এলাকার বড় ভাই !! Part- 08
আম্মু এবার আমাকে জিগ্যেস করল!!
-ইরা!!
-কে??
-আমি ইরা কে বিয়ে করতে চাই!!
-কোন ইরা?? আয়াত এর ম্যাডাম?? (আব্বু)
-জি!!
-তুই ইরা রে পছন্দ করস?? (আম্মু)
-হুম!!
-তার মানে ইরা আপু আমার ভাবি হবে!! (আয়াত)
-আম্মাজান… আপনে অন্য রুম এ যান… আপনের আম্মার সাথে আমার কিছু কথা আছে!!
-জি আব্বু!
আয়াত অন্য রুম এ চলে গেল!!
-ইরা কি তোরে পছন্দ করে?? (আব্বু)
-আমি ইরাকে কখনো কিছু বলিনি!! (আমি)
-এই মাইয়াটারে তো আমারও খুব পছন্দ… কিন্তু ওরে এত্ত মাইয়া দেখানোর পর ও কোন মাইয়া পছন্দ করল না..তাই আমি কোন কথা তুলি নাই!! (আম্মু)
-মাইয়াটারে আমি দেখছি.. মাহমুদুল সাহেব এর লগেও কথা হয় আমার দেখা হলে… অতি ভদ্র পরিবার…. মাইয়াটা ভীসন -মাইয়াটারে আমি দেখছি.. মাহমুদুল সাহেব এর লগেও কথা হয় আমার দেখা হলে… অতি ভদ্র পরিবার…. মাইয়াটা ভীসন লক্ষ্মী…….!!
-তাইলে তোমার ও মাইয়া পছন্দ!! (আম্মু)
-আরে রাখ তোমার পছন্দ.. আমাগো পছন্দ হইলে কি হইব….ওই মাইয়ার লেগা পোলা বাছন লাগব লাখে একটা….এমন সুন্দর…সিক্ষিত (শিক্ষিত) … গুনী মাইয়া….কয়জনের ভাগ্যে হয়….আমরা কি বলমু… তোমার পোলায় করে এলাকায় মাস্তানি…. ওর লেইগা ওই মাইয়া আইনা কি মাইয়ার জীবন নষ্ট করমু আমি..আমি পারমু না!!
-আব্বু আমি বিয়ে করলে ইরাকেই করব.. নাহলে আম্মু…এই জীবনে আমার বিয়ে তুমি ভুলে যাও!!
-ওই হারামজাদা…আলটিমেটাম দেও আমারে তুমি??
-আচ্ছা…. তুমি রাগ থামাও….আগে শুন ওই কি বল!! দেখ ইবু…তোর বাবার কথাও ফালানোর মত না…ওই মাইয়ার কথা বাদই দিলাম.. তুই ভাব..আয়াত এর লেগা পোলা দেখলে.. আমরা কি এমন পোলা পছন্দ করমু…যার বাবার সব আছে.. কিন্তু ওই কোন কাজ কাম করে না??তাইলে বল.. তোরে ওরা মাইয়া কেমতে দিব??
-আম্মু আমি এসব ছেড়ে দিব… আমার ৪টা দোকানে ২ টায় ব্যবসা করব… ২টা ভাড়া দিয়ে দিব…. এলাকার ছেলেদের সাথেও চলাফেরা করব না…সব কিছুর দায়িত্ব নিব…. তারপর ও তোমরা ইরার বাসায় প্রস্তাব নিয়ে যাও….আমি ওকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারব না!!
আব্বু এবার সোফায় বসল..কিছুক্ষণ ভেবে তারপর আম্মুকে পানি দিতে বলল….আম্মু পানি দিল… সে পানি শেষ করে আমাকে সোফায় বসতে বলল!
-দেখ বাবা। বিয়ে সাদি.. ২দিনের কথা না..সারা জীবনের দায়িত্ব…. কখনো এমন কিছু করবা না..যাতে সারাজীবন পস্তাইতে হয়। ওই মাইয়ারে যে বউ কইরা আনবা… আমাগো আদর থাকলেও তোমারে দিয়া ওর দুনিয়া থাকব।আর ওর সব দায়িত্ব তোমার। তুমি কি তা পারবা??
