The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 05

→ছেলে দুটো কে টেনে একটা বন্ধ রুমে নিয়ে এলো শামীম আর রামীন।ছেলে দুজন বেশ ভয় পেয়ে যায় ওদের দেখে।শামীম ওদের কলার চেঁপে ধরে,
.
.
-রুহীর সাথে এতো কিসের কথা তোদের?
-আমরা ওর ক্লাশ মেট।কেন কি হয়েছে কথা বলেছি দেখে?
-ক্লাশমেট তাহলে ঠিক আছে।যা এখন।
-এভাবে ধরে আনলেন কেন আপনারা?রেগে গেলো ছেলেরা।
-একদম চুপ।স্যারের অর্ডার।বাহিরে একদম চুপ থাকবি।
-জি। কিন্তু ভালো করেননি আপনারা।
.
.
ছেলে গুলো বেরিয়ে গেলো।রুহীকে পিছন ফিরিয়ে ওর পিঠ নিজের বুকের সাথে চেঁপে ধরে রোয়েন।রুহীর হাত জোড়া ওর পিঠের ওপর রোয়েনের হাতের মুঠে বন্দী।রুহীর চোখজোড়া ভরে এসেছে।ব্যাথা পাচ্ছে ও। বুক ধুকপুক করছে ওর।লোকটাকে সরাতে পারছেনা ও।।তবে লোকটার শরীর থেকে আসা একটা মনমাতানো মিষ্টি ঘ্রান ওকে পাগল করছে।সেই ঘ্রানটা যেন ওকে থামাচ্ছে লোকটাকে সরাতে।রোয়েন এবার রুহীর কানের ওপর থেকে চুল সরিয়ে কানে আলতো চুমু খেয়ে ফিসফিসিয়ে বলল,
.
.
-যেহেতু বলে দিয়েছি তোমাকে ভালোবাসি আমি ছাড়া আর কেউ তোমার মনে থাকুক সেটা সহ্য করবোনা।
-রুহী কিছুটা জোর করে বলল আপনার মতো একজন মাফিয়াকে কোন দিন ও ভালবাসবোনা।আপনার জন্য আমার বাবার আদর ভালোবাসা কখনো পাইনি।সারাটা দিন ওনি আপনাকে নিয়েই ভাবে।আমি ওনার জন্য কখনো ছিলামনা ওনার জীবনে।আপনারা হলেন মাফিয়া।খুন করার মতো সকল ধরনের জঘন্য কাজ করেন আপনারা।আপনাদের না আছে মন না কোন অনুভূতি।ভালোবাসার কি বুঝেন আপনারা?
.
.
রুহীর কথায় থমকে গেলো রোয়েন।রুহীর দিকে তাকিয়ে থাকে ও একদৃষ্টে।রোয়েন আর এভাবে রুহীকে ধরে রাখতে পারেনা।রুহীর মনে হতে থাকে রোয়েনের শক্ত হাতের মুঠ যেন ধীরে ধীরে শিথিল হয়ে আসছে।রুহী পিছনে তাকিয়ে রোয়েনকে দেখার চেষ্টা করে।কিন্তু সেই সুযোগ পায়নি রুহী।রোয়েন চলে যায় ওর কাছ থেকে।রুহী সামনে নিজের হাত জোড়ার কবজি ডলতে থাকে।একদম লাল হয়ে গেছে হাত দুটো।অশ্রু গুলো গাল বেয়ে পড়ে রুহীর।কেমন জানোয়ার মানুষ!!!!রুহী এককোনায় গিয়ে বসে পড়ে।খাবার শেষে সবাই ঘরে ফিরে যায়।রোয়েন ফ্রেশ হয়ে খাটে হ্যালান দিয়ে বসে একটা সিগারেট মুখে নিয়ে ধোঁয়া ছাড়ে।রুহীর বলা কথা গুলো ওর কানে বেজে উঠছে বারবার।আধ খাওয়া সিগারেেটটার দিকে একপলক তাকায় রোয়েন।ওর জীবন ও সিগেরটটার মতো।সারাজীবন কষ্টের আগুনে জ্বলেছে ও।কোন ভালোবাসা পায়নি ও।মাকে কখনো দেখেনি।বড় হয়েছে অস্ট্রিয়ায় সেমোলিনা নামক এক শিক্ষিকার কাছে।জীবনে যা পেয়েছিলো সবই ছিলো ম্যাম সেমোলিনার অবদান।ওর পড়াশুনা লালন পালন সবই হয়ে ছিলো সেমোলিনার হাতে।ওর জীবনটা এমন হওয়ার কথা ছিলোনা।কিন্তু অসমাপ্ত কিছু কাজ সম্পূর্ন করতেই এ রাস্তায় আসা হয়েছে ওর।অতীতকে চিন্তা করতে করতেই রোয়েনের চোখজোড়া নিদ্রা জগতে ডুবে যায়।
