করে কিন্তু বিশ্বাস এমন একটা জিনিস যা একবার ভাঙ্গলে কখনো জোড়া লাগেনা।
চলবে