-আমি আমার পুরোটা দিয়ে চেষ্টা করব আব্বু….আর আগে আমি তোমার বিশ্বাস টা অর্জন করতে চাই!!আমি এই সপ্তাহের মধ্যেই ব্যবসা শুরু করে দিব… নিজেকে প্রমান করেই তবে আমি বিয়ের কথা বলব!
আব্ব কিছু না বলে… আমার কাধে হাত রেখে হাসি দিলেন…
-চল…অনুষ্ঠানে…বাকি কাজ গুলো -চল…অনুষ্ঠানে…বাকি কাজ গুলো সেস করি!!
**
অনুষ্ঠানের কাজ শেষ করে আমরা বাসায় চলে আসলাম। আসতেই আয়াত আমাকে চেপে ধরল!!
-ভাইয়া….ইরা আপু আর তুমি..জাস্ট ভাবতেই পারছি না..ইরা আপু আমার -ভাইয়া….ইরা আপু আর তুমি..জাস্ট ভাবতেই পারছি না..ইরা আপু আমার ভাবি হবে!!
-এই এত্ত excited হওয়ার কিছুই নেই…এখনো কিছুই হইনি..আগে হোক তারপর নাচ। এখন রুম এ যা । রেস্ট নে!!
আয়াত রুম এ চলে গেলে আমি বারান্দায় এসে দাড়িয়ে সিগারেট ধরালাম!!
আমার লাইফ টা কখনো আমাকে এই পথে এনে দাড় করিয়ে দিবে কখনো ভাবতে পারিনি!!
।
নিজের হাত দিয়েই ভালবাসার সব পথ বন্ধ করে দিয়েছিলাম….. চাইনি কোনদিন যেন অন্য কেউ কাছে আসে…. আবার এই মনের জানালায় উকি দেয়.. আবার ভালবাসার পথে হাতছানি দিয়ে ডাকে!!
।
চোখ দুটো দেখেই প্রেমে পরে গিয়েছিলাম ওর….. সে চোখে ছিল ভয়…. আমার জন্য..ভয়ে বাবার পিছনে লুকিয়ে ছিল.. যেইদিন প্রথম ওকে দেখেছিলাম…!!
।
আর রাতে যখন বারান্দায় খোলা চুলে দেখি… আমার সময় টা মনে হয় সেখানেই থেনে যায়… ওই মুহুর্তটা আমি ভাষায় বনর্না করতে পারব না!!
।
আবার আমাকে দেখে আড়াল করে ফেকে চুলগুলো…চোখও নামিয়ে ফেলে!!
.
কখনো কাউকে কাছে টানতে চাইনি…. হারানোর ভয়ে….. ২ বছর আগে সেই কষ্ট টা বিষের মত পান করতে হয়েছে.. তাও যে বেচে আছি.. আল্লাহর ই কোন এক রহমত এ…এবার সে বিষ পান করলে বোধ হয় বাঁচবই না!!
.
ইরাকে নিজের থেকে দূরে রাখতেও খুব চেস্টা করেছি….অযথা বকাবকি করেছে.. যাতে আমাকে সহ্য না হয় ওর..ভয় না…ঘৃনা করে আমাকে।
.
কিন্তু…সেদিন ও দেরিতে বাসায় আসলে আমি আরো ভয় পেয়ে যাই….. রাত ৮ টা বাজে তারপর ও বাসায় আসেনি….!!
.
ইচ্ছে করে ওই ঠিকানা গুলো নেই.. তারপর সেখানে মানা করে দেই… ঢাকা শহরে কোনদিন কি ঘটে কে জানে..এইজন্যই আমি আয়াত কে পড়তে দেই ওর কাছে ..!!
.
ইরা খুব চুপচাপ থাকতে পছন্দ করে… ভালই হয়েছে সায়মা ওর সাথেই আছে!!
ইরার থেকে দুরুত্বটা আস্তে আস্তে কমিয়ে ফেলি যাতে ওর কাছে আর না যাই.. ওর দিকে আর না তাকাই!!
.
অনেকদিন পরে আমি ওকে রানার গায়ে হলুদ এ দেখি….কাউকে পাগল করতে ওর হাসিটাই যথেষ্ট….. শাড়িতে প্রতিদিনের তুলনায় একটু বেশি সুন্দর লাগছিল!!