এদিকে রুহী ঘরে এসে নিজের রুমে চলে আসে।তারপর দরজা বন্ধ করে খাটের কাছে এগিয়ে আসে।এখান থেকে পালানোর চিন্তা ওর মাথায় ঘুরছে।লাগেজ নিয়ে জামা কাপড় গুছিয়ে নিয়ে লাগেজটা খাটের নিচে ঢুকিয়ে রাখে রুহী।দরজা খুলে বাবার রুমে উঁকি দেয় ও।বাবা শুয়ে আছেন এক পাশ ফিরে।কাজের লোকগুলো ও ঘুমে বিভোর।রুহীকে অপেক্ষা করতে হবে।রুমে আসে রুহী তারপর কল দেয় সামিরের নম্বরে,
.
.
-হ্যা রুহী বলো।
-কই তুমি?
-ঘরে কেন?
-পালাবো না আমরা?
-সেটা তো করবোই।তোমার বেইমান বাপ কই?
-প্লিজ এভাবে বলো না।বাবা এখনো ঘুমোয়নি।
-ঘুমালে তুমি বের হবে আগে এই এলাকা থেকে।তারপর সামনের শপিংমল টা আছেনা সেখানে দেখবে লাল একটি কার দেখবে।ওখানে আমি থাকবো।
-ওকে।আচ্ছা রাখি আমি বায়।
-বায়।
.
.
রুহী বিছানায় শুয়ে বাবার ঘুমে তলিয়ে যাওয়ার অপেক্ষা করছে।কিছুক্ষন পর রুহী রেজোয়ান মাহবুবের রুমে এসে দেখে বাবা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।রুহী লাগেজ নিয়ে বেরিয়ে যায় ঘর থেকে।দৌড়াতে শুরু করে রুহী।ক্রস চিহ্নিত জায়গা পার করতেই রুহীর মনে হতে থাকে আজ স্বাধীন আমি।তবে রুহীর ধারনা ভুল ছিলো।কারন ওর জানা ছিলোনা পাশের বিশাল বাড়িটি রোয়েনের।সে জায়গাটা ২০টা আমেরিকান শেফার্ড দ্বারা রক্ষিত।রুহী সেখানে দাঁড়াতেই সব গুলো কুকুর একসাথে চিৎকার করতে শুরু করে।গভীর রাতে কুকুরের চিৎকারে ঘুম ভাঙ্গে রোয়েনের।শোয়া থেকে উঠে বসে ও।কেউ কি ঢুকে পড়লো ওদের আস্তানায়?তবে যেই হোক ছাড়া পাবেনা ওর হাত থেকে।রোয়েন নিচে এসে দেখে ওর সব লোক নিচে জড়ো হয়েছে।রেজয়ান মাহবুব মেয়ের হাত চেঁপে ধরে জিজ্ঞেস করছেন,
.
.
-কই যাচ্ছিলি?
-,,,,,,,
-বলিস না কেন?কই যাচ্ছিলি তুই?
-সামিরের সাথে।তোমাদের বন্দী এলাকা থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছিলাম।
,
,
,
,
,
,
রেজোয়ান মাহবুব স্বজোরে মেয়ের গালে চড় মেরে বসলেন।রোয়েন ওদের মাঝে এসে দাঁড়ায়।সবাইকে ভিতরে যেতে বলে রুহীর হাত চেঁপে ধরে।তারপর দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
.
.
-পালানোর খুব শখ তাইনা।মেটাচ্ছি তোমার শখ। আসো আমার সাথে।
.
.
রুহীর হাত চেঁপে টেনে নিজের বাড়ির ভিতর নিয়ে আসতে থাকে রোয়েন।রুহী হাত ছাড়াতে চেষ্টা করতে থাকে।কিন্তু কিছুতেই লোকটার শক্ত হাতের মুঠ থেকে নিজের হাত সরাতে পারছেনা রুহী।রোয়েন রুহীকে নিজের ঘরে এনে একটা রুমে এনে দাঁড় করায়।তারপর বলল,
.
.
-আজ থেকে এখানে থাকবে তুমি আমার সাথে।চিৎকার করে বলল রোয়েন।
-কখনো না।আমি আপনার সাথে কেন থাকবো?যেতে দিন আমায়।
-নো মোর আর্গুমেন্টস। একদম নড়বেনা এখান থেকে।নাহলে তোমার সাথে কি করবো ভাবতে ও পারবেনা।
-আমি থাকবো না এখানে।চিৎকার করে বলল রুহী।
.
.
রুহীর চিৎকার কে তোয়াক্কা না করে বেরিয়ে গেলো রোয়েন দরজা লক করে।রুহী চিৎকার করতে করতে কেঁদে দিলো।বারবার বলছে ওকে যেতে দিতে।রোয়েন রুমে এসে বিছানায় শরীর এলিয়ে দেয়।কিন্তু রুহীর চিৎকারে চোখ লাগাতে পারছেনা ও।কিছুক্ষন অপেক্ষা করে রোয়েন উঠে রুহীর রুমের দরজা খুলে দেখে ফ্লোরে হাত পা ছড়িয়ে বসে কাঁদছে।রোয়েন ধমক দিয়ে উঠলো,
.
.
-একদম চুপ।কুকুরের মতো চিৎকার বন্ধ করো।জাস্ট শাটআপ।গলা ফাঁটিয়ে চিৎকার করে রোয়েন।
.
.
রুহী কেঁপে উঠে।রোয়েন ওর হাত টেনে দাঁড় করায়।তারপর বিছানায় বসিয়ে নিজের ঠোঁটে আঙ্গুল রেখে রুহীকে চুপ করতে বলল রক্তচক্ষু দিয়ে ইশারা করে।বেরিয়ে গেলো রোয়েন।রুহী এবার শুয়ে কাঁদতে থাকে নীরবে।পরদিন সকালে ফ্রেশ হয়ে নেয় রোয়েন।কালো লম্বা কোট গায়ে জড়িয়ে রুহীর রুমে এসে দেখে জুঁবুথুবু হয়ে ঘুমিয়ে আছে মেয়েটা।রোয়েন এসে খাটে বসে রুহীর পাশে।ওর কপাল গাল ঠোঁটে হাত বুলায়।তারপর রুহীর কপালে গালে চুমু খেয়ে ওর গায়ে চাদর টেনে বেরিয়ে যায়।অফিসে এসে রফিককে একটা মেয়ে ঠিক করতে বলল রোয়েন।এদিকে দুপুরে রোয়েনের কাজের লোক ফোন দিয়ে জানায় রুহী খাচ্ছে না কিছুই।রোয়েন তৎখনাৎ ঘরে এসে রুহীর রুমে আসে।খাবার সামনে নিয়ে বসে আছে রুহী।
.
.
-সমস্যা কি তোমার?খাচ্ছোনা কেন?
-আপনার খাবার খাবোনা আমি।বাসায় যাবো।
-দেখো রুহী ভালোবেসেছি বলে মনে করোনা আমার মাথায় উঠে নাচবে তুমি।যেমন ভালোবাসতে পারি তেমনই শাস্তি ও দিতে পারি।আমি শাস্তি দিতে আসলে খুব পস্তাবে তুমি।
-আপনি বলেছেন ভালোবাসেন।আমি তো বলিনি।আপনার ভালবাসা রাখেন আপনি আমাকে যেতে দিন।
.
.
রোয়েনকে পার করে চলে যেতে নেয় রুহী।রোয়েন রুহীর হাত টেনে ধরে।রুহী যতোই যেতে চায় রোয়েন ওকে ততোই আটকাচ্ছে।রুহী যাওয়ার জন্য লাফালাফি শুরু করে।আর সহ্য করতে পারেনা রোয়েন স্বজোরে রুহীর গালে চড় মেরে ফ্লোরে ফেলে দেয়।রুহী গালে হাত দিয়ে রোয়েনের দিকে চেয়ে থাকে।রোয়েন দরজা লক করে বেরিয়ে যায়।রুহী কাঁদতে শুরু করে।
চলবে