ওর হাতে চুড়ি… পায়ের পায়েল…সব কিছুর শব্দ আমাকে পাগল করে তুলে… নেশা হয়ে গেছে ও আমার…. বুঝে গেসি … ওর থেকে দূরে থাকা আমার জন্য সম্ভব না!
.
বন্ধুরা জোর করে আমাকে মদ খাওয়ালো…. উস্কানি দিল.. যাতে আমি ইরা কে নিজের মনের কথা বলি… কিনতু আমি কি বলেছি..তা একমাত্র ইরা আর আল্লাহ মা’বুদই জানে!!
.
এতটুকুই মনে পরে যে.. ইরা আমাকে ধাক্কা মারে এতে আমি ব্যাথা পাই!!
.
আর আজকে… ও আমার প্রিয় রঙের শাড়ি পরেছে…. এত্ত সুন্দর লাগছিল…যে কি বলব…মন চাইছিল.. নিয়ে কোথাও ঘুরে আসি!!
.
কিন্তু ওই কেন ওই ছেলেটা সাথে কথা বলল..মানা করার পর ও কেন হাত ধরল… ব্যাস..অনেক হয়েছে.. আর এক মুহুর্তও ওকে নিজের থেকে দূরে রাখব না…যা আগে হয়েছে তা হতে দিব না….কোন ছেলে তোমাকে ছোঁবে না… নাহলে তার অবস্থাও আমি ফারাবির মত করব!!
-ইবু!! (আম্মু)
-আসি আম্মু!
সিগারেট আরেকটু টেনে ফেলে দিয়ে চলে গেলাম!!
**
আমি,আব্বু,আম্মু,আয়াত সবাই মিলে বৌভাতে আসলাম….. রানার সাথে জুই ভাবির সাথে দেখা করলাম… গিফট দিলাম…..অনুষ্ঠান ভালই চলছে”!
কিন্তু ইরাকে কোথাও দেখছি না!!
-আয়াত..ইরা কোথায়??
-ওহো.. ভাইয়া ১ দিনই তো হয়েছে দেখনি তাতেই এমন!!
-ফাজলামি ছাড়। যেটা বলসি উত্তর দে!!
-আমিও তো দেখিনি।আন্টি আর নীরও আসেনি এখনো.. তারা তো মেয়েপক্ষের সাথে আসবে তাইনা…!!
-হুম!!
কিছুক্ষন পরে:
.
-ইব্রাহিম ভাই!! (মামুন পেছন থেকে ডাক দিল)
আমি তাদের কাছে গেলাম….
-ভাই জোস লাগতাছে আপনারে (শহীদ)
-মামা কারে খুজো ভাবী রে নাক্কি??(রাশেদ)
রাশেদ আমার ছোট বেলার বন্ধু..
-কনে পক্ষ আসছে?? (আমি)
-হা ভাই…মাত্রই.. ওই যে ভাবীর ভাই!! (মামুন)
মামুন নীরকে ডেকে আনে!!
-ভাল আছ ভাইয়া!!(আমি)
-জি!!
-সবাই এসেছে??আব্বু আম্মু!!
-হা..আপু আসেনি….!!
-কেন?
-আপুর শরির ভাল না…. সকাল থেকে মাথা ভীষণ বেথা!!
-ওহ…. তা তোমার পরীক্ষা কবে??
-এই সপ্তাহ পর…. ভাইয়া আম্মু ডাকে আসি!!
আমার সন্দেহ হল…..ইরা কি সত্যিই অসুস্থ??? নাকি ইচ্ছে করে আসেনি!!
আমি ইরাকে ১ টা টেক্সট দিলাম!!
“”তুমি আসোনি কেন??!! জুই ভাবী তোমাকে খুঁজছে”
কিছুক্ষন পরে রিপ্লাই আসল…
“”আমার শরীর খুব অসুস্থ ভাইয়া… আমি আজ আসতে পারব না…. আপনি জুই আপুকে সরি বলে দিয়েন.. আমি পরে কল করে কথা বলে নিব!!
“তুমি যদি এখন এখানে না আস…তাহলে আমি তোমার বাসায় চলে আসব
(চলবে)